![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিজ্ঞান ভাল লাগে তাই বিজ্ঞান পড়া । সামান্য লেখালেখি করি। ভাল লাগে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়তে। পড়াশোনা করছি শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আন্দোলনের শুরু থেকেই যেন মনের মধ্যে একটা সাড়া অনুভব করছিলাম। মন থেকে যেন ডেকে বলছিল শাহবাগ যেতে। পরীক্ষা থাকায় ব্লগে একটা কবিতা আর ফেসবুক পোস্ট করে আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে যাচ্ছি। কিন্তু সশরীরে শাহবাগ না গেলে আমি শান্তি পাবো না তা উপলব্ধি করতে পারছিলাম। আজ সুযোগ এসে গেল। সকাল দশটায় যাত্রা শুরু করলাম কাঙ্ক্ষিত শাহবাগ, আমাদের আন্দোলনের রেসকোর্স । ফার্মগেটের আধা ঘণ্টার যানজট যেন কয়েকবছর মনে হচ্ছিল। অতঃপর পৌঁছে গেলাম শাহবাগ। মনের মধ্যে যেন নাচছিল কারা, বুকের মধ্যে যেন প্রশান্তির হাওয়া বয়ে গেল। সবার মাঝে একজন শিল্পী দেশের গান গেয়ে যাচ্ছে। পেছন থেকে ভীর ঠেলে মাঝে গিয়ে বসলাম। একটু পর শুরু হল শ্লোগান। যেন গলা ফাটিয়ে বজ্র কণ্ঠে আওয়াজ তুলছিলাম সবাই। সরবচ্চ শক্তি দিয়ে শ্লোগান দিচ্ছি তাও মনে হচ্ছে আওয়াজ বের হচ্ছে না। খুব ভাল লাগছিল যেন আমার চাচার(মুক্তিযোদ্ধা) স্বাধীন করা দেশে আজ রাজাকার তাঁরাতে আমি শরিক হতে পেরেছি। আমরা যখন বাড়িতে স্বাধীনতা যুদ্ধের গল্প শুনতাম তখন আমি আর আমার বোন একবার মজার চিন্তা করেছিলাম। আমরা বলতাম যদি আবার যুদ্ধ লাগে তাহলে আমরা রাজাকারদের চোখে ঝাল গুলিয়ে দেব। আজ মনে হল ওদের চোখ গুলাতে না পারলেও আজকের যুদ্ধে আমি অংশগ্রহণ করেছি। মাঝে আসলেন ড.আবুল বারকাত, সবার উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখলেন তিনি। আবার শুরু হল আকাশ কম্পিত শ্লোগান। এভাবেই চলছিল সারাদিন। মাঝে ঘোষণা আসলে আজ সাড়া বাংলাদেশ তিন মিনিটের জন্য নীরবতা পালন করবে। সেই সময়ের অপেক্ষায় আছি আমি। শাহবাগ থেকে টি এস সি র দিকে যাত্রা পথে মন্তব্য খাতায় লিখলাম--
“ মা তোমার দেশকে কলঙ্ক ও রাজাকার মুক্ত না করে বাড়ি ফিরবো না, তুমি অপেক্ষা কর না, রাজাকারমুক্ত না করে আমি বাড়ি ফিরবো না”
তিন টায় বন্ধুর হল থেকে বইমেলায় আমি, বই দেখছি আর কখন চারটা বাজবে সেই অপেক্ষায় আছি। ঠিক চারটার আগে বইমেলায় ঘোষণা হল নীরবতা পালনের। চারটা বাজতেই যেন থেমে গেল সব করমবাস্ততা। সমস্ত বইমেলা স্থব্ধ। স্থবধ আমি একটি বিজ্ঞানের বই হাতে। আমার পাশে দাঁড়ানো সাত বছরের ছোট বাচ্চাটিও স্থব্ধ, কথা বলছেনা সে। মনে হল সাড়া বাংলা আজ স্থব্ধ, নীরব। আর এই নীরবতার মাঝে মনে মনে জাগ্রত বীজটি বেড়ে উঠছে, কল্পনার রুপে গর্জনের সাথে, বজ্রপাতের মত, বোমার মত বিস্ফোরিত হচ্ছে আর বলছে , ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই , রাজাকারের ফাঁসি চাই ; মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় রাজাকারের ঠায় নাই”
©somewhere in net ltd.