নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুনভাবে নিজের চিন্তার শক্তি আর ভাবনার বিশ্লেষণ করার সামর্থ অর্জনের জায়গা হল ব্লগ। বিচিত্র ভাবনারাশির আলোয় নিজেকে আলোড়িত আর আলোকিত করার উদ্দেশেই আমরা ব্লগে আসি। অবসর সময়টাকে ভালোভাবে কাটানোর জন্য এর চেয়ে মোক্ষম উপায় আর নেই। তদুপরি বিনোদন এখানে উপরি পাওনা

এস এম ইসমাঈল

মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।

এস এম ইসমাঈল › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাউজান ঃ সম্পদ ও সম্ভাবনা

০৬ ই এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৪:৪৭







ভূমিকা-

সমুদ্র কন্যা রূপ গরবীনী চট্টলার অতি আদরের দুলালী, বীর প্রসবিনী রাউজান।প্রকৃতির অকৃপণ দানে ঋদ্ধ, সংস্কৃতি ও সভ্যতার আলোকে পরিপুষ্ঠ এক, জ্ঞানের অনির্বাণ শিখায় প্রদীপ্ত আলোকময় এক মানব গোষ্ঠির বিকাশ ঘটেছে দক্ষিন চট্টগ্রামের প্রায় আড়াইশ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে।প্রচুর মানব সম্পদ(জনসংখ্যা=প্রায় সাড়ে তিন লাখ, সুত্রঃ অদম শুমারী ২০০১খৃঃ)ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, অপরূপা রাউজানের রয়েছে অত্যন্ত সুসমৃদ্ধ ইতিহাস।



তবে স্থান ও সময়ের অভাবে আমরা এখানে আমি শুধু রাউজানের সম্পদ ও সম্ভাবনা নিয়ে খুবই সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করবো।







নামকরণ ঃ রাউজান উপজেলার প্রাচীন ইতিহাসের সাথে বৌদ্ধ উপনিবেশের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত।জানা গেছে যে, রাউজানে আদি বসতি স্থাপনকারী হলো বৌদ্ধরা। বিনাজুরীতে প্রায় ৪ শত বছরের প্রাচীন বৌদ্ধবিহার রয়েছে। রাউজান এলাকার নামকরণের সাথেও বৌদ্ধ ঐতিহ্য জড়িত। কারন মোগল সুবেদার শায়েস্তা খান কর্তৃক ১৬৬৬ খৃষ্টাব্দে চট্টগ্রাম বিজয়ের প্রায় ১০০০ বছর পূর্ব থেকে সারা চট্টগ্রাম অঞ্চলই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মগ বা আরাকানীদের অধিকারে ছিল।ফলে রসিকতা করে অনেকে চট্টগ্রামকে ‘মগের মুল্লুক’ও বলতেন।সে অনুযায়ী ধারণা করা হয় যে, রাউজানও একসময় আরাকান রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। আরাকানী ভাষায় এটিকে বলা হতো ‘রজোওয়াং’ বা রাজ পরিবারের ভূমি। আর এ নামের অপভ্রংশ থেকেই রাউজান নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে বিশিষ্ট পন্ডিতগণের ধারণা।

















এক নজরে রাউজান ঃ-

দেশবিভাগের পর ১৯৪৭ সালের আগষ্ট মাসে রাউজান থানার কার্যক্রম শুরু করা হয়।৯০ এর দশকে এটি উপজেলা এবং পৌরসভা ঘোষিত হয় ২০০০ সালে।



রাউজানের ভূ-প্রকৃ্তিক সম্পদ-



পাহাড়তলীর পলল ভূমি ঃ

রাউজান উপজেলার পূর্ব ও উত্তর পূর্ব পাহাড়, উত্তরাংশ, পূর্বাংশ ও দক্ষিনাংশের কিয়দাংশ পাহাড়তলীর পলল ভূমি এবং দক্ষিন ও দক্ষিন পশ্চিমাংশ কটাল পলল ভূমি দ্বারা গঠিত।রাউজানের পাহাড়তলীর পলল ভূমির মোট পরিমাণ প্রায় ৬৫৭১ হেক্টর।এলাকাটি উপজেলার শতকরা প্রায় ২৫.৮ ভাগ।এ পলল ভূমি প্রায় সমতল এবং উঁচু-নিচু ভূমি দ্বারা গঠিত।এসব উঁচু ভূমি সাধারণতঃ বর্ষাকালে প্লাবিত হয় না।

আর নিচু ভূমিসমূহ বর্ষাকালে বৃষ্টির পানিতে স্বল্প গভীরভাবে প্লাবিত হয়।তাছাড়া অত্র এলাকার কোথাও কোথাও আবার বর্ষাকালে অতি বৃষ্টির দরুন সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়।



কটাল পলল ভূমি ঃ- এখানকার কটাল পলল ভূমির আয়তন প্রায় ৬৩৮১ হেক্টর।যা উপজেলার শতকরা প্রায় ২৬.৩৯ ভাগ।এ এলাকাটি অপেক্ষাকৃ্ত নিচু, প্রশস্থ ডাংগা ও বিল দ্বারা গঠিত।এ পলল ভূমির উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে অনেক খাল।এসব খালে নিয়মিত জোয়ার-ভাটা সংঘটিত হয়।এখানকার ডাংগা ভূমি সাধারণতঃ বর্ষাকালে অগভীরভাবে এবং বিলাঞ্চল অগভীর থেকে মাঝারি গভীরভাবে বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়।এলাকাটি আবার

বর্ষাকালে অতি বৃষ্টির দরুন পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে থাকে।



পাহাড়ি অঞ্চল ঃ

রাউজান উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চলের আয়তন প্রায় ৬২৬৬ হেক্টর।যা উপজেলার মোট আয়তনের শতকরা প্রায় ২৫.২৮ ভাগ।পাহাড়গুলো নরম পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত।এখানে মাঝারি, উঁচু ও নিচু পাহাড় দেখা যায়।মাঝারি নিচু পাহাড়গুলো অধিক খাড়া ও মৃদু ঢালু এবং এ পাহাড়সমুহ সরু উপত্যকা দ্বারা বিভক্ত।নিচু পাহাড়গুলো অনুচ্চ এবং মৃদু থেকে খাড়া ঢাল, প্রশস্থ প্রায় সমতল চূড়া বিশিষ্ট।নিচু পাহাড়গুলো প্রশস্থ সরু উপত্যকা দ্বারা বিভক্ত।নিচু পাহাড়ের মৃদু ঢালে মৃত্তিকা ক্ষয় অপেক্ষাকৃ্ত কম বিধায় এখানে সাধারণতঃ গভীর মাটি দেখা যায়।











ঃরাউজানের পানি সম্পদঃ

রাউজানের ভূপৃষ্ঠস্থ পানির মূল উৎস হচ্ছে পাহাড়ি ছড়া, নদী-নালা-খাল, দীঘি এবং পুকুরসমুহ।এ উপজেলার উত্তর সীমানা দিয়ে সর্তা খাল ও পশ্চিম সীমানা বরাবর হালদা নদী প্রবাহিত।উপজেলার পূর্বাংশে অবস্থিত পাহাড়ি এলাকা থেকে অনেকগুলো পাহাড়ি ছড়ার উৎপত্তি হয়েছে।উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত মুকদারা, কাগতিয়া ইত্যাদি খালসমুহই প্রধান।এছাড়া আর খালও রয়েছে অনেক।যেমন-ডোমখালী, ডাবুয়া প্রভৃতি।উপজেলার দক্ষিন সীমানা দিয়ে কর্ণফূলী নদী প্রবাহিত হচ্ছে।উল্লিখিত সব নদী-খালে সারা বছর নিয়মিত জোয়ার-ভাটা প্রবাহিত হয়।তাই এখানে প্রধানতঃ ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগস্থ পানির সাহায্যে সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ পরিচালিত হয়।এসব নদী-খালের নাব্যতার ফলে নৌ পথে নৌকা ও লঞ্চ যোগে যাত্রী-মালামাল পরিবহনের বিশেষ উপযোগী।



পুকুর ও দীঘি- রাউজানে রয়েছে অনেক পুকুর ও দীঘি।এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, এ উপজেলায় পুকুরের সংখ্যা প্রায় চার হাজারের কাছাকাছি।এগুলোর মাঝে প্রায় ৩০৮১ টি হচ্ছে আবাদি পুকুর আর বাকী প্রায় ৮৯৮ টি হলো মজা বা অনাবাদি।পুকুরগুলো সাধারণভাবে মাছের চাষ ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত হয়।এখানে রয়েছে ঐতিহাসিক লস্কর উজীরের দিঘী।যিনি একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব।এছাড়া নোয়াজিশপুরের ইউসুফের দিঘীও এতদাঞ্চলে একটা প্রাচীন দিঘী হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত।



রাউজানের ভূ-প্রকৃ্তিক ও মৎস্য সম্পদ:

রাউজানে রয়েছে সুসমৃদ্ধ ভূ-প্রকৃ্তিক ও ঐতিহ্যবাহী মৎস্য সম্পদের ভান্ডার।রাউজানের ভূ-প্রাকৃ্তিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে বিশেষতঃ হালদা নদীর মৎস্য সম্পদ, প্রায় ৪ হাযার পুকুর ও দীঘি।



ঃরাউজানের পানি সম্পদঃ

রাউজানের ভূপৃষ্ঠস্থ পানির মূল উৎস হচ্ছে পাহাড়ি ছড়া, নদী-নালা-খাল, দীঘি এবং পুকুরসমুহ।এ উপজেলার উত্তর সীমানা দিয়ে সর্তা খাল ও পশ্চিম সীমানা বরাবর হালদা নদী প্রবাহিত।উপজেলার পূর্বাংশে অবস্থিত পাহাড়ি এলাকা থেকে অনেকগুলো পাহাড়ি ছড়ার উৎপত্তি হয়েছে।উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত মুকদারা, কাগতিয়া ইত্যাদি খালসমুহই প্রধান।এছাড়া আর খালও রয়েছে অনেক।যেমন-ডোমখালী, ডাবুয়া প্রভৃতি।উপজেলার দক্ষিন সীমানা দিয়ে কর্ণফূলী নদী প্রবাহিত হচ্ছে।উল্লিখিত সব নদী-খালে সারা বছর নিয়মিত জোয়ার-ভাটা প্রবাহিত হয়।তাই এখানে প্রধানতঃ ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগস্থ পানির সাহায্যে সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ পরিচালিত হয়।এসব নদী-খালের নাব্যতার ফলে নৌ পথে নৌকা ও লঞ্চ যোগে যাত্রী-মালামাল পরিবহনের বিশেষ উপযোগী।শুকনা মওশুমে নদীর পানি ব্যবহার করে সেচের মাধ্যমে জমিতে চাষাবাদের কাজ করা হচ্ছে।



পুকুর ও দীঘি- রাউজানে রয়েছে অনেক পুকুর ও দীঘি।এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, এ উপজেলায় পুকুরের সংখ্যা প্রায় চার হাজারের কাছাকাছি।এগুলোর মাঝে প্রায় ৩০৮১ টি হচ্ছে আবাদি পুকুর আর বাকী প্রায় ৮৯৮ টি হলো মজা বা অনাবাদি।পুকুরগুলো সাধারণভাবে মাছের চাষ ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত হয়।এখানে রয়েছে ঐতিহাসিক লস্কর উজীরের দিঘী।যিনি একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব।এছাড়া নোয়াজিশপুরের ইউসুফের দিঘীও এতদাঞ্চলে একটা প্রাচীন দিঘী হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত।



রাউজানের ভূ-প্রকৃ্তিক ও মৎস্য সম্পদ:

রাউজানে রয়েছে সুসমৃদ্ধ ভূ-প্রকৃ্তিক ও ঐতিহ্যবাহী মৎস্য সম্পদের ভান্ডার।রাউজানের ভূ-প্রাকৃ্তিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে বিশেষতঃ হালদা নদীর মৎস্য সম্পদ, প্রায় ৪ হাযার পুকুর ও দীঘি।শুকনা মওশুমে এসব নদী ও পুকুরের পানি ব্যবহার করে সেচের মাধ্যমে জমিতে চাষাবাদের কাজ করা হচ্ছে।









রাউজানের মৎস্য প্রাপ্তির প্রধান ক্ষেত্রগুলো হলো-



১।নদী বা প্রাকৃতিক জলাশয় - নদী বা প্রাকৃতিক জলাশয় হলো নদী-খাল, বিল-ঝিল, হাওড়-বাঁওর ইত্যাদি।এসব জলাশয়ে পাওয়া যায় মিঠা পানির মাছ।যেমন-রুই, কাতলা, মৃগেল, বাউস, কালি বাউস, আইড়, বোয়াল, চিতল, বাটা, চিংড়ি ইত্যাদি।



হালদা নদীর নামকরণ ঃ

কথিত আছে যে, খৃষ্টীয় চতুর্দশ শতকে অর্থাৎ বাংলার স্বাধীন সুলতানী শাসনের শুরুর দিকে, হযরত বখতিয়ার মাহি সওয়ার (রহঃ) নামে একজন অলী আল্লাহ, পূর্ববঙ্গে ইসলাম প্রচারের উদ্দ্যেশে সুদুর ইরাকের সেই ঐতিহাসিক কারবালার নিকটবর্তী ফোরাত নদী থেকে এক বৃহদাকৃ্তির মাছের পিঠে সওয়ার হয়ে পারস্য উপসাগর পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগরে এসে পৌঁছান।সাগরের মোহনা বরাবর আরো সামনে অগ্রসর হয়ে তিনি যখন চট্টগ্রামের কর্ণফূলী নদীতে প্রবেশ করেন তখন এ মর্মে গায়েবী নির্দেশ প্রাপ্ত হন,“উনযুর হা উলায়ি এয়া বখতিয়ার”, অর্থাৎ - ‘তোমার সামনের দিকে দৃষ্টি প্রসারিত কর, হে বখতিয়ার, এটাই তোমার গন্তব্য!’ কর্ণফূলী নদীর যে অংশে এসে তিনি অবতরণ করেছিলেন সে অংশের নামকরণ করা হয় হালদা নদী। কথিত আছে যে, এদেশে আগমণের পর তিনি বর্তমান চট্টগ্রাম শহর থেকে ৫/৭ মাইল দুরবর্তী কালুরঘাট সেতুর নিকট নিকটস্থ তৎকালীন হালদা নদীর তীরে অবতরণ করেন।মতান্তরে তিনি ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন নদীর তীরে অবতরণ করেছিলেন ।এই ‘হাউলায়ি’ শব্দের অপভ্রংশ থেকে হালদা নামটি উৎপন্ন হয়েছে বলে কিংবদন্তী রয়েছে।যদিও কিংবদন্তী ইতিহাসের অংশ নয়, তবুও সাধারণ মানুষজন এসবে বিশ্বাস করে।



মাছের পিঠে আরোহণ করে তরঙ্গ বিক্ষুদ্ধ উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দিয়েছিলেন বিধায় তাঁকে ‘মাহি সওয়ার’ আখ্যায় আভিহিত করা হয়।তাঁর কয়েকপুরুষ পরবর্তী বংশধর হলেন ঢাকার আজিমপুর দায়রা শরীফের প্রতিষ্টাতা হযরত শাহ্ সূফী দায়েম(রহঃ)।



উৎস ও গতিপথ ঃ পার্বত্য চট্টগ্রামের বনোতলী পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে হালদা নদী ফটিকছড়ি উপজেলার উত্তর পূর্ব প্রান্ত দিয়ে চট্টগ্রামে প্রবেশ করেছে।এরপর এটি আরো দক্ষিন পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে বিবিরহাট, নাজিরহাট, হাটহাজারী হয়ে সর্তার ঘাট দিয়ে প্রবেশ করেছে রাউজান উপজেলায়।রাউজানে এসে এটি আরো দক্ষিন দিকে গিয়ে হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা গ্রাম অতিক্রম করেছে। এরপর হালদা নদী মোবারক খান খীল গ্রামের পাশ দিয়ে সোনাই মূখ ও বিনাজুরী হয়ে কাগতিয়া অতিক্রম গিয়ে পৌঁছেছে।এরপর এটি পশ্চিম গুজরা, কেরানীহাট, উরকির চর, লাম্বুর হাট, কচুখাইন পার হয়ে কালুর ঘাট দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে পতিত হয়েছে।এভাবে হালদা নদীর মোট দৈর্ঘ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ মাইল যা প্রায় ৮১ কিলোমিটারের সমান।









হালদা নদীর মৎস্যক্ষেত্র – ‘হালদা নদী’তে রয়েছে দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র।এছাড়া হালদা নদী হলো সারা বিশ্বে স্বাদু পানির মাছের জন্যও একমাত্র স্বাভাবিক তথা প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র।হালদা নদীতে অবস্থিত প্রাকৃতিকভাবে মাছের ডিম প্রজননের এ ক্ষেত্রটি পূর্ব বঙ্গের মৎস্য চাষ এবং আহরণের জন্য অতি প্রাচীনকাল থেকেই খ্যাতি ও গুরুত্ব অর্জন করেছিল।এখান থেকেই এককালে সারা পূর্ব বঙ্গে ইন্ডিয়ান কার্পস এর পোনা চালান যেতো।



একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী দেখা যায় যে, “মা মাছেরা নদীতে ডিম ছাড়ার পর প্রায় দুই হাজার নৌকা নিয়ে স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা নদী থেকে এসব নিষিক্ত ডিম আহরণ করেন।গড়দুয়ারা স্লুইচ গেট, কান্তর আলী হাট, চৌধুরী হাট, নয়া হাট, সিপাহীর ঘাট, বংশাল ঘাট, পোড়ালীয়া ঘাট, রামদাশ হাট, ও মদুনা ঘাট থেকে মা মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়”।তখন হাজার হাজার মানুষ নৌকা নিয়ে সোৎসাহে বেড়িয়ে পড়ে।আর দিন-রাত কাটিয়ে দেয় মাছ ধরার নৌকায়।হালদা নদীর দু’ তীরের গ্রামগুলো জুড়ে গড়ে উঠেছে স্থানীয় প্রযুক্তিতে মা মাছের ডিম থেকে পোনা ফোটানোর প্রক্রিয়া।যুগ যুগ ধরে বংশানুক্রমে এখানে চলে আসছে এ ব্যবসা।



কার্প(রুই,কাতলা,মৃগেল,বাউস)জাতীয় মাছের জন্য ‘বিশ্বের একমাত্র প্রাকৃ্তিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র’ হালদা নদীর দু’পাশে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা শত শত রেনু পোনা চাষের খামারে খনন করা হয়েছে বহু সংখ্যক কুয়া।বর্ষার প্রথম বর্ষণের পর মা মাছেরা হালদা নদীতে এসে ডিম পাড়ে।সে ডিম আহরণ করে কুয়ায় সংরক্ষণ করা হয়।তারপর কুয়ার পানিতে নিয়মিত জোয়ার-ভাটার পানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রেনু পোনা উৎপাদন করা হয়।মওশুম আরম্ভ হলে হালদা নদীর দুই তীরে শুরু হয় রেণু পোনা আহরণের মহোৎসব। সারা দেশ থেকে পাইকার, ব্যবসায়ী ও মাছ চাষীরা এসে কিনে নিয়ে যায় এখানকার রেণূ পোনা।তাঁদের ব্যবসার পরিমানও কম নয়, প্রতি মওসুমে প্রায় শত কোটি টাকা।এতে কয়েক হাযার লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে।ফলে সুখ-স্বাচ্ছ্যন্দের মুখ দেখছে এলাকার কর্মজীবী পরিবারের মানুষজন।



তবে দূ্ঃখের বিষয় যে, বর্তমানে মা মাছের নিষিক্ত ডিমের পরিমান আশংকাজনকভাবে কমে গেছে।তাছাড়া ডিম সংগ্রহকারীদের মতে আজকাল সময়মতো মা মাছেরা নদীতে ডিম ছাড়ছেনা।বিশেষজ্ঞগণের মতে এর কারণ হলো, গড়দুয়ারা এলাকায় বাঁক কেটে নদীর পথ পরিবর্তন, আবহাওয়ার পরিবর্তন, অপরিকল্পিতভাবে সংযোগ খালগুলোর স্লুইচ গেট নির্মাণ, নদী দূষণ ইত্যাদি।



এছাড়াও সর্তা, মুকদারা, কাগতিয়া প্রভৃতি নদী আর ডোমখালী, ডাবুয়া প্রভৃতি খালগুলোতেও বিভিন্ন জাত ও স্বাদের প্রচুর পরিমাণ মাছ পাওয়া যায়।যা টিকিয়ে রেখেছে এতদাঞ্চলের শ্রমজীবী জেলে পরিবারগুলোকে।তাঁদের আহরিত মাছ এলাকার মানুষের আমিষের চাহিদা মিটাচ্ছে।



আবার হ্যাচারী স্থাপন করেও কৃ্ত্রিমভাবে মাছের পোনা উৎপাদন করা হচ্ছে।যদিও অনেকক্ষেত্রে এগুলোর গুনগত মান আসল রেনু পোনার সমকক্ষ হয় না।আগেই বলেছি সেই বৃটিশ যুগেও এখানকার রেণু পোণা সারা বাংলায় রপ্তানী হতো ‘ইষ্টার্ন কার্পস’ নামে।তাই কাব্য করে বলতে ইচ্ছে হয় ‘হালদার পোণা, বাংলার সোনা’ ‘হালদার মৎস্য, বাংলার গর্ব’।



সুখের কথা, বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরের অদুরবর্তী হালদা নদীর উৎস মুখ থেকে মদুনা ঘাট পর্যন্ত মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্রকে সরকারীভাবে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে।স্বাদু অর্থাৎ মিঠা পানির মাছের জন্য বিশ্বের একমাত্র এ প্রাকৃ্তিক প্রজনন ক্ষেত্রটির উন্নয়ন ও সংরক্ষণ করার জন্য গৃহীত হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকার বিভিন্ন স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্প।



এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, একেকটি মা মাছ সারা জীবনে প্রায় ৪/৫ কোটি টাকা মুল্যের ডিম ছাড়ে।কিন্তু অতি দূঃখের বিষয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যাচ্ছে যে, কিছু সংখ্যক অতি লোভী, অবিবেচক ও সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী ব্যক্তি হালদা নদীতে আসা এসব ডিমওয়ালা মা মাছগুলো কে নির্বিচারে শিকার করে বাজারে বিক্রি করছে। এ ব্যপারে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা একান্ত প্রয়োজন।সংশ্লিষ্ট সরকারী বিভাগগুলোর এ বিষয়ে সক্রিয়ভাবে তৎপর হওয়া আবশ্যক।আইন অমান্যকারীদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।তবেই বিদ্যমান পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব।এছাড়া হাটহাজারী এলাকায় স্থাপিত বিভিন্ন শিল্প কারখানার বর্জে প্রতিনিয়ত দূষিত হয়ে চলেছে আমাদের প্রিয় হালদা নদীর মহামূল্যবান প্রাকৃ্তিক মৎস্য ভান্ডার।ফলে নষ্ট হচ্ছে এখানকার জীব বৈচিত্র, প্রাকৃ্তিক ভারসাম্য এবং হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির শত রকম মাছ।যথাশিঘ্র এ নদী দূষন বন্ধের বিরুদ্ধে যথাবিহিত ব্যবস্থা না নিলে আচিরেই ধংশ হয়ে যাবার সমূহ আশংকা দেখা দিয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননের এ অমূল্য আধার হালদা নদী।

হালদা নদীকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ’(WorldHeritage) হিসেবে ঘোষনা করা আজ সময়ের দাবী।সকল রাউজানবাসী জনগণকে তাই আজ একযোগে বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারী ফোরামে তাঁদের মহামুল্যবান এ প্রাকৃতিক মৎস্য ভান্ডার ও প্রজনন ক্ষেত্রটিকে রক্ষার দাবী জোর গলায় উত্থাপন করতে হবে।





২।কৃত্রিম জলাশয়ের মাছ- এসব জলাশয়ের মধ্যে রয়েছে পুকুর, দীঘি ইত্যাদি। এগুলোতে পাওয়া যায় রুই, কাতলা, মৃগেল, বাউস, কালি বাউস, শোল, গজার প্রভৃতি।

এতদাঞ্চলের পুকুর ও জলাশয়গুলোতে আজকাল কৃ্ত্রিম উপায়ে বিভিন্ন প্রকার কার্প এবং নাইলোটিকা জাতীয় মাছের চাষ করা হচ্ছে।যা এ এলাকার বিপুল সংখ্যক জন গোষ্ঠীর আমিষের চাহিদা মিটাচ্ছে এবং এর পাশাপাশি মৎস্য চাষ সমাজে একটা একটা সম্মানজনক পেশা হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে।











২।কৃত্রিম জলাশয়ের মাছ- এসব জলাশয়ের মধ্যে রয়েছে পুকুর, দীঘি ইত্যাদি। এগুলোতে পাওয়া যায় রুই, কাতলা, মৃগেল, বাউস, কালি বাউস, শোল, গজার প্রভৃতি।

এতদাঞ্চলের পুকুর ও জলাশয়গুলোতে আজকাল কৃ্ত্রিম উপায়ে বিভিন্ন প্রকার কার্প এবং নাইলোটিকা জাতীয় মাছের চাষ করা হচ্ছে।যা এ এলাকার বিপুল সংখ্যক জন গোষ্ঠীর আমিষের চাহিদা মিটাচ্ছে এবং এর পাশাপাশি মৎস্য চাষ সমাজে একটা একটা সম্মানজনক পেশা হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে।



4| কৃষিজ ও বনজ সম্পদ: cvb







প্রাণীজ সম্পদ – গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগী পালন -

বিগত কয়েক দশক ধরে পোল্ট্রি তথা হাঁস-মুরগী পালন একটি লাভজনক শিল্প হিসেবে অত্র এলাকায় বিশেষ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।বিপুল উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদিত দ্রব্যাদির ব্যাপক বিক্রয়/চাহিদা এর অন্যতম কারন।ফলে বিপুল সংখ্যক খামারী এ সকল শিল্পে বিনিয়োগ করে লাভবান হয়েছেন।বহু সংখ্যক গ্রামীন গৃহিনীও হাঁস-মুরগী পালন করে সংসারে বাড়তি আয়ের দ্বারা সংসারে সুখ-স্বাচ্ছ্যন্দ ফিরিয়ে এনেছেন।পোল্ট্রী ব্যবসার উচ্চ মাত্রার প্রবৃ্দ্ধি অর্জনের সুফল স্বরূপ এ এলাকার মানুষ-জন সুলভ মূল্যে ও অতি সহজে তাঁদের প্রয়োজনীয় আমিষের চাহিদা মিটাচ্ছে।







†jvKMvu_v- মালকা বানু ও মনু মিয়ার প্রেম কাহিনী



রাউজানের সাংস্কৃতিক ও লোক ঐতিহ্য-

ক।রাউজানের ঐতিহ্যবাহী মেলা-

১।বৈশাখী মেলা ঃ এ মেলা আয়োজনের উপলক্ষ হলো বর্ষবরণ।১লা থেকে ৩রা বৈশাখ মেলা পর্যন্ত তিন দিনব্যপী চলে এ মেলা।বৈশাখী মেলায় বিভিন্ন রকম কুটির শিল্পজাত পণ্যাদি কেনাবেচা করা হয়।শিকা, চটের ব্যাগ, ঝুড়ি,পাটের তৈরী বাটি ও পেয়ালা, বাঁশের পাখা, ডালা, কুলা, চালুনী, মাছ ধরার চাঁই-জাল, বেতের মোড়া ও আসবাবপত্র, নারিকেলের মালার তৈরী পুতুল, তৈজস পত্র, মাটির পুতুল, খেলনা, রান্নার হাড়ি পাতিল, এলুমিনিয়ামের ডেকচি পাতিল ইতাদি সহ ঘরকন্যার যাবতীয় সামগ্রী পাওয়া যায় এ মেলায়।

এছাড়া আরো বেশ ক’য়েকটি মেলা আয়োজিত হয় এ রাউজানে।সেগুলো হচ্ছে – অষ্টমী পূর্ণিমার মেলা (২০-২৩ আষাঢ়), আশ্বিনী পূর্ণিমার মেলা (১৫-১৮ আশ্বিন), মাঘী

পূর্ণিমার মেলা(মাঘ মাসের পূর্ণিমার দিন থেকে পাঁচ দিন)।

জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল শ্রেণী-পেশার লোক খুবই উৎসাহ ও উদ্দীপণার সাথে এসব মেলায় অংশগ্রহণ ও কেনা-কাটা করে থাকেন।







মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.