নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এস এম শাহনূর

কবি,লেখক ও গবেষক।

এস এম শাহনূর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাহার আটা গ্রামের নামকরণের ইতিকথা।

০২ রা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:২৫

বাহার আটা গ্রামের নামকরণের ইতিকথা।
----------------------------------------------------
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলাধীন ২নং মেহারী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত ছোট্র একটি গ্রাম বাহার আটা।উত্তর দক্ষিণে প্রায় আধা মাইল লম্বালম্বি অত্র গ্রামের জনসংখ্যা ৮০০ জনের অধিক নয়।লোকমুখে শোনা যায় মোঃ সরব আলী ওরফে পচু গাজী নামক এক ব্যক্তি সপরিবারে দক্ষিণের কোন এক জনপদ থেকে এখানে এসে প্রথম বসতি স্থাপন করেন।বংশগতির ধারাবাহিকতায় পচু গাজীর পরবর্তী প্রজন্ম আজও পচু গাজীর গোষ্ঠী নামে পরিচিত। অত্র গ্রামের কৃতি সন্তান মরহুম ডাঃআব্দুর রাজ্জাক; চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য কসবা উপজেলার এক কিংবদন্তী ব্যক্তি।জোনাকিপোকার মৃদু আলো ছাড়া যে গ্রামের লোকজন নিকষকালো রাতের পথ দেখতেন না,সেই বাহার আটা গ্রামে যিনি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ বাহার ছড়িয়েছেন তিনি হলেন সাবেক বিদ্যুৎ সচিব মোঃ জামসেদ চৌধুরী।
মুক্তিযোদ্ধা এ.কে. ফজলুল হক: যিনি বাহার আটা ও পুকুরপাড় গ্রামের ঈদগাহ স্হাপনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

♦এছাড়া আরো বহু জ্ঞানী,গুণী মানুষজন তাঁদের কর্মের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত গ্রামের সুনাম বয়ে আনছেন।তাঁদের মধ্যে

★আঃ হান্নান রনি(এ.এস.পি) :যিনি মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম(দারোগা)-এর ছেলে।
★ডাঃরুনা আহমেদ:(বড় বাড়ির পুত্র বধূ)
★মোঃ রুহুল আমীন-এম.ডি.
বাংলাদেশ থাই এলুমিনিয়াম লিঃ।
★ডাঃ আহসান হাবিব (এম.বি.বি.এস)
★আবু কাউসার: (রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষানুরাগী)
★রাজনীতিবিদ আঃ রশীদ: যিনি বাহার আটা ও পুকুরপাড় গ্রামে সর্ব প্রথম আওয়ামীলীগের বীজ বপন করেন।
★প্রভাষক মাসুদ রানা: আহবায়ক সদস্য,কসবা উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও সাধারন সম্পাদক, স্বাধীনতা মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদ কসবা উপজেলা শাখা।বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য।

♦পুকুরপাড়ঃ লেশিয়ার গ্রামের রঞ্জিত কর নামক এক ধন্যাঢ্য হিন্দু ব্যবসায়ী বাহার আটা গ্রামে একটি গভীর ও বিশাল পুকুর খনন করেন।সুপেয় মিঠা পানি আর নানাবিধ সুবিধার কারণে আস্তে আস্তে পুকুরের চারপাশে জনবসতি ও ঘনবসতি গড়ে উঠে।পুকুরের চারপাশে বসবাস করা লোকজন নিজেদেরকে পুকুরপাড়ের অধিবাসী বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

♦নানান মত আর পেশার ৩টি গোষ্ঠী বা বংশীয় মানুষের এক অপূর্ব মেলবন্ধন আজকের বাহার আটা গ্রাম।গোষ্ঠী গুলোর নামঃ
১।পচু গাজী ,
২।ইডা গাজী ও
৩।বড় বাড়ী (গ্রামের বড় বড় ঘর ছিল যেখানে বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ এখানে এসে বাস করত।)ও

♦এ ছাড়া এখানে রয়েছে
১টি মসজিদ।
১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
১টি মসজিদ ভিত্তিক গণশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
১টি কবরস্থান।
১টি ঈদগাহ।
১টি ক্লাব: ড. বাড়ী ফাউন্ডেশন(প্রস্তাবিত)।

♦সীমানাঃ
উত্তরে পুরকুইল গ্রাম।
দক্ষিণে বুগীর বামুটিয়া গ্রাম।
পশ্চিমে ঈশান নগর গ্রাম।এবং
পূর্বে খেওড়া গ্রাম।

♦বাহার আটা গ্রামের নামকরণঃ
নাম দিয়ে কী হয়, নামের মাঝে পাবে তুমি আসল পরিচয়।’ নামকরণ বা নাম রাখা নিয়ে এ দেশে বহু ঘটনা আছে। এ সব ঘটনা নিয়ে রটনাও আছে। তবে এ কথা ঠিক হাজার বছর ধরে বাঙালি এই কাজে বেশ পারঙ্গম। এর প্রমাণ সর্বত্র। যেমন নদ-নদীর নাম। গ্রাম-জনপদের নাম। ফুল-পাখীর নাম ইত্যাদি।
গবেষণা ও বিভিন্ন তথ্যাদি থেকে জানা যায়,কোন এক সময় এখানে বড় বড় বৃক্ষাদির সমাহার ছিল। স্থানীয় ভাষায় লোকজন গাছগাছালি পরিপূর্ণ এমন এলাকাকে আড়া(জঙ্গল)বলত।অবশ্য শুধু এখানটা ছাড়া তখনও অনতিদূরে লোকালয় গড়ে উঠেছিল।আর এটি বেশী দিনের কথা নয়।ধারনা করা হয় ১৫০ বছর পূর্বে এখাানে প্রথম জনবসতি গড়ে উঠে।
পাশেই ছিল যৌবনা রাজার খালের প্রবাহ।যা প্রতিদিনই জোয়ার ভাটার ডাকে সাড়া দিত।জেলেরা জাল ফেলে মাছ ধরত।নাওয়ের মাস্তুলে পাল উড়িয়ে গলা ছেড়ে জারি সারি গান গাইত মাঝি মাল্লার দল।তবে কালের প্রবাহের সাথে রাজার খালের প্রবাহ আজ মৃতপ্রায়।এখানে ছিল উত্তরাঞ্চলের মানুষজনদের জন্য কুটি বাজার তথা কুমিল্লা যাওয়া আসা করার একমাত্র পায়ে হাটার রাস্তা।এ গেয়ো রাস্তা ধরে চলার পথে ক্লান্ত পথিক যেখানে এসে থমকে যেত,মাথার ভারী বোঝা কিংবা কাঁধের ভার রেখে কৃষক বা গ্রাম্য ব্যবসায়ীরা যেখানে এসে গাছের সৌন্দর্যময় সুশীতল ছায়ায় একটু বিশ্রাম নিত;সেই স্থানটিই আজকের বাহারহাটা>বাহারআটা গ্রাম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.