নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এস এম শাহনূর

কবি,লেখক ও গবেষক।

এস এম শাহনূর › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গ: ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)

১০ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:০১

হাবীবে খোদা রাহমাতুলল্লিল আলামীন হুজুর আকরাম (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) হচ্ছেন সর্বযুগের সর্বকালের শ্রেষ্ঠতম আদর্শ। আল্লাহ পাক তাঁকে “সিরাজাম-মুনিরা”বা উজ্জ্বল প্রদীপরূপে প্রেরণ করতঃ’ওয়া রাফানা লাকা যিকরাকা'(আমি আপনার স্তুতিকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছি) এর সুমহান তাজ পরিধান করিয়েছেন।তাই কারো পক্ষেই নবীজির সামান্যতম শানও বর্ননা করা সম্ভব নয়।বস্ততঃস্বয়ং আল্লাহ তাঅালা প্রতিনিয়তই তাঁর মাহবুব সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর উপর সালাত পাঠ করছেন।

إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর। [ সুরা আহযাব ৩৩:৫৬ ]
জ্বিন ইনসান ফেরেশতা তথা গোটা সৃষ্টিই তাঁর উপর দরূদ পেশ করছে অহরহ, সর্বত্রই তাঁর স্তুতি-তাঁর গীত।কুরআনুল কারীমের শুরু হতে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি হরফ আল্লাহর পিয়ারা হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর মহান শানের জীবন্ত দলিল।আর তাই তো মা আয়েশা সিদ্দীকা রাদি আল্লাহু অানহা ইরশাদ করেছেন,”কুরঅানই আল্লাহর নবীর চরিত্র”।মাহবুবে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এবং এ সুবিশাল মর্যাদার বিস্তৃতি ও ব্যাপকতার অনুভূতি যারা স্বীয় আকিদা এর বিশ্বাসে গেঁথে নিতে পারেনি,তারা ঈমান এবং ইসলামের মজা পায়নি।পেতে পারেনা।এরা ঈমানের ক্ষেত্রে এতই বিপর্যস্ত যে,অনেক সময় তারা নূরনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম কে সাধারন মানুষের কাতারে এনে অবমূল্যায়ন করতেও দ্বিধাবোধ করেনা।অথচ হুজুর আকরাম সাল্লাল্লাহু অালাইহে ওয়াসাল্লাম এর খাটি মুহাব্বত ও তাঁর মহান শানের উপলব্দিই হচ্ছে ঈমানের মূল কথা।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক এরশাদ করেন,”আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্ব জগতের প্রতি রহমত রূপে প্রেরন করেছি।”(পারা-১৭,সুরা আম্বিয়া,রুকু-৭)নবীগণ,রাসূলগণ ফেরেশতা এবং মুকাররাবিন প্রত্যেকেই প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম হতে রহমত প্রাপ্ত হয়েছেন। কাফিররাও সর্বোতভাবে তাঁর থেকে রহমত পেয়েছে।কিয়ামতে হাশরের ময়দানে হিসাব নিকাশ শুরু করা এবং নাজাত দেয়াও নবীজির ওসীলাতেই হবে।হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর আগমনে আনন্দ প্রকাশের কারণেই আবু লাহাবের জন্য সোমবার দিন আযাব সহজ করে দেয়া হয়েছে।নবীজির বরকতেই আবু তালিবের উপর আযাব কমিয়ে দেয়া হয়েছে।(হাদীস) এই নশ্বর জগতে তিনি রহমত।কিয়ামতে,মিযানে,হাউজে কাউছার,জান্নাতে,গুনাহগার উম্মতের জন্য জাহান্নামে বস্ততঃ সর্বত্রই তাঁর রহমত ব্যাপৃত।
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম কে প্রেরণেের জন্য যুগে যুগে সমস্ত নবী ও রাসূলগণ প্রার্থনা করেছেন।তাঁর ওসীলায় আদম আলাইহিস সালাম এর তওবা গৃহীত হয়।যাঁর আনুগত্য আল্লাহর আনুগত্য এবং খোদা প্রাপ্তির পূর্বশর্ত বলে বিবেচিত হয়।যাঁকে আল্লাহ পাক সতর্ককারী ও সুসংবাদ দাতা রূপে প্রেরণ করেছেন।যাঁর আগমনে তামাম মাখলুক আনন্দে মাতোয়ারা সেই নবীজির উম্মত হয়ে আমরা কেন আনন্দিত হবোনা।আমরা কেন খুশি প্রকাশ করবোনা।তবে আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা যে আমরা শ্রেষ্ঠ নবীর শ্রেষ্ঠ উম্মত।তাই অবশ্যই ইসলামী নিয়ম নীতির মধ্যে থেকে আমাদের কে তা উদযাপন করতে হবে।

➤ঈদ ও মীলাদ শব্দের অর্থ আসলে কি?
• “ ঈদ বলা হয় কোন দুশ্চিন্তা বা কোন রোগ অথবা কোন আকাংখা বা এ ধরনের অন্যান্য বিষয়, যা বারবার ফিরে আসে এবং এমন প্রত্যেক দিনকে ঈদের দিন বলা হয়, যে দিন কোন সম্মানিত অথবা প্রিয়তম ব্যাক্তির স্মরণে মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।”
((আরবী অভিধানের অন্যতম কিতাব “আল মুজামুল ওয়াসিত” এর ৬৩৫ পৃষ্ঠা )) ।



• “ ঈদ বলতে এমন প্রত্যেক দিনকে বুঝায়, যে দিনে সম্মেলন হয় অথবা সম্মানিত মহান ব্যাক্তির স্মরণে অথবা গুরুত্বপূর্ণ কোন ঘটনার স্মরণে কোন অনুষ্ঠান হয়।”
(( “আল মুনজিদ”এর ৫৩৬ পৃষ্ঠায় ))।



• আল্লামা রাগেব ইস্পাহানী (রহ.) তাঁর ‘মুফরাদাত’ গ্রন্থের ৩৫২ নং পৃষ্ঠায় লিখেন,- “ঐ দিন (ঈদের দিন) হল খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দ-উতসব করার দিন। সুতরাং ঈদ শব্দটি এমন প্রত্যেক দিনের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে যে দিন কোন আনন্দ-উতসব করা হয়। এ দিকে ইশারা করেই আল্লাহ্‌ তা’আলার এ বানী, যা হযরত ঈসা (আলায়হিস সালাম) বলেছেন, “হে আল্লাহ্‌! আমাদের উপর আকাশ থেকে একটি খাদ্য ভর্তি খাঞ্চা নাজিল করুন।তা আমাদের জন্য অর্থাৎ আমাদের প্রথম ও পরবর্তী সবার জন্য ঈদ হিসেবে গণ্য হবে এবং আপনার পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন।” (সূরা মায়েদাঃ১১৪)
উল্লেখ্য যে, পবিত্র আল কোরআনে এই একটি মাত্র আয়াতে ‘ঈদ’এর কথা বলা হয়েছে।



• “ ঈদ হল মুসলমানদের আনন্দের দিন, খুশির দিন, খুশির কোন অনুষ্ঠান ও খুবী আনন্দিত হওয়া।” ((“ফিরুজুল লুগাত” এর ১২৭ নং পৃষ্ঠায় ))।



• “ ঈদ এমন প্রত্যেক দিনকে বলা হয়, যে দিন কোন সম্মানিত মহান ব্যাক্তির অথবা কোন গুরুত্বপূর্ণ বড় ঘটনা স্মরণে কোন সভা অনুষ্ঠিত হয়।” ((“মেসবাহুল লুগাত” ৫৮৩ পৃষ্ঠায় )) ।

মীলাদ শব্দের অর্থ সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন,খাতামুন্নব্যিয়িন,নূরে মোজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছিফত করা ও তাঁর প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ
করা। অতএব, তা আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সহ সবারই সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।
আমরা যেভাবে মজলিস করে মীলাদ মাহফিল করে থাকি তা খোদ আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুগণের যামানাতেই ছিল।
এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা তাঁর নিজ গৃহে
সমবেত ছাহাবীগণকে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত(জন্ম) শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে
শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশী প্রকাশ করেছিলেন এবং আল্লাহ পাক-এর প্রশংসা তথা তাছবীহ তাহলীল পাঠ
করছিলেন এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর উপর (ছলাত- সালাম) দুরূদ
শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তথায় উউপস্থিত হলেন। (তিনি যখন উপস্থিত হলেন, সমবেত লোকজন দাঁড়িয়ে অর্থাৎ
ক্বিয়াম শরীফ করে ছলাত ও সালাম পেশ
করতঃ আসনে বসালেন) তিনি লোকজনের
মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে
তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
“তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত
ওয়াজিব। (সুবুলুল হুদা ফি মাওলিদে মোস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ও
মীলাদে আহমদী, পৃষ্ঠা ৩৫৫)
আরো ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে হযরত আবূ আমের আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর গৃহে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন যে, তিনি তাঁর সন্তানাদি এবং আত্মীয়- স্বজন, জ্ঞাতী-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত(জন্ম) শরীফের ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেন
এবং বলছেন, এই দিবস অর্থাৎ এই দিবসে রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যমীনে তাশরীফ এনেছেন।
(তিনি যখন উপস্থিত হলেন সমবেত লোকজন দাঁড়িয়ে কিয়াম শরীফ করে
ছলাত ও সালাম পেশ করতঃ আসনে বসালেন।)তিনি লোকজনের মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ
তায়ালা তাঁর রহমতের দরজা তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত ফিরিস্তাগণ তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন এবং যে কেউ কিয়ামত পর্যন্ত তোমাদের মত এরূপ
করবেন। তোমার মত সেও নাজাত ও ফযীলত লাভ করবে।” (কিতাবুত তানবীর
ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযির,
ছুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মোস্তফা
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
মিলাদ-ক্বিয়ামের অসংখ্য দলিলের
মধ্যে সামান্য কিছু
নিম্নরূপ :
আল্লাহপাক বলেন ” নিশ্চয় আমি এবং
আমার ফেরেশতাগন আমার হাবিবের প্রতি দরুদ পেশ করে থাকি, সুতরাং মু’মিনগন তোমরাও বেশি করে তাঁর ওপরে দরুদ শরীফ পেশ করো ও আদবের সাথে( বার বার ) তাঁকে সালাম দাও।”( সূরা আহযাব-৫৬,) প্রকাশ থাকে যে মহান আল্লাহপাকের হুকুম মানা ফরজ বলেই পবিত্র কুরআন
শরীফে ” তোমরা ঈমান আনয়ন করো,নামাজ আদায় করো, যাকাত দাও, রোযা রাখ, সামর্থ থাকলে হজ্জ আদায়
করো ” ইত্যাদি হুকুমের কারনে উল্লেখিত বিষয়গুলো মুসলিমদের জন্য পালন করা যদি ফরজ হয়ে থাকে তাহলে সেই আল্লাহপাকেরই হুকুম ” হে ঈমানদারগন তোমরা আমার নবীর ওপরে ( বেশি করে )দরুদ শরীফ পেশ করো এবং আদবের সাথে
তাঁকে (বার বার) সালাম দাও।” (সূরা আহযাব ৫৬)। এই হুকুম পালন করাও মুমিনদের
জন্য কি হবে? বিবেক সম্পন্ন পাঠক গণ চিন্তা করুন।আসুন এই দিনে এবং সদা সর্বদা বেশী বেশী আল্লাহর জিকির ও দয়াল নবীজির প্রতি দরূদ পাঠ করি।
আমীন। আমীন।আমীন।

“সুবেহসাদেক বলছে কিরে?
সেই দিন আর নেইতো দূরে
ঈদে মিলাদুন্নবী(সাঃ) উদযাপিত হবে ঘরে ঘরে।।
মুল্ল্যা মৌলানাদের মাঝে রইবেনা গো আড়াআড়ি
ধরবে সবাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের গাড়ি।।”
“”””””””””'”””””””””””””””””””””””””””””””

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.