![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লোকে কি বলবে ?
মানুষের কাছে অতি প্রয়োজনীয় কোনো কাজের চেয়ে বেশী প্রয়োজনীয় এই ব্যাপারটা।যদি এই কাজটা করি তাহলে লোকে কি বলবে ? এই চিন্তায় মানুষ অস্থির।খেয়াল করে দেখেছি,যারা এই ভ্রান্তলজ্জা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে তারাই কিছু করতে পারে।যার কাজ নিন্দা করা সে করবেই তাই বলে তো কেউ ঘোড়াকে ঘাড়ে নিয়ে চলতে পারেনা।
অযথা একটা নিন্দাভীতির প্রাচীরে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখি আমরা।প্রবাহমান স্রোতের বিপরীতে কোনো কাজ করতে গেলে এই প্রাচীরে বাধাগ্রস্ত হই।কিন্তু সাহস করে এই প্রাচীর ডিঙ্গালে একদিন নিন্দুকেরাই নন্দিত বলে।
হ্যাঁ মানুষ সামাজিক জীব তাই সামাজিক মন্দটাকে এড়িয়ে চলা দরকার।কিন্তু যে কাজটা অপ্রচলিত কিন্তু মন্দ নয় সে কাজটা করতে গেলেও কেন লোকের চিন্তা করতে হবে বা লোকের নিন্দার শিকার হতে হবে ?
এমনকি এটাও দেখেছি মানুষ লোকের চোখে বড় হওয়ার জন্য সুখশান্তি ত্যাগ করতে পর্যন্ত রাজি(!) ভাবছেন সেটা আবার কেমন? একটা সত্যগল্প বলি তাহলে ব্যাপারটা সহজেই বোঝা যাবে।
"একটা মোটামুটি ধনী লোক তার দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়েকে বিয়ে দিলেন একটা অনার্স পড়ুয়া ছেলের সাথে।ছেলেটার বাড়ী মফস্বলে।এলাকার পরিবেশটা এমন যে,মোটামুটি শিক্ষিতা মেয়েই সেখানে বউ হিসেবে যথাযথ।মেয়েটা শ্বশুরবাড়িতে গেলে শান্তিতেই সংসার করতে পারতো।
কিন্তু তার বাবা মানে সে লোকটা মনে মনে ভাবলো,আমার জামাইয়ের তুলনায় আমার মেয়েকে শিক্ষিতই বলা যায়না,আমি একজন ধনী মানুষ,আমার মেয়ে এতো কম শিক্ষিতা,লোকে বলবে কি ?
এরপর সে জামাই-মেয়েকে নিজের বাড়ীতে রেখে পড়াশুনার সুযোগ করে দিলেন।পরিবারের খরচের বাহিরে প্রায় পাঁচ ছয় লাখ টাকা খরচ করে জামাই-মেয়েকে প্রায় পাঁচ বছর যাবত পুষলেন।যখন মেয়েটি অনার্স শুরু করলো এবং ছেলেটি অনার্স শেষ করলো তখন তিনি এই ভেবে ক্ষ্যান্ত দিলেন যে,এখন তো জামাইয়ের তুলনায় আমার মেয়েকে কেউ অশিক্ষিত বলতে পারবেনা।অতঃপর তিনি জামাই-মেয়েকে বিদায় করলেন।
বলাইবাহূল্য,এ পাঁচ বছরে তার পরিবারে প্রচুর অশান্তি হলো।জামাইকে ভালো ভাবে আদর-যত্ন না করলেও তো ফের লোকে খারাপ বলবে,তাই তাদের পিছে অতিরিক্ত খরচ করতে গিয়ে তার সঞ্চিত টাকার অংক তলানীর কাছাকাছি চলে গেলো। ফলে মেয়ে-জামাই বিদায় হওয়ার পরেও তার পরিবারে অশান্তি বিরাজমান রইলো।তবুও তিনি এ কথা ভেবে তৃপ্ত হলেন,'যাক এখন তো কেঊ আমার মেয়েকে অশিক্ষিত বলতে পারবেনা...(!)
এই সমাজে এমন অনেক গল্পেরই প্রতিনিয়ত জন্ম হচ্ছে।
আরো অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছা করছে,কিন্তু ভালো লেখক না বলে লিখতে পারছিনা।
ইতিপ্রান্তে একটা কথা বলি,নিন্দুকের মুখ নিন্দার জন্য সর্বদা খোলাই থাকে,যদি আপনি কান বন্ধ করে নিজের কাজে মগ্ন হতে পারেন তবে একদিন নিন্দুকের মুখও বন্ধ হয়ে যাবে.....
©somewhere in net ltd.