![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তাবলীগের সফরে যে কয়েকটি জায়গায় গেলাম, তার মধ্যে গতবছর আমরা সফর ছিল মূলত মানিকগঞ্জ জেলা শহরে। সেখানেই এই দোস্তের সাথে দেখা।
তিনি কবি আব্দুল আযিয। “হিজলি খালপার জামে মসজিদ” এ থাকার সময় তার সাথে দেখা। অনেকটা ব্যতিক্রমধর্মী অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়েই।
যাদের তাবলীগ সম্পর্কে নুন্যতম অভিজ্ঞতা আছে , তারা জানেন , প্রতিদিন আসরের নামাজের পর এলাকায় দাওয়াতের আমল হয়। তো এর পর আমি আর আমার সাথে রাসেল ভাই, আমরা দুইজন গেলাম চুলার জন্য লাকড়ি জগার করতে। হঠাত শুনি, মসজিদ এর মাইকে ঘোষণা হচ্ছে, “মসজিদে তাব্লিগ জামাত আইসে। এরা নিজের খায় , নিজের পরে, কারো কাছে ধার ধারেনা। সবাই মসজিদে চলে আসেন।” বুঝতে পারছিলাম না এটা কি আসলেই কেউ সবাইকে দাওয়াত দিচ্ছে নাকি আমাদের হেও করার অপচেষ্টা। দেখলাম, এটা আসলেই দাওয়াত ছিল। আর যে মানুশ্তি ঐ কাজটি করেছিলেন, তিনি ঐ কবি, আমাদের দোস্ত।
৬০ নাকি ৭০ তা বুঝতে পারিনি। আমি কখনই এসব ব্যপারে এতো দক্ষ না। কিন্তু এটা বুঝেছি, তিনি যথেষ্ট বয়স্ক হলেও এখন নুজ্য হয়ে পরেন নি। সাবলীলভাবে চলাফেরা, উতফুল্ল্য। নজরুলের ভাষায়, “বারধক্কের জীর্ণাবরনের নিচে মেঘলুপ্ত সূর্যের মত প্রদিপ্ত যৌবন।”
ওইদিন কথা বলে জানলাম, তিনি কবি। আমাদের ঐতিহ্য। গ্রামবাংলার কবি, কবিয়াল ।
তিনি বলছিলেন, ঐ মসজিদ তা বানানোর সময় তিনি গান গেয়ে সাহায্য তুলেছেন। লোকে তাঁকে যখন দেখেছে তখন অনেক সাহায্য করেছে। কিন্তু মসজিদ তা হয়ে যাবার পর যখন দেখা যায় যে, নামাজের সময় মসজিদ ফাঁকা, গ্রামে মানুষ থাকার পরেও তারা মসজিদে আসে না, তখন তার খুবই কষ্ট লাগে।
তার জীবনের কিছু কথাও শুনলাম ঐ উসিলায়। শুনলাম তার অভিজ্ঞতার কথা। তো তিনি একটা ঘটনা বর্ণনা করছেন , “ একবার এক ওয়াজ মাহফিল হইল, আমিও গেলাম, গিয়া দেখি মানুষ নাই। মানুষ সব আশেপাশের দোকানে টিভি দেখে। তখন আমি মঞ্চে উইঠা হুজুরের কাছ থেকে মাইকটা নিয়া গাইতে শুরু করলাম-
অয় আমার দোস্ত, ও বন্ধু
বিল্ডিং কারো সঙ্গে যাবে নাইয়া।
দালান কোঠা বাসা বাড়ি
টেম্পু গাড়ি বাস গাড়ি
সব কিছু যে ছারতে হবে, রোজ হাশরে যাবেনা।
আর কতক্ষন পরে দেখি, সব মানুষ টিভি সাইরা ওয়াজে কি হইতেসে তা দেখার জন্য চইলা আসছে।
আমরা হইলাম কবি। ধরেন, মাইক নিয়া কএক হাযার মাইনশের সামনে কিছু কইয়া ফালাইতে পারি, ভয়ডর পাই না।”
বিশেষ করে তার ডেইযির উদ্দেশ্যে লেখা প্রেম পত্রটাও অসাধারণ। বিশেষ করে, যখন তা একজন বয়স্ক কবির পক্ষে লেখা.....................
“ও ডেইযি, ও ডেইযি,
তোমার জন্য আমি ক্রেইযি”
যদিও এটা পুরটা শোনার শুজগ আমি পাইনি। তবে আমার আরেক জিনি...স (জিনিয়াসের উপরের স্তর) বন্ধু ওটা শুনেছে। আমি ছেশ্তা করব, তার কাছ থেকে ওটা শুনে আপনাদের আবার শোনাবার জন্য।
কারো বাড়ি যদি মানিকগঞ্জ জেলা শহরে হয়, তবে দয়া করে হিযলি খাল্পার মসজিদে ঐ মানুষটির সাথে দেখা করে তার লেখগুলো সংগ্রহ করে নিয়েন। তিনি আখিরাতের উদ্দেশ্যে চলে গেলেও, লেখাগুলা যেন আমাদের মাঝে থাকে।
পরিশেষে, অয় আমার দোস্ত, ও বন্ধু, আজকে এটুকুই........................
©somewhere in net ltd.