নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত (সৌকপ)

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত

আমি আসলে কেউ নই ।

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঁদরনাচ দেখেছেন ?

১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:২৩

আকাশ এতো মেঘলা, হাঁটছি আমি একলা,

হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি আমি ..................সূত্রাপুর,



কাজ থেকে ফিরলাম। আজকে অফিসে তেমন কাজ ছিল না। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে একটা প্রোজেক্টের কাজ নিয়ে ফিল্ডে দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। আজকে দুপুরের মধ্যেই আমার ভাগের ইন্সপেকশন টুকু শেষ.........

টাইম শেষ। আর পারুম না। এইবার খাঁটি spoken ভাষায় কথা বলুম। এখন মাঝে মইদ্ধে রবীন্দ্রনাথের দুঃখ বুঝে আসে। যদিও তার দুঃখ আমার ঠিক উল্টা । আমি জাতে উঠতে পারতাছি না আর রবীন্দ্রনাথ জাতের থাইকা নামতে পারে নাই। বেচারা এত চেষ্টা করল, দুনিয়াতে ছন্দের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা কইরা গেল, কিন্তুক গদ্যছন্দটারে ধরতে পারে নাই। যতই চাপাচাপি করে খালি ছন্দ ঢুইকা যায়।



যাই হোক, ঘটনা আজ থেকে প্রায়...১৩-১৪ বছর আগের কথা। কাম কাইজ নাই। হাঁটতে হাঁটতে চলে আসলাম সূত্রাপুর ব্রীজের কাছে। তো আইসাই মনে পড়লো, এইখানে তো আমার এক জিগড়ি দোস্তের বাসা। ঐ সময় তো আর এত্ত মোবাইল ছিল না, আর দোস্তের সাথেও দেখা হইছিল প্রায় তারও ৩-৪ বছর আগে। ভাবলাম, আসছি যখন , দেখা কইরাই যাই।





বাসায় গিয়া দেখি, এরেব্বাস! আগের বার দেখছিলাম ৩ তালার প্লাস্টার ছাড়া নরমাল বিল্ডিং আর এখন পাঁচ তালার আলিশান বাড়ি। ব্যটারে তো বেকার বইলাই জানতাম। নিশ্চয়ই দুই একটা বিবাহ করসে। বাসার সামনে আসতেই দেখি দোস্তো বাজারের ব্যাগ নিয়া হাজির।



“আররে দোস্তো, আছ কেমন ?”

“তা আর থাকা, আছি কোনরকম।”

“কোনরকম ?? ৩ তালা ভাইঙ্গা নতুন আলিশান ৫ তালা করলা, এখন কও কোনরকম ?”

“ভাই, লজ্জা দিছ না। বাড়ি ৩ তালাই আছে, এইটা আমার না, আমারটা এইটার পিছনে। এইটা নতুন হইছে। ”

দোস্তোরে ছ্যাকাটা দেয়া ঠিক হয় নাই। হাজার হোক বেচারার প্রথম প্রেমের কথা

আর কেউ না জানুক, আমি তো জানি। ছ্যাকা খেয়ে বলছিল,

“চৌধুরী সাহেব, আপনার ৪ তালা বাড়ি থাকতে পারে, কিন্তু আমার ১ তালা হইলেও আছে। আপনি অপেক্ষা করুন, আমি এক এক করে যেদিন আমার বাড়ি ৫ তালা করব, সেদিন আপনার মেয়েকে নিয়ে যাব”

আর সেই আমার দোস্ত কিনা এক এক করে তিন তালা করছিল আজ থেকে ১৩+৪ বছর আগে। ততদিনে চৌধুরী সাহেব তৃতীয় বার নানা হবার আনন্দ অনুভব করে ফেলেছেন, আর এখন আবার সেই ৫ তালা... চার তালা না, ছয় তালা না খালি ৫ তালা।



বাসায় গেলাম, হাল্কা নাস্তা পানি করে বিশ্রাম করতেছি, এমন সময় আসল ঘটনা শুরু। ছাদের ওপর ধুপধাপ ঢুসঢাস ধপাস । মনে হইল একদল পোলাপান ছাদের ওপর নাচা নাচি করতেসে।



“কি সব লোকের কাছে বাড়ি ভাড়া দেও ? বলছিলাম না? পিচ্চি পোলাপান থাকলে বাসা ভাড়া না দিতে?”

“কথা তো ঠিকই মানছি। কিন্তু আমার বাড়িতে উইঠা যদি কারো বাচ্চা হয় তখন কি ফালায়া দিমু?”

“তা ঠিকই কইছ। নতুন পলিসি দেখতে হইব।”

“কিন্তু, আমার বিল্ডিঙে তো এমন বাচ্চা নাই যারা এই ধুপ ধাপ করব, যেটা আছে ঐটার বয়সও তো মোটে সাড়ে তিন মাস।”



“লও তো দেইখা আসি।”

দুই দোস্তো মিলে ছাদে আসতেই দেখি ওরে সে কি বাঁদর নাচ......

আসলেই বাঁদরনাচ । ঐসময় সূত্রাপুরে বাদরের বেশ প্রকোপ ছিল।

আওয়াজ টাওয়াজ করলাম কিন্তু তাতে তাদের ভ্রুক্ষেপই নাই। আসলে লোমের থেক ভ্রু গুলা আলাদা করতে পারতেসিলাম না। ভ্রুক্ষেপ কইরা থাকলেও দেখি নাই।



কিন্তু কি সেই কারন যা কিনা সেই অসভ্য বাঁদরের পাল কে সুসভ্য পপ ড্যান্স (ভাংচুরও কম হয় নাই, ব্রেক ড্যান্স বলাও যুক্তিযুক্ত।) মারতে বাধ্য করিল ? রহস্য সল্ভড যখন দেখিলাম ছাদের মাঝে কিছু আধ খাওয়া বিলাতী মরিচ (কামরাঙা মরিচ) পড়িয়া আছে। বুঝিলাম, বাঁদরসকল পরিপক্ব কামরাঙা মরিচ দেখনপূর্বক তাহাদের অতিঅন্ত সুবিশেষ সুস্বাদু টসটসে রসে ভরা ফল ভাবনপূর্বক তাহা গলধকরন করিয়াছে। আর সেই মরিচের কারিশমায় আজ তাহারা বাঁদরনাচ নাচিতেছে। কেন যেন চোখের সামনে নিজের ছোটবেলার দৃশ্যগুলো ভাসতে লাগলো। বন্ধুদের সাথে লুকোচুরি খেলছিলাম আব্দুল্লাহ চাচার টমেটো ক্ষেতে। আমি আবার পাকা টসটসে টমেটো খেতে খুব ভালবাসতাম। খেলা আর কি টমেটো খেতে শুয়ে আছি আর চোখ বন্ধ করে একটা একটা করে টমেটো ছিঁড়ে খাচ্ছি।

“ মইরা গেলামরে, জইলা গেল রে। আবার কি হইল রে, আমারে মনে হয় সাপে কাটছে, গলাটা জইলা গেল।“



“সাপে কাটলে গলার ভিতরে জলে ? আমার সব টমেটো খাইয়া শেষ করছস আরা এখন মরিচ গুলাও ছাড়বি না ?” কানের কাছে আব্দুল্লাহ চাচা দাঁড়িয়ে । চিৎকারটা কিন্তু আমারই ছিল।



কিছুই না বুঝিয়া দেখিলাম অসংখ্য লাল টমেটোর মধ্যে আত্মগোপন করেছিল ছদ্মবেশী আরেকটি ফল, দেখতে টকটকে লাল, মনে হয় যেন চুপসানো টমেটো। সেই দিন আমার প্রথম পরিচয় ঘটে তার সাথে। বিলাতি মরিচের সাথে। কিন্তু কেন যেন মনে হল, বাঁদরগুলা যতই বাঁদর নাচ নাচুক, আমার মুভগুলার ধারে কাছেও যাইতে পারে নাই। বুঝলাম, নাচটার নাম বাঁদরের নামে না হইয়া আমার নামেই হওয়া উচিত।



কিন্তু ক্যাম্পেইনের খরচ কিন্তু কম না। তাই সে আশায় চিনিতে বালি দিয়ে............



বুঝেন নাই ?? এইটা বাংলাদেশরে ভাই। এত হাই টেকনোলজি লাগে, এত ইঞ্জিনিয়ার লাগে, তাও চিনির দাম গুড়ের থাইকা কম। তাই চিনিতে বালি দেয়াই অর্থনৈতিক ভাবে উপযোগী ।



কিন্তু যাই হোক, বাঁদরের নাচ তো থামাইতে হবে। নইলে সেই অর্থনৈতিক জ্ঞান বিলি করব কিভাবে ??



ছোটবেলায় স্কুলে নাটক করতাম। বেশ নামছিল। সহজেই লোকদের (প্রধানত সহপাঠিনী ও অন্যান্য ললনাদের) দৃষ্টি আকর্শনে খুব পটু ছিলাম। সেই টেকনিক কাজে লাগিয়ে দুই একটা বানরের দৃষ্টি আকর্শন করা সম্ভবপর হইল। অতঃপর কৈশোরের দিনগুলোর কোরিওগ্রাফীর টেকনিকে বানরগুলাকে শিখাইলাম কি কইরা পাত্র হইতে পানি পান করিতে হয়। এক গামলা পানি দরজার সামনে দেয়া হইলে সে আসিয়া খাইল। ও শান্তিও পাইল। এইটারে দেইখা বাকিগুলাও একি কাজ করল আর, আহ............ জ্বালা কমলো।



বানরগুলা যখন পানি খাইতেছিল, তখন একটা কথা সুস্পষ্ট হইয়া গেল, আমার মতন হাইকোয়ালিটি কোরিওগ্রাফার খুব কমই আছে। বানরকে শিখায়া ফেললাম, শালার, একটা মানুষের বাচ্চারে আজ পর্যন্ত শিখাইতে পারলাম না। মানুষের বুদ্ধি শুদ্ধি আজকাল আসলেই কমতেছে।



পানি খাওয়া শেষ কইরা সব গুলা কেমন জুলুজুলু চোখে আমায় দেখতে লাগলো। আমি আর সেই দৃশ্য দেখতে পারলাম না।



যা ভাবতেছেন তা মোটেই না। তাদের প্রতি টানের কারনে আমি চলে আসি নাই। আসলে আমি ভাবতেছিলাম, এইগুলা বানর না হইয়া মানুষ হইলে ......... ইশ , নির্ঘাত আমারে এম পি বানিয়ে দিত। এম পি হওয়ার নিশ্চিত চান্সটা মিস হইয়া গেল।



আর কিছুই নাই। আমি বাসায় আইসা পরলাম। লিখতে কষ্ট লাগে। আর পারুম না।





এখন শুরু হবে আমাদের প্রশ্নোত্তর পর্ব।

any question ?

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:০৭

পোভ০০৭০০৭ বলেছেন: are you mad man ?

১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৩:২৫

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত বলেছেন: কি জন্য জনাব ?

২| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:১৯

বিদ্রোহী তূর্য্য বলেছেন: যদিও অগোছালো তথাপি মজা পেলুম.... :) :) :)

১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৩:২৮

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত বলেছেন: না ভাই, ফিনিশিংটা ভাল হয় নি। কিন্তু কি করব বলুন, বাদরগুলোকে তো আর গিয়ে বলতে পারি না, এ রে ভাই, গল্পটা ভাল হবে না যে, আরো কিছু কর,

যা অবস্থা, কামড়ে দিলে তো, :D :D :D :D :D

৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৪:১২

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: কথ্য ঢঙ ভালো লাগলো ।

*জ্বইলা গেলো

১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৪:৪০

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত বলেছেন: ধন্যবাদ।

সরস ধন্যবাদ। B-)

৪| ২২ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:২২

কালনী নদী বলেছেন: “চৌধুরী সাহেব, আপনার ৪ তালা বাড়ি থাকতে পারে, কিন্তু আমার ১ তালা হইলেও আছে। আপনি অপেক্ষা করুন, আমি এক এক করে যেদিন আমার বাড়ি ৫ তালা করব, সেদিন আপনার মেয়েকে নিয়ে যাব”
i have nothing for question but inspiration!! keep it up.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.