নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত (সৌকপ)

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত

আমি আসলে কেউ নই ।

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

হেযবুত তাওহীদ: নয়া জমানার নয়া ফিতনাহ ?

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:২৩

হেযবুত তাওহীদের এক আবাল এককালে আমার বন্ধু ছিলো, এখন নাই।

সে একসময় বলেছিলো, ঈসা (আ) যে দামেশকে উমাইয়া মসজিদে আসবেন, সেটা ভুল, কারণ উমাইয়া মসজিদ উমাইয়ারা বানিয়েছিল , রাসূলুল্লাহ (স) এর জমানায় সেই মসজিদ ছিলো না। উমাইয়ারা নিজেদের খিলাফাহর লেজিটিমেসির জন্যই নাকি এসব "বানোয়াট" হাদীস প্রচার করতো। (হাদীসে উমাইয়া মসজিদ বলা নাই, বলা আছে দামেশকের পুর্বদিকের একটি সাদা মিনারে)

কিন্তু এই আবাল জানতো না, উমাইয়া মসজিদ উমাইয়াদের তৈরি নয়, বরং এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ চার্চ ছিলো, যা উমাইয়ারা মসজিদে রূপান্তর করে। এই দামেশক শহরে দুটি মুসলিম বাহিনী প্রবেশ করে একই সময়ে। পূর্ব অংশ দিয়ে খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা) জয় করতে করতে প্রবেশ করেন, আর পশ্চিম দিকের রোমান বাহিনী আবু উবাইদা (রা) এর কাছে আত্মসমর্পন করে। এজন্য ওই চার্চের এক অংশ মসজিদ হিসেবে , বাকি অর্ধেক চার্চ হিসেবে ব্যবহার হয়ে এসেছে বহু বহু বছর। পরবর্তীতে মুসলিমদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় ওই চার্চের খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সাথে আলোচনা করে সমঝোতায় আসা হয় যে, তারা এ চার্চ মসজিদের জন্য ছেড়ে দিবে, এর বদলে,

১। মুসলিমরা তাদের জন্য শহরের অন্যান্য জায়গায় তাদের জন্য প্রয়োজনীয় চার্চ বানিয়ে দেবে, যা করা হয়েছিলো।

২। ওই চার্চে একটা বিশেষ রেলিক ছিলো, সেটা ওখানেই রাখতে হবে, সরানো যাবে না। এটাও মানা হয়েছিলো। কিন্তু কি সেই রেলিক?

ওই রেলিক হলো, নবী ইয়াহইয়া (আ) এর ছিন্নমস্তক।

কুরআনে সূরা মারইয়ামের দুইজন নবীর জন্মের ঘটনা এসেছে। একজন ইয়াহইয়া (আ) আরেকজন ঈসা (আ) , তারা সম্পর্কে কাজিন ছিলেন। ঈসা (আ) এর মাতা মারইয়াম (আ) যেহেতু মসজিদ আল আকসার খাদেমা হিসেবে সমর্পিত হয়েছিলে উনার আম্মাজানের মানত অনুসারে, তাই শৈশবে মারইয়াম (আ) এর দেখাশোনার দায়িত্ব উনার পরিবারের হাতে ছিলো না, তা যায় প্রধান পুরোহিতের কাছে। সেই পুরোহিত আর কেউ নয় বরং আমাদের যাকারিয়া (আ)। এর কারণ কি তা আমি ভেবে দেখলাম, যেহেতু ওই টেম্পলের বেশ কিছু অংশ ছিলো যা জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত নয়, কেবল পুরোহিতরাই থাকতে পারবে, তাই মারইয়াম (আ) এর দেখাশোনা তার পরিবার করতে পারে নি। কেননা আমাদের মসজিদের মতন প্রতিদিন র‍্যান্ডম যাওয়া আসা তাদের বিধান ছিলো না, এগুলো অনেক কন্ট্রোলড ছিলো। যাকারিয়া (আ) এর স্ত্রী মারইয়াম (আ) এর পরিবারের সাথে সম্পর্কিত ছিলেন, সেই হিসেবে যাকারিয়াপুত্র ইয়াহইয়া (আ) ঈসা (আ) এর সাথে সম্পর্কিত।

সেইসময় বনী ইজরাঈলের রাজা ছিলো হেরোদ, যা কিনা রোমানদের কন্ট্রোলে ছিলো। হেরোদ কোন এক সময় ইয়াহইয়া (আ) এর কাছে একটা শরীয়ত বহির্ভূত ফতোয়া দাবী করে। যেহেতু সে রাজা, মানুষকে তেল মেরে থাকতে হয়, আর তার ওই প্ল্যান যে শরীয়তপরিপন্থী, তা মানুষ জানে ও বুঝে, তাই সে ইয়াহইয়া (আ) কে টার্গেট করলো। কারণ ইয়াহইয়া (আ) যদি কোন ফতোয়া দেন, মানুষ সেটা বিশ্বাস করবে। মানুষের কাছে ইয়াহইয়া (আ) এর সততা আর বিশ্বাসযোগ্যতা ছিলো সুউচ্চ স্তরের। কিন্তু অবশ্যই ইয়াহইয়া (আ) ধর্মকে বিকিয়ে দেননাই। যেজন্য তার শিরোচ্ছেদ করে তাকে হত্যা করা হয়, আর তার মাথা কেটে পাঠানো হয় দামেশকে। সেখানেই তা দাফন করা হয়।



ছবিতে উমাইয়া মসজিদের ভেতরে ইয়াহইয়া (আ) এর কবর। দামেশকে পাঠানোর পেছনের কারণ আমি জানি না, হয়তো সেখানে হোরোদের কোন প্রাসাদ ছিলো, অথবা যেহেতু রোমান ফোর্স ব্যবহার করে এসব করা হয়েছে, সেহেতু তৎকালীন এলাকার রোমান জেনারেলের কাছে রেবেলদের দমন-পীড়ন মিশনের সাকসেস দেখানো টাইপের কিছু হতে পারে, আবার পরবর্তীতে খ্রিস্টীয় সময়েও করা হয়ে থাকতে পারে, আমি আরও ঘেঁটে দেখব ইনশাআল্লাহ।

এই সেই রেলিক, ইয়াহইয়া (আ) এর মস্তক যা উমাইয়া মসজিদে শায়িত আছে বলে আমাদের বিশ্বাস। আসলে আমাদের না, খ্রিস্টানরাই বিশ্বাস করতো। ওরাই আমাদের বলেছে। খ্রিস্টান মহলে ইয়াহইয়া (আ) এর নাম জন দ্যা ব্যাপটিস্ট, এবং তার অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। একটা গুরুত্ব এই যে, সবাই যখন মসীহকে খুঁজছিল, তখন এই ইয়াহইয়াই (আ) ঈসা (আ) কে মসীহ হিসাবে চিহ্নিত করেন।

ঈসা (আ) যখন পুনরায় আসবেন, তখন তিনি নবী হিসেবে নয়, বরং মসীহ হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করতেই আসবেন। তাই যেই মানুষটি উনাকে মসীহ হিসেবে চিহ্নিত করলেন, তার ছিন্নমস্তকের সাথে ঈসা (আ) এর আসার সম্পর্ক থাকা খুব একটা অস্বাভাবিক ব্যপার নয়। এমনও তো হতে পারে যে, তিনিই হয়তো ইয়াহইয়া (আ) এর মস্তককে তার শরীরের সাথে এক জায়গায় কবর দেবেন............ হতেই পারে, কিন্তু এসব আমাদের ইসলামিক ট্রেডিশনে নাই, এটা ঈসা মসীহ (আ) এর দায়িত্ব, উনি বুঝবেন। আমাদের কাজ উনার অনুসরণ করা, তাই করবো ইনশা আল্লাহ।

এখন কথা হলো, উমাইয়া মসজিদ নিয়ে হেযবুত তাওহীদের মাথাব্যথা কেন? কেননা, তারা তাদের পূর্ববর্তী লিডারকে ইমাম মাহদী মনে করতো, আর এই অনুসারে মাহদীর পর মুসলমানদের লিডার তো মসীহ ঈসা............ হেযবুত তাওহীদের এককালের কাগজপত্রে দেখেছিলাম, লিডারকে তারা মসীহ-উর-রহমান নামে প্রচার করে, কাজেই, আপনারাই বুঝবেন, মসীহ ঈসা (আ) দামেশকে আসলে তাদের কি সমস্যা। বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট ।


মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:৪৪

কামাল১৮ বলেছেন: এই সব ইতিহাস বিক্রিত হতে হতে সত্যের লেস মাত্রও এখন আর অবশিষ্ট নাই।মুসলিমরা লিখছে তাদের মতো করে ইহুদিরা তাদের মতো করে খৃস্টান তাদের মতো।বর্তমানে কেউ কেউ লিখছে যুক্তি দিয়ে।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:৪৯

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত বলেছেন: আসল উদ্দেশ্য হলো, হেযবুত তাওহীদের ভন্ডামিকে প্রতিরোধ করা। এর ইতিহাস সত্যি হোক বা মিথ্যা হোক,তারা একে ব্যবহার করে নিজেদের লেজিটিমিসি বাড়ানোর চেষ্টা করতেছে। ইদানীং ফেসবু রীলসে তাদের অতিরিক্ত ফালাফালি দেখে চুপ থাকা কষ্টকর ছিলো।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ২:৩৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এদের নামাজ পড়ার দৃশ্য দেখলে না হেসে পারবেন না।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ২:৫১

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত বলেছেন: হাসতাম ভাই, কিন্তু এরা উম্মতের জন্য কি বয়ে নিয়ে আসতেছে, এটা ভেবে কান্না আসে। বিশেষ করে যখন স্কুল কলেজ ভার্সিটি পড়ুয়াদের দলে ভিড়াচ্ছে এসব বুজরকি দিয়ে। এদের আছে নিজস্ব মিডিয়া, টিভি, পত্রিকা।

৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৬:১৩

কলাবাগান১ বলেছেন: এরা কি হিজবুতি তাহিরি থেকে ডিফারেন্ট?

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৬:২৪

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত বলেছেন: হিযবুত তাহরির নিয়ে আসলে আইডিয়া নাই। ওদেরকে জানি যে ওরা খিলাফাহ নিয়া কথা বলে, কাজ করে, কিন্তু এই হেযবুত তাওহীদ আসলে থিওলজি নিয়ে গুতাগুতি করতেছে, পলিটিকাল মোটিফ সেইম হইতে পারে। কিন্তু তাহরির নিয়ে আসলেই আইডিয়া নাই। সেই আবাল আমারে নক না দিলে হয়তো এদের নিয়াও জানতাম না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.