![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বস্র মৌলিক চাহিদার গন্ডি পেরিয়েছে অনেক আগেই। নানা রং নানা ঢঙ্গে পোশাক হয়েছে বিলাসিতার অনুসঙ্গ । লজ্জা নিবারনের জন্য যে পোশাক, সেটাই এখন নিদারুণ লজ্জার কারন হয়েছে, প্রানহানির কারন হয়েছে, উদ্বেগের কারন হয়েছে। ঈদের মৌসুমে বিষাদের কারন হয়েছে কিরণ মালা জলপরী আর রাইকিশোরীরা। উত্তর দেবার আগে কিছু প্রশ্ন রাখা যাক।ভিনদেশি পোষাকের প্রতি এত ঝোঁক সৃষ্টির কারন কি? কি কারনে ক্রেতা এত উম্মাদ, উম্মত্ত হয়ে উঠে? বাংলাদেশে কি ভাল পোষাক তৈরি হয়না? কিভাবে আরোগ্যলাভ করা যায় এ বল্গাহীন অনাচার থেকে? পোষাক কবে থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ, মনকষাকষি ,প্রাণহানি আর আত্নহননের কারন হয়েছে তা নিয়ে কোন গবেষনা হয়নি। হলেও তা জানা যায়নি। তবে এটা বোঝার জন্য গবেষক হবার প্রয়োজন নেই। এ পাগলামির শুরুটা বাংলাদেশে । ভারত নেপাল বা আশেপাশে এমন ঘটনা ঘটে কিনা শোনা যায়নি। যে ভারতীয় জলপরি কিরণমালার জন্য অবলীলায় ভবলীলা সাঙ্গ করা হচ্ছে, সে ভারতে এ জামাগুলোর জন্য কেউ আফসোস পর্যন্ত করেনা । এমনকি এ নামে কোন পোষাকও সেখানে নেই। তাহলে অদ্ভুদভাবে এ উম্মাদনাটা বাংলাদেশে কেন? বাংলাদেশে আসলে পূঁজিবাদ আর বস্তুবাদের রমরমা পসার। স্বাধীনতালাভের পর পর সুযোগের হাজারো দরজা খুলে গিয়েছিল । অন্যদের ছলে বলে কৌশলে টাকা কামাতে দেখে সমাজে তৈরি হয়েছে এক নারকীয় অস্থিরতা আর নৈরাজ্য । লিপ্সার ভূতে পেয়েছে মানুষগুলোকে। অদ্ভূদভাবে দুই বাংলার সীমানার এপাশে ওপাশের মানুষ একভাষী একবর্ণ হলেও মনোজগতের পার্থক্য বিশাল। পূঁজি আর বস্তুর নারকীয় প্রতিযোগীতায় আশ্চর্যজনকভাবে তারা অনুপস্থিত । গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানোতে আমাদের জুরি মেলা ভার। খাওয়া পরা আর বিলাসিতার প্রতিযোগীতায় আমরা প্রথম কাতারে। লোকদেখানোতে, পরশ্রীকাতরতায়, জৌলুসের প্রকাশে আমরা দ্বিতীয়টি নই । ভিনদেশি মিডিয়া মালিক, পোষাকরপ্তানীকারকরা বেখবর নন । সারা বছর তারা নাটক বানান আমাদের মা বোন আর গিন্নীদের জন্য আর ঈদের সময় তাদেরই জ্ঞাতিরা লটকে লট কাপড় পাঠান পূর্ববঙ্গে । আর জলপরি কিরণমালায় ঘুম যায় আমাদের। সংসার ভাঙ্গে দেদার, হারপিক পানে মারা পড়ে বেশ ক’টি মেয়ে। বাণিজ্যের নিয়মই হল বেসাতি। সে মুনাফা করবেই। ওপারের ব্যবসসায়ীরা তাই করবেন, এটাই নরমাল। তবে এবনরমাল কোনটি? আর কি? কিরণমালার জন্য জান বাজি রাখাটা। আসলে বস্তুপ্রীতির তোড়ে বানের জলের মত ভেসে গিয়েছে মূল্যবোধের মা, সুবচনের বোন আর সুশিক্ষার পিতৃমহোদয়। এ আগুন একদিনে জ্বলেনি, একদিনে নেভারও নয়। খুব শিক্ষিত আর সচেতন পরিবার ছাড়া এ আগুন থেকে দূরে নেই অন্যরা। তবে কি মুক্তি নেই? আছে! শিক্ষিত হতে হবে, সচেতন হতে হবে; খাঁটি কথা, হক কথা! কিন্তু ততদিনে আরও ক’টি প্রাণ যাবে। সবার কপালে সুশিক্ষা নেই। আর আমরা কবে সচেতন হব, আল্লাহ মালুম! তাই পদক্ষেপটা নিতে হবে সরকারকেই। পোষাকের বাহারি নামকরণ বন্ধ করতে হবে। পোষাকশিল্পে আমরা একনন্বর, গুনে ও মানে। পোষাক আমদানী বন্ধ করা গেলে ভাল। কঠোর সিন্ধান্ত ছাড়া উপায় নেই। নিম্নমানের পোষাক বেশী দামে আমদানী করে গেলানো বন্ধ করতে হবে। বাহারী নামের যে ক্রেজ বিদেশী জামার জন্য সৃষ্টি হয়েছে তা দেশী পোষাকের জন্য কেন তৈরি করা যাবেনা? আমাদের দেশি ব্রান্ড গুলো কম কিসে? মনো মুগ্ধকর রুচিশীলতায় তাদের জুরি মেলা ভার। নিজদেশি পন্য কিনে হন ধন্য, নেহায়েত কথার কথা নয়। এটা সোনাফলা শ্লোকের মতই। কারন দেশি পোষাকের বিক্রি মানে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান, রুটি রুজি আর মুদ্রার মানরক্ষা। দেশীয় অর্থনীতির সুরক্ষা। দেশের জন্য রক্ত দেবার অবকাশ নেই, কিন্তু দেশি পোষাকের ক্রেতা হওয়া কি অসম্ভব?
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:০০
এইচ তালুকদার বলেছেন: চমৎকার বলেছেন