![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিগত সাড়ে চার দশকে বাংলাদেশের ম্যাক্রো অর্থনীতির রূপান্তর, এক কথায়, বিস্ময়কর। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে মনে হয় এই সত্যি যেন এক লুকোনো গুপ্তধন। ধীরে ধীরে এই পরিবর্তনের পর্দা স্তরে স্তরে উন্মোচিত হচ্ছে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় এই যে, অর্থনীতির তিনটি খাত (শিল্প, সেবা ও কৃষি) পাশাপাশি বেড়ে চলেছে। সচরাচর এমনটি ঘটে না। একটি বাড়লে আরেকটি থমকে থাকে বা খুব ধীরে বাড়ে। কিন্তু বাংলাদেশ যেন ব্যতিক্রমী এক দেশ। এখানে সব খাত একযোগে বাড়ছে। আরও অবাক বিষয় হলো, গণতান্ত্রিক পরিবেশে কম-খরচের শিল্পায়নের উড্ডয়ন (‘টেক-অফ’) এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে বাংলাদেশ। আর এমন এক সময়ে এই উড্ডয়ন ঘটছে যখন সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার খুবই দুর্বল। বাংলাদেশের কৃষিখাতও নয়া প্রযুক্তি গ্রহণ ও বাড়তি উত্পাদনশীলতার কারণে ম্যাক্রো অর্থনীতির রূপান্তরে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে। এই খাতে এখনও দেশের পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। সময়মতো বাণিজ্য ও শিল্প নীতির উদারীকরণ এবং আর্থিক খাতকে আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তি করার কারণে বাংলাদেশের ম্যাক্রো ও মাইক্রো অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে। এই পরিবর্তনে বাংলাদেশের তরুণ জনসম্পদও ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের অগ্রগতিতে তরুণ উদ্যোক্তা ও কম বয়সী নারী শ্রমিকদের অবদান সত্যি অভাবনীয়। ব্যাংকিং খাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক নানা উদ্যোগ, বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জে শাখা স্থাপন, সহজেই হিসাব খোলা এবং মোবাইল আর্থিক সেবার ব্যাপক বিস্ফোরণ বাংলাদেশের ম্যাক্রো অর্থনীতিকে যেমন গতি দিয়েছে তেমনি আবার অন্তর্ভুক্তিমূলকও করেছে। এর ফলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বেশ বেড়েছে। বেড়েছে এর অংশীদারিত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা। মাত্র ৪৫ বছরে বাংলাদেশে যে বিস্ময়কর উন্নতি ঘটেছে তা অনেক বিদেশিদের কাছে প্রায় অবিশ্বাস্য। সত্তরের দশকে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ যখন যাত্রা শুরু করে তখন তার রাস্তাঘাট, রেল, বন্দর, বিমানবন্দর, শিল্প-কারখানাসহ সকল অবকাঠামো ও স্থাপনাই ছিল বিধ্বস্ত। এক ধ্বংসস্তূপ থেকে আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রার সূচনা হয়। ১৯৭৩ সালে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ১১০ ডলার। সঞ্চয়ের হার জিডিপির ৩ শতাংশ; বিনিয়োগের হার জিডিপির ৯ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রার মজুদ ছিল প্রায় শূন্য। বিদেশ থেকে খাদ্য সাহায্য ছাড়া দুর্ভিক্ষাবস্থা এড়ানো মুশকিল ছিল। বিশ্ব আর্থিক মন্দা সত্ত্বেও দিন দিনই প্রবৃদ্ধির গতি বেড়ে চলেছে। শুধু প্রবৃদ্ধি বাড়ছে তাই নয়, এ প্রবৃদ্ধি সকলেই ভাগ করে নিচ্ছে। দ্রুত দারিদ্র্য নিরসনের হারই প্রমাণ করে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি খুবই গুণমানের। অতি দারিদ্র্যের হার প্রায় বারো শতাংশে নেমে এসেছে। এ বছর প্রবৃদ্ধি সাত শতাংশ ছাড়িয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখা গেলে অতি দারিদ্র্যের এই হার অচিরেই এক ডিজিটে নেমে আসবে। এটা সম্ভব হচ্ছে আমাদের প্রবৃদ্ধির চালক কৃষি, রেমিট্যান্স ও তৈরি পোশাক শিল্পের সমান্তরাল প্রসারের কারণে। তাই আমাদের হাতে হাত রেখে একযোগে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। পথ বন্ধুর ও প্রতিবন্ধকতাময় হলেও একসাথে চলার কারণেই আমরা আমাদের স্বপ্নীল লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারবো।
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫০
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
এ বিষয়ে কিছু লেখব ভেবেছিলাম দেখছি আপনি বেশ লেখে ফেলেছেন।
আচ্ছা, আপনার কি মনে হয়, বিনিয়োগ বোর্ড ও প্রাইভেটাইজেশন কমিশন একত্রে করে "বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃপক্ষ" গঠনের মত ওয়ান স্টপ সার্ভিস বিনিয়োগ বান্ধব হবে?
যদি হয় তবে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৬ কিরুপ ভাবে প্রয়োগ করা উচিত বলে মনে করেন!
আপনি এবিষয়ে এক্সপার্ট মনে হল। এই জিনিসটি জানার ছিল! উপকৃত হতাম!
লেখাটি প্রিয়তে নিলাম। খুব সুন্দর করে লেখেছেন!
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪০
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: দেশের জন্য শুভ কামনা।