নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিনিলাম আপনারেআঘাতে আঘাতেবেদনায় বেদনায়;সত্য যে কঠিন,কঠিনেরে ভালোবাসিলাম,সে কখনো করে না বঞ্চনা।

সত্যের সারথি সাদেক

সত্য যে বড় কঠিন, কঠিনেরে বাসিলাম ভালো, যে কখনো করেনা বঞ্চনা !

সত্যের সারথি সাদেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

দিল সে.. ও আমাদের মাণবিকতার প্রেম

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৩:২৮

প্রথমে বলি এই ছবিটি দেখার জন্য আমাকে বারবার তাগিদ দিয়েছে আমার পরিচিত একজন। মাঝে মাঝে খবর নিতো দেখেছি কিনা।প্রায়ই বলতাম দেখিনাই, তবে এতো আর না বলা ভালো লাগে না ,তাই দেখে ফেললাম । তারপরও দুদিন লেগেছে শেষ করতে । তবে তা শেষ করতে পেরেছি এটাই শেষ কথা ।
নির্মাতা মনি রত্নম সন্ত্রাসবাদকে পর্দায় নিয়ে আসেন ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার অসাধারন সৃষ্টি, দিল সে.. তে।অনেকে হয়তো ভাবতে বসবেন কেন পরিচালক এই সন্ত্রাসবাদকে উঠিয়েআনলেন । আমার মনে হয় দিল সে.. তে পরিচালক বরং এ বিষয়ের অত্যন্ত গভীরে গিয়ে এর কারন এবং ফলাফলের দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন। আর এর মধ্য দিয়ে নির্মাতা যে দার্শনিক সত্যটুকু রুপালী পর্দায় নিয়ে এসেছেন তা এক কথায় বিস্ময়কর।
ছবির শুরুটা বেশ রোমাঞ্চকর।একদিন এক বর্ষাস্নাত রাতে ট্রেন স্টেশনে, রেডিও জকি অমর কান্ত ভার্মা সাথে দেখা হয় এক সুন্দরী এবং অত্যন্ত রহস্যময়ী তরুনী, মেঘনার। প্রথম দেখায়ই মেঘনার প্রেমে পড়ে অমর। এরপর একদিন অমর মেঘনাকে খুঁজতে এলে মেঘনা অত্যন্ত বিরক্ত হয় এবং অমরকে তার পিঁছু নিতে নিষেধ করে। অমর মেঘনার পিঁছু ছাড়েনা এবং তাকে জানায় যে সে তাকে ভালোবাসে।
মেঘনা অমরকে জানায় যে এসব প্রেম- ভালোবাসা তার দ্বারা সম্ভব না বরং তার মাথায় অনেক বড় কাজের দায়িত্ব রয়েছে। অমর, মেঘনাকে বুঝতে পারেনা। দিনে দিনে যেন সে আরো রহস্যময়ী হয়ে উঠে।
অমর অভিমান নিয়ে নিজ শহরে ফিরে যায়। সেখানে প্রীতির সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ের ঠিক আগে একদিন মেঘনা অমরের বাড়িতে আসে এবং সেখানে সে আশ্রয় চায়। অমর ধিরে ধিরে আবিষ্কার করতে থাকে মেঘনাকে, তার রহস্যকে। অমর বুঝতে পারে মেঘনা বড় কোন সন্ত্রাসী কাজের সাথে জড়িত হতে যাচ্ছে। অমর মেঘনাকে তার পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখার আপ্রান চেষ্টা করে।
এ ছবির মেঘনা চরিত্রটিআমার কাছে মনে হয়েছে চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী নারী চরিত্রগুলোর একটি। মেঘনা রহস্যময়ী, প্রতিশোধের নেশায় বিভোর এক তরুনী। তার ভিতরে আবার এক প্রেমিকাও বাস করে। মেঘনার এই ভিন্নমুখী দুই সত্তা তার ভিতরে প্রতিনিয়ত যে ভীষন সংঘর্ষ তৈরী করে তাতে ক্লান্ত, বিধ্বস্ত মেঘনা হয়ে উঠে সাধারণ মানুষের চিরন্তন সাংঘর্ষিক জীবনের প্রতিক। মেঘনা চরিত্রে মনীষা কৈরালা তার জীবনের সেরা অভিনয়টুকু দিয়েছে।
এ ছবিতে মনীষা কৈরালা এতোটাই অসাধারন ছিলো যে এ চরিত্রে পৃথিবীর আর কাউকে ভাবাও অসম্ভব। মনীষা নিজের আপন সত্তাকে বিসর্জন দিয়ে সম্পূর্নরুপে মেঘনা হয়ে উঠে মেঘনাকে চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ঠাঁই করে দিয়েছে। শুধু এই এক ছবিতে মনীষার অভিনয় তাকে যুগের পর যুগ বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট।
প্রীতি জিন্তা ছোট্ট চরিত্রে ভালো ছিলো। শাহ্ রুখের সাথে তার জিয়া জালে গানটা তো আমি সব সময়ই দেখি আর মুগ্ধ হই।

মনি রত্নমের সবগুলো ছবিতে এ আর রহমানের সঙ্গীত অত্যন্ত বড় ভুমিকা পালন করেছে। এ ছবির সবগুলো গান অসাধারন। শুধু অসাধারন শব্দটি অনেক কম হয়ে যায় এর গান গুলোর সঠিক প্রশংসা করতে। গানগুলো আমার মনে হয় সবারই অত্যন্ত প্রিয়। জিয়া জালে ছাড়াও আছে ছাইয়া ছাইয়া, তু হি তু এবং আমার সবচেয়ে পছন্দের এয়ে আজনবী । প্রত্যেকটি গান কথায়, সুরে এবং চিত্রায়নে অসাধারন।গানটিতে শাহরুখ- মনীষার দৃশ্যগুলোও একেবারে হৃদয়টা নাড়িয়ে দেয়। কি অদ্ভুত রকম সুন্দর গান!
ছবির সমাপ্তিটা যদিও আমার খুব একটা ভালো লাগেনি, তবে এতে একধরনের মহত্ত্ব দেখেছি । নায়ক যখন নিজ জীবনের বিনিময়ে হলেও দেশের অনেক মানুষকে রক্ষা করলেন। এ বিষয়টিকে পরিচালক অতি স্পস্টভাবে মানবিকতার জয় গান গেয়েছেন।এ ছবির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি হৃদয় থেকে অনুভব করেছি।
তবে মাঝে মাঝেই এয়ে আজনবী আনমনা করে দিয়েছে আবার মেঘনার অতীত জীবনের কঠিন সংগ্রাম বুকটায় হাহাকারের মত বেজেছে।
মানবতার জয় এ কথাটার আরেকবার প্রমাণ হয় এ ছবির মাধ্যমে।মৃত্যুের বিনিময়ে মৃত্যু হতে পারে না ।
সর্বশেষ বলতে চাই মানুষের যেমন আযাদী হরণ করা ঠিক নয় তেমনি নিজ আযাদীর জন্য অন্য কারো প্রাণ নিয়ে নেয়া কি ঠিক?নিজেই বিবেচনা করি !!!

লেখকঃ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক , জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.