![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিব (সংস্কৃত: शिव, Śiva, আ-ধ্ব-ব: [ˈɕivə]; আক্ষরিক অর্থে "শুভ" বা "মঙ্গল") একজন হিন্দু দেবতা। তিনি ত্রিমূর্তির (হিন্দুদের তিনটি বিশেষ প্রাথমিক দৈবসত্ত্বা) অন্যতম। ত্রিমূর্তির শিব ধ্বংসের প্রতীক। হিন্দুধর্মের শৈব শাখাসম্প্রদায়ের মতে, শিবই হলেন সর্বোচ্চ ঈশ্বর। অন্যদিকে স্মার্ত সম্প্রদায় শিবকে পঞ্চদেবতার (স্মার্ত হিন্দুদের পাঁচ মুখ্য দেবতা) অন্যতম মনে করেন।
যে সকল হিন্দুধর্মাবলম্বী শিবকেই প্রধান দেবতা মনে করে তাঁর পূজা করেন, তাঁরা "শৈব" নামে পরিচিত। বিষ্ণু-পূজক বৈষ্ণব বা দেবী-পূজক শাক্তদের মতো শৈবরাও হিন্দুধর্মের অন্যতম প্রধান শাখাসম্প্রদায়।
শিবকে সাধারণত বিমূর্ত শিবলিঙ্গের রূপে পূজা করা হয়। তাঁর মূর্তির মধ্যে ধ্যানমগ্ন অবস্থা বা মায়াসুরের পিঠে তাণ্ডবনৃত্যরত অবস্থার মূর্তি (নটরাজ মূর্তি) বেশি প্রচলিত। শিব অপর দুই প্রধান হিন্দু দেবতা গণেশ ও কার্তিকের পিতা।
ব্যুৎপত্তি ও অন্যান্য নাম
সংস্কৃত শিব (দেবনাগরী: शिव, śiva) শব্দটি একটি বিশেষণ, যার অর্থ "শুভ, দয়ালু ও মহৎ"। ব্যক্তিনাম হিসেবে এই শব্দটির অর্থ "মঙ্গলময়"। রূঢ় রুদ্র শব্দটির পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত কোমল নাম হিসেবে এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়। বিশেষণ হিসেবে শিব শব্দটি কেবলমাত্র রুদ্রেরই নয়, অন্যান্য বৈদিক দেবদেবীদের অভিধা রূপে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ঋগ্বেদে ইন্দ্র একাধিক স্থলে নিজের বর্ণনায় এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন। (২:২০:৩, ৬:৪৫:১৭, ৮:৯৩:৩)
সংস্কৃত শৈব শব্দটির অর্থ "শিব সংক্রান্ত"। এই শব্দটি হিন্দুধর্মের একটি অন্যতম প্রধান শাখাসম্প্রদায় ও সেই সম্প্রদায়ের মতাবলম্বীদের নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।শৈবধর্মের কয়েকটি প্রথা ও ধর্মবিশ্বাসের বিশেষণ রূপেই এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
বিষ্ণু সহস্রনাম স্তোত্রে আদি শংকর বিষ্ণুর ২৭তম ও ৬০০তম নাম হিসেবে শিব শব্দটির একাধিক অর্থ ব্যাখ্যা করেছেন: "পবিত্র ব্যক্তি", "প্রকৃতির তিন গুণের (সত্ত্ব, রজ ও তম) অতীত যিনি", অথবা "যাঁর নাম উচ্চারণ মাত্রেই মানুষ পাপমুক্ত হয়"। স্বামী চিন্ময়ানন্দ তাঁর বিষ্ণু সহস্রনাম অনুবাদে স্তবটির ব্যাখ্যা আরও প্রসারিত করে বলেছেন: শিব শব্দের অর্থ যিনি চিরপবিত্র বা যিনি রজ বা তমের দোষ কর্তৃক স্পর্শিত হন না।
বিষ্ণু সহস্রনাম স্তোত্রে আদি শংকর বিষ্ণুর ২৭তম ও ৬০০তম নাম হিসেবে শিব শব্দটির একাধিক অর্থ ব্যাখ্যা করেছেন: "পবিত্র ব্যক্তি", "প্রকৃতির তিন গুণের (সত্ত্ব, রজ ও তম) অতীত যিনি", অথবা "যাঁর নাম উচ্চারণ মাত্রেই মানুষ পাপমুক্ত হয়"।স্বামী চিন্ময়ানন্দ তাঁর বিষ্ণু সহস্রনাম অনুবাদে স্তবটির ব্যাখ্যা আরও প্রসারিত করে বলেছেন: শিব শব্দের অর্থ যিনি চিরপবিত্র বা যিনি রজ বা তমের দোষ কর্তৃক স্পর্শিত হন না।
শিবের নাম সম্বলিত শিব সহস্রনাম স্তোত্রের অন্তত পাঠান্তর পাওয়া যায়। মহাভারতের ত্রয়োদশ পর্ব অনুশাসনপর্ব-এর অন্তর্গত পাঠটি এই ধারার মূলরচনা বলে বিবেচিত হয়। মহান্যাসে শিবের একটি দশ সহস্রনাম স্তোত্রেরও সন্ধান পাওয়া যায়। শতরুদ্রীয় নামে পরিচিত শ্রীরুদ্রম্ চমকম্ স্তোত্রেও শিবকে নানা নামে বন্দনা করা হয়েছে।
ঐতিহাসিক বিবর্তন
ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার সমগ্র হিন্দুসমাজেই শিবের পূজা প্রচলিত। কোনো কোনো ঐতিহাসিক মনে করেন, একাধিক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ধারণা একক মূর্তিতে একীভূত হয়ে শিবের আধুনিক রূপটি দান করেছে। তবে শিবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি কিভাবে একক দেবতায় সম্মিলিত হয়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না।অ্যাক্সেল মাইকেলস শৈবধর্মের এই সম্মিলিত জটিল প্রকৃতিটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন:
বিষ্ণুর মতো, শিবও একজন উচ্চস্থানীয় দেবতা। তাঁর নামানুসারে "শৈবধর্ম" নামক ধর্মীয় মত ও সম্প্রদায়ের নামকরণ হয়েছে। বৈষ্ণবধর্মের মতোই এই শব্দটির দ্বারাও এমন এক ঐক্যমতকে বোঝায় যা ধর্মানুশীলন বা দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক মতবাদের মধ্যে স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয় না। তাছাড়া ধর্মানুশীলন ও মতবাদকে পৃথক রাখাই কর্তব্য।
এই ধরনের সম্মিলনের একটি উদাহরণের দেখা মেলে মহারাষ্ট্রে। সেখানে কৃষি ও পশুপালনের দেবতা ছিলেন খাণ্ডোবা নামে এক স্থানীয় দেবতা। মহারাষ্ট্রে খাণ্ডোবার প্রধান উপাসনাকেন্দ্র ছিল জেজুরি। খাণ্ডোবার রূপকল্পটি ঠিক শিবের মতো। এবং তাঁকে পূজাও করা হয় লিঙ্গের আকারে। অবশ্য সূর্য ও কার্তিকেয়ের সঙ্গেও খাণ্ডোবার রূপগত মিল লক্ষ্য করা যায়।
মহেঞ্জোদাড়োয় প্রাপ্ত পশুপতি সিলমোহর
মহেঞ্জোদাড়োয় খননকার্য চালানোর সময় একটি সিলমোহর আবিষ্কৃত হয়, যাতে খোদিত চিত্রটি "আদি-শিব"-এর ("proto-Shiva") একটি সম্ভাব্য প্রতিকৃতিরূপে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। উপবিষ্ট, সম্ভবত ইথিফেলিক, জন্তুজানোয়ার বেষ্টিত এই মূর্তিটিকে পশুপতি নামে অভিহিত করা হয়। স্যার জন মার্শাল এবং অন্যান্যরা এই ছবিতে হাঁটু মুড়ে বসা "যোগ ভঙ্গিমা" দেখে এটিকে শিবের আদিরূপ বলে দাবি করেন।
রুদ্র
আধুনিক শিবের সঙ্গে বৈদিক দেবতা রুদ্রের নানা মিল লক্ষিত হয়।হিন্দুসমাজে রুদ্র ও শিবকে একই ব্যক্তি মনে করা হয়। রুদ্র ছিলেন বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়ের দেবতা; তাঁকে একজন ভয়ানক, ধ্বংসকারী দেবতা হিসেবে কল্পনা করা হত।
হিন্দুধর্মের প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থ হল ঋগ্বেদ। ভাষাতাত্ত্বিক তথ্যপ্রমাণ থেকে জানা যায় যে ১৭০০ থেকে ১১০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে এই গ্রন্থের রচনা।ঋগ্বেদে রুদ্র নামে এক দেবতার উল্লেখ রয়েছে। রুদ্র নামটি আজও শিবের অপর নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ঋগ্বেদে (২।৩৩) তাঁকে "মরুৎগণের পিতা" বলে উল্লেখ করা হয়েছে; মরুৎগণ হলেন ঝঞ্ঝার দেবতাদের একটি গোষ্ঠী। এছাড়াও ঋগ্বেদ ও যজুর্বেদে প্রাপ্ত রুদ্রম্ স্তোত্রটিতে রুদ্রকে নানা ক্ষেত্রে শিব নামে বন্দনা করা হয়েছে; এই স্তোত্রটি হিন্দুদের নিকট একটি অতি পবিত্র স্তোত্র। তবে শিব শব্দটি ইন্দ্র, মিত্র ও অগ্নির বিশেষণ হিসেবেও ব্যবহৃত হত।
তবে প্রাচীন দেবতা রুদ্রের সঙ্গে শিবের এই সমত্বারোপ সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত নয়। অ্যালেক্স মাইকেলসের ব্যাখ্যা অনুযায়ী:
To what extent Śiva's origins are in fact to be sought in Rudra is extremely unclear. The tendency to consider Śiva an ancient god is based on this identification, even though the facts that justify such a far-reaching assumption are meager.
রুদ্রকে "শর্ব" (ধনুর্ধর) নামেও অভিহিত করা হয়।রুদ্রের একটি প্রধান অস্ত্র হল ধনুর্বাণ।নামটি শিব সহস্রনাম স্তোত্রেও পাওয়া যায়। আর. কে. শর্মা মনে করেন, পরবর্তীকালের ভাষাগুলিতেও এই নামটি শিবের অপর নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।শব্দটির ব্যুৎপত্তি সংস্কৃত শব্দ শর্ব থেকে, যার অর্থ আঘাত করা বা হত্যা করা। আর. কে. শর্মার ব্যাখ্যা অনুযায়ী এই শব্দটির অর্থ "যিনি অন্ধকারের শক্তিসমূহকে হত্যা করতে সক্ষম"। শিবের অপর দুই নাম ধন্বী ("ধনুর্ধারী") ও বাণহস্ত ("ধনুর্বিদ", আক্ষরিক হস্তে "বাণধারী") ধনুর্বিদ্যার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
অন্যান্য বৈদিক দেবতাদের সঙ্গে সম্পর্ক
হিন্দু দেবমণ্ডলী একজন প্রধান দেবতারূপে শিবের উত্থানের পশ্চাতে কার্যকরী ছিল অগ্নি, ইন্দ্র, প্রজাপতি, বায়ু প্রমুখ বৈদিক দেবতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক।
অগ্নি
রুদ্রের সঙ্গে অগ্নির সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বৈদিক সাহিত্যে অগ্নি ও রুদ্রের পারস্পরিক অঙ্গীভবন রুদ্রের রুদ্র-শিব রূপে বিবর্তনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।নিরুক্তি নামক প্রাচীন ব্যুৎপত্তিতত্ত্ব বিষয়ক একটি গ্রন্থে এই অঙ্গীভবনের বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্ট। এই গ্রন্থে লেখা আছে, "অগ্নিকে রুদ্র নামেও অভিহিত করা হয়"। দুই দেবতার পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়টি অত্যন্ত জটিল।
স্টেল ক্র্যামরিকের মতে:
The fire myth of Rudra-Śiva plays on the whole gamut of fire, valuing all its potentialities and phases, from conflagration to illumination.[৪৮]
শতরুদ্রীয় স্তবে "সসিপঞ্জর" ("সোনালি লাল রঙের শিখার মতো আভাযুক্ত") ও "তিবষীমতি" ("জ্বলন্ত শিখা") বিশেষণদুটি রুদ্র ও অগ্নির সমরূপত্ব নির্দেশ করছে।অগ্নিকে ষাঁড়ের রূপে কল্পনা করা হয়ে থাকে, এবং শিবের বাহনও হল নন্দী নামে একটি ষাঁড়। ষাঁড়ের মতো অগ্নিরও শিং কল্পনা করা হয়ে থাকে।
মধ্যযুগীয় ভাস্কর্যে অগ্নি ও ভৈরব শিব – উভয়েরই বিশেষত্ব হল অগ্নিশিখার ন্যায় মুক্ত কেশরাশি।
ইন্দ্র
ঋগ্বেদে একাধিক স্থলে শিব শব্দটি ইন্দ্রের অভিধা রূপে ব্যবহৃত হয়েছে (২।২০।৩, ৬।৪৫।১৭, এবং ৮।৯৩।৩
[সম্পাদনা] রূপ
শিব ও পার্বতী। শিব এখানে ত্রিনয়ন, মস্তকে অর্ধচন্দ্রধারী, সর্প ও নরকরোটির মালা পরিহিত, সর্বাঙ্গে বিভূতি-মণ্ডিত এবং ত্রিশূল ও ডমরুধারী। তাঁর জটাজুট থেকে গঙ্গা প্রবাহিত।
তৃতীয় নয়ন:
শিবের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল তাঁর তৃতীয় নয়ন। এই নয়ন দ্বারা শিব কামকে ভস্ম করেছিলেন। বিভিন্ন শাস্ত্রগ্রন্থে শিবের যে ত্র্যম্বকম্ (সংস্কৃত: त्र्यम्बकम्) নামটি পাওয়া যায় তার প্রকৃত অর্থ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।ধ্রুপদি সংস্কৃতে অম্বক শব্দের অর্থ চক্ষু; মহাভারতে শিবকে ত্রিনয়ন রূপে কল্পনা করা হয়েছে; তাই উক্ত নামটির আক্ষরিক অর্থ করা হয়ে থাকে "তৃতীয় নয়নধারী"। যদিও বৈদিক সংস্কৃতে অম্বা বা অম্বিকা শব্দের অর্থ মা; এই প্রাচীন অর্থের ভিত্তিতে ত্র্যম্বকম্ নামটির আক্ষরিক অর্থ করা হয়, তিন জননীর সন্তান। ম্যাক্স ম্যুলার ও আর্থার ম্যাকডোনেল শব্দটির শেষোক্ত অর্থটিকেও ধরেছেন। তবে শিবের তিন জননী সংক্রান্ত কোনো কাহিনির প্রচলন নেই। তাই ই. ওয়াশবার্ন হপকিনস মনে করেন, এই নামটির সঙ্গে তিন জননীর কোনো সম্পর্ক নেই; বরং অম্বিকা নামে পরিচিত তিন মাতৃদেবীর সঙ্গে এটি সম্পর্কযুক্ত। শব্দটির অন্য একটি অর্থ করা হয় "যাঁর তিন স্ত্রী বা ভগিনী বর্তমান"। কেউ কেউ মনে করেন, শব্দটি এসেছে রুদ্রের সঙ্গে শিবের সমত্বারোপের ফলস্রুতিতে। কারণ রুদ্রের সঙ্গে দেবী অম্বিকার একটি সম্পর্ক রয়েছে।
অর্ধচন্দ্র: শিবের মস্তকে একটি অর্ধচন্দ্র বিরাজ করে। এই কারণে শিবের অপর নাম চন্দ্রশেখর (সংস্কৃত: चन्द्रशेखर)। রুদ্রের রুদ্র-শিব রূপে বিবর্তনের প্রথম যুগ থেকেই এই অর্ধচন্দ্র শিবের একটি বৈশিষ্ট্য। সম্ভবত বৈদিক ও পরবর্তীকালের সাহিত্যে চন্দ্রদেবতা সোম ও রুদ্রের একীভবনের সূত্রেই শিবের এই বৈশিষ্ট্যটির উদ্ভব ঘটেছিল.
বিভূতি: শিব তাঁর সর্বাঙ্গে বিভূতি বা ভস্ম মাখেন। ভৈরব ইত্যাদি শিবের কয়েকটি রূপ প্রাচীন ভারতীয় শ্মশান বৈরাগ্য দর্শনের সঙ্গে যুক্ত। রক্ষণশীল ব্রাহ্মণ্যবাদের সঙ্গে সম্পর্কহীন কয়েকটি গোষ্ঠী এই মত অনুযায়ী ধর্মসাধনা করেন।থেরবাথ বৌদ্ধধর্মের পালি ধর্মগ্রন্থেও এই শ্মশান সাধনার উল্লেখ রয়েছে। এই কারণে শিবের অপর নাম শ্মশানবাসী ও বিভূতিভূষণ।
জটাজুট: শিবের মস্তকের কেশরাশি জটাবদ্ধ। এই কারণে শিবের অপর নাম জটীবা কপর্দী ("কপর্দ বা কড়ির ন্যায় কেশযুক্ত")।
নীলকণ্ঠ: সমুদ্রমন্থনকালে উত্থিত হলাহল বিষ পান করেশিব নীলকণ্ঠ (সংস্কৃত: नीलकण्ठ) নামে পরিচিত হন। অপরপক্ষে, হরিবংশ পুরাণের বর্ণনা অনুযায়ী, বিষ্ণু একবার শিবের গলা টিপে ধরেছিলেন। শিব পলায়নে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কণ্ঠ তাতে নীল হয়ে যায়।
গঙ্গার মর্ত্যে অবতরণকালে শিব তাঁকে জটায় ধারণ করছেন; সম্মুখে পার্বতী, নন্দী ও ভগীরথ, সন্ত নারায়ণের হিন্দি পাণ্ডুলিপির চিত্র, ১৭৪০ খ্রি.
পবিত্র গঙ্গা: হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, গঙ্গা নদীর উৎস শিবের জটা।এই কারণে শিবের অপর নাম গঙ্গাধর।
ব্যাঘ্রচর্ম: শিবের পরিধেয় বস্ত্র ব্যাঘ্রচর্ম বা বাঘছাল। এই কারণে শিবের অপর নাম কৃত্তিবাস। শিব ব্যাঘ্রচর্মের আসনের উপর উপবিষ্টও থাকেন। উল্লেখ্য, ব্যাঘ্রচর্মের আসন ছিল প্রাচীন ভারতের ব্রহ্মর্ষিদের জন্য রক্ষিত একটি বিশেষ সম্মান।
সর্প: শিবের গলায় একটি সাপ সর্বদা শোভা পায়।
ত্রিশূল: শিবের অস্ত্র হল ত্রিশূল।
ডমরু: শিবের হাতে ডমরু নামে একপ্রকার বাদ্যযন্ত্র শোভা পায়।নটরাজ নামে পরিচিত শিবে নৃত্যরত মূর্তির এটি একটি বিশিষ্ট দিক। ডমরুধারণের জন্য নির্দিষ্ট একটি মুদ্রা বা হস্তভঙ্গিমা ডমরুহস্ত নামে পরিচিত। ডমরু কাপালিক সম্প্রদায়ের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
নন্দী: নন্দী নামে একটি পৌরাণিক ষাঁড় শিবের বাহন।শিবকে পশুদের দেবতা মনে করা হয়। তাই তাঁর অপর নাম পশুপতি (সংস্কৃত: पशुपति)। আর. কে. শর্মার মতে, পশুপতি শব্দটির অর্থ "গবাদি পশুর দেবতা"।অন্যদিকে ক্র্যামরিক এই নামটিকে প্রাচীন রুদ্রের অভিধা আখ্যা দিয়ে এর অর্থ করেছেন "পশুদের দেবতা"।
গণ: শিবের অনুচরদের গণ বলা হয়। এঁদের নিবাসও কৈলাস। এঁদের ভৌতিক প্রকৃতি অনুসারে ভূতগণ নামেও অভিহিত করা হয়। এঁরা সাধারণত দয়ালু। কেবল কোনো কারণে তাঁদের প্রভু ক্রুদ্ধ হলে এঁরা প্রভুর সঙ্গে ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠেন। শিব স্বীয় পুত্র গণেশকে তাঁদের নেতা মনোনীত করেন। এই কারণেই গণেশ গণপতি নামে অভিহিত হন।
কৈলাস: হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, শিবের অধিষ্ঠান হিমালয়ের কৈলাস পর্বতে। হিন্দুপুরাণ অনুসারে, লিঙ্গাকার কৈলাস পর্বত মহাবিশ্বের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত।
বারাণসী: বারাণসী শিবের প্রিয় নগরী। এই নগরী হিন্দুদের পবিত্রতম তীর্থগুলির অন্যতম। হিন্দু ধর্মগ্রন্থে এই নগরী কাশীধাম নামে পরিচিত।
রূপভেদ
গেভিন ফ্লাডের মতে, "শিব হলেন দ্ব্যর্থবোধ ও বিরোধাভাষের দেবতা"; কারণ তাঁর বৈশিষ্ঠ্যগুলি অনেক ক্ষেত্রেই পরস্পরবিরোধী। শিবের বিভিন্ন নাম ও তাঁর সম্পর্কে প্রচলিত বিভিন্ন কাহিনিতে এই দ্বিমুখী সত্ত্বার সন্ধান পাওয়া যায়।
ধ্বংসকর্তা ও মঙ্গলময় সত্ত্বা
যজুর্বেদে শিবের দুটি পরস্পরবিরোধী সত্ত্বার উল্লেখ রয়েছে। এখানে একদিকে তিনি যেমন ক্রুর ও ভয়ংকর (রুদ্র); অন্যদিকে তেমনই দয়ালু ও মঙ্গলময় (শিব)। এই কারণে চক্রবর্তী মনে করেন, "যে সকল মৌলিক উপাদান পরবর্তীকালে জটিল রুদ্র-শিব সম্প্রদায়ের জন্ম দিয়েছিল, তার সবই এই গ্রন্থে নিহিত রয়েছে।"মহাভারতেও শিব একাধারে "দুর্জেয়তা, বিশালতা ও ভয়ংকরের প্রতীক" এবং সম্মান, আনন্দ ও মহত্ত্বের দ্বারা ভূষিত। শিবের নানা নামের মধ্যে তাঁর এই ভয়াল ও মঙ্গলময় সত্ত্বার বিরোধের উল্লেখ রয়েছে।
রুদ্র (সংস্কৃত: রুদ্র) নামটি শিবের ভয়ংকর সত্ত্বার পরিচায়ক। প্রথাগত ব্যুৎপত্তি ব্যাখ্যা অনুসারে, রুদ্র শব্দটির মূল শব্দ হল রুদ্-, যার অর্থ রোদন করা বা চিৎকার করা।স্টেলা ক্র্যামরিক অবশ্য এর একটি পৃথক ব্যুৎপত্তি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এই ব্যাখ্যাটি বিশেষণ রৌদ্র শব্দটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, যার অর্থ বন্য বা রুদ্র প্রকৃতির। এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, তিনি রুদ্র নামটির অর্থ করেছেন যিনি বন্য বা প্রচণ্ড দেবতা। এই ব্যুৎপত্তিব্যাখ্যা অনুসারে, আর. কে. শর্মা রুদ্র শব্দের অর্থ করেছেন ভয়ংকর। মহাভারতের অনুশাসনপর্বের অন্তর্গত শিব সহস্রনাম স্তোত্রে শিবের হর (সংস্কৃত: हर) নামটির উল্লেখ করা হয়েছে তিন বার। এটি শিবের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নাম। অনুশাসনপর্বে তিন বারই এই নামের উল্লেখ করা হয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্নতর অর্থে। আর. কে. শর্মা এই তিনটি উল্লেখে হর নামটির অর্থ করেছেন "যিনি বন্দী করেন", "যিনি এক করেন" এবং "যিনি ধ্বংস করেন"। শিবের অপর দুই ভয়ংকর রূপ হল "কাল" (সংস্কৃত: काल) ও "মহাকাল" (সংস্কৃত: महाकाल)। এই দুই রূপে শিব সকল সৃষ্টি ধ্বংস করেন। ধ্বংসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত শিবের অপর একটি রূপ হল ভৈরব (সংস্কৃত: भैरव)। "ভৈরব" শব্দটির অর্থও হল "ভয়ানক"।
অপরপক্ষে শিবের শংকর (সংস্কৃত: शङ्कर) নামটির অর্থ "মঙ্গলকারক" বা "আনন্দদায়ক"। এই নামটি শিবের দয়ালু রূপের পরিচায়ক। বৈদান্তিক দার্শনিক আদি শংকর (৭৮৮-৮২০ খ্রি.) এই সন্ন্যাসজীবনের নাম হিসেবে নামটি গ্রহণ করে শংকরাচার্য নামে পরিচিতি লাভ করেন।একই ভাবে শম্ভু (সংস্কৃত: शम्भु) নামটির অর্থও "আনন্দদায়ক"। এই নামটিও শিবের দয়ালু রূপের পরিচায়ক।
যোগী ও গৃহী সত্ত্বা
সপরিবার শিব; শিবের সঙ্গে পত্নী পার্বতী এবং পুত্র গণেশ ও কার্তিকেয়।
শিবকে একাধারে যোগী ও গৃহী রূপে কল্পনা করা হয়। যোগী শিবের মূর্তি ধ্যানরত। যোগশাস্ত্রের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে মহাযোগী নামে অভিহিত করা হয়। বৈদিক ধর্মে যজ্ঞের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হলেও, মহাকাব্যিক যুগে তপস্যা, যোগ ও কৃচ্ছসাধন অধিকতর গুরুত্ব পেতে শুরু করে। যোগীবেশে শিব কল্পনার আবির্ভাব তাই অপেক্ষাকৃত পরবর্তীকালে ঘটেছিল।
গৃহী রূপে তিনি পার্বতীর স্বামী এবং গণেশ ও কার্তিকেয় নামে দুই পুত্রের জনক। পার্বতী বা উমা তাঁর স্ত্রী বলে তাঁকে উমাপতি, উমাকান্ত ও উমাধব নামেও অভিহিত করা হয়। শিবের স্ত্রী পার্বতীই বিশ্বজননী বা মহাশক্তি। গৃহী রূপে শিব আপন পত্নীকে ভালবাসেন এবং শ্রদ্ধা করেন।
শিব ও পার্বতীর দুই পুত্র – কার্তিকেয় ও গণেশ। দক্ষিণ ভারতে সুব্রহ্মণ্যন, ষন্মুখন, স্বামীনাথন ও মুরুগান নামে কার্তিকেয়ের পূজা বহুল প্রচলিত; উত্তর ভারতে তিনি স্কন্দ, কুমার ও কার্তিকেয় নামেই সর্বাধিক পরিচিত। শিবের স্ত্রীকে তাঁর শক্তির উৎস মনে করা হয়।
নটরাজ
নটরাজ (তামিল: நடராஜா) বেশে শিবের মূর্তি অত্যন্ত জনপ্রিয়। শিব সহস্রনামে শিবের নর্তক ও নিত্যনর্ত নামদুটি পাওয়া যায়।পৌরাণিক যুগ থেকেই নৃত্য ও সঙ্গীতের সঙ্গে শিবের যোগ বিদ্যমান। সারা ভারতে, বিশেষত তামিলনাড়ুতে, নটরাজের পাশাপাশি নৃত্যমূর্তি নামে শিবের নানান নৃত্যরত মূর্তি সারা ভারতে পাওয়া যায়। শিবের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত দুটি নৃত্যের নাম হল তাণ্ডব ও লাস্য। তাণ্ডব ধ্বংসাত্মক ও পুরুষালি নৃত্য; শিব কাল-মহাকাল বেশে বিশ্বধ্বংসের উদ্দেশ্যে এই নাচ নাচেন[ এবং মধুর ও সুচারু নৃত্যকলা; এই আবেগময় নৃত্যকে পার্বতীর নাচ রূপে কল্পনা করা হয়। লাস্যকে তাণ্ডবের নারীসুলভ বিকল্প মনে করা হয়। তাণ্ডব ও লাস্য নৃত্য যথাক্রমে ধ্বংস ও সৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
দক্ষিণামূর্তি
দক্ষিণামূর্তি (সংস্কৃত: दक्षिणामूर्ति) শিবের একটি বিশিষ্ট রূপ। আক্ষরিকভাবে দক্ষিণামূর্তি কথাটির অর্থ দক্ষিণদিকে মুখ যাঁর। এই রূপে শিব যোগ, সঙ্গীত ও বিদ্যাচর্চার গুরু এবং শাস্ত্রের ব্যাখ্যাকর্তা। প্রধানত তামিলনাড়ুতে শিবের এই মূর্তি প্রচলিত। দক্ষিণামূর্তি শিব মৃগসিংহাসনে অধিষ্ঠিত এবং জ্ঞানপিপাসু ঋষিগণ কর্তৃক পরিবৃত।
মৃত্যুঞ্জয়
"মৃত্যুঞ্জয়" কথাটির আক্ষরিক অর্থ "যিনি মৃত্যুকে জয় করেছেন"। কথিত আছে, শিব মৃত্যুর দেবতা যমকে জয় করেছিলেন। একটি কিংবদন্তি অনুসারে, ঋষি মার্কণ্ডেয়ের ষোলো বছর বয়সে মৃত্যুযোগ ছিল। মার্কণ্ডেয় শিবের আরাধনা করেন। মৃত্যুকাল উপস্থিত হলে, তিনি শিবের নিকট জীবন ভিক্ষা করেন। শিব যমকে পরাজিত করে মার্কণ্ডেয়কে জীবন দান করেন।
অর্ধনারীশ্বর
অর্ধনারীশ্বর বেশে শিব অর্ধেক পুরুষ অর্ধেক নারীদেহধারী। এই রূপের অপর একটি নাম হল "তৃতীয় প্রকৃতি"। এলান গোল্ডবার্গের মতে, সংস্কৃত অর্ধনারীশ্বর কথাটির অর্থ যে দেবতা অর্ধেক নারী; অর্ধেক পুরুষ অর্ধেক নারী নয়। হিন্দু দর্শনে এই রূপের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, এই বিশ্বের পবিত্র পরমাশক্তি একাধারে পুরুষ ও নারীশক্তি।
ত্রিপুরান্তক
একটি পৌরাণিক উপাখ্যান অনুসারে, শিব ধনুর্ধর বেশে ত্রিপুর নামে অসুরদের তিনটি দুর্গ ধ্বংস করেন। এই কারণে শিবের অপর নাম ত্রিপুরান্তক (সংস্কৃত: त्रिपुरान्तक)।
শিবের এই নামটির একটি দার্শনিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। পণ্ডিতগণ মনে করেন মানবদেহ তিন প্রকার - স্থূল শরীর বা বহিঃস্থ দেহ, সূক্ষ্ম শরীর বা মন এবং কারণ শরীর বা আত্মার চৈতন্যময় রূপ। এই তিন শরীরকে একত্রে ত্রিপুর বলা হয়। ত্রিপুরান্তক বেশে শিব মানব সত্ত্বার এই ত্রিমুখী অস্তিত্বের ধ্বংস ও বিলোপ ঘটিয়ে মানবকে পরমসত্ত্বার সঙ্গে লীন হতে সহায়তা করেন। এই বেশে তিনি মায়া ও অজ্ঞানকে ধ্বংস করে পরম চৈতন্যের সঙ্গে মানুষের মিলন ঘটান।
অষ্টমূর্তি
শিবের আটটি বিশেষ রূপকে একত্রে অষ্টমূর্তি বলে। এঁরা হলেন: ভব (অস্তিত্ব), শর্ভ (ধনুর্ধর), রুদ্র (যিনি দুঃখ ও যন্ত্রণা প্রদান করেন), পশুপতি (পশুপালক), উগ্র (ভয়ংকর), মহান বা মহাদেব (সর্বোচ্চ আত্মা), ভীম (মহাশক্তিধর) ও ঈশান (মহাবিশ্বের দিকপতি)।
শিবলিঙ্গ
নৃতত্ত্বারোপিত মূর্তি ব্যতিরেকেও শিবলিঙ্গ বা লিঙ্গ-এর আকারে শিবের পূজাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।শিবলিঙ্গ বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। শিব শব্দের অর্থ মঙ্গলময় এবং লিঙ্গ শব্দের অর্থ প্রতীক; এই কারণে শিবলিঙ্গ শব্দটির অর্থ সর্বমঙ্গলময় বিশ্ববিধাতার প্রতীক। শিব শব্দের অপর একটি অর্থ হল যাঁর মধ্যে প্রলয়ের পর বিশ্ব নিদ্রিত থাকে; এবং লিঙ্গ শব্দটির অর্থও একই – যেখানে বিশ্বধ্বংসের পর যেখানে সকল সৃষ্ট বস্তু বিলীন হয়ে যায়। যেহেতু হিন্দুধর্মের মতে, জগতের সৃষ্টি, রক্ষা ও ধ্বংস একই ঈশ্বরের দ্বারা সম্পন্ন হয়, সেই হেতু শিবলিঙ্গ স্বয়ং ঈশ্বরের প্রতীক রূপে পরিগণিত হয়। মনিয়ার-উইলিয়ামস ও ওয়েন্ডি ডনিগার প্রমুখ কয়েকজন গবেষক শিবলিঙ্গকে একটি পুরুষাঙ্গ-প্রতিম প্রতীক মনে করেন। যদিও ক্রিস্টোফার ইসারহুড,স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী শিবানন্দ,ও এস. এন. বালগঙ্গাধরপ্রমুখ বিশেষজ্ঞগণ এই মতকে খণ্ডন করেছেন।
অথর্ববেদ সংহিতা গ্রন্থে যূপস্তম্ভ নামে একপ্রকার বলিদান স্তম্ভের স্তোত্রে প্রথম শিব-লিঙ্গ পূজার কথা জানা যায়। এই স্তোত্রের আদি ও অন্তহীন এক স্তম্ভ বা স্কম্ভ-এর বর্ণনা পাওয়া যায়। এই স্কম্ভ-টি চিরন্তন ব্রহ্মের স্থলে স্থাপিত। যজ্ঞের আগুন, ধোঁয়া, ছাই, সোম লতা, এবং যজ্ঞকাষ্ঠবাহী ষাঁড়ের ধারণাটির থেকে শিবের উজ্জ্বল দেহ, তাঁর জটাজাল, নীলকণ্ঠ ও বাহন বৃষের একটি ধারণা পাওয়া যায়। তাই মনে করা হয়, উক্ত যূপস্তম্ভই কালক্রমে শিবলিঙ্গের রূপ ধারণ করেছে।লিঙ্গপুরাণ গ্রন্থে এই স্তোত্রটিই উপাখ্যানের আকারে বিবৃত হয়েছে। এই উপাখ্যানে কীর্তিত হয়েছে সেই মহাস্তম্ভ ও মহাদেব রূপে শিবের মাহাত্ম্য।
পঞ্চমন্ত্র
শিবের পবিত্র সংখ্যা হল পাঁচ। তাঁর সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রগুলির একটি (নমঃ শিবায়) পাঁচটি অক্ষর দ্বারা গঠিত।
কথিত আছে, শিবের শরীর পাঁচটি মন্ত্র দ্বারা গঠিত। এগুলিকে বলা হয় পঞ্চব্রহ্মণ। দেবতা রূপে এই পাঁচটি মন্ত্রের নিজস্ব নাম ও মূর্তিতত্ত্ব বর্তমান:
সদ্যোজাত
বামদেব
অঘোর
তৎপুরুষ
ঈশান
শিবের মূর্তি এই পাঁচটি রূপ পঞ্চাননের আকারে কল্পিত হয়। বিভিন্ন শাস্ত্রে এই পাঁচটি রূপ পঞ্চভূত, পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয় ও পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবে এই পাঁচটি রূপের বর্ণনা প্রসঙ্গে পণ্ডিতদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।[১৬৩] স্টেলা ক্র্যামরিক এই সম্মিলনের সামগ্রিক অর্থ সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন:
Through these transcendent categories, Śiva, the ultimate reality, becomes the efficient and material cause of all that exists.[১৬৪]
অন্যদিকে পঞ্চব্রহ্মণ উপনিষদ মতে:
জানবে, পার্থিব জগতের সকল বস্তুর পঞ্চমুখী চরিত্র বিদ্যমান। এর কারণ পঞ্চমুখী ব্রহ্মের চরিত্রবৈশিষ্ট্যরূপে শিবের চিরন্তন বৈচিত্র্য। (পঞ্চব্রহ্মণ উপনিষদ ৩১)
হরিহর
হরিহর রূপী বিষ্ণু (বামার্ধে – নীল বর্ণে) ও শিব (দক্ষিণার্ধে – শ্বেতবর্ণে)
বৈদিক যুগে বিষ্ণু ও রুদ্ররূপী শিব ছিলেন অপেক্ষাকৃত অপ্রধান দেবতা। তবে ব্রাহ্মণ (১০০০-৭০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) রচনার সময় থেকেই তাঁদের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে। পৌরাণিক যুগে দুই দেবতাকে কেন্দ্র করেই পৃথক সম্প্রদায় গড়ে ওঠে। এই সম্প্রদায়গুলি ভক্ত টানবার লক্ষ্যে পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। ফলত এই দুই প্রধান দেবতার পারস্পরিক সম্পর্কটি বর্ণনা করার জন্য রচিত হয় একাধিক ভিন্নধর্মী কাহিনি।
প্রত্যেক সম্প্রদায়ই নিজ নিজ দেবতাকে সর্বোচ্চ দেবতা রূপে উপস্থাপিত করে। এইভাবে বিষ্ণুকেন্দ্রিক পৌরাণিক সাহিত্যে বিষ্ণু শিবে "পরিণত হন"।বিষ্ণুপুরাণ (খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দী) গ্রন্থের উপাখ্যান অনুসারে, বিষ্ণু জাগরিত হয়ে বিশ্ব সৃষ্টির জন্য ব্রহ্মা এবং তা ধ্বংসের জন্য শিবে রূপান্তরিত হয়েছিলেন।ভাগবত পুরাণ অনুসারে, শিব বিষ্ণুরই একটি রূপ মাত্র।অন্যদিকে শিবকেন্দ্রিক পৌরাণিক সাহিত্যে দেখা যায়, শিব একাই এবং স্বাধীনভাবেই বিশ্ব সৃষ্টি, রক্ষা ও ধ্বংস করছেন।শিবলিঙ্গের উৎপত্তি সংক্রান্ত একটি শৈব পুরাণে আছে, জ্যোতির্লিঙ্গরূপী শিবের দেহ থেকেই বিষ্ণু ও ব্রহ্মার উৎপত্তি হয়েছিল। শৈব শতরুদ্রীয় স্তোত্রে শিবকে "বিষ্ণুরূপী"-ও বলা হয়েছে। শরভের উপাখ্যানে দুই দেবতার পারস্পরিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে দুই সম্প্রদায়ের মতবাদের পার্থক্যটি সুষ্পষ্ট হয়। উক্ত কাহিনিতে শিব একাধারে মানুষ, পাখি ও পশুর রূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। হিরণ্যকশিপু বধের জন্য নৃসিংহ রূপে অবতার গ্রহণের জন্য বিষ্ণুকে ভর্ৎসনা করার লক্ষ্যেই শিব উক্ত রূপে অবতীর্ণ হন। যদিও বৈষ্ণব ও বিজয়ীন্দ্র তীর্থ (১৫৩৯-৯৫) প্রমুখ দ্বৈতবাদী পণ্ডিতেরা তাঁদের সাত্ত্বিক পুরাণ ও শ্রুতি পাঠের ভিত্তিতে নৃসিংহ অবতার সম্পর্কে মতবিরোধ পোষণ করতেন।
বিভিন্ন সমন্বয়বাদী গোষ্ঠী অবশ্য দুই দেবতার পারস্পরিক মধুর ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের কথাই বলে থাকেন। এই সকল গোষ্ঠীর মতবাদে হরিহর নামে এক দেবতার অস্তিত্ব লক্ষিত হয়। ইনি বিষ্ণু (হরি) ও শিব (হর)-এর সম্মিলিত রূপ। এই রূপ হরিরুদ্র নামেও পরিচিত। মহাভারতে এই রূপের উল্লেখ রয়েছে।শিবের মহাবলেশ্বর নামটির উৎপত্তি আখ্যানটি হল এই জাতীয় সমন্বয়মূলক কাহিনির একটি উদাহরণ। এই আখ্যান অনুযায়ী, শিব রাবণকে বরস্বরূপ একটি শিবলিঙ্গ প্রদান করেছিলেন। শর্ত ছিল লিঙ্গটি রাবণকে সর্বদা বহন করতে হবে। একটি স্থানে এসে শিব মূত্রত্যাগ করার জন্য ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশধারী বিষ্ণুভক্ত নারদকে লিঙ্গটি কিছুক্ষণের জন্য ধরতে বলেন। নারদ এটি মাটিতে রেখে অদৃশ্য হয়ে যান। রাবণ ফিরে এসে লিঙ্গটি স্থানান্তরে অসমর্থ হন এবং সেই থেকে লিঙ্গটি সেই স্থানেই থেকে যায়। কথিত আছে, এই স্থানটি হল অধুনা ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দেওঘর। কর্ণাটকের গোকর্ণের কাহিনিটিও কতকটা একই প্রকার। এই আখ্যানে দেখা যায়, কৈলাস থেকে লঙ্কায় প্রত্যাবর্তন কালে রাবণ গণেশকে একটি শিবলিঙ্গ ধরতে দিয়ে স্নান করতে যান। কিন্তু গণেশ সেটি ভূমিতে স্থাপন করেন। এই কারণে লিঙ্গটির নাম হয় মহাবলেশ্বর।
অপর একটি কাহিনি অনুসারে, শিব বিষ্ণুর নারী অবতার মোহিনীর রূপে মুগ্ধ হয়ে তাঁর সঙ্গে মিলিত হন। উভয়ের মিলনের ফলে আয়াপ্পার জন্ম হয়। এই আয়াপ্পা শাস্তা বা আয়ানারের সমরূপীয়। একদল উদ্ধত ঋষিকে শিক্ষা দেবার সময়ও মোহিনী শিবের সেবা করেন।
অবতার
লোকবিশ্বাস অনুসারে, হিন্দুধর্মের অন্যান্য দেবদেবীদের মতো শিবেরও একাধিক অবতার বিদ্যমান। তবে পুরাণ শাস্ত্রে শিবের অবতারের উল্লেখ থাকলেও, এই অবতারতত্ত্ব শৈবধর্মে স্বীকৃত নয়।
আদি শংকর, খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে বর্তমান অদ্বৈত বেদান্ত প্রবক্তা। কোনো কোনো শাস্ত্রে তাঁকে শিবের অবতার বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
হনুমান চালিশা স্তোত্রে হনুমানকে শিবের একাদশ অবতার বলা হয়েছে, তবে এই মত সর্বজনস্বীকৃত নয়।[১৮১]
উৎসব
প্রতি বছর হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথিতে শিবরাত্রি উৎসব উদযাপিত হয়। এই উৎসব হিন্দুদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই দিন ভক্তের শিবের মস্তকে ফল, ফুল ও বিল্বপত্র অর্পণ করে।
চৈত্রসংক্রান্তির দিন বাংলায় শিবকেন্দ্রিক একটি বিশেষ উৎসব পালিত হয়। এটি চড়ক উৎসব নামে পরিচিত। এটি পৌরাণিক উৎসব নয়, লোকউৎসব। গাজন এই উৎসবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
দেবতা শিব
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩০
শোভন দাশ বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:০৯
নাজিম রেজা বলেছেন: কিছু তথ্য আমাকে জানাবেন। ছোট বেলা থেকে আমার জানার ইচ্ছা ছিল। আপনার ধর্মের প্রতি কোন প্রকার প্রশ্ন বা ব্যঙ্গ করছি না।
১। "অপরপক্ষে, হরিবংশ পুরাণের বর্ণনা অনুযায়ী, বিষ্ণু একবার শিবের গলা টিপে ধরেছিলেন।" কেন ধরেছিল জানাবেন। আমার জানামতে বিষ্ণু প্রধান তিন দেবতার অন্যতম।
২। সতী ছিল মহাদেবের প্রথম বৌ। সতী মারা গেলে মহাদেব তার দেহ নিয়ে তান্ডব নিত্য করে। বিষ্ণু তখন তার চক্রা দিয়ে তার দেহকে অনেক খন্ডে ভাগ করে। সতী মারা যায় কিভাবে? সতী কি একজন সাধারন মানুষ ছিল?
৩। মহাদেব কি প্রথমে সাধারন মানুষ ছিল।? আমার যতদূর মনে পড়ে কোথাও পড়েছি বা টিভি তে দেখেছি যে, মহাদেব সাধনা এবং তাপস্যার বলে দেবতায় উন্নত হয়।
৪। মহাদেবকে বলা হয়, অনার্যদের দেবতা। আর এটা বলার কারন তার বেশ-বুশা। অন্য দেবতারা যেখানে স্বর্গে বাস করে সেখানে মহাদেব ভিক্ষা ভিত্তি করে জীবন ধারন করে।
৫। আমার কাছে প্রায় প্রশ্ন জাগে, মহাদেব হিন্দুদের অন্যতম প্রধান দেবতা কিন্তু হিন্দুরা তার চেয়ে তার স্ত্রীর পূজা করে অনেক জাকঝমক ভাবে। কেন?
৬। হিন্দুদের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী কে? অনেকে বলে ঈশ্বর। এই ঈশ্বর আর দেবতার মাঝে পার্থক্য কোথায়?
আমার জানায় অনেক ভুল থাকতে পারে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্লগ, বই বা টিভি দেখে আমার তথ্য গুলো জানা। তাই আমার জানা বিছিন্ন।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৫
শোভন দাশ বলেছেন: আপনার কথা সত্য, তবে গলা টিপে ধরার পর মহাদেব নীল হয়ে গিয়েছিলেন বাকিটা জানটে পারলে আপনাকে জানাবো।
সতী একজন সাধারণ মানুষ ছিলো এবং শিবের ভক্ত। সতী আত্মহত্যা করে মারা যায় বলে জানি তবে এ নিয়ে অনেক মতবাদ রয়েছে।
মহাদেব তপস্যার বলে দেবতায় পরিণত হয় এটা নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে কারণ মহাদেবের কিংবা বিষ্ণুর তুলনায় দূর্গার ভক্ত বেশি বলে পরিষ্কার মতবাদ নেই।
মহাদেব ভিক্ষা করে জীবন ধারণ করেন কথাটি সত্য নয়। তিনি সর্বদা ধ্যনে মত্ত থাকেন।
শিব ত্রিমূর্তির একজন। আর দূর্গার শক্তি স্বয়ং ব্রহ্মা, শিব, বিষ্ণু ও ইন্দ্রের সমন্বয়ে যেটা দিয়ে তিনি অসুর বধ করেছিলেন। সেজন্য পূজা দূর্গা মা'র পাঠ করা হয়। তবে মহাদেবের অনুসারীও কম নয়।
ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিব হলেন ত্রিমূর্তি এবং এদের মাঝে শিবকে ঈশ্বর বলে থাকেন শিব পূজারীগণ। ধন্যবাদ।
৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:১২
তামিম ইবনে আমান বলেছেন:
শিবের সাপ টারে ভালা পাই
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৬
শোভন দাশ বলেছেন: শিবের গলায় সাপ থাকে সব সময়
৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:১৫
স্পুতনিক বলেছেন: "যাঁর নাম উচ্চারণ মাত্রেই মানুষ পাপমুক্ত হয় " ধর্ষন, হত্যা এ-জাতীয় পাপ হতেও মুক্ত হওয়া যায়?????
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৭
শোভন দাশ বলেছেন: স্রষ্টার প্রতি পরম বিশ্বাস এবং ধ্যণ সমর্পণে আপনি যদি প্রমাণ করতে পারেন আপনার অনুতপ্ত ভাবনা তবেই পাপমুক্ত হওয়া যায়। তবে অবশ্যই স্রষ্টা উৎকৃষ্ট বিচারক।
৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:২০
পি পি বলেছেন: +++
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৮
শোভন দাশ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:২৩
যাদব সূত্রধর বলেছেন: ++++
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৯
শোভন দাশ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:২৪
স্পুতনিক বলেছেন: From নাজিম রেজার question numner ৪। মহাদেবকে বলা হয়, অনার্যদের দেবতা। আর এটা বলার কারন তার বেশ-বুশা। অন্য দেবতারা যেখানে স্বর্গে বাস করে সেখানে মহাদেব ভিক্ষা ভিত্তি করে জীবন ধারন করে।
**মহাদেব কাজ না করে ভিক্ষা করে জীবন ধারন করতেন কেন??
*** দেবতারা কি সব মরে গেছেন?? যদি হ্যা তবে কিভাবে???
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫০
শোভন দাশ বলেছেন: মহাদেব ধ্যাণে জীবনধারণ করতেন, দেবতারা মরে গেছে আপনাকে কে বলেছে?
৮| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:২৬
অনিক আহসান বলেছেন: শিব মুলত অনার্যদের দেবতা ছিলেন। পরে আর্যরা তাকে প্রভবশালী দেবতা হিসাবে আবিস্কার করে নিজেদের আচারের সাথে ট্যাগ করে। আপনার প্রথম পোস্ট বিধায় দেবতা শিব সংক্রান্ত অপ্রীতিকর বিষয় গুলি এড়ায় গেলাম। হ্যাপি ব্লগিং ।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫১
শোভন দাশ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:২৯
মেঘরোদ্দুর বলেছেন: সত্যিই, জানার আছে অনেক কিছু।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫২
শোভন দাশ বলেছেন: ধন্যবাদ।
১০| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩০
দূর্যোধন বলেছেন: নির্বাচিত অংশে আরেকটা কপি পেস্ট।
১১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩৩
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: Thanks for the super post.
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৩
শোভন দাশ বলেছেন: ধন্যবাদ।
১২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪০
সহৃদয় বলেছেন:
শিবের নুনু পুজা করা হয় কেন?
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৫
শোভন দাশ বলেছেন: না জেনে এভাবে অপমানজনক কথা বলা কি ঠিক? শিব শব্দের অর্থ মঙ্গলময় এবং লিঙ্গ শব্দের অর্থ প্রতীক, এই কারণে শিবলিঙ্গ শব্দটির অর্থ সর্বমঙ্গলময় বিশ্ববিধাতার প্রতীক। পূজা করা হয় সর্বমঙ্গলময় বিশ্ববিধাতাকে ভেবে।
১৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৪
ফারজুল আরেফিন বলেছেন: +++++
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৬
শোভন দাশ বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৭
সোনালী ডানার চিল বলেছেন: গৃহী রূপে তিনি পার্বতীর স্বামী এবং গণেশ ও কার্তিকেয় নামে দুই পুত্রের জনক।
-------------------------------------------------------------------------------
আমরা জানি, লক্ষী ও স্বরসতি শিবের দু'কন্যা; এসম্পর্কে কোন তথ্য পেলাম না আপনার লেখায়.............!!
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:০৭
শোভন দাশ বলেছেন: মা স্বরসতী এবং লক্ষীকে দূর্গাপূজারীগণ দূর্গার কন্যা বলে াপভিহিত করেন। কিন্তু মতভেদে দূর্গার সাথে তারা দুজন মিলে ত্রিদেবী সয়ংক্রমে ত্রিদেবের স্ত্রীগণ এবং প্রধান শক্তি। ধন্যবাদ।
১৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৭
বড় ঠাকুড় বলেছেন:
আসিফের চ্যালারা এই পোস্টে কি সুললিত বানীতে কমেন্ট করে গেল, চমৎকার!!
এই পোস্ট আবার নির্বাচিত পোস্টে লটকানো হইছে!!
রাম নাম সত্য হো!!
রাম নাম সত্য হো!!
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:০৯
শোভন দাশ বলেছেন: ঠাকুড় দাদা কি বললেন বুঝতে পারলাম না।
ওঁ নমঃ শিবায়
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২৯
শোভন দাশ বলেছেন: আপনার অন্যান্য মন্তব্য দেখে মনে হলো আপনি হিন্দু ধ্রমের নামে নিক নিয়ে বিতর্ক করতে চাচ্ছেন, এ ধরণের সাম্প্রদায়িক মানসিকতা ত্যাগ করুন।
১৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:০৪
স্পুতনিক বলেছেন: তাহলে দেবতারা বর্তমানে কোথায় আছেন??
সৃষ্টিকর্তা ও দেবতা এই দুয়ের মর্ধে সম্পর্ক কি??
পৃথিবী নামক গ্রহে কতজন দেবতার অবির্ভাব হয়েছিল???
১৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২৪
স্পুতনিক বলেছেন: ৪ সং কমেন্টের উত্তর পায়নি কিন্ত। উত্তরে হ্যা অথবা না বলুন।
১৮| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২৯
তানভীরসজিব বলেছেন: ইনফরমেটিভ পোস্ট।
১৯| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৩৭
বড় ঠাকুড় বলেছেন:
লেখক বলেছেন: আপনার অন্যান্য মন্তব্য দেখে মনে হলো আপনি হিন্দু ধ্রমের নামে নিক নিয়ে বিতর্ক করতে চাচ্ছেন, এ ধরণের সাম্প্রদায়িক মানসিকতা ত্যাগ করুন।
============>> নামের শেষে ঠাকুর থাকলে হিন্দু, এই কথা আপনাকে কে বললো?? এত গেয়ানী মানুষ আবার হিন্দু দেবতা নিয়া পোস্ট মারে!!!
তাহের উদ্দীন ঠাকুরের নাম শুনছেন?? হেয় কি হিন্দু আছিল??
আর আমারে সম্প্রদায়িক বলার কারন দেখান, নয়তো আইজকা আপনারে শিব লিংগ প্রদর্শন করানো হবে|
২০| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৫০
সেলিব্রেটি ব্লগার বলেছেন: পুশেট প্লাস দিলাম অনেক কিছু আগে জানতাম না আজ জানলাম
২১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:২৪
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
শিব কোন আখ্যানের চরিত্র?
বেদ না গীতা, না রামায়ন?
২২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৩০
রবি কিরণ বলেছেন: ধন্নবাদ।অনেক কিছু জানা গেল।
২৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:১৫
মন মরা বলেছেন: +++++++++ধন্যবাদ ভাই ধন্যবাদ সামু । এত ভালো পোস্টে কিছু কুত্তা কে ঘেউ ঘেউ করতে দেখলাম ।তাদের ভালো পোস্ট করার ক্ষমতা নাই কিন্তু যদি কেউ ভালো পোস্ট করে খোঁচা মারার পন্থা খোঁজে বেরোয়।
২৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:০১
ইউআরএল বলেছেন: ভালো লাগলো।
২৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:২৪
ডি জেনারেশান এক্স বলেছেন: এতক্ষন ভালোই তো ছিল। একজন তার নিজের ধর্ম নিয়ে পোষ্ট দিয়েছে, সে অন্য ধর্মকে কটাক্ষ করেনি। ২ জন ফান করে মন্তব্য করলেও ১০ জন মুসলমান এসে ভালো কথা বলেছে।
কিন্তু এই প্রদীপ নাথ এসে কি বললো? এই ব্যটা, এতগুলো ছেলে এসে যে ভালো মন্তব্য করলো এরা তো মুসলমান। এটা তোর চোখে পড়েনি। ছাগলের মতো মুসলমানদের নিয়ে একটা কথা বলে গেলি।পোষ্টদাতা ভালো পোষ্ট দিয়েছে, বেশীরভাগ ব্লগার ভালো মন্তব্য করছে। মাঝখান থেকে চুলকানীমূলক কথা বলার কারন কি?
২৬| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ২:০১
মিজভী বাপ্পা বলেছেন: +++++++++++++++++++++
২৭| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৩:০৩
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: বুঝলাম না, একটা ধর্মীয় পোস্ট যদিও কপি পেস্ট সেটাতে আমরা ক্যাচাল কেন করছি? বাংলাদেশে কি হিন্দুরা ধর্ম পালন করবে না?
তাহলে একটা কাজ করি কালকেই সব হিন্দুকে মেরে ফেলি! নিজের বিবেকগুলো মনে হয় এভাবেই পচে গেছে!
২৮| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ ভোর ৫:১০
কামরুল হাসান শািহ বলেছেন: +++
২৯| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ ভোর ৬:৩২
েশখসাদী বলেছেন: লেখক, আপনার পোষ্টটি সবটুকু পড়তে পারলাম না । তবে আপনার নিচের মন্তব্যটি অনেকটা ইসলামী চিন্তাধারার সাথে মিলে যায় ।
'স্রষ্টার প্রতি পরম বিশ্বাস এবং ধ্যণ সমর্পণে আপনি যদি প্রমাণ করতে পারেন আপনার অনুতপ্ত ভাবনা তবেই পাপমুক্ত হওয়া যায়। তবে অবশ্যই স্রষ্টা উৎকৃষ্ট বিচারক। '
মনে কষ্ট না নিলে বলতে চাই - সকল মানুষের-ই এক স্রষ্টায় বিশ্বাসী হওয়া উচিত । এট কখনো হতে পারেনা যে স্রষ্টা একাধিক - তাহলে সমগ্র মহাবিশ্বে বিশৃংখলা সৃষ্টি হতো । আর স্রষ্টা কখনই মানুষের মত হতে পারেন না । মানুষ স্রষ্টাকে বুঝতে না পেরে মানুষের মত করে ফেলে ।
আর যা সত্য তার সব সময় জয়ী হয় এবং তা সুন্দর । এটা ঠিক ধর্ম বিশ্বাস হৃদয়ে গভীরে প্রোথিত এবং একজন ধার্মিক অধার্মিক অপেক্ষা ভালো - যদি সে সঠিক ভাবে তা পালন করে । তবে স্রষ্টা যেহেতু মানুষকে জ্ঞান ও বিচার - বুদ্ধি দিয়েছে তাই মানুষের উচিত তার জ্ঞান কে খাটানো এবং উদার হয়ে অন্য সব দিক জেনে সঠিকটা বেছে নেয়া ।
এই জীবন খুবই স্বল্প । তাই মূল্যবান সময় ঠিকভাবে ব্যবহার না করলে পরে তার জন্য শত অনুতাপেও কোন কাজ হবেনা । যেমনঃ ছাত্র কালে সময়ের অবহেলা করলে পরে শত কাদলেও কোন লাভ হবেনা ।
ধন্যবাদ ।
৩০| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:০১
স্পুতনিক বলেছেন: স্পুতনিক বলেছেন: ৪নং কমেন্টের উত্তর পায়নি কিন্ত। উত্তরে হ্যা অথবা না বলুন।
৩১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:০২
স্পুতনিক বলেছেন: তাহলে দেবতারা বর্তমানে কোথায় আছেন?
সৃষ্টিকর্তা ও দেবতা এই দুয়ের মর্ধে সম্পর্ক কি??
পৃথিবী নামক গ্রহে কতজন দেবতার অবির্ভাব হয়েছিল???
৩২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৩৫
সহৃদয় বলেছেন:
দুঃখিত ভাই......লিঙ্গ মানে জানতাম না......তাছাড়া শিবলিঙ্গ হিসেবে যে জিনিষটাকে পুজো করা হয় সেটি দেখতেও নুনুর মতো তাই ওই প্রশ্নটি করেছিলাম।
৩৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:০৫
বাকপটু বলেছেন: জানলাম
+
৩৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৮
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: এই পোস্টটি পর্যবেক্ষণে ছিল।
দয়া করে অসম্মানজনক কোন শব্দ ব্যবহার করবেন না ধর্মীয় পোস্টে।
এখানে ইসলাম ছাড়া আর কোন ধর্মের পোস্ট দেয়া ভাল হয় না- এ কথাও যুক্তিযুক্ত নয়। ইসলাম পোস্টেও ব্যাপক বাজে কথা হয়।
আসলে হয়ত ব্লগটাই ধর্মালোচনার উপযুক্ত পরিবেশে নেই।
হতাশ হবেন না ভাই।
অবশ্যই পোস্ট দিতে থাকুন।
যে কমেন্ট পছন্দ হবে না তা নিশ্চিন্তে বাতিল করুন, ব্লক করুন।
ধর্ম অবমাননা সব দিক দিয়ে অশান্তির কারণ।
৩৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:২০
শোভন দাশ বলেছেন: উস্কানিজনক মন্তব্যকারী সকলকে ব্লক করা হয়েছে। ব্যাস্ততার কারণে ব্লগে আসতে পারিনি।সময় পেলে বাকিদের জবাব দিয়ে যাবো। তবে আলোচনা অবশ্যই সুস্থ্য ধারার হতে হবে। উস্কানিমূলক সকল ব্লগারকে ব্লক করবো আমি। আর এই পোষ্ট কোথা থেকে কপি করেছি সেটারও লিংক দিয়ে দিয়েছি তাই এই পোষ্টে বাজে সময় না করে নিজে কিছু লেখার চেষ্ঠা করুন, সেটাতেই আপনার মঙ্গল।
৩৬| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:২৯
বোকা সারস বলেছেন: অনেক কিছু জানার ছিলো ... বেশির ভাগ টাই জানলাম... আরো জানতে চাই... আপনার লেখার হাত বেশ ভাল... গল্পের মত পড়া যায় এই সব নিয়ে একটা সিরিজ চাই ... ভালো থাকবেন
৩৭| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৪৮
রেজোওয়ানা বলেছেন: ভালই লিখেছেন, আশাকরি এটা আপনার নিজেরই লেখা!
রুদ্র ছিলেন বৈদিক যুগের অন্যতম প্রধান দেবতা, পরবর্তীকালে এপিক ও পৈরানিকযুগে এসে পরিবর্তীত রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থায় পরে বৈদিক রুদ্রই পরিনত হয়েছিলে শিবে।
বাংলা অঞ্চলে শিবের পরিপূর্ণ বিকাশ হয়েছিল গুপ্ত যুগে এসে।
কিছু বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করছি.......
*''রুদ্র নামটি আজও শিবের অপর নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়''.....মূলত: রুদ্রেরই আরেক নাম ছিল শিব! আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, রুদ্রের দ্বৈত রূপ ছিল, একটা রুদ্র (ভয়ানক) ও শিব (মঙ্গলময়) [ঋগবেদ]
** নীলকন্ঠ, এখানে নীলকন্ঠ নামের সাথে বিষ্ণুর কোন সংস্পৃশ্যতা নেই। পুরান অনুযায়ী শিব যখন সমুদ্রমন্থনে উঠে আশা হলাহল পান করেছিলেন, তখন পার্বতী (শিবের বউ) বিষ যাতে সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে না পরে, সে জন্য তার কন্ঠ চেপে ধরে, তখন বিষ চামড়ার নীচে ছড়িয়ে পরে সমস্ত দেহ নীল বর্ণ ধারন করে, একারণে তার নাম হয়ে যায় নীল কন্ঠ!
বিষ্ণুর সাথে শিবের বিরোধের কোন প্রমান এখন পর্যন্ত কোন পুরানে দেখা যায়নি! আমাদের মনে রাখতে হবে, শিব হলেন মহাদেব, মানে ত্রিপুর ধ্বংসের সময়ে সে সকল দেবতাদের শক্তি ধারন করেছিল, যে কারণে তার বল সর্বাধিক!
সুতরাং পুরান রচয়িত গন এমন কিছু লিখবেন না, যাতে তার মহিমা খর্ব হয়!
উল্টো, শিবের 'বিষ্ণু অনুগ্রহ' মূর্তিতে বিষ্ণুকেই শিবের উপাসান করতে দেখা যায়! আমার মনে হয় আপনার হরিবংশের রেফারেন্সটা আবার রিচেক করা উচিত।
**মহাদেব কি প্রথমে সাধারন মানুষ ছিল কিন?
না, মহাদেব প্রথমে সাধারন মানুষ ছিলেন না, মহাদেব শিবেরই আরেকটা রূপ! হিন্দু দেবতাদের সকলেরই বিভিন্ন রূপ থাকে, বিভিন্ন সময়ে তারা বিভিন্ন প্রয়োজনে এই সব রূপ ধারণ করে থাকেন বলে বিশ্বাস করা হয়!
মহাদেবও শিবের একটা বিশেষ রূপ। অসুর দের নির্মিত ত্রিপুর' ধ্বংসের সময়ে শিব সকল দেবতার অর্ধেক তেজ ধারন করেছিলেন বলে তাকে মহাদেব বলা হয়।
**সতীর সাধারন মানুষ মরন হয়নি, তিনি স্বামী শিবের অপমানে রুষ্ঠ হয়ে পিতা দক্ষের উপর রাগ করে তিনি নিজেই দেহত্যাগ করেছিলেন!
সতী হলেন মহামায়ার একটা রূপ! এখন আবার বলি মহামায়া কে, মহামায় হলেন শিব, বিষ্ণু ও ব্রক্ষ্রার জননী, পৃথিবী মাতৃকা দেবী (দেবী ভগবত)।
সতী ছিলেন ব্রক্ষ্রার মানসপুত্র দক্ষের কণ্যা, দক্ষের আরাধনায় তুষ্ট হয়ে মহামায় সতীরুপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সুতরাং সতীকে সাধারন মানুষ বলা যায় না!
**মহাদেবকে বলা হয়, অনার্যদের দেবতা কারণ তার বেশভুষা"..........না ভাই ব্যাপারটা এতটা সরলীকৃত নয়! শিব ছিলেন বৈদিক প্রধান দেবতা, পরবর্তীকালে আর্যদের আগমন হলে স্বভাবতই তারা তাদের ধ্যান ধারণ, ইচ্ছা শক্তির প্রাধন্য দিয়েছিল ক্ষমতার ব্যবহারের সাথে সাথে।
যেকরাণ আমারা দেখি, বৈদিক সকল দেবতার পদমর্যাদা কমে গেয়ে তারা অপেক্ষাকৃত দ্বিতীয়সারির দেবতায় পরিনত হয়েছে।
রাজনৈতিক শক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে দেবতার অবস্থানের পরিবর্তন শুধু হিন্দু নয়, বিশ্বের সকল সভ্যতাতেই দেখা যায়, যেমন মিশরের , রে' বা আমন রে'!
যাই হোক, যা বলছিলাম, পরিবর্তীত রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থানের কারণেই শিবকে ঠেলে দেয়া হয়েছিল শুধু মাত্র 'শবর' অন্তজন শ্রেণীর মধ্যে (বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, জীতেন্দ্র নাথ ব্যানার্জির 'দ্যা ডেভেলপমেন্ট অব হিন্দু আইকোনগ্রাফী")
**পার্বতী বা দূর্গা পুজার জাকজমকের কারণও কিন্তু সেই রাজনৈতিক প্রেক্ষিত। আদিতে কিন্তু বাংলায় দূর্গাপুজা এতটা জাকজমক সহকারে পালিত হয়নি!
আর সেই যে আর্য আগমনের পরে শিব কোনঠাসা হলেন, তার সেভাবে আর উঠে আশা হয়নি।
দূর্গা পুজা প্রধানত বাংলা অঞ্চলের বড় পুজা। স্বদেশী আন্দোলনের সময়ে লোকজমায়েত করার উদ্দ্যেশের বাংলায় দূর্গা এবং মধ্যভারতে গনেশ পুজাকে বেছে নেয়া হয়েছিল, প্রধানত সেই সময় থেকেই এই পুজার প্রাধন্য বৃদ্ধি পেতে থাকে।
**শিব লিঙ্গের উপাসান, সৃষ্টির দেবতা হিসেবে এটা করা হয়! এটা নিয়ে দেখলাম অনেকেই এক্সাইটেড, এত এক্সাইটেড হবার তেমন কোন কারণ দেখছি না।
প্রিমিটিভ সোসাইটিতে প্রজনন যন্ত্রের উপসনা শুধু মাত্র হিন্দু ধর্মই নয়, বিশ্বের আরও অনেক ধর্মে এবং আরও অনেক সভ্যতা ও দেশে প্রচলিত ছিল।
আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, হিন্দু ধর্ম বিশ্বের অণ্যতম প্রাচীন ধর্মমত গুলোর একটা এবং এখনও সেই পুরতন ফর্ম অনেকটাই ধরে রেখেছে (যদিও বহুবার সংস্কার করা হয়েছিল)। মেডেটারিয়ান উপকুলের অনেক ধর্মেরই এটা এখন আর না থাকলেও হিন্দু ধর্মে রয়ে গেছে।
আর মিশর, সুমের, পুরাতন আমেরিকা সহ অনেক সভ্যতায় জননন্দ্রেয় উপাসনার রীতি প্রচলিত ছিল!
সবশেষে একটা কথা বলি, যারা যার ধর্ম মত তার তার কাছে অমূল্য। আমাদের কারোরই এমন কোন ধৃষ্টতা থাকা উচিত নয়, অন্যের ধর্মকে আঘাত করা, তা সে ইসলাম হোক, আর বৌদ্ধ বা খৃষ্টান!
আর একজন মুসলিম হিসাবে তো অবশ্যই নয়, আমাদের ইসলাম ধর্ম এমন কোন শিক্ষা দেয় না।
ধন্যবাদ!
৩৮| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৫৫
রেজোওয়ানা বলেছেন: আচ্ছা, এটা তাহলে আপনার নিজের লেখা নয়!!
যাই হোক, আমার মন্তব্য ২ নম্বরে নাজিম রেজা ভাইয়ার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে করা।
৩৯| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৪৬
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪০| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:১৯
সবুজ স্বপ্ন বলেছেন: বিষয়টি আরেকটু সহজ করে লিখা হলে মনে হয় অনেকেরই জন্য সুপাঠ্য হতো। আর অনেক কে দেখলাম এ বিষয়ে ভুল কনসেপ্ট নিয়ে আছেন যেমন: লিঙ্গ পুজা, ইত্যাদি এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখা দিলে ভাল লাগত।
৪১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:২৯
বোকা সারস বলেছেন: @রেজোওয়ানা ~ হ্যাটস অফ !
৪২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪৩
বায়েজিদ আলম বলেছেন: হিন্দুপুরাণে শিবলিঙ্গের কাহিনী কিন্তু শিবের জননাঙ্গ নিয়েই। সুতরাং তাকে প্রতীক বলুন আর যাই বলুন সেটা কিন্তু লিঙ্গই থাকবে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৫৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন: +++++++