নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সোনার বাংলা

আমর সোনার বাংলা

আমর সোনার বাংলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্রিটেনে সবচেয়ে বড় পরিবারের বড় গল্প

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:১১





ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় পরিবারের গৃহিনীকে ১৬ জন ছেলেমেয়েকে দেখভাল করতে হয়। একই সঙ্গে তার একজন নাতনীকেও দেখাশোনা করেন তিনি। তার দিন শুরু হয় সকাল পৌণে ৭টায়। রাত ১০টা পর্যন্ত একটানা ঘরের কাজে তার সময় চলে যায়।



সিউ রেডফোর্ড নামের এই মহিলা বলেছেন, এত বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে একই ছাদের নিচে এত বড় সংসার লালন পালন করা খুবই কঠিন। এবং এত ছেলেমেয়েকে উপুযুক্তভাবে তিনি শাসন করতে পারছেন বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন।





৩৭ বছরের সিউ রেডফোর্ড বলেন, এত বড় সংসারের দায়িত্ব পালন খুবই কঠিন। কিন্তু এর কোনো বিকল্প আছে বলে মনে করিনা। আমি আমার প্রত্যেকটি ছেলেমেয়েকে খুব ভালবাসি। হয়ত আরো ছেলেমেয়ে আমরা গ্রহণ করব। তার স্বামী নোয়েলের বয়স ৪১। একটা বেকারী আছে তাদের যেটা লাভজনক নয়। তবে পরিবার এত বড় হবে এমন পরিকল্পনা ছিলনা তাদের।





ব্রিটেনের এ দম্পতির ওই বেকারী থেকে আয় হয় বছরে ৩০ হাজার পাউন্ড। এছাড়া পরিবার বড় হওয়ায় প্রতি সপ্তাহে ১৮০ পাউন্ড শিশু ভাতা পান তারা। ভালবেসেই সংসার শুরু করেছিলেন এই দম্পতি। মাত্র ১৪ বছর বয়সে মা হন সিউ। তবে কুমারী মা হওয়া বেশ কঠিন বলে স্বীকার করেন তিনি। তখন আমি স্কুলে পড়তাম এবং সকলেই মনে করত আমাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা একে অপরকে ভালবাসতাম। কঠিন পরিশ্রম করে আমরা জীবন সংগ্রামে টিকে আছি। আমরাও বড় পরিবারের সদস্য ছিলাম।





সিউ রেডফোর্ড বলেন, ১৮ বছর বয়সে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পরই আমি টের পাই ফের গর্ভবতী হয়েছি। আমাদের সংসার এত বড় হয়ে উঠবে ধারণা ছিল না। ২ থেকে ৩ জন সšত্মান হবে এমন ইচ্ছে ছিল আমাদের। তবে ২০ বছরে ১৬ ছেলেমেয়ে জন্ম দেয়ার পর আমরা এখনো পুরোপুরি সক্ষম। আমাদের ঘরবাড়ি সবসময় ছেলেমেয়ের কোলাহলে পরিপূর্ণ থাকে এবং এটা আমরা ভালবাসি।





সিউয়ের বড় ছেলে ক্রিসের বয়স ২৩, মেয়ে সোপির বয়স ১৯, এরপর চোলি ১৭, জ্যাক ১৫, ড্যানিয়েল ১৩ এবং লুকি ১২। এরপর মিলি ১১, ক্যাথি ১০, জেমস ৯, এলি ৭, এইমি ৬, জোশ ৫, ম্যাক্স ৪, টিলি ২, অস্কার ১৫ মাস এবং সর্বশেষ ক্যাসপার ৩ মাস। সিউ জানান, আমি খুব সৌভাগ্যবতী যে প্রতিটি ছেলেমেয়ে হবার সময় আমাকে কোনো ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়নি। আমার শরীর অধিক সšত্মান নেয়ার জন্যে বেশ সহনীয় এবং অন্যান্য ছেলেমেয়ের পাশে আমার সময় কেটেছে চমৎকার। যা আমাকে মানানসই রাখতে সাহায্য করেছে।





চারমাস আগে সিউয়ের বড় মেয়ে সোপি যখন কন্যা সšত্মান ডেইজির জন্ম দিল তখন তাকে এ ব্যাপারে পরামর্শ নেয়ার জন্যে অন্য কারো কাছে ছুটতে হয়নি। সিউ বলেন, সোপি আমার কাছে গর্ভধারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তাকে আমি আশ্বস্ত করে বলি ১৬ জন সন্তান জন্ম দেয়ার পর আমি বেশ সুস্থ ও সুন্দর রয়েছি। ও নিয়ে মাথা ব্যথার কোনো কারণ নেই।





সোপি ও তার সঙ্গী জো এবং তাদের শিশুসহ সকলে রেডফোর্ড পরিবারের সদস্য আর তারা ৯টি শয়ন কক্ষ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। স্থানীয় স্কুলে পরিবারটির ছেলেমেয়েরা বেশ ভাল শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জন মাধ্যমিক ও ৫ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে। তবে এত বড় পরিবারের ভরনপোষণ বেশ ব্যয়বহুল। সপ্তাহে কেনা কাটায় আড়াইশ’ পাউন্ড ছাড়াও প্রতিদিন ১৮ পাইন্ট দুধ দরকার হয়।





প্রতিবছর স্কুলের পোশাক তৈরিতে খরচ পড়ে ৭শ পাউন্ড। প্রতি মাসে অন্তত ৩ জন ছেলেমেয়ের জন্মদিন পালন ও পুরস্কার কিনতে ৩ হাজার পাউন্ড গুণতে হয়। কারো জন্মদিন যাতে বাদ না পড়ে সে জন্যে তালিকা টানানো থাকে। খরচ যোগাতে তাদের খুব কঠিন পরিশ্রম করতে হয়। ওই দম্পতি তাদের সঞ্চয় দিয়ে বেকারী ব্যবসা শুরু করেন যখন সিউ পঞ্চমবারের মত গর্ভবতী হয়েছিলেন। তখন থেকেই আমরা একের পর এক সন্তান নিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ি আর তাদের সবার জন্যে একটা ভাল ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে আমাদের চেষ্টার কোনো অন্ত ছিল না।





ব্রিটেনের এই দম্পতির কোনো ক্রেডিট কার্ড নেই। কারো কাছে ধারদেনা নেই। সিউ বলেন, অনেক মা আমাকে বলেন, যেখানে তারা ২/১টি সšত্মান প্রতিপালন করতে হাঁফ ছেড়ে ওঠেন, সেখানে এতগুলো ছেলেমেয়ে কিভাবে দেখভাল করা সম্ভব। আমি তাদের বলি রুটিন মাফিক কাজ করতে অভ্যস্ত হওয়ায় এত বড় সংসার দেখা আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছে।

রীতিমত সামরিক কায়দায় দৈনন্দিন কাজ সারতে হয় সিউ রেডফোর্ডকে। সকাল পৌণে ৭টায় ঘুম থেকে উঠে বাচ্চাদের তুলে দেয় সিউ। এরপর সকালের প্রাতরাশ তৈরি করার পর তাদের খাইয়ে স্কুলে পৌছে দিয়ে ঘরে ফিরে ধোঁয়ামোছা, কাপড় ইস্ত্রি, পরিস্কার করা, কেনাকাটা সেরে ফেলতে হয় ছেলেমেয়েরা ঘরে ফেরার আগেই।





ওদিকে ভোর ৫টায় নোয়েল তার বেকারী খোলেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ছাড়াও সন্ধ্যার খাবার তৈরিতে স্ত্রীকে সাহায্য করেন।





পরিবারটির পছন্দ রেসিপি হচ্ছে ইতালির কটেজ পাই। যা তৈরিতে ৩১ পাউন্ড আলু, ব্রোকোলি ও গাজর লাগে। রাতের শোয়ার সময় শুরু হয় সন্ধ্যা ৭ টায়। রাত ১০ টার পর সিউ ও নোয়েল শুয়ে পড়লেও রাতে দু’বার ৩ মাসের শিশু ক্যাসপারকে খাওয়ানোর জন্যে উঠতে হয় এবং তাতে কিছু মনে করেন না সিউ। খুব কমই সময় পাই আমরা একে অপরে খোশগল্প করার, যদিও তা আমাদের কাছে খুব লোভনীয়।





তারপরও সিউ ও নোয়েল মাসে অন্তত একটা রাত নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়ার ফুরসত পান। যা তাদের কাছে কম বলেই মনে হয়। আর ওই রাতটিতে ওরা ডেটিং করতে আশেপাশের কোনো হোটেলে যান, এক সঙ্গে খান এবং উপলব্ধি করেন আরো সময় তাদের ভাগাভাগি করে নেয়া উচিত। তারা বছরে পারিবারিকভাবে ছুটি কাটাতে পারেন কী না এ নিয়ে ছেলেমেয়েরাও চিšত্মাভাবনা করছে। তবে গত বছর তাদের সংসারের খরচ ৫ হাজার পাউন্ড ছাড়িয়ে গেছে এবং ছেলেমেয়েদের পাসপোর্ট তৈরিতে অতিরিক্ত আরো ১ হাজার পাউন্ড খরচ করতে হয়েছে।





সিউ ঠিক করেছেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ফ্রান্সে বেড়াতে যাবেন। নিজেদের ১৫ আসনের একটি মিনিবাস থাকলেও তারা তারচেয়ে একটু বড় বাস ভাড়া করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর আগে সপ্তাহে ৩ টি কারাভান ভাড়া করার পর দেখা গেছে বাচ্চারা কাছে থাকতে চায় বলে দুটি কারাভানেই সবাইকে গাদাগাদি করে ঘুমাতে হয়। তবে কোথাও যাবার আগে পাছে ফের কিছুটা বিব্রত হতে না হয় এমন ভাবনা পেয়ে বসে পরিবারটিকে। কারণ তারা যেখানেই যায় আশেপাশের সবাই কিছুটা হলেও অবাক হয় তাদের সংখ্যা দেখে। তারা হয়ত আমাদের গুনতে শুরু করে নাহলে মšত্মব্য শুনতে হয়।

View Link





Click This Link



তবে পরিবারটির আকার কমতে শুরু করবে শীঘ্রই। যদিও বড় ছেলে ক্রিস বাবার সঙ্গে ব্যবসা দেখভাল করছে, মেয়ে সোপি পারিবারিক ব্যবসা থেকে সরে যেতে চাচ্ছেন, চোলি যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। এই প্রথম পরিবারটির কেউ সংসার ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছে আর সিউ তার অভাব বোধ করবেন। সিউ চিšত্মাই করতে পারেন না তার ছেলেমেয়েরা অন্য কোথাও যাচ্ছেন। একবার আমরা সিদ্ধাšত্ম নেই, আর ছেলেমেয়ে নয়, কিন্তু যারা আছে তাদের প্রতিপালন করতেই হবে। তাই আমদের ঘর কখনো শাšত্ম হবার নয়। এটা যে কোনো নেশা তাও নয়, আসলে আমরা ছেলেমেয়েদের বড্ড বেশি ভালবাসি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.