নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি স্বপ্ন দেখি

হাজারটা স্বপ্ন একটি বাস্তবতাকে বদলাতে পারে না

বোধহীন স্বপ্ন

কিছুই ভালা লাগে না।

বোধহীন স্বপ্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এইচ এস সি পরীক্ষার রেজাল্ট এবং আমার কিছু অযথা আতলামী

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০৮

আজ প্রায় প্রতিটি দৈনিক পত্রিকার প্রধান খবর এইচ এস সি পরীক্ষার রেসাল্ট প্রকাশ নিয়ে । বরাবরের মত এবারও বিভিন্ন কলেজের পাশ করা "ছাত্রী"দের গ্রুপ ছবি ছাপানো হয়েছে । তা হোক, যতখুশি ফটো ছাপাও সমস্যা নাই । তবে চোখ চলে গেলো পত্রিকার পৃষ্ঠার একেবারে কোনায়, যেখানে রাজউক কলেজের অধ্যক্ষের একখানা ছবি । তা থাকবেই না কেন, তার কলেজ তো সবার সেরা । ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা আর শ্রম এবং অবিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা, আরো নানা কারণে তাদের এই সাফল্য !!



আসুন একটু পর্যালোচনা করা যাক । মূলতঃ গতবার দু-একজন ছাত্র ফেল করায় তা রাজউক কলেজ কর্তীপক্ষের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় । আর একারণে কিছু বিশেষ ব্যাবস্থা নেয়া হয় তখন, কিছুতেই আগেরবারের পূণরাবৃত্তি চলবে না । যেমন প্রতিটি পরীক্ষার হলে তারা সিসি ক্যামেরার ব্যাবস্থা করেছে । কেউ ঘাড় ঘোরালেই তার খাতা গায়েব হয়ে যায়, এমনকি টিসি খাওয়ারও সম্ভাবণা থাকে । আবার পরীক্ষার শেষ ঘন্টা বাজার পর কেউ লিখলে তার খাতা সরাসরি ছিড়ে ফেলা হয় । সেই পরীক্ষাটা যদি হয় টেস্ট পরীক্ষা তখন ফাইনালের জন্য নির্বাচিত হতেই একজন ছাত্রের হিমশিম খেতে হবে । এবার সেখানে ১০ জন বাদে বাকী সবাই জিপিএ-৫ ।



খেয়াল করুন, দেশের অনেক নামধারী কলেজগুলোতেও ১০০% পাশের হার সম্ভব হয়না কখনো কখনো, কিন্তু রাজউক সহ বেশ কিছু বেসরকারী কলেজ নিজেদের হিসাব করে জিপিএ-৫ এর পারসেন্টেজ দিয়ে । বেসরকারী কলেজগুলো তাদের ব্যবসায়িক দিকটাই বেশি দেখবে সেটাই স্বাভাবিক, A+ এর সংখ্যা দিন দিন যত বাড়বে, কলেজের সুনামও বাড়বে, আরো ছাত্র ভর্তি হবে ইত্যাদি । তাই আমাদের দিন দিন ছোট হতে থাকা সিলেবাসগুলোকে আরো ছোট ছোট করে পড়ানো হয়, যেটুকু না পড়লেই নয় ঠিক ততটুকুই । ইম্পরটেন্ট প্রশ্নগুলো ধরে ধরে শেখানো হয়, নোট করে দেয়া হয়, প্রয়োজনে পড়া মুখস্থ করে বাসায় পাঠানো হয় । আর পরীক্ষার সময় গোপনে নকল সাপ্লাই, পরীক্ষা কেন্দ্রের সাথে নিজেদের সুসম্পর্ক বজায় রাখা, এসব তো আছেই । বেসরকারি বাদে অন্য স্কুল-কলেজগুলোও যে তা করছে তা কিন্তু এটা হয়ে থাকে কখনো কখনো ।



এখন প্রশ্ন হল, এভাবে অল্প পড়িয়ে সাজেশন দিয়ে অথবা অন্যভাবে হয়তো ভালো রেজাল্ট আমরা পাচ্ছি, কিন্তু সেই তুলনায় ছাত্ররা কতটা মেধাবী হচ্ছে? আমি ভার্সিটি ভর্তির কথায় যাচ্ছি না, সেটা ভিন্ন জিনিস । কিন্তু আজ যে ছাত্র A+ বা কিছু একটা পেয়ে যে পাশ করে বের হল, সে আসলে ঠিক কতটা কি শিখেছে আমরা কি তা যাচাই করে দেখেছি? যদি কেবল পরীক্ষায় পাশের জন্য জোর করে স্কুল-কলেজে কিছু পড়ানো হল, তারপর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আমরা তা তারা ভুলে গেল, তাহলে সে শিক্ষার মূল্যটা কোথায়?



এটাতো কেবল একটা দিক । আমাদের নামী-বেনামী স্কুল-কলেজগুলোতে ছেলে-পিলেদের শুধু পাশ করানোর জন্যই প্রয়োজনীয় পড়াশুনা করানো হচ্ছে, এতে করে তারা হয়তো ভবিষ্যতে ভালো জব পেতে পারে । কিন্তু মানুষ গড়ার যে ব্যাপারটা তা কতটা পালন হচ্ছে? ছাত্র-ছাত্রীরা প্রয়োজনীয় নৈতিকতার শিক্ষা আসলে ঠিক কতটুকু পাচ্ছে? আমাদের স্কুল লেবেলে কিছু ধর্মীয় নৈতিকতার বই ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে । জীবে দয়া, রোগীকে সেবা করা, পরনিন্দা মহাপাপ এধরণের কিছু বিষয়, আমাদের নৈতিক ও মানবিক শিক্ষাগুলো এ পর্যন্তই । অন্যসব বিষয়ের মত বইয়ের পাতাতেই এগুলো সীমাবদ্ধ । কিন্তু এভাবে একটা ছাত্র ঠিক কতটা মানুষ হয়ে গড়ে উঠছে? আমাদের স্কুল-কলেজগুলোতে মানবিকতা, মুক্তচিন্তা, পরমত সহিষ্ণুতা এগুলোর চর্চা কি পরিমান হচ্ছে এখানে? এগুলো শেখানোর জন্য শিক্ষকেরা কোথায়? বরং অনেকে দেখা যায় ছাত্রদের সামনে অন্য শিক্ষক বা হেডস্যারদের মুন্ডুপাত করে বেড়ায় । ভালোমনের কিছু শিক্ষক আছে, তবে নিতান্ত অপ্রতুল ।



ফলে যা দেখা যায় আমাদের দেশে জিপিএ-৪ বা ৫ পাওয়া তথাকথিত মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী তৈরি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু একটা ভালো মানুষ তৈরি হয় না বললেই চলে । অথচ শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য তো ছিল এটাই, একটি ছাত্রকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা, নয় কি?

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৮

আশাফ আনিস বলেছেন: ভালো মানুষ খুবি জটিল ব্যাপার

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৩৯

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: একেবারে ভালো দরকার নেই, অন্তত খারাপকে খারাপ হিসেবে চেনাতে পারলেই চলবে

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:১৪

বিচছু বলেছেন: আরে ভাই রাজউক কলেজ টাকা খাইয়ে ওদের কলেজে সিট ফালায় তাইলে ওরা ফাস্ট হইব না তয় কারা হইব X(( বড় এম্যাউন্ড বাজেটে এই লেনদেন হ্য় এই কলেজের ১০০% পাসের জন্য বহুত কাহিনি আছে এখানে :( :||

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৩২

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: আমিও উত্তরার একটা কলেজে পড়তাম । প্রশ্নপত্র ফাসের বেশ ভালো নমুনাই দেখেছি , ভবিষ্যতে আর কাউকে ওখানে পড়ার পরামর্শ দিব না.।।।

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:১৭

তানজিয়া মোবারক মণীষা বলেছেন: এইসবের ফল তো পাওয়া শুরু করেছি অলরেডি, ভালো মানুষ বানানোর চিন্তা আমাদের নেই, ফলে আমাদের গোড়া থেকেই চরিত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ++

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৩৫

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: বাইরের অনেক দেশে নাকি এই নৈতিক আর সামাজিক শিক্ষাগুলো হাতে ধরে ধরে শেখানো হয়, অক্ষর শেখানোরও আগে । আফসোস, আমাদের দেশে ওগুলো বইয়ের পাতা আর পরীক্ষার খাতাতেই সীমাবদ্ধ

৪| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৯

টুন্টু কুমার নাথ বলেছেন: ঠিক বলেছেন আপনি।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৪০

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:০৫

নিষ্‌কর্মা বলেছেন: আপনার পর্যবেক্ষন মনেহচ্ছে সঠিক। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হয়, তারা ইস্কুল-কলেজের মত টিচারদের কাছে সাজশান চায়, শর্টকাট পথ খোঁজে। ফলে তাদের আর পড়াশুনা হয়ে ওঠে না। টিচারদের কাছে সাজেশান পেলে তো ভাল, না হলে সিনিয়রদের থেকে বিভিন্ন টিচারদের বা কোর্সের পুরাতন প্রশ্ন নিয়ে সাজেশান তৈরী করে নিয়ে শর্টকাট পথ ধরে।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৪০

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: হুমম, গোড়াতেই গলদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.