নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি স্বপ্ন দেখি

হাজারটা স্বপ্ন একটি বাস্তবতাকে বদলাতে পারে না

বোধহীন স্বপ্ন

কিছুই ভালা লাগে না।

বোধহীন স্বপ্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহবাগ নিয়ে আমার যত আশা এবং হতাশা

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১০

অনেক দিন থেকেই এ বিষয়ে কিছু লিখব বলে ভাবছি। কিন্তু তা হয়ে উঠে না। দু'দিন আগে লেখক আসিফ এন্তাজ রাবি ভাইয়ের এক ফেসবুক পোস্টে একটা কমেন্ট চোখে পরে। সেখানে কমেন্টকারী উনার "শাহবাগী" পরিচয় পেয়ে একটা নোংরা গালি দিল এবং তাকে আনফ্রেন্ড করার ঘোষণা দিল। অবাক হলাম, শাহবাগী'দের প্রতি কিছু মানুষের এত ঘৃণা!!



শুধু সেখানেই না, আমার আশেপাশে অনেক মানুষকেই দেখেছি তারা তথাকথিত "শাহবাগী"দের দেখতেই পারে না। লাকী'র মত একজন মেয়ে টাইট জিন্স পরে এত মানুষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিয়েছে বলে তাকে উঠতে বসতে গাল দিতে হয়। শত শত ব্যানার-প্ল্যাকার্ডে আর জাতীয় পতাকার ভীড়ে তারা গাজার আসর আর "উলঙ্গ হইয়া" নাচ গান দেখতে পায়। দেখতে পায় হাজারো টাকার ছড়াছড়ি আর বিরিয়ানির প্যাকেট।



শাহবাগ মঞ্চ ছিল আমাদের সময়কার সবচেয়ে বড় মাপের আন্দোলন। হয়তো ভবিষ্যতে একদিন এমন কথাও চালু হবে যে আমরা শাহবাগ দেখেছি কিংবা আমরা শাহবাগের আন্দোলনের সময়কার লোক। একদিন শাহবাগ হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। ফরাসী বিপ্লব সফল হয়নি, তবে তা একটি রাষ্ট্রব্যাবস্থার আমূল পরিবর্তন এনেছিল। শাহবাগও এমন কিছু একটা হতে পারত। সারাদেশে জামাতের যে বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, যা ক্যান্সারের মত ছড়িয়ে আছে, তার বিরুদ্ধে এটাই একমাত্র সংঘবদ্ধ আন্দোলন ছিল। আমাদের দেশটির জন্ম যে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে, যার ভিতর দিয়ে একটি শোষণমুক্ত এবং ধর্মীয় গোরামী মুক্ত একটি দেশের স্বপ্ন দেখা হয়েছিল, সেই সময়কার চেতনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য এমন একটা কিছুর দরকার ছিল। এই শাহবাগ থেকেই প্রথম জামাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বয়কট করার ঘোষণা আসে। জামাত-শিবিরের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, আশা করি তারা উপলব্ধি করেন এই ঘোষণা কতটা সাহসী ছিল।



এই কারণে শাহবাগ নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। তবে জামাতের অপপ্রচারের কাছে এবং কিছুটা নিজেদের ভুলের কারণেই ধীরে ধীরে আন্দোলনটা নষ্ট হয়ে গেছে।



আমার মতে শাহবাগের প্রথম ভুল ছিল ব্লগার থাবা বাবা(রাজীব হায়দার)-কে জোর করে "আস্তিক" হিসেবে প্রচারের চেষ্টা করা। এতে করে মানুষের মনে সন্দেহ দানা বাধে। শাহবাগ "নাস্তিকদের মঞ্চ" হিসেবে কুখ্যাতি লাভ করে। অবশ্য এটা অনিবার্য ছিল। কারণ শুরু থেকেই ছাগু'রা এ ব্যাপারে ততপর ছিল। ফেসবুকে ফেইক আইডি খুলে খুলে শাহবাগ সংক্রান্ত পোস্টগুলোতে ধর্ম নিয়ে বিষোদগার করে তারা। এতে অনেকের কাছে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। হাজার হলেও এ দেশে ধর্ম জিনিসটা খুব সেন্সিটিভ। তবে একটা ব্যাপার দেখে খুব অবাক হই যে এখানে মানুষের কাছে একটা মানুষের হত্যাকান্ডের চেয়ে তার নাস্তিক পরিচয় মূখ্য হয়ে দাঁড়ায়। আর এখানেই ছাগুদের কাছে মার খেয়ে যায় শাহবাগ মঞ্চ।



আরেকটি মস্ত ভুল হল আন্দোলনের রাজনৈতিক মেরুকরণ। এই আন্দোলনের বিষয়বস্তু আওয়ামী লীগের স্বপক্ষে যাচ্ছিল। আর সেখানে অনেকেই আবার লীগের সাপোর্টার ছিল। সরকার সুযোগ পেয়ে এই আন্দোলনকে ব্যবহার শুরু করে। সেই স্থানে ভ্রাম্যমান টয়লেট বসিয়ে দেয়। চারপাশ জুড়ে পুলিশ পাহারা বসানো হয়। কিছু মন্ত্রী ও সাংসদের আনাগোনা চলতে থাকে। সবাই ধরেই নেয় এটাও সরকারের সাজানো নাটক (এবং এখনো বেশিরভাগ লোক তা-ই মনে করে)। দৃশ্যপটে ইমরান এইচ সরকারের আগমন হয়। যে কিনা এক সময় ছাত্রলীগের নেতা ছিল।



শাহবাগ একটা পুরোনো ভুল আবার করে। চেতনার প্রশ্নে তারা হয়ে যায় আওয়ামী নির্ভরশীল। মূলধারার রাজনীতিতে একমাত্র আওয়ামী লীগ দেশের সত্যিকার মূল্যবোধকে ধারণ করে। সমমনা অন্য দলগুলো এখনো লীগের পর্যায়ে যেতে পারেনি। মূলধারার অন্য দলগুলো এখন পর্যন্ত ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠি লীগকেই পছন্দ করে সব সময়। কিন্তু সমস্যা হল আওয়ামী লীগ কিন্তু দিন দিন তার এই সুনাম হারাচ্ছে, আর এখন তো সেটা একেবারেই সংকটাপন্ন হয়ে গেছে। এখন তারা শুধু "নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো"। এ অবস্থায় শাহবাগও নতুন কিছু সামনে আনতে পারত বলে আমি মনে করি। কিন্তু তারা এরকম কোন কিছুর সাথে আমাদের পরিচয় ঘটাতে পারেনি। সেই আগের মত অন্ধভাবে সরকারকে সমর্থন দিয়েই গেছে এই বলে যে, আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ যুদ্ধ-অপরাধীর বিচার করতে পারবে না। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় ধীরে ধীরে বিভক্তির সৃষ্টি করে। গণজাগরণ মঞ্চের সাথে বামদল ও রুমি স্কোয়াডের হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। অনেনেই শাহবাগ ত্যাগ করে।



এই রাজনৈতিক দলাদলির গেড়াকলে পরেই শাহবাগ নষ্ট হয়েছে। কেউ সরকারের সমর্থন করছে, কেউ বামদলের হয়ে কাজ করছে। আর এখান থেকে সরকার ও জামাত উভয়-ই ফায়দা লাভের সুযোগ পেয়েছে। একপক্ষ তাদের দাবার ঘুটি হিসেবে ব্যবহার করছে, আরেক পক্ষ তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে। অথচ এমন একটা ইস্যুতে প্রয়োজন ছিল সকলের একত্র হবার, একটা যূথবদ্ধতার। কারণ যেই জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান, তারা অনেক বেশি সুসংহত।



সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তাদের শক্ত অবস্থানকে আমি স্যালুট জানাই। দেশের হিন্দুদের উপর বর্বর হামলার প্রতিবাদ সচেতন সকল মানুষই করেছে। গণজাগরণ মঞ্চও এ ব্যাপারে তাদের মনোভাব স্পষ্ট করেছে, এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এটা নিসন্দেহে একটা ভালো দিক।



কিন্তু পাকিস্তানের হাইকমিশন ঘেরাও করার স্বীধান্ত আমার কাছে সঠিক মনে হয়নি। হাজার হলেও ওটা ভি আই পি এলাকা। এক্ষেত্রে তাদের পরিপক্কতার পরিচয় দেয়ার দরকার ছিল। আবার হামলা করা পুলিশদের জামাত-শিবির বলাটাও খুব বেশি সস্তা মানসিকতা। বলা বাহুল্য, বিম্পি যেমন পুলিশের মাধ্যমে সরকারের দমন পীড়ন নিয়ে গরম গরম কথা বলতে পারে, মঞ্চ তা পারে না। তাই বোধহয় তাদের এই অবস্থান!!





আজ গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে আমি বড়ই হতাশ হই। যেই শাহবাগ একদিন তারুন্যের মাঝে এক আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল, তা এখন কেবল সরকারের দাবার ঘুটি। তাদের নিয়ে এখন আর নতুন কোন স্বপ্ন দেখি না। অনেকে কয়েকটি ফাসির রায়, বা ফাসি কার্যকরকে সাফল্য হিসেবে দেখালেও আমি তা মনে করি না। এগুলো সরকার নিজেদের কুটিল রাজনীতিরই অংশ। এখানে মঞ্চের দাবী মানা হয়নি, বরং মঞ্চের সেন্টিমেন্টকে ব্যবহার করা হয়েছে। আবার ফাসির দাবির বাইরে অনেক বিষয় নিয়ে তাদের বক্তব্য থাকলেও "ফেলানী ইস্যু"তে তাদের কোন কিছু বলতে শুনলাম না। এটাও তো একটা জাতীয় ইস্যু ছিল, রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের উপর এক রকম আঘাত ছিল!!











তবে যত যাই হোক, শাহবাগ আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় ঘটনা, সবচেয়ে বড় তরুনদের আন্দোলন। আমি শাহবাগ দেখেছি।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৩৭

নিরীহ বালক বলেছেন: আশা করি ভবিষ্যতে শাহাবাগ বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়াবে , কোন দলের পক্ষে নয় ।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৪২

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: আমিও সেই আশা রাখি। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২০

পদ্মাসেতু বলেছেন: আওয়ামীলীগ আবারো ৫ বছরের জন্য দেশের ক্ষমতায় এসেছে। সময়ের প্রবাহের সাথে সাথে শাহবাগ ও তার মূল লক্ষ্য আরো স্পষ্ট হবে আশা করি। শাহবাগ নিয়ে তখন অনেকের ভুল ভাংবে আবার নতুন করে অনেকের ভুলের সৃষ্টি হবে।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৮

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: অনেকের ভুল ভাংবে আবার নতুন করে অনেকের ভুলের সৃষ্টি হবে

৩| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৪০

কালবৈশাখীর ঝড় বলেছেন:
শাহাবাগ গণজাগরন দুর্দান্ত ভাবে সফল।
এই আন্দোলনটা না হলে যুদ্ধাপরাধের বিচার হত একটা লোক দেখানো প্রহসন, কশাই কাদেরের ফাসি দেয়া কখনোই সম্ভব হতনা।


গণজাগরন মঞ্চের লাখ লাখ সাধারন মানূষের দাবি, কিছুটা আওয়ামীকরন হয়েছে। হবেই। গণজাগরনের সাধারন মানূষের দাবি ও আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইসতেহারের প্রথম ধারা মুলত একই, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি।

গণজাগরন মঞ্চের সাথে একাত্ততা পোষন করে ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন ও অন্যান্ন কিছু ছাত্র সংগঠন, বিচ্ছিন্ন ভাবে ছাত্র দলের কিছু সদস্য।
নীতিগত ভাবে গনজাগরন মঞ্চের সাথে আওয়ামীলীগ একাত্ত ছিল শুরু থেকেই। থাকতে হবেই, কারন বিচার করছে আওয়ামীলীগ, পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত আওয়ামীলীগেরই।
সবাই ভালকরেই জানে আওয়ামীলীগ ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোন দল এত বড় দুঃসাহসি কাজে হাত দিত না।
আওয়ামি লীগ এটাকে রাজনৈতিক উদ্দেস্যে ব্যাবহার করে ফেললে এটা পচে যেতে পারে না।

বেশিরভাগ দাবী মেনে নেয়াতে এবং বিচার প্রকৃয়া সঠিক ভাবে চলাতে গণজাগরন মঞ্চের কার্যক্রম সাভাবিক ভাবেই স্তিমিত হয়ে যায়।

গণজাগরনে অর্জন

বাঙ্গালির প্রানপ্রিয় স্লোগান 'জয় বাংলা' আওয়ামীলিগের হাত থেকে ছিনিয়ে এনে সার্বজনিন হওয়া।

শাহাবাগের জনমত তাজা থাকতেই সরকার দ্রুততার সাথে ৪টি আইন সংশোধন ও সংযোজন করতে বাধ্য হয়।
রায়ের দ্বিমুখি আপিল অধিকার আইনে সংযোজন। যার মাধ্যমে কশাই কাদেরের ফাসি সম্ভব হয়েছে।
অতিরিক্ত আরেকটি বেঞ্চ গঠন করে এবং নতুন প্রসিকিউটর (তুরিন আফরোজ) নিয়োগ দিয়ে বিচার কাজে গতি সঞ্চালন
দল (জামাত) নিবন্ধন বাতিল,
আমারদেশ পত্রীকা ছাপানো নিসিদ্ধ ও সম্পাদক গ্রেফতার।
রায় ঘোষনার ২-৪ মাসের ভেতর আপিল নিস্পত্তি করা এবং রায় কার্যকর করা।

আবার বিচার নিয়ে তালবাহানা সুরু হলে আবার শাহাবাগ তৈরি হতে ২ ঘন্টার বেশী লাগবে না।

এটিও পড়ুন
Click This Link

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১০

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: আবার বিচার নিয়ে তালবাহানা সুরু হলে আবার শাহাবাগ তৈরি হতে ২ ঘন্টার বেশী লাগবে না।

এখন আর অতটা ভরসা করতে পারি না, বিশ্বাস করতে পারি না তারা এখনো সরকারের তালবাহানার বিরুদ্ধে শক্ত কিছু বলার ক্ষমতা রাখে। গোয়া আজম এখনো আড়ামে দিনাতিপাত করে আর চক্রান্তের ফন্দি আটার সুযোগ পায়, আমি ক্ষুব্দ!!!

৪| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০৩

বৃত্তবন্দী শুভ্র বলেছেন: শাহবাগ আন্দোলন সফল। কাদের মোল্লার ফাঁসি সবচেয়ে বড় প্রমান। জয় বাংলা

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০৩

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: শুরুটা কাদের মোল্লার রায় থেকেই হয়েছিল। সেই হিসেবে সফল বলাও যায়।

৫| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৩৭

মামুন হতভাগা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
শাহাবাগের সবথেকে বড় যে ভুল ছিল তা হল, গত বছরের ২১ শে ফেব্রুয়ারির মহাসমাবেশ থেকে অনান্য মঞ্চের সাথে কথা না বলে আন্দোলন বন্ধ করে দিয়ে সময় বেধে আন্দোলন চালানোর সিদ্ধান্ত।
কারণ তার পরের দিন ২২শে ফেব্রুয়ারি জামায়াত-শিবির আর হেফাজত এক হয়ে হামলে পড়ে সারা দেশে।সব জায়গার মঞ্চ,রাজাকারের বিচার চেয়ে করা ব্যানার-ফেস্টুন,মিডিয়া কর্মী সহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির যতটুকু সামনে পেয়েছে চুরমার করে দিয়েছিল।হিসেব করে দেখবেন যে কয়দিন শাহাবাগ সহ সারা দেশে জাগারণ মঞ্চ আন্দোলন চালাচ্ছিল সে কয়দিন জামায়াত-শিবির গর্তে লুকিয়েছিল।বিএনপি আর জামায়াতের ষড়যন্ত্রে গোপনে হেফাজত নামক যে তালেবান স্টাইলের দল গঠন করা হয়েছিল,তারা এ রকম একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল।জামায়াতুল মুজাহেদিন নামে বাংলা ভাইরা ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা করে যেমন আতঙ্ক ছড়িয়ে নিজেদের জানান দিয়েছিল,হেফাজতের ২২ তারিখের হামলাও ছিল এক যোগে সারাদেশে।ঐ হামলাই পিছিয়ে দেয় জাগারন মঞ্ছকে।
জাগারন মঞ্চের নেতাদের আমার নিজেরও পছন্দ নয় কিন্তু স্বাধীনতার পর সারা দেশে "জয় বাংলা" বা "ক" তে কাদের মোল্লা- তুই রাজাকার সহ নানা স্লোগান আবার আবাল-বৃদ্ধা-বণিতার মুখে মুখে ফিরিয়ে দিয়েছে এ জন্য কৃতজ্ঞ জাগারন মঞ্চের কাছে।
জাগরণ মঞ্চ যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে সারা দেশ যে এক করতে পেরেছে, এ জন্য কৃতজ্ঞ মঞ্চের কাছে।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১৭

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: আপনার সাথে কিছুটা একমত। সারা দেশকে এক করতে পেরেছে কিনা জানি না, তবে শাহবাগের মত একটা ব্যাপারের কারণেই বন্ধুদের আড্ডার ফাকে ফাকে কিছু কথা আলোচনা হবার সুযোগ হয়েছিল যা আগে হত না। এইটার বড় প্রয়োজন ছিল।

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

৬| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:০২

সচেতনহ্যাপী বলেছেন:
আরেকটি মস্ত ভুল হল আন্দোলনের রাজনৈতিক মেরুকরণ। এই আন্দোলনের বিষয়বস্তু আওয়ামী লীগের স্বপক্ষে যাচ্ছিল। আর সেখানে অনেকেই আবার লীগের সাপোর্টার ছিল। সরকার সুযোগ পেয়ে এই আন্দোলনকে ব্যবহার শুরু করে। সেই স্থানে ভ্রাম্যমান টয়লেট বসিয়ে দেয়। চারপাশ জুড়ে পুলিশ পাহারা বসানো হয়। কিছু মন্ত্রী ও সাংসদের আনাগোনা চলতে থাকে। সবাই ধরেই নেয় এটাও সরকারের সাজানো নাটক (এবং এখনো বেশিরভাগ লোক তা-ই মনে করে)। দৃশ্যপটে ইমরান এইচ সরকারের আগমন হয়। যে কিনা এক সময় ছাত্রলীগের নেতা ছিল।
আপনার এই অংশটুকু আসলেই বাস্তব। শুরু থেকেই এর মেরুকরন নির্দিষ্ট ছিল। প্রমান বাপ্যাদিত্য সহ বাম সমর্থকদের অংশগ্রহন। আসলে বামেরাই একটা আপামর জনতার মনের সুপ্ত ইচ্ছেটাকে স্লোগানে পরিনত করে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে চেয়েছিলো। অবস্যই সরকারী ছত্রছায়ায়।
তবে সাধারন মানুষের কাছে গনজাগরন মঞ্চ তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে বলে আমি মনে করি। জনগনের আবেগ নিয়ে দাবাখেলার ফল কখনো ভাল হয় না,পরবর্তিতে তাই প্রমানিত।। আমরা আর কখনো আরেকটা মঞ্চ তৈরী করতে পারো বলে আমার মনে হয় না।।
ধন্যবাদ লেখককে এমন বিশ্লেষনধর্মী লেখার জন্য।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২২

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: তবে সাধারন মানুষের কাছে গনজাগরন মঞ্চ তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে বলে আমি মনে করি।

পুরোপুরি একমত। অনেকের কাছে তো এখন হাস্যরসের বস্তুতে পরিণত হয়েছে।

আপনাকে শুভকামনা।

৭| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৪৭

সানড্যান্স বলেছেন: থাবা কে জোর করে আস্তিক বানানোর প্রয়োজন ছিলনা, ওর লাশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কাজে এসেছে মাত্র!
এছাড়া শাহবাগের শুরুর দিন গুলো যেমন উত্তাল ছিল, পর্যায় ক্রমে দলীয় করন হওয়াতে এটা শেষ পর্যন্ত হাস্যকর একটা বিষয় হয়।
তবে অর্জন আছে, কাদের মোল্যার ফাসিঁ হয়েছে!!

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৭

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: একমত।

ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:০১

Palol বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধ মানেই আ্ওয়ামী লীগ এবং তার যাবতীয় অপকর্মকে জায়েজ করা নয়। তাই গণজাগরণের প্রথম দিকে যখন তার একটা সরকার বিরোধী চরিত্র ছিল, তখন পর্যন্ত তার মধ্যেও একটা প্রাণসত্ত্বা ছিল। আমার মতে, সরকার বিরোধী অবস্থানটা জারি রাখতে পারলে শাহবাগকে নাস্তিক বলে কেউ বিচ্ছিন্ন করতে পারত না।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৪

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: শাহবাগ কিন্তু সরকার বিরোধী কিছু ছিল না। অবশ্য তাদের অবস্থান শুরু থেকেই কেমন ঘোলাটে বলে মনে হয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলাও হয়নি। মূল ইস্যু তো ফাসির দাবী। কিন্তু কার কাছে সেই দাবী? সরকার নাকি বিচার বিভাগ?

তবে সরকার বিরোধী চরিত্র ছিল বলে মনে পরে না। তারা এরকম কোন স্লোগানও দেয় নি। দুই জন মন্ত্রীকে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেয়াটা শুধু অরাজনৈতিক চরিত্র ঠিক রাখার চেষ্টা বলেই মনে হয়, ওটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

৯| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:২৬

মিতক্ষরা বলেছেন: শাহবাগে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা থাকায় ঐ আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া শাহবাগ সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে সরকারের। শাহবাগের কারনে হেফাজতের উত্থান হয়েছে এবং সে ঘটনা সরকার সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে পারে নি।

আপনি যেরকম বলছেন জামাত বিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে - তা কিন্তু নয়। শাহবাগ যেভাবে রাজাকার বিরোধিতায় তরুনদের জমায়েত করতে পেরেছে তাতে বাংলাদেশের মানুষের জামাত বিরোধী মনোভাব বিস্ফোরনের মত ফুটে উঠেছে। শাহবাগ আন্দোলন সঠিক নির্দেশনায় এগোয়নি বলে ফ্লপ করেছে। কিন্তু আমরা তরুনদের উচ্ছাস দেখেছি। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয়েছিল অনেক আগে। একটু একটু করে এগিয়ে আজ জাতি ৭১ এর দালালদের বিচার দেখছে। বিচার পদ্ধতি নিয়ে নানা মত থাকলেও বিচার করা যে প্রয়োজন তাতে আজ আর কারো দ্বিমত নেই। সময় হলে জামাতের পরিনতিও একই হবে। জামাত কৌশলী দল হলে আগেই বুঝতে পারত যে অতীতের পরাজয়ের দায় সামনে টেনে আনা যায় না। জামাত হয়ত তিক্তকর অতীতকে পেছনে ফেলে আবার নূতন দল করবে। যা তাদের ৩৮ বছর আগে করনীয় ছিল, তা হয়ত সামনের ভবিষ্যতে করবে।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫২

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: আপনার সাথে অনেকটাই একমত। তবে জামাতের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের সাথে পাল্লা দিতে তারা কার্যত ব্যর্থ বলেই মনে হয়েছে। আর এর জন্য নিজেদের মধ্যে দলাদলিটাই দায়ী বলে মনে করি।

ধন্যবাদ মতামতের জন্য।

১০| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৪

আরিফ রুবেল বলেছেন: শাহবাগ আন্দোলন হচ্ছে বাঙালী কতটা হুজুগে হতে পারে তার একটা বড় উদাহরণ। অনেকেই হয়ত আমার সাথে এ বিষয়ে একমত হবেন না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে যাদের হাত ধরে শাহবাগের গণ আন্দোলনের উত্থান তাদের কারোই এই ধরনের গণ আন্দোলন পরিচালনার কোন প্রত্যক্ষ এমনকি পরোক্ষ অভিজ্ঞতা ছিল না। কাজেই তাদের পক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠী (সরকারী এবং বিরোধী, বাম এবং ডান) চাল ধরা সম্ভব হয়নি। তার উপর শাহবাগের আন্দোলন যখন 'গণজাগরণ মঞ্চ' নামক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়া হল তখন এই দুইটি কারণ (অভিজ্ঞতার অভাব এবং কূটচালসমূহ ধরতে না পারা) এতটা প্রকট হয়ে দেখা দিল যে আজকে শাহবাগী নাম শুনলে মানুষ নাক সিটকায়। যে ব্লগার পরিচয়ের লোভে হাজার হাজার মানুষ সে সময় বিভিন্ন ব্লগে একাউন্ট খুলেছিল তারা আজ ব্লগার বলতেই বোঝে 'নাস্তিক' বা ক্ষেত্রেবিশেষে 'ইসলাম বিদ্বেষী'।

শাহবাগ আন্দোলনে আরেকটি পক্ষ খুব বেশি লাভবান হয়েছিল, বাংলাদেশের গ্রহনযোগ্যতা হারাতে বসা নিউজ মিডিয়াসমূহ। বাংলা ব্লগের বিকাশ, বিকল্প মিডিয়া ভাবনা, সত্য প্রকাশে সহজলভ্যতা ইত্যাদি কারনে মানুষ পত্রিকা পড়ার আগে ব্লগে আসত বা কোন নিউজ আসলে সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ব্লগে খোঁজ করত। আজকে সেটা অনেকাংশেই ম্রিয়মান। অপরদিকে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অনলাইন নিউজ মিডিয়া। ব্লগে কেউ ভুয়া খবর দিলেও খুব দ্রুতই তা প্রকাশ পেয়ে যেত। কিন্তু এই সকল মিডিয়াতে সে সুযোগ না থাকায় মানুষ অতি দ্রুত গুজবে আক্রান্ত হচ্ছে।

শাহবাগ আন্দোলনের পর অনেক খ্যাতিমানের লুঙ্গি নিয়ে টানাটানি হয়েছে, অনেক গুজব এসেছে। মানুষ ব্লগবিমুখ হয়েছে। অনেক নিয়মিত ব্লগার অনিয়মিত হয়েছেন।

তবে আমার কাছে আশার জায়গাটা হচ্ছে 'শাহবাগ'। কারণ ওখান থেকেই বাংলাদেশের তারুণ্যের শক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। শাহবাগেই বাংলাদেশের তারুণ্য স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে। আমি শেষ দিকে কাদের মেলা হয়ে যাওয়াটাকে হতাশাজনক বলছি না। আপনি দাঁড়াতে শিখেই হাটতে শুরু করেননি, হাটতে শিখতে গিয়ে আপনাকে অনেকবার হোচট খেতে হয়েছে।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৯

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: মিডিয়া কিছুটা লাভবান হয়েছে ঠিক, তবে তাদের গ্রহণযোগ্যতা আগে যেমন কম ছিল, এখনো তাই। মানিষ ব্লগবিমুখ হয়েছে বলে মনে হয় না, বরং আরো বেড়েছে। তবে পাশাপাশি একশ্রেণীর মগবাজারী কপি-পেস্ট ব্লগারের সংখ্যাও বেড়েছে, এটা বড়ই পীড়া-দায়ক। অনিয়মিতরা হয়তো আবার নিয়মিত হবে যদি সেই নোংরা ট্যাগিং এর অবসান হয়।

ধন্যবাদ আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.