নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

[কারো সমালোচনা করো না, তাহলে নিজেও সমালোচিত হবে না]

Sujon Mahmud

কারো যদি গোপন সাফল্যের চাবিকাঠি থাকে, তাহলে সেটা থাকে তার অন্যের কথার দৃষ্টাকোণ আর নিজের দৃষ্টি কোণ বুঝে নেওয়ার মধ্যে।।

Sujon Mahmud › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামাত ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের উপর সম্ভাব্য প্রভাব

১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৫



ছবি এ আই দিয়ে তৈরি
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জামাত একটি আলোচিত ও বিতর্কিত নাম। দেশটির স্বাধীনতার সময়কাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যুতে এই দলটি বিতর্কিত ভূমিকা রেখেছে। তাই প্রশ্ন ওঠে, জামাত যদি আবার ক্ষমতায় আসে, তবে দেশের উপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে? এই ব্লগে আমরা সেটি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করবো।

১. মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর আঘাত

জামাত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার বিরোধিতা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। যদি তারা ক্ষমতায় আসে, তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাৎ করার চেষ্টা হতে পারে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া থমকে যেতে পারে এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজন্ম বিভ্রান্ত হতে পারে।

২. গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের চ্যালেঞ্জ

জামাতের অতীত কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, তাদের রাজনৈতিক আদর্শ একটি ধর্মীয় ভিত্তি গ্রহণ করে, যা প্রথাগত গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ক্ষমতায় আসার পর তারা সম্ভবত শরিয়াভিত্তিক শাসন চালু করার চেষ্টা করবে, যা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক কাঠামোর সাথে সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে।

৩. শিক্ষা ও নারীর অধিকারে প্রভাব

জামাত ক্ষমতায় এলে নারীর শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সমঅধিকার বড় ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে। অতীতে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান থেকে দেখা যায় যে তারা নারীর স্বাধীনতার প্রশ্নে রক্ষণশীল এবং সীমিত সুযোগের পক্ষে। একইভাবে, শিক্ষা ব্যবস্থার উপর ধর্মীয় প্রভাব বাড়ানোর মাধ্যমে বিজ্ঞান, ইতিহাস এবং সমাজবিজ্ঞানের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

৪. আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অবনতি

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মিত্রদের মধ্যে এমন অনেক দেশ রয়েছে যারা মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে মূল্য দেয়। জামাত ক্ষমতায় এলে এই মূল্যবোধগুলোকে আঘাত করা হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্কের অবনতির কারণ হতে পারে। বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলো এবং প্রতিবেশী ভারত এ পরিস্থিতিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখবে।

৫. অর্থনীতিতে স্থবিরতা

একটি স্থিতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। জামাত ক্ষমতায় এলে ধর্মভিত্তিক শাসন বা আইন কার্যকর করার কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যেতে পারে। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়া এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হতে পারে।

৬. সামাজিক মেরুকরণ বৃদ্ধি

জামাত ক্ষমতায় এলে ধর্মকে কেন্দ্র করে সামাজিক বিভাজন আরও বাড়তে পারে। বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির অভাব তৈরি হতে পারে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আরো বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারে। এটি সামগ্রিক জাতীয় ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর।

৭. দলীয় রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে জামাত একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু বিতর্কিত ভূমিকা পালন করে। ক্ষমতায় আসার পর তাদের অতি-রক্ষণশীল এজেন্ডা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়বে, যা দেশের উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

উপসংহার

জামাত ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের উপর সম্ভাব্য প্রভাব হতে পারে অনেক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অবমূল্যায়ন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সংকট, নারীর অধিকার ক্ষুণ্ন, এবং অর্থনৈতিক স্থবিরতা দেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। অতীতে তাদের কার্যকলাপ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বিবেচনা করলে বলা যায়, ক্ষমতায় আসার পর তারা একটি ঐতিহাসিক পেছনযাত্রার পথ তৈরি করতে পারে।

তাই, জাতি হিসেবে আমাদের উচিত সুস্থ, কার্যকর এবং প্রগতিশীল রাজনীতিকে সমর্থন করা এবং যে কোনো ধরনের উগ্রবাদ বা মতাদর্শগত জড়তার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকা।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৫১

রিফাত হোসেন বলেছেন: চেতনা দেখিয়েই তো ওয়ামী ১৫-১৬ বছর কাটিয়ে দিল। আপনার পোস্টও তাই বুঝলাম। সাহেব লীগ-নপি করেন নাকি?

জামাত কিভাবে image better করতে সে আলোচনা করেন, কাজে দিবে। দেশের major জনমতকে আপনি অস্বীকার করতে পারবেন৷ majority বলতে ধর্মীয় প্রভাবকে বুঝাচ্ছি।

জামাত যদি ১৯৭১ নিয়ে অনুতপ্ত হয় ও অন্য ধর্মকে টানতে পারে। এজন্য দলের fundamental কে পরিবর্তন করতে হবে। তাহলে বাকি দলের সুযোগ ক্ষীণ। জামাতই এগিয়ে যাবে।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৯

Sujon Mahmud বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। জামাত এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির বক্তব্য এবং কার্যক্রম অবশ্যই তাদের ইতিহাস এবং তাদের অবস্থান নিয়ে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরে জামাতের অবস্থান বিভিন্নভাবে বিবেচিত হয়েছে এবং এখন তারা কি ধরনের রাজনৈতিক পথ অনুসরণ করবে, তা জনগণের এবং দেশের বৃহত্তর জনগণের ধর্মীয় এবং সামাজিক চেতনার উপর নির্ভর করে। তবে, আমাদেরও মনে রাখতে হবে যে, একটি দলের পথ পরিবর্তন তার মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদ্দেশ্য পরিবর্তন না করেও সম্ভব নয়। পরিবর্তন আসলে দলের দর্শনকেই পুনঃনির্ধারণ করতে হতে পারে, যা জনগণের এবং সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করার জন্য জরুরি।

তবে, তাৎক্ষণিকভাবে নেতিবাচক কিছু বলার চেয়ে, পুরো পরিস্থিতিকে বিশ্লেষণ এবং ভালভাবেই বুঝতে পারলে গণমানুষের মনোভাব এবং পরিস্থিতি আরও স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব।

২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩২

নতুন বলেছেন: বাংলাদেশে জামাতের রাজনিতি করার নৈতিক অধিকার নাই।

কিন্তু ভারত চাইবেনা ইসলাম সমর্থক কোন রাজনিতিক দল ক্ষমতায় আসুক। তারা চাইবেনা পাকিস্তানের সাথে বন্ধুত্বভাবাপূর্ণ দল ক্ষমতায় আসুক।

আমিও বুঝতে পারতেছিনা দেশের জনগন এতো দ্রুত কিভাবে ইসলাম প্রেমী হয়ে উঠলো।

দেশের নারীরা এখন ৫ ওয়াক্ত বোরকা পরে বাড়ী থেকে বেড় হয় কিন্তু অবশ্যই সবাই ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেনা। বলতে চাইছি যে ইসলাম কাজে না বরং নামে সমাজে কায়েম হচ্ছে। দূনিতি/দ্রবমুল্য বৃদ্ধি, বাটপারি বাড়ছে সাথে বাড়ছে দাড়ী, টুপি জোব্বা ও।

সমাজে মুটামুটি হজবরল অবস্থা।

৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: জামায়াতের রাজনীতি বূঝি না। এদের একটাই নেতা নাকি? সারা বাংলাদেশে ৬৪ জেলায় একজন বক্তব্য দেয়। শুক্রবার লিফলেট বিতরণ করে জনসমাবেশে লোক আনে। =p~

৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:২০

নাহল তরকারি বলেছেন: জনগণ কাকে ভোট দিবে এটা তাদের ব্যাপার। এখন জনগন গাজ্ঞা ব্যাবসায়ী, ধর্ষক, ঋণ খেলাপী কে ভোট দিবে নাকি জামাত কে ভোট দিবে নাকি ৫০০ টাকা নিয়ে ভোট দিবে এটা জনগণ এর ইচ্ছে।

৫| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৩৪

নরকীয়ো বলেছেন: জামাতের প্রথম কাম হইবো কৃষ্ণচূড়ারে ফাতেমাচুড়া বানান।

৬| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৪১

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: জামাত এখনো এগিয়ে না, কেউ যদি ক্ষমতা দিয়ে দিতে চায় জামাত হয়তো তা নিজের কাঁদে তা নিতে অক্ষমতা জানাবে। কেননা এতো অল্প জনমতে রাস্ট্র চালানোর সক্ষমতা দেখানো চাট্টিখানি কথা না। তবে প্রত্যেকটি দলই ক্ষমতা যাওয়ার জন্য রাজনিতি করে যাচ্ছে। আগামী ভবিষ্যৎ বি এন পি তা দেখাই যাচ্ছে। এর পরে কি হবে দেখা যাবে মাঠে কি গড়ায়। দেখতে থাকি চলছে ছারকাস..।

৭| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:২৩

কামাল১৮ বলেছেন: বিএনপি মনে হয় আগের সেই ভুল করবে না।জেল থেকে হাজার হাজার সন্ত্রাসী বের হয়ে চলে আসছে।সমন্বয়করা তাদের ছেড়ে দিছে।রাজনীতিতে তারা একটা বিরাট ভুমিকা পালন করবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.