নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনে আর কিই বা আছে। আপনি নিশ্চয় এমন একটা ইচ্ছে পোষণ করেন যেন আপনাকে সবাই ভালোবাসে, সবাই আপনার সাথে হেঁসে কথা বলে, আসা যাওয়ার পথে আপনার কুশল জিজ্ঞেস করে, চেনা অচেনা সকলে আপনার কল্যাণ কামনা করে, আপনার পরিচিতজনদের সুখের দিনগুলোতে আপনাকে কাছে ডেকে নেয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় মানুষের মনের চাহিদা মাফিক কিছুই ঘটে না। ঘটে উলটাপালটা কিছু।
ধরুন, আপনি আগামীকাল সকালে ঘুম থেকে উঠলেন। আর ভাবলেন আজ আমি পাঁচটি মানবকল্যাণমূলক বা সেবামূলক কাজ করবো, সম্পূর্ণ স্বার্থহীন ভাবে এবং বিনিময়ে কিছু চাইবো না। ঘর থেকে বের হলেন, কিন্তু মাথায় আসছে না আপনি কি সেবামূলক কাজ করতে পারেন। একবার ভাবলেন পাঁচটা ভিখারীকে ১০০ টাকা করে মোট ৫০০ টাকা দিবেন। হতে পারে এটা এক ধরণের সেবামূলক কাজ। কিন্তু এভাবে তো আর প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে ব্যয় করা হয়তো সম্ভবপর নয়। তাহলে কি কাজ করতে পারি।
সত্যি বলতে কি, আমরা সব কিছুকে আর্থিক মূল্যে নিরূপন করার চেষ্টা করি। কিন্তু আপনি জানেন না আপনি চলতি পথে কতো উপায়ে মানুষের ক্ষতি করে যাচ্ছেন। অথচ ঐসমস্ত কাজ থেকে বিরত থাকলেই কিন্তু অনেক মানুষের উপকার হয়। যেমনঃ আপনি যে বিল্ডিংয়ে থাকেন তার আশেপাশে আপনি জানালা দিয়ে কিছু ফেলছেন নাতো! ঘরে ময়লার নির্দিষ্ট বাস্কেট থাকার সত্ত্বেও অনেকে নানান রকমের প্লাস্টিকের প্যাকেট, ক্যান, ফলের খোসা, এসব কিছু আমরা অন্যমনষ্ক ভাবে জানালা দিয়ে ফেলে দিই। আমি গতকাল দেখলাম আমার বিল্ডিংয়ের নিচের তলায় যে কেয়ারটেকারের রুমটি আছে তার উপর পানি জমে আছে যেখানে ডেঙ্গু মশার উৎপাদন হতে পারে।
কেয়ারটেকারকে জিজ্ঞাসা করাতে ও জানালো উপরের তলার বাসিন্দারা বেশ কয়েকবার বলে দেয়ার সত্ত্বেও প্লাস্টিক ফেলে যার ফলে বৃষ্টির পানি আটকে মশা উৎপাদন হয়। অথচ বেচারা কেয়ারটেকার গতবছরও ডেঙ্গুর আক্রমণে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জার লড়েছে। এ ঘটনাটা বলেছি এ কারণে যে আমাদের মানুষের কল্যাণমুলক কাজ করতে রাস্তায় নামতে হয় না, যেখানে আছি সেখান থেকেও নিজের কাজকে সংশোধনের মাধ্যমে করতে পারি।
রাস্তার পাশে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আপনি আপনার মালামাল এমন ভাবে রাখলেন পুরো ফুটপাত জুড়ে। যার ফলে স্কুলের বাচ্চা সহ সকল মানুষ রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়ত করতে হয়। এতে করে গাড়ি চলাচলে যেমন বিঘ্ন ঘটছে ঠিক তেমনি জীবনের ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে। তো আপনার উচিৎ মানুষের কল্যাণে ৫০০ টাকা দান না করে আগে ফুটপাত পরিষ্কার করা।
ফুটপাতে দাঁড়িয়ে আপনারা ৪/৫জন এমন ভাবে আড্ডা মারছেন, অন্যদের যে যাতায়তে বিঘ্ন ঘটছে তা বুঝতেই পারছেন না। হয়তো ১ কিলোমিটার হেঁটে একজন বয়স্ক লোক বাজার হাতে করে নিয়ে আসছেন। আপনাদের কারণে তাঁকে ফুটপাত থেকে রাস্তায় নামতে হচ্ছে তারপর আপনাদের ডিঙ্গিয়ে তিনি আবার ফুটপাতে উঠলেন। এ নামতে আর উঠতে উনি একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়েছেন। হয়তো এ দীর্ঘশ্বাসও আপনার কান্নার কারণ হতে পারে। সুতরাং রাস্তা ছেড়ে দিয়ে অন্তত উনাদের চলাচলের পথ পরিস্কার করেন।
আপনি সিগারেট ফুঁকতেফুঁকতে ফুটপাত দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন আর পেছনে যারা হাটছে তাদের সবাইকে ধোঁয়া খাওয়াচ্ছেন। আপনি আনন্দ করছেন আর পেছনের মানুষ গুলো আপনার মা-বাপকে গালি দিচ্ছে। একটু সভ্যতা শিখেন, কোন নির্জন জায়গায় গিয়ে ইচ্ছেমতো সিগারেট টানেন। নিজের বিষ খেতে ইচ্ছে নিজে খান, অন্যদের কেন বিষ খাওয়াচ্ছেন।
রাস্তায় পানি জমেছে। আপনার গাড়ি আছে। এমন ভাবে চালিয়ে গেলেন ফুটপাতে যারা হাঁটছে তাদের কাদাজলে ভিজিয়ে দিলেন। সাথে সাথে নিজের মা-বাবাকে অভিসম্পাতে ভরিয়ে দিলেন।
আপনি পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এক ভিক্ষুক আপনার কাছ থেকে ভিক্ষা চাইছে। আপনি তাকে তো ভিক্ষা দিলেনই না বরং তাকে তিরস্কার করলেন। “ওর হাত পা আছে ও ভিক্ষা করছে কেন”, “বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করে খেতে পারে না”, এসব বলার জন্য ঐ ভিক্ষুকটি আপনাকে কনসাল্টেন্ট নিয়োগ করেন নি। ওর ব্যাপার ও ভালো বুঝে। আর ১ মিনিটের দেখায় ওর ব্যাপারে আপনি কিই বা বুঝলেন। ভিক্ষা দিতে হবে তেমন কোন কথা নেই, অন্তত আপনি উনাকে তিরস্কার করবেন না। উনাকে উনার মতো থাকতে দেন।
এগুলো মাত্র কয়েকটা উদাহরণ, এরকম শতশত উদাহরণ রয়েছে যা সংশোধন করে আমরা শতশত মানুষের উপকার করতে পারি। আমরা নাটক-সিনেমায় দেখি নায়ক মানবের কল্যাণ করতে গিয়ে ভূমি দস্যুদের মেরে একেবারে তক্তা বানিয়ে দেয়। যা বাস্তবে সম্ভব নয়। মারামারি করা ছাড়া যেন মানব কল্যাণের আর কোন পথ নেই।
সচেতনতার দৃষ্টি দিয়ে দেখুন আপনার কারণে কেউ কষ্ট পাচ্ছে কিনা। মানব কল্যাণে আমাদের প্রধান এবং প্রথম পদক্ষেপ হবে মানুষকে বিরক্ত কিংবা কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা। ঢালু রাস্তায় অথবা গর্তে পড়ে টানতে পারছেনা যে ভ্যান চালকটি তাকে একটু ধাক্কা দিয়ে সাহায্য করুন, আলু কিনতে গিয়ে যে আলুটি ফেলে দিলেন সেটা কুড়িয়ে ভ্যানে তুলে দিন, সবজি বিক্রেতা হিসেবে ভুল করতেই পারে, তার শিক্ষাদীক্ষাই বা কতটুকু। আপনি তাকে শুধরে দিন এবং তার ন্যায্য টাকা বুঝিয়ে দিন। বর্তমান মুদ্রাস্ফীতিতে দ্রব্যমূল্যের দাম লাগামহীন হয়ে গেছে। অথচ রিক্সা ভাড়া আগের মতই দিয়ে যাচ্ছেন। তারাও তো মানুষ তারা কিভাবে সংসার চালায়। যদি পারেন তাদের ২/৪/৫টাকা বাড়িয়ে দিন। দেখবেন এভাবে আপনি চলতে থাকলে আপনি বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে সবাইকে আপন মনে হবে। সবাই আপনাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করবে, ভালোবাসবে। ঠিক যেমন জীবন আপনি অতিবাহিত করতে চান তেমন হয়ে উঠবে আপনার জীবন। আমাদের শুদ্ধাচারই আমাদের জীবনটাকে আনন্দময় করে তুলবে।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৮
অজয় শীল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:২৪
বাকপ্রবাস বলেছেন: কিছু মানুষ শুদ্ধাচার মেনে চলে, কিছু মানুষ মেনে চলতে চায় কিন্তু উৎসাহ পায়না, ভাবে আমি মেনে চলে কী হবে, সবাইতো অশুদ্ধভাবে চলছে, এই কিছু মানুষকে খুব সহজেই শুদ্ধাচারে আনা যায়, প্রয়োজন রাষ্ট্রিয়ভাবে উৎসাহ প্রদান, রাষ্ট্র উৎসাহ দিলে এরাও সঠিকটা চিন্তা করবে, বাকী যারা আছেন তাদের আইনের আওতায় এনে হলেও সঠিক পথে আনতে হবে, সব মিলে রাষ্ট্রকে উদযোগ নিতে হবে অনেকভাবে
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৪১
অজয় শীল বলেছেন: রাষ্ট্রীয়ভাবে উৎসাহিত করলে তো এটা হবে একটা বিশাল ব্যাপার। তারপরেও বলবো, চলুন আমরা ঘর থেকে আরম্ভ করি। আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মনের কথা গুলোই লিখেছেন।
ব্যাক্তিগত ভাবে প্রতিদিন একটা করে ভালো কাজ না করলে আমার ভালো লাগে না। দীর্ঘদিনের অভ্যাস।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৪২
অজয় শীল বলেছেন: বাহ! শুনে বেশ ভালো লাগলো। আপনাদের মতো ভালো মনের মানুষেরা আছে বলেই তো পৃথিবীটা এখনো সুন্দর।
৪| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:০৯
প্রামানিক বলেছেন: আনেকের মনের কথা তুলে ধরেছেন।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৪৩
অজয় শীল বলেছেন: শুনে আনন্দ পেলাম। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো!
৫| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:২৬
শেরজা তপন বলেছেন: মানব কল্যাণে আমাদের প্রধান এবং প্রথম পদক্ষেপ হবে মানুষকে বিরক্ত কিংবা কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা
পুরোপুরি সহমত- তবে ওই মত টুকুই জানাতে পারি, কতটুকু মানতে পারছি নিজেও জানি না।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৪৫
অজয় শীল বলেছেন: প্রথমে আমাদের উচিৎ ভাবনায় পরিবর্তন আনা এবং এ পরিবর্তনের মাধ্যমে আমাদের অভ্যাস পরিবর্তিত হবে। অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৬
রাসেল বলেছেন: ভাল এবং সময় উপযোগী আহবান। ধন্যবাদ