নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর পৃথিবী/হাসান

সুন্দর পৃথিবী/হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা তুমি আমার শ্রেষ্ঠ নিয়ামত

২৮ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৫৫

মা আমার মা। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। মায়ের সাথে পৃথিবীর কারো তুলনা হয়না। মা তো মায়েই যার কাছে আমরা চির ঋণী। সমগ্র জীবন সেবা করলেও মায়ের ঋণ পরিশোধ করা যাবে না ।যিনি দীঘ দশটি মাস আমাকে গর্ভে ধারণ করেছেন, প্রসব বেদনা সহ্য করেছেন, জন্মের পর থেকে দীর্ঘ কয়েকটি বছর মা আরামের ঘুম হারাম করে আমাকে লালন পালন করেছেন, মায়ের জীবনের স্বপ্ন সাধনা সবিই তার প্রিয় সন্তান কে কেন্দ্র করে, আমি কিভাবে একজন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত আদর্শ মানুষ হবো।সেই জনম দুখিনী মায়ের কথা হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল, রাত যত গভীর হতে লাগলো তত বেশী আমার মায়ের স্মৃতি চোখের সামনে ভাসতে লাগলো কোন ভাবেই মাকে ভুলতে পারছি না সাথে সাথে শ্রদ্ধেয় বাবার স্মৃতিও ভেসে উঠলো একটা পর্যায়ে কাদতে লাগলাম।আর মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের শিখানো ভাষায় দুয়া করতে লাগলাম-হে আমার প্রভু আমার মা-বাবা যেমন ছোট বেলা আমাকে স্নেহের কোলে লালন করেছেন।তুমি আমার মা-বাবাকে সেভাবে তোমার রহমতের কোলে লালন পালন কর।” কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন-তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে ফয়সালা হয়েছে, চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে,আমি আল্লাহর ইবাদতের পর তোমার মা-বাবার প্রতি ইহসান করবে, খেদমত করবে, তাদেরকে ভালবাসবে, উপকার করবে।
মা-বাবার সাথে কিভাবে আচরণ করবো তাও আল্লাহ শিখিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন-মা বাবার সাথে সম্মানজনক কথা বল।মাথা ঝাকি দিয়ে, চোখ বড় করে, রাগান্বিত হয়ে কথা বল না।সন্তানের সবচেয়ে বড় পীর হলেন মা-বাবা।মাওলানা সাহেবদের দোয়া, পীর সাহেবদের দোয়া সন্তানের জন্য কবুল হতে পারে নাও হতে পারে। কিন্তু মা-বাবার দোয়া সন্তানের জন্য কবুল হবেই হবে ইনশা-আল্লাহ।
মানবতার মহান মুক্তিদূত বিশ্ব নবী সা: বলেছেন-তিন জনের দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যাবে, তার মধ্যে একজন হলো মজলুম, দ্বিতীয় মুসাফির, তৃতীয় মা-বাবা।আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনুল কারীমে তার হক্বের পরেই মা-বাবার হক্বের কথা বলেছেন। সূরা আহক্বাফের পনের নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন-আমি পৃথিবীর মানবমন্ডলীকে উপদেশ দিয়েছি। মা-বাবাকে সম্মান কর, শ্রদ্ধা কর, তাদের উপকার কর। তার কারণ হলো তোমার মা তোমাকে গর্ভে ধারণ করেছে অত্যন্ত কষ্টের সাথে এবং প্রসব করেছে বেদনার সাথে।”
সূরা লোকমানে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন-আমি মানুষকে তার পিতা মাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছেন। আর তাকে দুধ ছাড়াতে সময় লেগেছে দুই বছর। আমি এটা এই জন্য করেছি, যাতে করে মানুষ আমার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পারে।এবং তার মা-বাবারও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পারে।আর তোমাদের সকলকেই আমার কাছে ফিরে আসতে হবে।
মানবতার মহান মুক্তিদূত বিশ্ব নবী সা: এর জীবনের একটি ঘটনা-একদিন প্রিয় নবীজি সা: মসজিদে নববীতে বসে আছেন।এক বৃদ্ধা মহিলা মসজিদের ভিতর প্রবেশ করলেন।প্রিয় নবীজি বৃদ্ধা মহিলাকে দেখে দাড়িয়ে গেলেন।প্রিয় নবীজি বৃদ্ধা মহিলাকে দেখে দাড়ালেন দৃশ্যটি উপস্থিত অনেকেই প্রত্যক্ষ করতে লাগেলেন। বৃদ্ধা মহিলা যখন কাছে এলেন প্রিয় নবীজি নিজের গায়ের চাদরটি বৃদ্ধাকে বিছিয়ে দিলেন। বৃদ্ধা চাদরের ওপর বসলেন।উপস্থিত সবাই আশ্চর্য হয়ে নবীজিকে জিজ্ঞেস করলেন, নবীজি নিজে দাড়িয়ে বৃদ্ধাকে কেন এত সম্মান করলেন।জবাবে প্রিয় নবীজি সা: বললেন-তিনি আমার দুধ মা হালিমাতুস সাদিয়া। প্রিয় নবীজি দুধ মাকে কত সম্মান করেছেন।
দু:খের বিষয় হলো আজ আমারা আমাদের গর্ভধারিনী আপন মকে ও সম্মান করতে জানিনা।হাজারো মায়েদের অভিযোগ তার কলিজার টুকরা প্রিয় সন্তান কথা শোনে না, বেয়াদবী করে, মা-বাবার সেবা করেনা, আরো বহু হৃদয় বিদারক কষ্টের কথা।যে মা-বাবা কষ্টের পর কষ্ট করে, মাথার গাম পায়ে ফেলে, রক্তকে পানি করে, নিজে না খেয়ে সন্তানের মুখে খাবারটুকু তুলে দিয়ে তৃপ্তি পেয়েছেন।অথচ সেই মা-বাবাকে আজ নিষ্ঠুরের মত ভুলে গিয়ে জীবন সঙ্গীনির শিষ্য হয়ে স্ত্রী ও শ্বশুর-শ্বাশুরীর সন্তুষ্টি অর্জন করতে মহা ব্যস্ত। বহু পন্ডিত ব্যক্তি, উচ্চ শিক্ষিত, বিত্তবান মানুষদেরকে দেখেছি মা-বাবার সাথে জঘণ্যতম আচরণে লিপ্ত মা-বাবার কোন ভরণ-পোষণ দিচ্ছেন না।দুনিয়ার শান্তি ও পরকালে মুক্তির জন্যে পীর বাবাদের কছে মুরীদ হয়েছেন, পীর বাবার কাছে হাদীয়া নিয়ে যচ্ছেন, লক্ষ লক্ষ টাকা পীরের দরবারে হাদীয়া দিচ্ছেন। যে কোন মূল্যেই হোক পীর বাবার সন্তুষ্টি অর্জন করে জান্নাত অর্জন করতে হবে।পীর বাবার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি বা পীর বাবার দোয়া মুরীদের নাজাতের ওসিল এ ধরণের কোন বক্তব্য কুরআনে বা হাদীসে আমার জানা মতে নেই বা কোন মহামানবগণ ও এধরণের শিক্ষা রেখে যাননি।বরংচ, প্রিয় নবীজি সা: বলেছেন, মা-বাবা তোমার জান্নাত, মা-বাবা তোমার জাহান্নাম।তার মানে হলো মা-বাবা যদি অসন্তুষ্ট হয় তাহলে নিশ্চিত জাহান্নামে যেতে হবে।আর আমার ব্যবহার এবং সেবায় মা-বাবা যদি খুশি হন তাহলে মহান আল্লাহও খুশি হয়ে জান্নাত দিতে পারেন।এ কারণেই প্রিয় নবীজি বলেছেন, মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের জান্নাত। আমরা যারা জান্নাতে যাওয়ার আশায় ইবাদত বন্দেগী করছি, আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহর ইবাদতের পরেই মা-বাবার খেদমত করতে হবে। মা-বাবা হলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্মানের জিনিস।মা-বাবার সাথে কারো তুলনা হয় না। আমরা যারা কর্মের তাগিদে দেশে বা বিদেশে অবস্থান করি গভীরভাবে লক্ষ্য করে দেখবেন বাড়িতে ফিরার পর ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, স্ত্রী, আত্মীয় স্বজন সবাই এদিক ওদিক তাকায় কার জন্যে কি এনেছে।ব্যাতিক্রম শুধু মা-বাবা কোন দিকে না তাকিয়ে, সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বলেন কখন খেয়েছ বাবা।আমি নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি সন্তান বিদেশে থাকলে মা তার প্রিয় সন্তারে জন্যে কাটা কবুতরের মত ছটপট করেন।বিদেশে যদি সন্তান মারা যায় বা বিপদে পড়ে।সবার আগে মায়ের কলিজায় টান লেগে যায়।মা বুঝতে পারেন তার সন্তান হয়তোবা কোন বিপদে পড়েছে বা মারা গিয়েছে।তাই বন্ধুরা আসুন অতীতের ভুলের জন্যে মা-বাবার পায়ে ধরে ক্ষমা চাই। মহান আল্লাহর আদেশ পালন করি এবং মা-বাবার খেদমত করি, তাহলে হয়তোবা পরকালে মহান রবের বিচারের মহাআদালতে মুক্তি পেয়ে আল্লাহর প্রতিশ্রুত জান্নাতের আশা করতে পারি।
বন্ধুরা আসুন প্রতিজ্ঞা করি শান্তিকামী মানুষ হবো, মা-বাবার সেবা করবো এবং দেশ, মানুষ ও সৃষ্টিকে ভালবাসবো।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:০৬

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: মা সবসময় সবার প্রিয়!


শুভকামনা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.