নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কামরুন নাহার সানজিদা

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

অন্তহীন ছুটে চলা

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

অন্তহীন ছুটে চলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ আর কখন উন্নত হবে!

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৪৬


এক.

রীনার এক বছর আগে স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে।গ্রামের অন্য অধিবাসীদের মতো সেও সিদ্ধান্ত নিলো গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরবে যাবে।সবকিছু প্রায় ঠিকঠাক হয়ে আছে।এক সপ্তাহ আগে তার বাবা মা তাকে একই গ্রামের রাসেলের সাথে জোড় করে বিয়ে দিয়ে দেয়।তাদের কথা, মেয়ে বিদেশে গিয়ে খারাপ হয়ে যাবে।তাই মেয়ের অনিচ্ছা সত্বেও তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়।

দুই.

সাজুর ৩ বছরের একটি মেয়ে আর সাত বছরের একটি ছেলে আছে।তার স্বামী রবিউল আরেক মেয়েকে বিয়ে করে আলাদা হয়ে যায়।কিছুদিন পর সাজুকে তালাক দিয়ে দেয়।দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে সাজু বিপদে পড়ে। কি করবে কিছু বুঝতে পারে না। জীবিকার জন্য বাড়ির উঠানে শাকসব্জির চাষ করা শুরু করে।এতে প্রতিবাদ করে সাজুর প্রাক্তন স্বামী।একজন মেয়ে বাইরে গিয়ে কেনো কাজ করবে? সাজু সিদ্ধান্ত নিলো শহরে গিয়ে গার্মেন্টসে কাজ করবে।শহরে চলে আসে সে। ওদিকে গ্রামে রবিউল শালিশ ডাকে সাজু এক ছেলের সাথে শহরে পালিয়ে গেছে।

তিন.

খাদিজা তার ক্ষুরধার কথার জন্য গ্রামে সবচেয়ে নিকৃষ্ট মেয়ে।কোনো মিটিং শুরু হয় বিসমিল্লাহ পড়ে। সে গ্রামে প্রতিটি শালিশ শুরু হয় খাদিজাকে গালি দিয়ে। কারণ, খাদিজা যেকোনো অন্যায়ের স্পষ্ট প্রতিবাদ করে। সে গ্রামে নারীদের বড় গলায় কোনো কথা বলা নিষিদ্ধ।

চার.

গ্রামের এক লোক সাবিনার ঘরে জোর করে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। কয়েকমাস পর সাবিনা গর্ভবতী হয়ে পড়লে তার বাবা শালিশ ডাকে।শালিশে বিচার করে সিদ্ধান্ত নেয় হয়, সাবিনাকে তার গর্ভজাত সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে হবে।আর তাই সে যাতে এ্যাবর্শন করে বাচ্চা ফেলে না দেয় তার জন্য তাকে আশি হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।


মূল বিষয়:

এগুলো সব স্বাধীন বাংলাদেশের ঘটনা। এদেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী। শান্তিতে অবদান রাখার জন্য তিনি পরপর দুবার সাউথ সাউথ পুরষ্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরষ্কার। কিছুদিন আগে রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নে পেয়েছেন আরেকটি পুরষ্কার। দেশে বিদেশে বাংলাদেশে নারীদের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখার জন্য তিনি অনেক প্রশংসিত হয়েছেন।
শুধু প্রধানমন্ত্রী কেনো এ দৃশ্য সারা বাংলাদেশে।শহরের এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে কোনো মেয়ে পড়াশুনা করছে না। এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে নারীরা বেকার আছেন্। প্রায় সব নারীরা বাইরে কাজ করছেন।পরিবারের হাল ধরছেন।
অথচ এই বাংলাদেশেই ওপরের ঘটনাগুলোর মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ। এসব প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ঘটনা।এসব গ্রামে নারীদের সিদ্ধান্তের কোনো মূল্য নেই।নেই নারীদেরই মূল্য। বাড়ীর পুরুষ যা করেন তা ই সিদ্ধান্ত। তারা যা বলবেন তা ই হবে। যতদিন এই নারীরা বাড়ির কর্তার কথা মেনে চলবেন, ততদিন পরিবারে তাদের মূল্য। কিন্তু এর ব্যতিক্রম হলেই নেমে আসে খড়গহস্ত।
দেশের শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিকরা অনেক কিছুই করছেন দেশের জন্য।বাইরে গিয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করছেন। প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে মানুষের মাঝে সচতনতা সৃষ্টি করছেন। কিন্তু এসব মানুষের ভাগ্য কি আদৌ বদলাচ্ছে?

আমার এই লেখার উদ্দেশ্য, আমাদের দেশের অনেক ব্যক্তিই বিভিন্ন্ ডকুমেন্টারি তৈরি করে মানুষের সামনে এ ধরনের ব্যাপারগুলো তুলে ধরেন। আবার এগুলো দেখিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্ট করেন।আপনারা কি এই নারীদের কথা সমাজে তুলে ধরতে পারেন না? তাদের জন্য কিছু করতে পারেন না?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৪২

আলী আকবার লিটন বলেছেন: আরও ডজন খানিক গ্রিনিজ বুকে রেকর্ড করার পর হয়তো :#)

২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:০৮

মীর সজিব বলেছেন: মনে রাখতে হবে এটা বাংলাদেশ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.