![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ফয়েজ লেকের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এমন সময়ে এক জায়গায় প্রচুর ভিড় দেখে কৌতূহলবশে দাঁড়িয়ে পড়লেন। উঁকি দিয়ে দেখে হয়তো চমকে যাবেন। রাস্তায় খেলা দেখানোর জন্য যেসব বানর ব্যবহার করা হয়, সেই আকারের একটি পুতুল চেয়ারে বসে আছে। একেবারেই ছোট একটা মুখ আর শরীর। ধবধবে সাদা শরীরের পুতুলটিকে মাথা নাড়তে দেখে আরেকবার চমকে যাবেন। এ যে পুতুল নয়। সত্যিকারের একটা মেয়েশিশু!
‘এটা কি কথা বলতে পারে?’ ‘পারে তো। মেরী বলে ডাক দিলে সাড়া দেবে’। উৎসাহী দর্শকদের প্রশ্নের জবাব দেন পাশে দাঁড়ানো এক মহিলা। ‘মেয়েটা আপনার কি হয়? বয়স কত?’ হাতে, গলায় আর শরীরে নানান গহনা পরা মহিলাটি মুখে থাকা পান চিবুতে চিবুতে হেঁসে উত্তর দেন, ‘এইটা আমার মেয়ে। বয়স নয় বছর।’
আশ্চর্য শারীরিক গঠনের শিশুটিকে দেখে দর্শকদের কৌতূহল বাড়ে। ভিড়ও বাড়ে। ‘পাটকাঠির মত শরীর’ প্রবাদটি হয়তো কেবল বইয়ের লাইন বলে আওড়ানো মানুষেরাও দেখে স্বীকার করতে বাধ্য হবেন। শিশু মেরীর শরীর আসলেই পাটকাঠির মত। নয় বছরের একটা শিশু অদ্ভুতভাবে একটা ছোট শরীরে আটকে গেছে বলে মনে হয়। ছোট প্লাস্টিকের চেয়ারে পা মুড়ে বসলে একটা বানরের সাইজের চেয়ে বেশি বলে মনে হয় না। মুখটাও এতটুকুন।
নিজেকে মা দাবি করা রওশন আরা নামের মহিলাটি থেকে জানা গেলো, জন্মের পর একটি সুস্থ শিশুর মতই ছিলো মেরীর স্বাস্থ্য। কিন্তু বাড়ন্ত শরীরের পর থেকেই নাকি এমন অসুস্থতার শিকার সে। তিনি জানালেন, ‘ডাক্তার বলেছে ওর ব্রেইনে শর্ট। অনেক চিকিৎসা করাইছি। কিন’ এমন হবে জানলে আগে চিকিৎসাও করাইতাম না।’
‘ব্রেইন শর্ট’ কি আর তার চিকিৎসায় কত খরচ হয়েছে জানা না গেলেও, মেরীর শারীরিক আকৃতি দেখিয়ে তিনি ভালো আয় করছেন বলে মনে হলো। ভিড়ের দর্শকেরা শিশুটিকে দেখে তার সামনে বিছিয়ে রাখা কাপড়ে দুই থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দান করে। সেখানে ১০ টাকার নোটই বেশি দেখা গেলো। প্রায় ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেলো, ১০ মিনিট পর পর গামছায় থাকা টাকা যখন বেশি হয়ে যাচ্ছে, রওশন আরা তা কুড়িয়ে নেন।
মেরীকে দেখিয়ে এভাবে কত আয় হয় জানতে চাইলে মহিলা উত্তর দেন, আমি তো প্রতিদিন বের হই না, সপ্তাহে একদিন দুইদিন ওকে নিয়ে বের হই। একবারে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। এই টাকা দিয়ে চলে? জিজ্ঞেস করলে তার আরো তিনটি ছেলে মেয়েকে নিয়ে টিভি সেন্টার এলাকার একটি বস্তিতে থাকেন বলে জানালেন রওশন আরা। তিন মেয়ের মধ্যে ছোট মেরী। বড় মেয়ে শারমিনের বিয়ে দিয়েছেন আগেই। এখন মেজ মেয়ে রুমী আর ছেলে মামুন থাকে। মামুন বাজারে মজুরের কাজ করে।
কিন্তু নিজের মেয়েকে এমন দর্শনীয় বস্তুর মত দেখিয়ে ভিক্ষা করার কারণ কি? ‘ওমা! ও দেখার মত জিনিস না? ধরুন, আপনি ওকে দেখলেন, দেখে ছবি তুললেন। আপনি ওর ছবি দেখিয়ে আরেকজনকে জানাবেন। তারাও ওর সম্পর্কে জেনে ওকে দেখতে আসবে।’ এতে মহিলার লাভ কি জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেন, ‘তারা মেরীকে দেখতে এসে টাকা দেবে। ওকে দেখার জন্য কত জায়গা থেকে লোক আসে! চিড়িয়াখানায়ও ওকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলো। এক লাখ টাকা দেবে বলেছিলো তারা!’
চিড়িয়াখানা সত্যিই মেরীকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলো কি-না জানতে চাওয়ার আর সুযোগ পাওয়া গেলো না। পুলিশের একটি টহল গাড়ি এসে তাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলো। মহিলাও ভিড় করা লোকজনদের চলে যেতে বলেন। শুক্রবার বিকেলে টহল দলে থাকা খুলশী থানার উপ-পরিদর্শক হেলাল উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘ওদের আগেও দেখেছি। সবসময় বসে। একেক দিন একেক মহিলা বাচ্চাটাকে নিয়ে আসে।’
নিজের দুই মেয়েকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী মো. আক্কাস আলী। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, এর আগে শহীদ মিনারে এদের দেখেছিলাম। তখন মেয়েটার বাবা ছিলো সাথে। এখন এটা ব্যবসা হয়ে গেছে। বিকলাঙ্গ শিশু দেখিয়ে তারা ভিক্ষা করে।
এসআই হেলাল উদ্দিন বিভিন্ন সময়ে মেরীর সাথে ভিন্ন ভিন্ন মহিলা এবং ব্যবসায়ী আক্কাস আলী এর আগে একজন লোককে দেখলেও রওশন আরা দাবি করেন, তিনিই মেরীর মা। মেরীর বাবা মারা গেছে তিন বছর আগে।
http://suprobhat.com/বিà¦à¦²à¦¾à¦à§à¦-শিশà§-দà§à¦à¦¿à§à§-à¦à¦¿à¦/
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৫
অন্তহীন ছুটে চলা বলেছেন: এই প্রতিবন্ধী শিশুগুলোকে পুঁজি করে কিছু ধান্দাবাজ প্রতারণা করছে। কিন্তু পুলিশ দেখেও দেখে না। আফসোস। এই শিশুও একটা সুন্দর জীবন যাপনের অধিকার রাখে। তার ভাগ্যে রইলো না।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:১৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
সরকারের দায়িত্ব ছিল এই পংগু মেয়েটির দায়িত্ব নেয়া; ইডিয়টরা ওখানে বসে নিজেদের ভরণপোষণ চালাচ্ছে।