নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নভেলার মাঝি...

সুপান্থ সুরাহী

কবিতার প্রেমে অক্ষরের সঙ্গে শুরু হয়েছিল ঘরবসতি। এখন আমি কবিতার; কবিতা আমার। শব্দচাষে সময় কাটাই...

সুপান্থ সুরাহী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মজ [ছোটগল্প]

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫০

০১.
‘ধুত্তুরি তর সইন্দ্যার পরের মাইরে বাপ...’ খিস্তি আউড়ায় গেসু। বলে, ‘তাত্তাড়ি ট্যাকা দে!’
– এ্যাই গেস্যোয়া গাইল্যাবিনা!
– গ্যাইল্যাবিনা মানে! একশবার গাইল্যামু! তর চইদ্দ গোষ্ঠিরে গাইল্যামু! তুই কি বালডা ফালবি ফালাইস!
– গেস্যোয়া! দেখ, বালা অইতনা কইলাম! তরে ম্যালা সহ্য করছি। আইজকা কিন্তু আমি শেষবারের মত তরে মানা কইর‌্যা দিলাম। আমার দোকানের সামনে আইসা কোন গাইল্যা-গাইল্যি করবি না।
– আমি কইলাম তো গাইল্যামু! তুই যা করার করিস। এই গিয়াস উদ্দীন কেউরে ডড়ায়া গাইল্যায় না। আমি বাইচ্যা থাহুম আর গাইল্যামু না! এইডা তুই ভাবস কেমনে?
গেসু রেগে গেলে ছোট বড় সবাইকে তুই-তুকারি করে।

রাহাত মিয়া আর গেসুর কথা কাটাকাটির মাধ্যেই কিছু মানুষ জমে গেছে। একটা জটলা হয়ে গেছে। নেতৃস্থানীয় দুয়েকজন এসে রাহাত মিয়াকে শান্ত করছেন। তারা বলছেন- “আরে রাহাত, তুমি আর গেসু কি সমান ওজনের! এর লগে কথা কইলে কী অইবো? এর না আছে মাথা, না আছে মাথার বিষ!”
– আচ্ছা আপনারা এর কী বানাইতেছেন? আর দুয়েক বছর পরে তো এইডা একটা আস্ত সন্ত্রাসি হইবো! ছোট-বড়, শিক্ষক-জ্ঞানী কিছুই মানে না। সবাইরে সমান মাপে। সবসময় নিজেরটা বুঝে। কোন সুবিধা-অসুবিধা বুঝে না। এর লাগামটা একটু আপনেরা টেনে ধরেন। বললেন, রাহাত মিয়া।
– রাহাত তুমি শিক্ষিত ছেলে। চাকরির ফাঁকে ফাঁকে দোকানে আসো। অনেক দিন তুমি দেশে ছিলে না। বিদেশে পড়াশুনা করছো। গেসু সম্পর্কে তুমি তো শুনে জেনেছো। ওর বেড়ে ওঠাটা তুমি দেখোনি। তাই তোমার কাছে এর আচরণ বেখাপ্পা ঠেকে। আমাদের কাছে এতটা খারাপ লাগে না। আমরা অনেকটাই অভ্যস্থ হয়ে গেছি। সবচেয়ে ভালো হয় তুমি যদি ওরে মাসিক হিসেবে টাকাটা দিয়ে দাও। তাহলে সে প্রতিদিন তোমার কাছে আসবে না। পাগলামিও করবে না। বললেন, বাজার কমিটিরি সভাপতি আনওয়ার স্যার।
রাহাত মিয়া মেনে নিলেন। মাসের প্রথম বাজারের দিন গেসুকে পুরো মাসের টাকা দিয়ে দিবেন। সেই সঙ্গে বলেও দিয়েছেন, বাজার কমিটি যদি ওর গালাগালি না থামায় তাহলে তিনি থামাবেন।

নানা জন নানা কথা বলতে বলতে জটলা ভেঙ্গে চলে গেল। অনেককেই আশাহত দেখা যাচ্ছে। তারা বলতেছে, ‘অনেক দিন গেস্যোয়ার চতিল শুনি না। যাও একটা সুযোগ আইছিন! আনোয়ার মাস্টরের লাইগ্যা অইলো না।’ কেউ আবার রাহাত মিয়াকে বলতেছে, “ব্যাটা বিদেশ তে আইসা এক্কবারে মহাভদ্র হয়া গেছে। সব কিছুতে খালি নিয়ম দৌঁড়ায়! অত নিয়ম নিয়ম করবি তে তুই দেশে আইলি ক্যা? বিদেশে থাকতে পারলি না! অত বড় দোহান, দিনে পাঁচটা টেহা দিবে তাও কাউ কাউ করণ লাগে!” পাশ থেকে আরেকজন জবাব দেয়, “আরে কালু ভাই- আপনি জানেন না এই গেস্যোয়ারে রাহাত ভাই প্রতিদিনই একবেলা খাওয়ায়। কিন্তু হেরে কইছে প্রতিদিন তুই হয় মাগরিবের আজানের আগে আইবি; নয় আযানের পরে আইবি। কিন্তু হে এইডা মানে না। প্রতিদিন আযানডা পড়তেই হে দোহানে যায়। গিয়াই পুলাপানরে বহা শুরু করে।”

কালু এই কথা শুনে কেমন যেন একটু চুপসে যায়। কালু মিয়া ধারণাই করতে পারেনি যে, রাহাত মিয়ার শ্যালক তার পেছনে পেছনে আসছে। একটু লজ্জিত হয়ে বলে- “আরে বেয়াই, এসব কিছু না। এমনিতেই কইতাছিলাম। মানে রাহাত মিয়া তো একটু বেশি নিয়ম কানুন মানে! আবার মানাইতেও চায়। তবে এইডা করতে পারলে বালা।” কালু কথা ঘুড়াতে চায়। সেই সুযোগ না দিয়ে রাহাত মিয়ার শ্যালক অন্য গলিতে ঢুকে যায়।

কালু মিয়ার বুকে এখন ঢিপঢিপ শব্দ হচ্ছে। কেউ পাশে থাকলে স্পষ্ট শুনতে পেতো। তার ভেতরে ভয়, এই রাহাত মিয়ার টাকা দিয়েই কালুর দুই মেয়ে কলেজে পড়ে। এরা যতদিন পড়তে চায় ততদিন রাহাত মিয়া খরচ দিবে। কিন্তু যদি রাহাতের শ্যালক গিয়ে কালুর এই আচরণ বলে দেয়! নিজেকে এখন সে খুব শাসাচ্ছে। এসব বাজে কথা কেন বলতে গেলাম। এমন চিন্তা করতে করতেই কালু মিয়া আবার রাহাতের দোকানের সামনে যায়। গিয়ে দেখে শালা-দুলাভাই কি যেন কানাকানি করছে। কালুর মনের ঢিপঢিপানি আরে বেড়ে যায়। কিছুটা অপরাধীর মতো দাঁড়িয়ে থাকে। দুজন কথা শেষ করেই রাহাত ডাকে- কালু ভাই, এদিকে আসেন। কালুর সারা দেহের জোড়া ছেড়ে দেয় অবস্থা! রাহাত মিয়া দৌড়ে এসে ধরে ফেলেন কালুকে। বলেন, ভাই আপনার কোন সমস্যা?

কালু কিছুটা নিজেকে সামলে নেয়! বলে, না কোন সমস্যা না। শইলডা হঠাৎ করেই কেমন জানি করতাছে। একটু ধাতস্থ হয়ে ঘটনা বলে কালু। মাফ চাইতে থাকে। তখনই রাহাত মিয়ার শ্যালক মাসুদ বলে- আরে বিয়াই, এসব আমি বলবো আপনি ভাবলেন কি করে? মানুষ মাত্রই কিছু কথা বলে। যেগুলো তার ঠোঁটের কথা। মনের কথা না। আমি জানি আপনি যা বলছেন তা আপনি বিশ্বাস করেন না। কালু হেসে ওঠে। রাহাত তাকে একশ টাকা দিয়ে রিক্সা ডেকে উঠিয়ে দেন।

০২.
জন্মের তিনমাস পরই গেসুর মা নিহত হয়। তার বাবার বেকায়দা থাপ্পরে। গেসুর বাবা জানু মিয়া। আসলে নাম ছিল জানফর মিয়া। এ দেশের গ্রামের মানুষের নাম বিকৃত করার এক আশ্চর্য ক্ষমতা আছে। এই যেমন গেসুর নাম ছিল গিয়াস উদ্দীন। সেখান থেকে গিয়াসুদ্দি। গিয়াসুদ্দি থেকে গিয়াস। গিয়াস থেকে গেসু। গেসু থেকে গেস্যোয়া। তেমনিভাবে জানফর থেকে মানুষের মুখে মুখে জানু হয়ে গিয়েছিল গেসুর বাবার নাম। জানু মিয়া বাজারের পাহাদার ছিল। সৎ ও দায়িত্বশীল পাহারাদার হিসেবে তার সুনাম ছিল দশ গ্রাম জুড়ে। মানুষ বলতো, ‘জানু থাকতে রামপুর বাজার থেকে একটা সুঁই চুরি করার সুযোগ নাইগা কোন চোরের।’

সেই সহজ সরল জানু হঠাৎ রাগের মাথায় নিজের স্ত্রীকে থাপ্পর দেয়। বেকায়দায় লেগে যায় সেই থাপ্পর। সঙ্গে সঙ্গে নিহত হয় জানুর স্ত্রী রুমেলা। গিয়াস তখন মাত্র তিন মাসের শিশু। জানু পালায়নি। পুলিশের কাছে ঠিক ঠিক সব বলে দেয়। তার আশা ছিল সন্তানটির জন্য হয়তো তাকে মাফ করে দেবে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কিন্তু না পুলিশের জেরার পর জেরায় জানুসহ আরো দুজনকে গ্রেফতার হতে হলো রুমেলা হত্যা মামলায়। চূড়ান্ত বিচারে সেই দুজন খালাস পেলেও জানুর হয়ে যায় যাবজ্জীবন।

জানুর নিকটাত্মীয় বলতে কেউ ছিলো না। প্রথম দিন গ্রেফতার হওয়ার সময় বাজারের এক বেকারি মালিকের কাছে নিজের
সন্তানটির লালন-পালনের জন্য একটু অনুরোধ করতে পেরেছিল। একসময় বেকারি মালিক জানুর তিন শতক জায়গার বাড়িটি দখল নেয়। জানুর মামলা খরচের দোহাই দিয়ে। মুচি বাড়ির এক মহিলার কাছে কয়েকমাস গেসুকে রাখে সেই বেকারি মালিক। এরপর জীবন সংগ্রামের পথ খুজে নেয় গেসু। এক বছর বয়স থেকেই হামাগুড়ি দিয়ে বিভিন্ন দোকানের সামনে গিয়ে বসে থাকে সে। দোকানদাররাও তাকে এটা সেটা খেতে দেয়। চলতে থাকে তার বেড়ে ওঠা।

গেসু স্বনির্ভর হয়েছিল মাত্র তিন বছর বয়সেই। ওর কুচকুচে কালো চেহারা দেখলেই মনে হয় কয়েক বছর ধরে গায়ে সবানের পরশ লাগেনি। আবার সুঠাম দেহ ও মাংশল পেশি দেখে যে কেউ সহসাই তাকে সমীহ করবে। রাগান্বিত গেসুকে দেখে যে কোন মানুষ ভয় পেতে বাধ্য। সেই শৈশব থেকেই তার কোন রোগ বালাই নাই। কখনো তাকে বলতে শুনা যায়নি যে আমার শরীরটা খারাপ। চরম অযতেœ আর অবহেলায় বেড়ে ওঠলেও প্রকৃতির অদ্ভূত নিয়মে গেসু ছিল একেবারে নিরোগ স্বাস্থের অধিকারী। কখনো বেকারিতে গিয়ে বাসি রুটি খেতে শুরু করতো। কখনো হোটেলে গিয়ে দু’দিনের বাসি খাবার পেট ভরে খেয়ে চলে যেতো। কেউ যদি বলতো, “কীরে গেস্যোয়া তর পেডে অসুখ-টসুখ অয়-টয় না?” সঙ্গে সঙ্গে এক দু’টো খিস্তি আওড়িয়ে বলতো, “আমার পেডে লোয়া অজম অয়। এইতা পেড তরার পেডের মত না। এই পেডে যা আছে সব মাল। যেডাই দিবি ফিনিস কইরা ছাইড়া দিবো।” সত্যিই ওর পেটে কোন সমস্যা কোনদিন কেউ দেখেনি।

০৩.
আনোয়ার স্যারকে রাহাত মিয়া ডাক দেন। দোকানের পেছনে কাঁচ ঘেরা একটা অফিসও আছে তার। সেখানে গিয়ে বসেন রাহাত মিয়া ও আনোয়ার স্যার। স্যার বলেন, ‘কিরে রাহাত কেন ডাকলি?’
– স্যার আমি গেসুর দায়িত্ব নিতে চাই। দায়িত্ব মানে ওরে কিছুটা লেখাপড়া শেখানো। কিছুটা আদব-কায়দা শেখানো। ও যদি আমার শিক্ষায় রেসপন্স করে তাহলে আমি তাকে একটা ব্যাবসা দিয়ে বসিয়ে দিবো। সেটা আমার বাবার নামে সদকা হিসেবে দিবো।
– খুব ভালো একটা প্রস্তাব। কিন্তু বাজারি পরিবেশে সে বড় হয়েছে। একজন তাকে একটু শাসান করলে আরো পাঁচজনের পেছন থেকে তারে আস্কারা দেয়। এভাবে সে একটা চরম বেয়াদব ও বদমাশ হয়ে বড় হচ্ছে। একদিন এমনও হতে পারে এটা একটা বড় ধরণের সন্ত্রাসী হয়ে যাবে। তুই যদি ওরে কিছু করতে চাস। তাহলে খুব ভালো। আমি বাজারের সব ব্যবসায়ীকে ডেকে এবিষয়ে একটা নোটিশ দিয়ে দিবো। সবাই যেন ওর দিকে একটু খেয়াল রাখে।
– স্যার, ওর বাবাকে কি জামিনে বা কোনভাবে ছাড়িয়ে আনা যায় না?
– সেটা মনে হয় যাবে। আমি মামলার কাগজপত্র যা দেখছি তাতে মনে হয় আপিল করলে সে খালাস পাইতো। কিন্তু কে করে এসব? সেই বেকারির জহির তো জায়গাটা দখল করে নিলো। আসলে আমরা তো সব জানি। মামলার সব টাকা তো জানুর জামানো টাকা থেকেই গেছে। ফাঁকে জমিটা দখল করলো। জানু খালাস পেলে সব জানা যেতো।
– স্যার, আমি সব টাকা দিবো। আপনি আফিলের ব্যবস্থা করেন।

কথার এই ফাঁকে গেসু চলে আসে। সব শুনে সে বলে, “আমার বাবাকে খালাসের জন্য কারো কাছ থেকে কোন সাহায্য আমি নিমুনা। আমি এই পর্যন্ত তিনবার গেসি নেত্রকোনা। বাজানকে দেখতে। একবারও শালারা আমারে বাজানরে দেখতে দিলো না। আমি কত কইরা কইলাম। আমার বাজানের নাম জানু। শালার পুলিশে কয় জানু নামের কোন কয়েদি এখানে নাই।” বলেই ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। সত্যি বলতে গেসুকে এই বাজারে কেউ কোনদিন কাঁদতে দেখেনি। তার কান্না দেখে আনোয়ার স্যার ও রাহাত মিয়াও কাঁদতে শুরু করে। গেসু আবার বলে, “আমি টাকা জমাইতাছি। একদিন টাকা নিয়া আমি নেত্রকোনা যামু। বাজানরে ছুডায়া আনমু। তার পরে জাগাটা লইয়া আপনাদের কাছে বিচার চাইমু।”

কান্নার পরে মানুষের মন নরম থাকে। গেসুরও তাই হলো। আনোয়ার স্যার রাহাত মিয়ার পুরো প্রস্তাবটি গেসেুর সামনে তুলে ধরলেন। গেসু রাহাত মিয়ার পায়ে পরে গেল। চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলো আবার। বলতে লাগলো, “আমারে এই বাজারে কেউ কোন দিন ভালোবাসে নাই। সবাই দয়া করছে। কেউ কেউ আমারে গাডু বানাইতে চাইছে। আমি কিছু না বুঝলেও এইগুলি খারাপ কাম বুঝতে পারতাম। আমি কেউর কথায় রাজি অইনি। যহন আমারে কেউ ভালোবাসা দেহাইতো আমি ধইরা নিতাম হের মতলব খারাপ। কেউ যদি আমারে একটা সাবান কিন্যা দিতো, আমি সেটা বেকারির পুলাপানের কাছে বেচতাম। যে দিন থেকে রাহাত কাকা আমারে ভাল হওনের কথা কইতে লাগছে, সেদিন থেকে তার লগেও আমি খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করছি। আমি মনে করতাম এইলারও মতলব খারাপ।”

তীব্র কান্নায় গেসুর গলায় কথা আটকে যাচ্ছে। বাজারের কিছু মানুষ আজও এখানে এস জটলা করেছে। গ্রামীন মানুষের চিরাচরিত নিয়মেই ঘটনা না জেনেই নানা মন্তব্য করছে। এমন সময় গেসু রাহাত মিয়ার পা ছেড়ে ওঠে দাঁড়ায়। বলে, “আমার আগের খারাপ ব্যবহারের জন্য আমারে ক্ষ্যামা করে দেন কাকা। আর স্যার, আফনে আমারে যহনই দেখবাইন আমি উল্টা-পাল্টা কিছু করছি। লগে লগে দুইডা চর দিবাইন।” সমবেত জটলার দিকে চেয়ে গেসু বলে, “আফনেরা আইজ থাইক্যা জাইন্যা রাহুইন আমি গেসু আর গেস্যো নাই। এহন থেকে আমি গেয়াসুদ্দি। কাইল থাইক্যা আমি একজন মানুষের মত চলমু। আর না অসুরের জীবন।” বলেই আবার কান্না।

আনোয়ার স্যার পরম মমতায় তাকে বাহুবন্ধনে নেন। বলেন, আর কাঁদিস না। আজ থেকে তোর বাবা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমি তোর বাবা। রাহাত তোর সব দেখবে। খুব তাড়াতাড়িই আমরা তোর বাবাকে খালাস করাবো।

জটলার মানুষগুলো এক এক করে সরে গেলো। রাহাত গেসুকে কিছু কথা বুঝিয়ে একটা সাবান ও একটা শ্যাম্পুর মিনি প্যাক দিয়ে বললো, ‘যা বড় পুকুরে গিয়ে ভাল করে গোসল করে আয়।’ সমস্যা হলো মানুষের মনে সন্দেহ ঢুকে গেল। গ্রামের কিছু মানুষের মনে সন্দেহ সবসময়ই একটা রোগের মতো। তারা বলতে লাগলো, “আনোয়ার মাস্টরের ও রাহাত মিয়ার কোন উদ্দেশ্য আছে নিশ্চয়ই। নাহলে এত দিন তো কেউ তারে নিয়া এভাবে ভাবেনি।”

একদল মানুষ দ্রুতই জহিরের কাছে খবর নিয়ে যায়। জহির খবর শুনে দল বড় করতে থাকে। বলে, রাহাতও একটা খেলোয়াড় আর আনোয়ারও একটা নেতা। আমার লগে খেলতে চায়। মনে মনে এই দুজনের প্রতি বিরোধ নিয়ে বসে থাকে জহির। নানা কায়দা-কৌশলের চিন্তা করে সে। রাতের ঘুম তার বিদায় হয়। সাড়ে তিন শতাংশ জায়গার কষ্ট। বর্তমান বাজার দরে প্রায় চব্বিশ লাখ টাকা। জহিরের টেনশন বাড়তেই থাকে।

প্রতিদিনই নয়া নয়া কৌশলের চিন্তা আসে তার মাথায়। জীবন তার জটিল হয়ে ওঠছে ক্রমশঃ। সমাজের সব বদলোকের আড্ডা বসে তার ডেরায়। গভীর রাত পর্যন্ত চলে...

০৪.
নতুন জীবনে গেসুর আজ পঞ্চম দিন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে চলছে তার শিক্ষা। এই কয়দিনেই তার গালি অনেকটা কমে এসছে। চেহারায় চলে এসছে কিছুটা আভিজাত্য। এখন যে কেউ দেখলে তাকে বলবে, ভদ্র ঘরের আদুরে একটা ছেলে। সেও তার পরিবর্তনে খুশি। আনোয়ার স্যারের কাছে বলে, ‘স্যার আমি কি ইস্কুলে যাইতে পারমু?’ আনোয়ার স্যার হেসে বলেন, ‘‘আপাতত তোর ইস্কুল হলো রাহাত মিয়া। রাহাত মিয়ার কাছে যদি পাশ করতে পারিস তাহলে স্কুলে ভর্তির ব্যাপারে চিন্তা করমু।’’

স্যারের কথায় আশাবাদী হয় সে। রাহাত মিয়ার কাছে জানতে চায়, ‘কাকা! আমি কি ফারমু লেহাফড়া হিকতে?’
– অবশ্যই পারবি। খুব ভাল করেই পারবি। বলেন রাহাত মিয়া।
– জহির কাকা যে কইলো, আমারে নাকি বাইলবোল দিয়া আফনেরা আব্বার জায়গাটা আমার কাছ থিকা লেইখ্যা লইবাইন! এই জন্য আামারে এত আদর যতœ করতাছেন? আমি হের কথা বিশ্বাস করছি না। বছর খানেক আগে হইলে ঠিকই করতাম।
– জহির যদি এটা বলে থাকে তাহলে কইবি, “আমি তো নাম লেখতে পারি না। টিপসই দিতে পারি। জীবন যাবে তবু টিপ সই দিমুনা। আর যেদিন নাম লেখতে শিখমু সেদিন থেকে কোনখানেই আমার নাম লেইখ্যা রাইখ্যা আমু না।” আর জহিরের সাথে কোন রকম বাড়াবাড়ি করিস না। তাহলে তোর বাবারে খালাস করতে পারমু না। একটা কথা মনে রাখবি, তোর বাবার খালাসের কথা কারো সাথেই কইবি না। তাহলে কিন্তু আমরা তারে খালাস করে আনতে পারমু না।

আনোয়ার স্যার আর রাহাত মিয়ার যৌথ প্রচেষ্টায় গিয়াস এখন বাংলা দেখে দেখে পড়তে পারে। রাহাত মিয়া বলে, ছেলেটার মেধা ছিল। কিন্তু সে তার মেধার লালনের সুযোগ পায়নি। আনোয়ার স্যারও তাকে নিয়ে আশাবাদি। আজ প্রায় একবছর হয়ে গেলো গেসুর কোন বিচার করেতে হচ্ছে না। অথচ একবছর আগেও এমন কোন দিন ছিলো না। যে দিন ওর খিস্তি ও খারাপ আচরণের দুই-চারটা বিচার আনোয়ার স্যারকে বাজারের সভাপতি হিসেবে করতে হতো না। বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও খুশি গেসুর এই পরিবর্তনে। একজন শুধু ভেতরে ভেতরে অখুশি। সেই একজন হলো জহির। এই একবছরে জহির রাহাত, আনোয়ার স্যার ও গেসেুকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করেছে। কিন্তু কোনটাইতেই সফল হতে পারেনি সে। আনোয়ার স্যারের নামে দুটি মিথ্যা মামলা করেছে। এর মধ্যে একটাতে গেসুকেও আসামী করা হয়েছিল। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও বাজারের ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত ধমকে একসময় সে মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়। রাহাতকে নারি বিষয়ক ঝামেলায় আটকাতে চেষ্টা করেছে সে। সেখানেও ব্যর্থ। অবশেষে গেসেুকে ফাঁদে ফেলতে টোপ হিসেবে ব্যবহার করেছে নিজের কাজের মেয়েকে।

এক রাতে তিনটার সময় গেসু আনোয়ার স্যারের বাসার সামনে এসে হাপাতে হাপাতে স্যারকে ডাকতে থাকে। স্যার কিছুটা ভয়ে ভয়ে দরজা খুলে দেখে গেসু দাঁড়িয়ে কাঁপছে। ভেতেরে নিয়ে জানতে চাইলেন ঘটনা। গেসু বলে, “স্যার! আমি ঘুমাইতাছি এমন সময় একটা শব্দ হয়। আমার আবার ঘুম পাতলা। দেখি জহির কাকার ঘরের ভিত্রে দিয়া দোয়ারটা খোলে গেছে। হেইলার কামের মেয়েটা আমারে আইসা জাইত্যা ধরছে। এমন সময় আমি দৌড়ে ঘর থিকা বাইরে আয়া ফরি। হুনি আমার ঘরে জহির কাকা আয়া ছেরিরে বকতাছে। কয় এর ধইরা রাখতে পারবি না তে আইছলি কেরে। এই কথা হুইন্যা আমি আপনের বাড়িতে চলে আসি।”

আনোয়ার স্যার গেসুকে রাতে নিজের বৈঠকে থাকতে দেন। ‘সকালে দেখি কী করা যায়!’ এই বলে নিজেও ঘুমাতে যান।

সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগেই জহির এসে আনোয়ার স্যারকে ডেকে তুলে। বলে, “স্যার আপনে তো গেস্যোয়াকে ভাল মানুষ বানাইতাছেন। হের চরত্রের খবর রাহেন নাহি?”
– কী হইছে জহির? সব কিছু খোলে কও। বললেন স্যার।
– কী না হইছে স্যার! গেস্যোরে লাইল্যা-পাইল্যা বড় করলাম। আর এখন আপনেরা হেরে মানুষ বানানোর চাইতাছেন। হে তো একটা লুচ্চা অইতাছে। আইজ রাইতে আমার ঘরের কামের ছেরিরে তুইল্যা হের ঘরে লইয়া আইছে। অসুরের মত শইল্যের লগে কি কামের ছেরি পারে? এরপরে যহন মেয়ের চিল্লানিতে আমরা আইলাম তহন তে দৌড়ে পলাইছে।
– ঠিকাছে জহির। কোন সাক্ষী প্রমাণ আছে কি? থাকলে তাদের নিয়ে বাজারে বস আমি আইতাছি।
বাজারে দরবার বসে আছে। আছে দরবারিরাও। ঠিক এমন সময়। জহিরের কাজের মেয়েকে হাজির করা হয়। স্থানীয় মাতাব্বরের দুই ধমকে মেয়ে সব ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দেয়। লজ্জা আর অপমানে জহির রামপুর বাজার ছেড়ে কিছু দিনের জন্য অন্যত্র চলে যায়।

০৫.
জীবনের দীর্ঘ সময় পর গিয়াস জানতে পারে তার বাবার নাম জানফর আলী। কয়েদি নং ৪৪৪। এখন সে পত্রিকা পড়তে পারে। চিঠি লিখতে পারে। রাহাত মিয়া তাকে একটা মেনাহরি দোকান করে দিয়েছে। বাজারের পহাড়া দিয়ে সে যে টাকা জমিয়েছিল সেগুলো তার কাছেই আছে। আপিল করা হয়েছে। আগামী মে মাসের আট তারিখে আপিলের শুনানি। সাবাই বলাবলি করেছে। জানু খালাস পাবে। রাহাত মিয়া ও আনোয়ার স্যারও আশাবাদী।

গেসু এসব কথায় বেশ উত্তেজিত। জন্মের পর বাবাকে দেখেনি। এরপরও তিনবার জেলখানায় গিয়ে ফিরে এসেছে। বাবাকে দেখতে পায়নি। সঠিক তথ্যের অভাবে। পিতার অনুভবটা তার ভেতরে একটা স্বর্গীয় অনুভূতির সৃষ্টি করেছে। যাকে পায় তাকেই বলে, ‘আমার বাবাকে কয়েকদিনের মধ্যেই দেখতে পারমু।’ বলার সময় তার চোখে মুখে এক ধরণের আনন্দ আলোর দোল খেলে যায়।

একরাতে সে স্বপ্ন দেখে। তার বাবা দুধ খেতে চাইতেছে। সকালে ঘুম থেকে ওঠেই দোকান না খোলে দোকানের ফ্রিজে থাকা দুধ নিয়ে ছুটে নেত্রকোনার পথে। গায়ে একটা শার্ট আর পড়নে একটা লুঙ্গি। লুঙ্গির কোচড়ে নেয় তার জমানো সব টাকা। একটা সিএনজি নিয়ে জেল গেটে যায় সে। তার বাবার নাম ও কয়েদী নম্বর বলার পর জেলগেটের সেন্ট্রি জানায় জানফর আলী এখন আছে ময়মনসিংহ জেলে।

ঢুকরে কেঁদে ওঠে গিয়াস। জেলপুলিশের সামনে কোচড় থেকে একটাকা, দুইটাকা, পাঁচ টাকা, দশটাকা, পঞ্চাশ টাকা, একশ টাকা ও পাঁচশ টাকার নোট মাটিতে ফেলতে থাকে। আর বলতে থাকে তোমাদের কত টাকা লাগবে, নিয়ে যাও। একবার আমার বাবাকে দেখতে দাও! একবার আমার বাবাকে দেখতে দাও!! কাঁদতে কাঁদতে পাগলের মত টাকাগুলো উড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলতেছে আর বলতেছে, বাবাকে দেখতে দাও! একবার বাবাকে দেখতে দাও!! আমার বাবা কত বছর না জানি দুধ খায়না। রাইতে আমার কাছে স্বপ্নে দুধ চাইছে। আমি দুধ নিয়ে আইছি।

কাঁদতে কাঁদতে বলে, “বাবা! দেখো আমি তোমার লাইগ্যা দুধ লইয়া আইছি। কিন্তু শালার পুলিশ আমারে ভিত্রে যাইতে দেয় না।” গিয়াসকে পুরনো অভ্যাসে পেয়ে বসেছে। শুরু করেছে আবার খিস্তি...

০৮ জুন, ২০১৪



মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৭

শাহরীন মাহাদী বলেছেন: ভাল লাগল

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৭

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: ধন্যবাদ।
শুভকামনা।

২| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪০

কল্লোল পথিক বলেছেন: চমৎকার গল্প।শুভ কামনা জানবেন।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৯

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা নিরন্তর আপনার জন্যও।

৩| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: শুরু থেকে পড়তে পড়তে এসে গিয়াসের বদলে যাওয়ার কথা পড়তে ভালই লাগছিল কিন্তু শেষে এসে গিয়াসের খিস্তি খেউরের অভ্যাস ফেরত আসা ভালো লাগে নাই।

আপনি আফিলের ব্যবস্থা করেন।<<< আপিলের।

কিছু টাইপো আছে। ঠিক করা দরকার।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৭

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: ধন্যবাদ। সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

গিয়াসের বদলে যাওয়ার পর পুনরায় খিস্তি শুরুর বিষয়টা এখানে একটা মেসেজ দেয় আমাদের।
'মানুষ তার চূড়ান্ত অসহায়ত্বে চরম দুর্দান্ত হতে চায়। যেমন বিড়াল কুকুরের তাড়া খেয়ে দেয়ালে ঠেকে গেলে ঘুরে দাঁড়ায়। গেসু মূলত তার অসহায়ত্বের প্রতিক্রিয়ায় পেছনে ফিরে গেছে। আরেকটা কথা মানুষ বিপদ বা কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় তার রুটে ফিরে যায়।
অবশ্যই সেটা সামময়িক। কখনও কখনও পজিটিভও।

আর 'আফিল' ঠিকাছে।
গ্রামের বাজারে মানুষ সাধারণত শুদ্ধ বলতে চেয়ে এমন ভুল করে। সেইটাই দেখাতে চেয়েছি।

টাইপোগুলো বিজয়ে নাই। ইউনিকোডে আইসা উদয় হইছে। :)

৪| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১

আজমান আন্দালিব বলেছেন: সমাজের গিয়াসরা ভালো থাকুক।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২২

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: হ্যাঁ তাই হোক।
ধন্যবাদ জানবেন।

৫| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: সুপান্থ সুরাহী ,




বেশ সরল হয়ে গেছে গল্পটা । গ্রামীর সমাজের কঠিন বাস্তবতা আছে কিন্তু সাথে অতি আবেগীয় ব্যাপারগুলো থাকাতে হাল্কা মনে হলো । কিছুটা গুছিয়ে লিখলে আরও ভালো হতে পারতো ।

শুভেচ্ছান্তে ।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৬

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: গল্পটার শরীরটা সত্যিই সরল। কিন্তু এর ভেতরের সত্যটা কিংবা অন্তর্গত বোধটা সরল নয়।

আমি সত্য ঘটনাটাকে কেবল আমার মত বর্ণনা করেছি। একটুও বাড়িয়ে কিছু বলিনি। বরং অনেক খিস্তি স্কিপ করে গেছি।

ধন্যবাদ পাঠোত্তর সুচিন্তিত মতামতের জন্য।

৬| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৫

তার আর পর নেই… বলেছেন: একটা জিনিস খুব ভালো রকমের সত্যি।
রাস্তায় যে সব বাচ্চারা বড় হয় তারা খুব ভাল স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।
গল্প ভাল লাগলো। প্রথমদিকের গালি পড়তে কষ্টই হইছে।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৮

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: আপনার পর্যবেক্ষণ ঠিক।
অনেক ধন্যবাদ। গালিগুলোতো স্কিপ করে গেছি। একেবারে নির্দোষ গালিগুলো বিবৃত করেছি।

৭| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৪

অগ্নি সারথি বলেছেন: কাঁদতে কাঁদতে বলে, “বাবা! দেখো আমি তোমার লাইগ্যা দুধ লইয়া আইছি। কিন্তু শালার পুলিশ আমারে ভিত্রে যাইতে দেয় না।” গিয়াসকে পুরনো অভ্যাসে পেয়ে বসেছে। শুরু করেছে আবার খিস্তি...

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩০

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন সবসময়।

৮| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৬

আবু শাকিল বলেছেন: ভাল লেগেছে।
তবে ঘষা-মাজায় আরেক টু সময় দিতে পারতেন।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৫

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা নিরন্তর।

৯| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪

প্রামানিক বলেছেন: গল্প ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৭

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
শুভকামনা সবসময়।

১০| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৪

ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: ভালু ভালু

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: ধইন্যা।
ভালু থাকুন সময় অসময়।

১১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: গল্প ভালো হয়েছে।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০০

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা জানবেন।

১২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: একটা পজিটিভ শেষের আশায় ছিলাম! গুড়ে বালি পড়ল ;)


+++

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৩

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: কী আর করা! শেষটা পজিটিভই। তবে সেটা বলা হয়নি। কারণ, গিয়াসের খিস্তি ফেরা সাময়িক। জানুর মুক্তি হবে।

১৩| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
পোস্টে এ +++++

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৫

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: ধন্যবাদ।
সুন্দর থাকুন সবসময়।

১৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১০

বাংলার নেতা বলেছেন: চমৎকার প্রদ অসাধারণ অসাম!

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৯

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন।

১৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এন্ডিংয়ে আবার পুরনো বৃত্তে ফিরে যাওয়া। ভাল ছিল বেশ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.