নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আশা নিয়ে বসে আছি ।

রানার ব্লগ

দূরে থাকুন তারা যারা ধর্মকে পুঁজি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দূরে থাকুন তারা যারা ১৯৭১ থেকে অদ্যাবদি বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এবং সকল পাকিস্তানী প্রেমী , রাজাকার ও তাদের ছানাপোনা ।

রানার ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনা বিড়ম্বনা

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১১




নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসটি নিজে নিজেই আপগ্রেড হয়েছে আগের করোনা ভাইরাস থেকে এবং এটির যে বর্তমান শক্তি তা আগের ভাইরাস টি থেকে ৭০% দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। এটির কারণে নানা দেশ অলরেডি তাদের বর্ডার বন্ধ করে দিয়েছে ইতিমধ্যে ইংল্যান্ড ও ইউরোপ এ খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে দেশ গুলোর বিশেষজ্ঞরা। এইটি এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াতে পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। সবাই দয়া করে সর্তক থাকুন সাবধানে চলা ফেরা করুন। মাস্ক পরে বাহিরে যান।

গত জুন মাসের ১১ তারিখ আমার মা করোনা আক্রান্ত হলেন, সম্ভাবত আরো দিন চারেক আগেই তিনি আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি আলামত পেলেও এড়িয়ে গিয়েছেন, আমরাও বুঝতে পারি নাই, কারন করোনা প্রকপ শুরু হতেই আমরা আম্মা কে বাহিরে যাতায়েত বন্ধ করে দিয়েছিলাম, আমরা বাহির থেকে আসলে ভালো করে গোসল না করে তার সাথে দেখা করতাম না, তারপরেও তিনি আক্রান্ত হলেন, হঠাত একদিন সকালে আমাকে বলছেন যে তার কোন খাবারেই স্বাদ নাই এবং গন্ধ পাচ্ছেন না, কিছুটা চিন্তিত হয়ে বললাম যদি ভালো অনুভব না করো আমাকে জানিও এটা বলে আমি অফিসে চলে আসি, ঠিক দুপুরে আমার বোনের কল, আম্মার শ্বাস নিতে কস্ট হচ্ছে, আমি সব কাজ ফেলে বাসায় চলে এলাম, দেখি আম্মা লজ্জিত মুখে সোফায় বসে আছে তার মুখ লাল হয়ে আছে, আম্মা কে জিজ্ঞাসা করলাম , মা কেমন লাগছে, আম্মা হেসে বল্লো ভালোই আছি, কেবল দম টা ফেলতে কস্ট হচ্ছে, আমি দেরি না করে, আমাদের বাড়ির পাশের হাঁসপাতালে নিয়ে গেলাম, একমাত্র এই হাঁসপাতালে টাই করোনা রুগি ভর্তি নিচ্ছিল, আম্মার শ্বাস নিতে কস্ট হচ্ছে, কস্টের মাত্রা আরো বাড়ছে, হাঁসপাতালের কেউই এগিয়ে আসছে না। আমি মোটামুটি চিৎকার করে একজন কে ডাকলাম বললাম আপনাদের ভয় লাগলে আমাকে দেখিয়ে দিন অক্সিজেন কি করে দিতে হয়। কোন এক জন এগিয়ে এসে আমাকে দেখিয়ে দিলেন, আমি অক্সিজেন সিলেন্ডার টেনে এনে আম্মা কে অক্সিজেন দিলাম, আম্মা একদম বাচ্চা মেয়ের মত লজ্জায় জড়সড় হয়ে অক্সিজেনে শ্বাস নিতে লাগলেন।

এক ঘন্টা হয়ে গেলো কারো আসার নাম নাই , না ডাক্তার না নার্স, কেউই না, একজন কে জিজ্ঞাসা করলাম সে বললো ডাক্তাররা রাউন্ডে আছে সেই সাথে নার্সরাও । সময় তখন ৭ টা , আম্মাকে বিকেল তিনটায় ডাক্তারের কাছে এনে ছিলাম, সন্ধ্যা সাতটার সময় এক জন ডাক্তার এলেন, তিনি কিছু না দেখেই আম্মাকে আইসিউতে পাঠাতে বললেন, আম্মা ভয় পেয়ে গেলেন, আমার শার্টের হাতা ধরে টান দিয়ে বললে যে তিনি কোন ভাবেই আই সি ইউ তে জাবেন না। ততোক্ষণে আম্মার শ্বাস স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আমি ডাক্তারকে বললাম কিছু টেস্ট করে দেখি কি অবস্থা তার পরে স্বিধান্ত নিন , তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেন আপনি ডাক্তার না আমি ডাক্তার , আমি কোন উপায় না দেখে ওখানকারের একজন প্রবীন ডাক্তার তাকে গিয়ে সব সমস্যা খুলে বললাম, তিনি এসে বেশ কিছু টেস্ট দিলেন এবং আম্মাকে আইসল্যুসেন রুমে ভর্তি করলেন, আমার ছোট বোন আম্মার সাথে থাকার অনুমতি পেলো, আমি প্রয়জোনীয় জিনিস কিনে দিয়ে আম্মার কে একটু ধর্জ ধরতে বলে বাসায় চলে এলাম, কারন তারা আমাকে হাঁসপাতালে থাকা এল্যাউ করছিলো না।

রাত ঠিক বারটার সময় আমার ছোট বোনের ফোন, আম্মাকে ওরা জোর করে আই সি ইউ তে নিয়ে যাচ্ছে, আমি যেন তারাতারি আসি, আম্মা কোন ভাবেই যেতে চাচ্ছে না, আমি কোনরকম কাপড় পরে দে দৌড়, হাফ মেইল রাস্তা আমি ৮ মিনিটে পৌছে গেলাম, যেয়ে দেখি এক এটেন্ডেন্স আম্মাকে বিশেষ একটা ফর্মে সাইন করতে বলছে, যাতে লেখা আইসিইউ তে কিছু হলে তার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী না, আমি আম্মা কে জিজ্ঞাসা করলাম আম্মা তোমার কি শ্বাস নিতে কস্ট হচ্ছে, আম্মা বেশ জোড় গলায় বলল না, আমি আম্মার অক্সিজেন মেপে দেখলাম ৯৫-৯৯ এ ওঠা নামা করছে। সন্ধার সেই ডাক্তার এসে ধমকা ধমকি শুরু করে দিলো , এখনো কেন রুগি আইসিইউতে না, আমি যেয়ে ডাক্তার কে বললাম না আমরা রুগি কে আইসিইউ পাঠাবো না, ভদ্রলোক আমার সাথে তিব্র ভাষায় ঝগড়া শুরু করলো, আমার সাথে কোন ভাবেই না পেরে চলে গেলো এর কিছুক্ষন পর একজন ইমারজেন্সি ডাক্তার এসে আমাকে বেশ অসন্তুষ্ট গলায় বলল আমি নাকি আইসিইউ ডিপার্টমেন্টের সাথে বেয়াদোবি করেছি তাই আমাকে মাফ চাইতে হবে, না হলে রুগি নিয়ে চলে যেতে হবে, আমার মেজাজ তখন সপ্ত আসমানে, প্রচন্ড রাগে আমি অস্থির তখন, ও দিকে দেখছি আম্মা কে ওরা কেবিন ছাড়তে বলছে, এক রকম জোর জবরদস্তী করছে, আমি তখন উপায় না দেখে বললাম যদি আপনারা জোর করেন আমি পুলিশ ডাকবো, পুলিশ ডাকার কথা শুনে এরা সাহপাতালের মেইন গেট তালা দিয়ে দিলো, আমি উপায় না দেখে আমার খালাতো ভাই যিনি আর্মি অফিসার তাকে কল করলাম, তিনি সব শুনে নিজেই এলেন এর ফাকে একজন বেশ বয়স্ক ডাক্তার এসে আমাকে বলছেন যে তিনি করোনা রুগি স্পেসালিস্ট তিনি আশংকা করছেন আম্মার অক্সিজেন যেকন মূহুর্তে ৭০ এর নিচে নেমে যাবে, এবং তিনি ভয়াবহ টাইপ কিছু হিস্টোরি বলছেন আমাকে, অনেক করোনা রুগি ওনার হাতে মারা গিয়েছেন, কি কি ভাবে মারা গিয়েছেন তার বর্ননা দিতে লাগলেন, আমি কোন গল্প কানে না তুলে স্ট্রং বসে আছি। আমার ভাই এলেন তিনি এসে ডাক্তার কে বললেন আজ রাত রুগি এখানে থাকবে কাল আমরা ওনাকে অন্য হাঁসপাতালে নিয়ে যাবো। এরা দাত মুখ শক্ত করে মেনে নিলো।

সকালে ডিসচার্জ করার সময় বিল নিয়ে এলো ২৫,৮৩২ টাকা , মাত্র এক রাত ছিল আট টা টেস্ট এর এবং অক্সিজেনের বিল, আমি সব টাকা পরিশোধ করলাম, কিন্তু কিছুক্ষন পর তারা আরো ৮৭২০ টাকার বিল নিয়ে এলো, জিজ্ঞাসা করলাম কিসের বিল , আইসিইউএর বিল, আমি বললাম রুগি তো আমরা আইসিইউ তে নেই নাই তো বিল দিব কেন, এই নিয়ে শুরু হোল বচসা, এক কথা দুই কথা তে আমার সাথে লেগে গেলো ঝগড়া, তারা আবার হাঁসপাতালের গেট বন্ধ করে দিলো, তারা এম্বুলেন্স ঢুকতে দিবে না, পরিস্থিতি খুবি কঠিন হয়ে যাচ্ছিলো আমি কোন উপায় না দেখে তাদের বিল পরিশোধ করে দিলাম মোট ৩৪,৫৫২ টাকা। এর পর এম্ব্যুলেন্স করে আম্মাকে সিএমএইচে নিয়ে গেলাম। পুর সময়টাই আম্মুর অক্সিজেন ৯৫-৯৮ এর মধ্যে ছিলো।

সি এম এইচে নেয়ার পর তারা আবার টেস্ট করালো , রেজাল্ট আসলো আম্মার করোনা, কিন্তু তারা আম্মা কে ভর্তি করলো না, তারা বলল আম্মার অবস্থা অনেকের থেকে বেশ ভালো, ওখানে সব এক্ট্রিম রুগি এদের মধ্যে থাকলে তিনি আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন ,আম্মাও থাকতে চাচ্ছিলো না, আমি আম্মা কে নিয়ে চলে এলাম , সি এম এইচ থেকে ট্রিটমেন্ট লিস্ট দিয়ে দিলো, আমি অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে নিলাম, আম্মা আগস্টের ১৮ তারিখ করোনা মুক্ত হলেন। এখনো তিনি অসুস্থ। করোনা পরবর্তি কালীন এফেক্ট, চিকিৎসা চলছে।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫২

সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: খুব কষ্ট লাগে বাংলাদেশের হাসপাতাল গুলোর অনিয়মের কথা শুনলে । দেখার কেও নাই এসব দেখার । সব জায়গাতে অনিয়ম, অবিচার ।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪

রানার ব্লগ বলেছেন: বেসরকারি ও সরকারি সব হাসপাতালে একই অবস্থা। এরা সেবা দেয় না ব্যাবসা করে।

২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


হাসপাতালের নামে ডকাতী করছে ডাক্তারেরা ও কিছু লোকজন।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৫

রানার ব্লগ বলেছেন: আসলেই এরা ডাকাত, এরা মানুষ কে ভয় দেখিয়ে টাকা ইনকাম করে, চাদাবাজ টাইপের এরা।

৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৪

রামিসা রোজা বলেছেন:

কি ভয়াবহ অবস্থা কতটা মনুষ্যত্বহীন মানুষের আচরণ ।
শুধু আপনার আম্মার সাথেই নয় এই রকম ঘটনা করোনা
কালে অনেক ঘটেছে কোন দুনিয়ায় যে আমরা বাস করছি।
যাইহোক আপনার আম্মা সুস্থ হয়েছেন জেনে ভালোলাগলো।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৬

রানার ব্লগ বলেছেন: হ্যা এখন কিছুটা সুস্থ

৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আপনার আম্মার জন্য শুভকামনা রইলো।
চিকিৎসা-শিক্ষা-খাদ্য এই ৩ যায়গায় আমরা জিম্মি।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৭

রানার ব্লগ বলেছেন: আমরা অসহায় !!! আমাদের রুপকথার গল্প শুনানো হয় কিন্তু বাস্তবে অশ্বডিম্ব!!

৫| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে এখন স্রেফ ডাকাতি চলে। ডাক্তারদের চাকুরি শুনেছি যে রোগীকে ধরে রাখা, আইসিউতে পাঠানো লাইফ সাপোর্টে নেয়া ইত্যাদির উপড় নির্ভর করে।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৮

রানার ব্লগ বলেছেন: ডাকাতের আস্থানা বেসরকারি হাঁসপাতাল!!

৬| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশের সরকারী বেসরকারী কোনো হাসপাতাল ভালো না। তারা শুধু চিনে টাকা। টাকা দিয়েও ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায় না।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৫

রানার ব্লগ বলেছেন: এরা এক প্রকারের কসাই শ্রেনী ভুক্ত।

৭| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: "ডাক্তার মানে সেতো মানুষ নয়,
আমাদের চোখে সেতো কশাই" (সবাই নয়)

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৬

রানার ব্লগ বলেছেন: এই কারনেই যারা সামর্থবান তারা দেশের বাহিরে যায়, আর যারা দরিদ্র তারা ধুকে ধুকে মরে

৮| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আপনার আম্মার জন্য দোয়া রইলো। আমাদের দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলো রিতিমতো জালিয়াতি করছে।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৮

রানার ব্লগ বলেছেন: তারা রুগি কে রুগি মনে করে না, রুগি তাদের কাছে চেকের মত মনে হয়, যত রুগি তত ক্যাশ

৯| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৬

জুন বলেছেন: আমার জা জুন মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলো ঢাকার এক উঠতি হাই প্রোফাইল হাসপাতালে । যতটুকু শুনেছি তাতে বুঝলাম সিস্টার আর আয়াদের তত্বাবধানেই তার চিকিৎসা চলছিল। ১৫ দিন পর বেচারা যখন আরেক দুনিয়ায় পাড়ি দিল সেই মুহূর্তে আমার দেবরের হাতে নয় লক্ষ টাকার বিল ধরিয়ে দিয়েছে। সেই বিল শোধ না করা পর্যন্ত তার স্ত্রীর মৃতদেহ আটকে রেখেছিল তিন ঘন্টা । অমানবিক। আপনার আম্মার জন্য রইলো আন্তরিক শুভকামনা।

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫১

রানার ব্লগ বলেছেন: এরা অমানবিক, এরা অমানুষ, এরা শয়তানের চ্যালা এদের অবশ্যই কঠিন শাস্তি হওয়া উচিৎ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.