নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দূরে থাকুন তারা যারা ধর্মকে পুঁজি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দূরে থাকুন তারা যারা ১৯৭১ থেকে অদ্যাবদি বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এবং সকল পাকিস্তানী প্রেমী , রাজাকার ও তাদের ছানাপোনা ।
ভাঙ্গা হাতলের চেয়ারে বসে কদু চেয়ারম্যান কুলকুলিয়ে ঘামছে । কপালে চিন্তার ভাজ স্পস্ট । ক্ষনে ক্ষনে বড় বড় শ্বাস ফেলছে । একটু আগে ফক্কু মেম্বার এসে বলে গেছে সরিষাবাড়ির মিলিটিরি ক্যাম্প থেকে মেজর সাব ডেকে পাঠিয়েছে । কদু চেয়ারম্যান বরাবরি পুলিশ ভয় পায় তার উপর এই জিনিস মিলিটিরি , ভয়ে তার গলা শুকিয়ে কাঠ, আশে পাশে এমন কেউ নাই যে বলবে এক গ্লাস পানি দিতে । কাপাকাপা পায়ে উঠে দাড়ালো, ইউনিয়ন পরিষদের জানালা দিয়ে আকাশ দেখা যায় , কিছুক্ষন আকাশের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো আজ দিন ভালো না খারাপ । গতোকাল নদীর ওপারে দুইটা গ্রাম পূড়িয়ে কয়লা করে দিছে মিলিটিরিরা , চেয়ারম্যান কে নাকি শিমুল গাছের সাথে ঝুলিয়ে ন্যাংটা করে মারছে । ভরসার কথা ওই চেয়ারম্যান হিন্দু ছিলো, গংগারাম শ্রীধর । কিন্তু সেও তো নামাজ রোজা ঠিক মতো করে না । যদি সুরা টুরা ধইরা বসে তখন কি হবে, আলহামদু সুরা ছাড়া তেমন কোন সুরা তার মনেও আসছে না, অথচো ঠিক মনে আছে ঠসা হুজুরের বেতের বাড়ির ঠ্যালায় তিন টা সুরা সে মুখস্ত করেছিলো কিন্তু এখন তার কিছুই মনে আসছে না, পরিষদের পাশের আম গাছের সাথে তাকে ন্যাংটা করে ঝুলিয়ে রেখেছে, তার তিন বিবি সহ এলাকার জনগন হা করে সেই দৃশ্য দেখছে, তার যে পাছায় খুজলি আছে এটা লোকে জেনে যাবে এটা ভেবেই তার শরীর ঘাম ছেড়ে দিলো, এই বয়সে তার ন্যাংটা হবার ইচ্ছা একদম নাই । আশে পাশে আমপারা টারা আছে কি না খুজতে লাগলো, হড়বড়িয়ে খুজতে গিয়ে ভাঙ্গা চেয়ারের হাতোল টা আবার ভেঙ্গে ফেললো । নাহ, কেউ যিদি কাজের জিনিস রাখে, গজগজ করতে লাগলো কাদু চেয়ারম্যান। হঠাত করে খেয়াল করলো পরিষদের দরজা খোলা, তারাতারি দরজা বন্ধ করে দিয়ে টেবিলের উপর বসে পরলো, আদ্দিকালের টেবিল কদু চেয়ারম্যানের ভার নিতে পারলো না, মচ করে শব্দ করে কড়াত করে কদু চেয়াম্যান কে নিয়ে মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরলো । মেরুদন্ডে প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে মুখ বাকা করে উঠে দাড়ালো কদু চেয়ারম্যান । টেবিল ভাঙ্গার শব্দে বাহির থেকে কেউ একজন দরজায় ধাক্কা দিয়ে তার নাম ধরে ডাকছে । কোমর টা ধরে হাটতে গিয়ে টের পেলও হাটুতেও বেশ লেগেছে, কোন রকমে দরজা খুলে দিলো, দরজার সামনে কচি চৌকিদার হা করে দাঁড়িয়ে আছে, এই লোকটারে সে একদম দেখতে পারে না, বুড়া ভাম নাম তার কচি । এই ব্যাডা হা কইরা কি দেখস, যা ভাগ এইহান থিকা। খ্যাক খ্যাক করে উঠলো কদু চেয়ারম্যান ।
সরিষবাড়ি স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে কদু চেয়ারম্যান । পায়জামার উপরে ওভার কোট আর মাথায় জিন্নাহ টুপি পরে । ভাদ্র মাসের গরমে দরদরিয়ে ঘামছে । শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুটকুট করে চুলকাচ্ছে, কোন উপায় নাই চুলকানোর, মাঝে মাঝে হাত পা বাকা করে চুলকানি থামানর বৃথা চেষ্টা করছে । তিন তিনটা মুসকা জোওয়ান হাতে বন্দুক নিয়ে । চেহাড়া দেখেই আত্মার পানি শুকিয়ে খা খা করছে। মনে হয় জেনো কলিজার মধ্যে কারবালা হয়ে গেছে । এক ঘন্টা হয়ে গেছে কোন নরন চরন নাই কারো, কেউ কিছু বলেও না, পা ব্যাথায় টনটন করছে, মাটিতেই বসে পরবে কি না ভাবছে । এমন সময় শুকনা দেখতে লোক খুড়িয়ে খুড়িয়ে এসে তার সামনে দাড়ালো ।
- আপনি কদু চেয়ারম্যান, নাকের সর্দি ফোস করে টেনে নিয়ে জিজ্ঞাসা করলো
-জ্বে, আমারে ডাকছে ? তোতলাতে লাগলো কদু চেয়ারম্যান
-ভেতরে যান, আল্লাহ খোদার নাম নিয়া যান ।
কদু চেয়ারম্যানের মনে হলো সে পাজামা ভিজিয়ে ফেলেছে, কেমন যেন ভেজা ভেজা লাগছে, অবশ্য ভয়ানক গরমে ভেজা পাজামা গায়ের সাথে লেগে একটু ঠান্ডাও লাগছে । মনে মনে আলহামদু সুরা পড়তে গিয়ে মাঝ পথে আত্তাহিতু পড়া শুরু করে দিলো, থুক্কু বলে আবার শুরু করে দেখে সে ইন্নালিল্লাহ পরে ফেলেছে । ভাড়ি পর্দা ঠেলে সে ভেতরে ঢুকে দেখে ঘুটঘুটে অন্ধকার । হঠাত করে নিঃশব্দতা তাকে যেনো চেপে ধরলো । এক কোনায় একটা লাল বিন্দু কেবল উপরে উঠছে আর নামছে, তামাক পোড়া গন্ধে ঘরটা ম ম করছে, এই পেরেসানির মধ্যেও তার এখন তামাক খেতে ইচ্ছা করছে।
- আপ কা নাম কেয়া হায় ।
- জ্বে, বুজি না স্যার, আন্ধকার চোখে সয়ে এলে চোখ কুচকে এক কোনায় একজন মাঝ বয়সি স্বাস্থ্যবান একজন মিলিটিরি উর্দি পরা লোক কে দেখলো যার হাতে সেই লাল জ্বলন্ত বিন্দু ওঠা নামা করছে ।
- নাম বল নাম । কটমট করে বললো
- জ্বে কদু মিয়া, লোকে কয় কদু চেয়ারম্যান ।
- কাডু, ও ক্যায়া তাচ্ছিল্যের সাথে জিজ্ঞাসা করলো
- জ্বে নাম , আমার নাম স্যার
- তুম মোসলমান ?
- জ্বে জ্বে ইমানে মোসলমান, বলে পাজামা খুলে দেখতে গেলো
-রুকো, ধমকে উঠলো ওপাশের লোকটি ।
-তুম বহুত বাস মারতে হো, ক্যা কিয়া ? নাক কুচকে জিজ্ঞাসা করলো
কিছুটা সাহস ফিরে পেয়ে কদু চেয়ারম্যান একটু গলা খুলে বললো, জ্বে জনাব আপনার ভয়ে মুতে দিছি ।
-ক্যা বোলে ইয়ে লোগ, তুম উর্দু বোল নেহি সাকতা ? হাতের সিগারেট ফেলে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো লে কর্নেল আলি আজগর ।
-জ্বে স্যার উর্দু কুস কুস বলতা , কদু মিয়া ভয়ে পিছিয়ে গেলো ।
-আচ্ছা ফিরছে বোলো তোমহারা নাম ক্যায়া ।
-জ্বে কদু মিয়া । হালকা মৃদু গলায় বললো ।
- কাডু ক্যায়ছা নাম ইয়ে
- জ্বে স্যার, কদু , লম্বা লম্বা হোগার দারে গোল, দেখতে সবুজ , কাটলে সাদা, খাইতে অনেক মজা ।
লে কর্নেল আলি আজগর এতোক্ষন ধরে এই তেলাপোকার মতো দেখতে লোকটা নিয়ে খেলছিলেন কিন্তু আর সহ্য করতে পারছেন না, প্রস্রাবের ভয়ানক গন্ধে তার বমি পাচ্ছে। সিগারেটের নিকটিন তার ব্রেন কে কোনভাবে ব্যাস্ত রাখতে পারছে না প্রস্রাবের গন্ধের কারনে। ভালো করে তাকিয়ে দেখেন লোকটার প্যান্ট ভেজা, মাত্র মনে হয় সে আবার প্রস্রাব করে দিয়েছে। ব্যাপারটা তার ঘেন্যা লাগলেও মনে মনে খুশি হলেন, তিনি বুঝতে পারছেন তার ভয় কাজ করছে।
- ছোড়, তুম কই মুক্তি কো জানাতা ? ।
কদু চেয়ারম্যানের মাথা ঘুরছে, অন্ধকারে ভালো করে তাকাতে চোখ ব্যাথা করছে তার উপরে আবার সে প্রস্রাব করে দিয়েছে । তার পাজামা ভিজে ত্যানার মতো পায়ের সাথে লটকে আছে । তার হঠাত মনে হলো সে ল্যাংগোট পরে নাই নিশ্চই তার ওটা দেখা যাচ্ছে , ভাগ্যের কথা তার ওটার মাথা কাটা আছে দেখা গেলেও ভয়ের কিছু নাই। সে সাচ্চা মুসলমান ।
- না স্যার মুক্তি নাই স্যার, হাম মুক্তি কো লাত্থি দেগা ।
- ঠিকছে বোলো , হামে পাতা হ্যায় তোমহারা এলাকা মে বহুত গাদ্দার হ্যায় । চোখ ভুরু নাক ঠোট এক জায়গায় এনে বললো লেঃ কর্নেল আলি আজগর ।
- না স্যার গাদ্দার নেহি তয় পোদ্দার আছে, তয় হ্যারা ভালা লোক হ্যায় ।
- পোদ্দার, চোখ লাল করে জিজ্ঞাসা করলেন লেঃ কর্নেল আলি আজগর , পোদ্দার ক্যায়া ?
- বংশ স্যার, গাদ্দার নামে কোন বংশ নাই স্যার ।
-তোমাহারা গাঁও কা নাম কেয়া হ্যায়
- গাঁও কা নাম স্যার শিয়ালমারি
-ক্যায়া ? শিয়ালমারি ? বাকা হাসি হেসে জিজ্ঞাসা করলো ।
- জে স্যার কে যে রাখছে জানি না । তয় আমাগো দেশে অনেক শিয়াল স্যার, গেলো হপতায় আমি স্যার দুইটা মারছি, বজ্জাতের বজ্জাত স্যার, আমেনার মায়ের দুইটা ডেগি মুরগা খা লিয়া স্যার ।
-তুম অর তুমহারা গাঁও কা নাম ভেরি ফানি ।
লেঃ কর্নেল আলি আজগর বুঝলেন এই লোক উর্দু জানে না, খুবি আফসোসের বিষয়, পাকিস্থানের মতো এক উন্নত দেশে উর্দু জানা জরুরী । কি সব জংলী ভাষায় এরা কথা বলে যা শুনলেই গা জ্বলে যায় । তিনি তৎক্ষণাৎ ঠিক করলেন আগামী কাল থেকে একটা উর্দু ভাষার ক্লাশ নিবেন তিনি নিজে । এলাকার সব লোকদের এখানে বাধ্যতামুলক উর্দু শিখতে হবে । ঠিক হ্যায় মেরে সাথ আও, বলে তিনি দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে গেলেন, কারন প্রস্রাবের গন্ধ তিব্র আকার ধারন করেছে। কদু চেয়ারম্যান থরথর করে কেঁপে উঠলো, সে ধির পায়ে লেঃ কর্নেল আলি আজগর কে অনুসরন করলো, তার কেবল মনে হচ্ছে পেছন থেকে সে যদি দৌড়ে পালিয়ে যেতে পারতো ।
লেঃ কর্নেল আলি আজগর নাক কুচকে সরিষাবাড়ি স্কুলের হেডমাস্টারের রুমে ঢুকলেন কারন তার পেছন পেছন কদু মিয়া আসছে যার গা থেক ভুরভুর করে প্রস্রাবের গন্ধ আসছে । হেডমাস্টারের ঘরের টেবিলের এক কোনে তিনটা মানুষ উপর হয়ে পরে আছে । মানুষ গুলো অর্ধউলঙ্গ । কারো পরনেই কাপড় ঠিকঠাক মতো নাই । শরীরের এখানে সেখানে বীভৎস মাইরের চিহ্ন । একজনার হাতের হাড় ভেঙ্গে চামড়া ফুড়ে বাহির হয়ে আছে, মেঝেতে রক্ত জমে শুকিয়ে গেছে, কারই মুখ দেখে চেনার উপায় নাই, চোখ মুখ নাক সব ফুলে এক সমান হয়ে আছে। লেঃ কর্নেল আলি আজগরের বিশাল শরীরের এক ফাকা দিয়ে এই দৃশ্য দেখে কদু চেয়ারম্যান থরথর করে কাপতে কাপতে বসে পরলো । সে মন এমনে ভাবতে লাগলো যে ভাবেই হোক এখান থেকে পালাতে হবে ।
- কডু মিয়া তুম ইসকো পেহচানো ক্যায়া ? লাঠির মাথা দিয়ে একটা ছেলের মুখে খোঁচা দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো লেঃ কর্নেল আলি আজগর
ভালো করে তাকিয়ে দেখে তারি ভাইপো রফিক, বুকটা তার হু হু করে উঠলো, এতিম পোলাডার কি অবস্থা করছে । তার বড় ভাইয়ের ছেলে, সেই তিন বছরের রাইখা মইরা গেছে তারপর বলতে গেলে সেই মানুষ করছে । চোখ ফেটে কান্না এসে গেলো, অনেক কষ্টে কান্না আটকে রেখে নির্দিধায় মিথ্যা বললো না স্যার চিনি না ।
আলি আজগর বুটের ঠকঠক তুলে সার্চ লাইটের মতো বিশাল গোল গোল চোখ দিয়ে কদু চেয়ারম্যান কে ভষ্ম করে দেয়ার মতো করে সামনে এসে দাড়ালো । বা হাতের লাঠি দিয়ে খুব জোরে একটা বারি দিলো কদু চেয়ারম্যানের গায়ে । কদু চেয়ারম্যান ছিটকে নিচে পরা মানুষ তিনজনা উপর গিয়ে পরলো, সালা কুত্তা কি আওলাদ, ঝুট বোলা , চিৎকার করে উঠলো আলি আজগর ।
- জ্বে না স্যার আমি চিনি না, মনের ভেতর জেদ টা আরো শক্ত করে হাচঁড়ে পাঁচরে উঠে দাঁড়ালো কদু চেয়ারম্যান ।
- ইয়ে তোমহারা ভাই কা লাড়কা নেহি হ্যায় কাডু ? দাত মুখ খিচিয়ে চুলের মুঠি ধরে জিজ্ঞাসা করলো ।
শুকনা পাতলা কদু চেয়ারম্যান বাতাসে যেমন শুকনো পাতা দোলে তেমনি আলি আজগরের হাতের মুঠায় ঝুলতে লাগলো । জীবনের সব আশা ছেড়ে দিয়ে কদু চেয়ারম্যান কোন রকমে বললো না স্যার আমি চিনি না তাদের । আলি আজগর ডাস্টার ছুড়ে মারার মতো ঘরের এক কোনায় কাদু চেয়ারম্যান কে ছুড়ে মারলেন । তার ইউনিফর্মে প্রস্রাবের ছিটা এসে লেগেছে , প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে কিছু খুজতে লাগলেন মোছার জন্য । হাত পা ভেঙ্গে পড়ে থাকার মতো কিছুক্ষন পরে থাকলো কদু চেয়ারম্যান, তারপর মাথা তুলে দেখলো চলে যাচ্ছে আলি আজগর , সে হাঁচড়ে পাঁচরে উঠে কিছুটা গড়ানোর মতো করে যেয়ে আলী আজগরের পা চেপে ধরে বলোল মেজর সাব আমি সত্যি চিনি না আমারে মাইরেন না ছাইড়া দেন ।
আলী আজগর পা ছাড়ানোর চেষ্টা করতে জোরে পা ঝাড়া দিলেন । তাতেও লাভ হলো না, কদু চেয়ারম্যান শক্ত করে পা ধরে ফেললো । মেজর স্যার আমারে ছাইরা দেন চিৎকার করে বলতে লাগলো ।
- কাডু ম্যায় মেজর নেহি হু , ম্যায় লেঃ কর্নেল আলী আজগর । ম্যায় তুমকো কুচ নেহি কারেগা , তুমি খালি সাচ বাতাও অর কই হ্যায় গাদ্দার তোমাহারা গাঁও মে ।
- স্যার গাদ্দার কি চিনি না , মুক্তি নাই স্যার , আমিও মুক্তি না স্যার, সাচ্চা পাকিস্থানী মেজর স্যার । কাদতে কাদতে উঠে বসলো কদু চেয়ারম্যান ।
- কাডু ম্যায় মেজর নেহি হু ম্যায় লেঃ কর্নেল, ফিরছে মেজর বলা তো তুমকো ম্যায় মিট্টি মে গাড় দুঙ্গা , যাও ইহাছে , ভাগো, আলী আজরগর ধৈর্য হাড়িয়ে ফেললো বুট দিয়ে জোরে একটা লাথি মারলো কদু চেয়ারম্যানের পাছায় ।
আলী আজগরের লাথি খেয়ে কদু চেয়ারম্যান স্কুলের বারান্দা থেকে নিচে পরে গেলো, ওখান থেকেই কোন রকমে উঠে দাড়ালো , মাথার টুপি টা কখন যে কোথায় পরে গেছে মনে নাই, কিছুক্ষন আশে পাশে খোজার ব্যর্থ চেষ্টা করে ঘুরে দৌড়ে পালিয়ে এলো । আজকের মতো বড় বাচা বেচে গেছে, কিন্তু রফিক ওর কি হবে, ও যে মুক্তিদের সাথে গেছে তাও সে জানে না । বুকের ভেতরটা মোচরাতে লাগলো । সারা পথ দৌড়ে পার করলো । গ্রামে ঢোকার মুখে কমলার সাথে দেখা , এলাকায় মাগীগিরি করে । পোলাপাইনদের মাথা নষ্ট করে ।
-কি কদু মিয়া তুমি বলে মরছো, মিলিটিরিরা তোমারে নাকি মাইরা নদীতে ভাসায় দিছে , ঢং করে বলতে বলতে এগিয়ে এলো কমলা ।
- দ্যাখ কমলা এই সব করবি না, দূরে যা আমার থন । বিরক্ত হয়ে বললো কদু চেয়ারম্যান
- আমার কি দোষ , ফক্কু মেম্বার তো সেই কতাই কইলো , হে নাহি এখন চেয়ারম্যান , তারে নাকি মিলিটারিরা চেয়ারমানি করতে কইছে এলাকায় সবাই তাই কয় । মুখ ঝামটা দিয়ে হাটা দিলো কমলা ।
এই কমলা দাড়া, দৌড়ে গিয়ে কমলার হাত চেপে ধরলো কদু চেয়ারম্যান । ফুক্কু কি কইছে তরে । চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলো কদু চেয়ারম্যান।
- কি মিয়া হাত ধরলা ক্যান , যাইবা নাকি, গেলে কিন্তু নগদ পঞ্চাশ টাকা দিতে হবে, মাগনা কাম কমলা করে না ।
-দিমু তোর পঞ্চাশ না একশো ট্যাকা দিমু আগে বল ওই ফক্কু কি কইছে ।
- ট্যাকা দাও তারপরে কই । হাত পাতলো কমলা ।
- এখন নাই বাড়ি গিয়া দিমু, বল কি কইছে ফক্কু ।
- হুহ কি যে দেবা জানা আছে, হাত ঝারা দিয়ে নামিয়ে নিয়ে বললো, কইছে আজ থিকা হে চেয়ারম্যান তোমারে মিলিটিরিরা ফুটুস করে দিছে । সে নাকি নিজের চোখে দেখছে । কিন্তু তুমি তো দেখি বাইচা আছো । দেখি তো কাছে আসো তো তোমারে একটা চুম্মা দিয়া দেখি তুমি ভুত না মানুষ, মানুষ হইলে পঞ্চাশ টাকা দিবা ভুত হইলে মাফ দিতে হবে না । হি হি করে হাসতে লাগলো কমলা ।
- মাদারচোদ ফক্কু । কমলা রাইতে বারি আসিস, তোর লগে কতার কাম আছে ।
- তোমার বোউরা আমারে পিডাইবো, আমার ঘরে আইয়ো, লগে আলতা সাবান আর ফিতা আইনো, সাইজা গুইজা থাকুম নে হাসতে লাগলো কমলা
- না না রাইতে বাড়ি আসিস কাজ আছে তর লগে, ট্যাকা পাবি অনেক ট্যাকা । দুই হাত দুই পাশে ছড়িয়ে দেখালো কদু চেয়ারম্যান ।
কিছুক্ষন অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো কমলা, তার দশ বছরের জীবনে যে লোক তাকে একদিনের জন্য নাম ধরে ডাকে নাই সে আজ তাকে তার বাড়ি যেতে বলছে, আচ্ছা যামুনে, কিন্তু তোমার বৌয়েরা কিছু কইলে কিন্তু ফেরত চলে যামু তখন পা ধরলেও হবে না আর তোমার যা অবস্থা দেইখা তো মনে হয় তোমারে কুত্তা পিডান পিডাইছে ।
- আচ্ছা আসিস কেউ কিছু বলবে না। কদু চেয়ারম্যান হাটা ধরলেন বাড়ির পথ, মনেমনে ফক্কু মেম্বরের জাত গুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলো ।
বাড়ির কাছাকাছি আসতেই হাউমাউ কান্নার শব্দ শুনতে পেলো । তার তিন বউ উঠানের উপর বসে হাত পা ছড়িয়ে কান্না কাটি করছে, দূরে তার বোন কুলফুন নেছা উঠানের কোনায় বসে আছে । তাকে দেখে সবাই ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো । কুলফুন নেছা ছুটে এসে কদু চেয়ারম্যান কে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলো । বোন কে পাশে সরিয়ে নিজে বাড়ির দরজার সামনে চেয়ারের মতো বানানো সিমেন্টের চেয়ারে বসে পরলো । বউদের হাতের ইশারায় ভেতরে যেতে বলে মাথা নিচু করে বসে থাকলো। কুলফুন নেছা কে কি করে বলবেন তার ছেলের কি অবস্থা হয়েছে । কিছুক্ষন মাথা নিচু করে থেকে মন শক্ত করে বোনের দিকে তাকালেন ।
-ভাই ফক্কু যে কইলো , কুলফুন নেছা উদবিগ্ন হয়ে জানতে চাইলো , হাত দিয়ে তাকে থামিয়ে দিয়ে কিছুক্ষন কুলফুন নেছার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো । এখন এই মুহুর্তে কাদা যাবে না ।
- তোমার পোলায় কই , রাগী জেদি গলায় জিজ্ঞাসা করলো কদু চেয়ারম্যান ।
- ও ওর চাচার লগে দেখা করতে গেছে পরশু , কাচুমাচু হয়ে বললো কুলফুন নেছা ।
- মিছা কথা কও ক্যান মৃদু ধমক দিলো কদু চেয়ারম্যান । ঠিক কইরা কও হে কই গেছে ।
- ভাই হে তো হের চাচার লগেই দেখা করেতে গেছে ।
- তোমার পোলায় মুক্তি হইছে, তারে মিলিটারিরা আধ মরা কইরা ফালায় রাখছে । চোখ বন্ধ করে এক নিশ্বাসে বললো কদু চেয়ারম্যান ।
ধুপ করে একটা শব্দ হলো, তাকিয়ে দেখে কুলফুননেছা বেহুস হয়ে পরে আছে মাটীতে । তারাতারি উঠে গিয়ে তাকে কোলে তুলে নিয়ে আশে পাশে তাকালানে সাহায্যের আশায় । তিন বউয়ের একজনার ও দেখা নাই । রাগে জেদে চিৎকার করে তিন বউয়ের নাম ধরো ডাকতে লাগলো ।
মধ্যরাতে জানালায় ঠকঠক আওয়াজে ধড়মড় করে জেগে উঠলো কদু চেয়ারম্যান। কে যেনো মেয়েলী নিচু গলায় তার নাম ধরে ডাকছে, কাপর টানার ফস ফস আওয়াজ আর গয়নার টুং টাং শব্দে কান খাড়া করে বোঝার চেষ্টা করে । আবার নিচু গলার ডাক শুনতে পায় পরক্ষনেই মনে পরে যে কমলা কে আসতে বলেছিলো । আস্তে পা টিপে, খাট থেকে নেমে, পেছনের দরজা খুলে কমলা কে ভেতরের ঘড়ে ডেকে নেয় কদু চেয়ারম্যান । উগ্র আতরের গন্ধে পুরা ঘর ভরে যায় । অন্ধকারে গা ভর্তি গয়না ঝকঝক করেতে থাকে কমলার। কদু চেয়ারম্যানের চোখে ধাধা লেগে যায় অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, এ সে কাকে দেখছে ।
- কি গো নাগর, খালি খারাই থাকবা না কি কিছু করবা, ঢং করে বলে কমলা
- আস্তে কথা কো, ছিনাল বেডি, তোরে আমি কু কামের জন্য ডাকি নাই , খেকিয়ে ওঠে কদু চেয়ারম্যান ।
- তাইলে আমার কাছে কি কাম, অবাক হয় কমলা ।
- আছে,আগে বৈঠক খানায় গিয়া বয়, ফিসফিসিয়ে বললো কদু চেয়ারম্যান । হঠাত পেছন থেকে তিক্ষ কন্ঠে কে যেনো চিৎকার করে উঠলো, কোথা থেকে আর একজন এসে কমলার চুল ধরে ঝুলে পরলো।অন্ধকারে চোখ বড়বড় করে ভালো ভাবে তাকিয়ে দেখে তার দ্বিতীয় পক্ষের বউ মাথায় চাপড়িয়ে চিৎকার করছে আর তৃতীয় পক্ষের বউ কমলাকে মাটিতে ফেলে কিল ঘুসি মারছে । কদু চেয়ারম্যান কোন রকমে কমলা কে ছাড়িয়ে বৈঠক খানার দরজা আটকিয়ে দিলো ।
- এই ছিলো আপনার মনে আপনি ঘরে নটি তুলছেন, দ্বিতীয় পক্ষের বউ হাউ মাউ করে কাদতে লাগলো
- চুপ বেডি একদম চুপ, চিল্লাবি তো গলা কাইটা ফেলবো , খেপে গেলো কদু চেয়ারম্যান ।
- আমনে চুপ , আমি এহনি বাপের বাড়ি যামু ফস ফস করে নাক টানতে টানতে বললো দ্বিতীয় পক্ষ
কদু চেয়ারম্যান বৈঠক খানার দিকে আগাতেই পেছন থেকে কেউ একজন পিঠে চড়ে বসলো, তার দাড়ি ধরে আর একজন ঝুলে পরলো, দুই রমনীর শাড়ির প্যাচে পরে কদু চেয়ারম্যান ধপাস করে চিত হয়ে পরলো, একজন ছুটলো বটি আনতে আজ বটি দিয়ে কাইটা দেবে সব সখ আহ্লাদ । কোনরকমে বুকের উপর থেকে একজন কে লাথি দিয়ে সরিয়ে দিতেই আর একজন কানের উপর ভয়ানক কামড় দিয়ে ধরলো। ব্যাথায় কদু চেয়ারম্যানের ব্রম্মতালু জ্বলে গেলো । একজনার চুলের মুঠি ধরে দিলো এক আছাড় , আর একজন কে কষে একটা চড় মেরে মাটিতে ফেলে দিলো, হাপাতে হাপাতে উঠে দাঁড়িয়ে দেখে তার পরনের লুঙ্গি নাই । কুপির আলোয় দূরে খুটির সাথে পতাকার মতো ঝুলে থাকতে দেখলো । বৈঠক খানার দরজার ফাকা দিয়ে কদু চেয়ারম্যানের আধা উলঙ্গ শরীর দেখে কমলা হি হি করে হাসতে লাগলো। কদু চেয়ারম্যান এদের কারো কথায় কান না দিয়ে একটানে লুঙ্গি টা পড়ে দ্রুতো বৈটকখানায় ঢুকে তালা দিয়ে দিলেন । তার এখন কমলার সাথে অনেক কাজ আছে এই সব ঝামেলা না শুনলেও হবে ।
সরিষাবাড়ি স্কুলের বারান্দার এক কোনে এক ডজন মুরগী, একটা ছাগল আর কমলা কে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কদু চেয়ারম্যান । চারিদিকে সবাই খুব ব্যাস্ত তারপরও কেমন সুনসান নীরবতা, কেউ কারো সাথে কথা বলছে না, পাশ থেকে এক উর্দি পরা লোক হনহন করে হেটে চলে গেলো কদু চেয়ারম্যান চাইলো তার সাথে কথা বলতে কিন্তু কোন রকম আগ্রহ না দেখিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো, একঘন্টা হয়ে গেছে ভিতরে খবর পাঠাইছে এখন পর্যন্ত কোন সারা শব্দ নাই । এতো গুলা মুরগী হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে বেশ কষ্ট হচ্ছে, মুরগী গুলা যে একপাশে রাখবেন তেমন ভরষা পাচ্ছেন না । সব গুলা বদের হাড্ডি , এক একটাকে ধরতে কালঘাম ছুটে গেছে তার উপর সাথে আছে কমলা যে সারাক্ষন ফিকফিক করে হাসছে । নডির নডি এতো হাসছ ক্যান এইখানে রঙ্গো করতে আইছোস , খ্যাচখ্যাচ করে উঠলো কদু চেয়ারম্যান ।
- অচল আমার রয় না বুকে তুইলো দেও গো বান্ধব আমার, গুনগুনিয়ে গান ধরলো কমলা । আশে পাশে বিশাল বিশাল মিলিটিরি কিন্তু তার একদম ভয় লাগছে না বরং হাসি পাচ্ছে খুব বেশি । সব থেকে বেশি হাসি পাচ্ছে কদু চেয়ারম্যানের অবস্থা দেখে । পরনের পাঞ্জাবী ভিজা টুপাটুপা, দুই হাতে বারোটা মুরগী নিয়া শুকনা মুখে দাঁড়িয়ে আছে । গতো রাতে লুঙ্গী ছাড়া কদু চেয়ারম্যানের দৃশ্য কল্পনা করে আবার ফিক করে হেসে দিলো ।
- হাসবি না নডি, আর একবার হাসবি তো লাত্থি দিয়ে নদীতে ফালাই দিমু, রাগে গজগজিয়ে উঠলো কদু চেয়ারম্যান ।
ভেতর থেকে এক লোক এসে বলো কদু মিয়া স্যার তোমারে ভিতরে যাইতে কইছে, তুমি এই সব আমার কাছে রেখে যাও, লোকটার চোখ কমলার দিকে চকচক করে ঘুরছে । কদু চেয়ারম্যান চোখের ইশারায় কমলা কে অনুসরণ করতে বলে ভেতরে ঢুকে গেলো। সেই গতো কালের মতো আঅন্ধকার, দূরে এক কোনায় লাল একটা বিন্দু উপরে উঠছে আবার নামছে।এইবার কদু চেয়ারম্যান কে দেখে ওপাশ থেকে সারা এলো, কি ব্যাপার কাডু মিয়া, গুম ফিরকে ইহা কেয়া কাম।
- জ্বি স্যার, আপনার খেদমতে আয়েংগা স্যার, বিটকেল একটা হাসি দিয়ে দিলো কদু চেয়ারম্যান।
- হামারা খিদমাত, তুম ক্যায়ছে কারো গে, অবাক হলো আলী আজগর।
- জ্বি স্যার কুচ মুরকা আনেগা আর ছেরি আনেগা আপ কি লইগা। হাতের মুরগী আর কমলা কে দেখিয়ে বললো কদু চেয়ারম্যান। আলি আজগর চোখ কুচকে কদু চেয়ারম্যানের পেছনে লুকানো কমলা কে দেখার চেস্টা করলেন আধো আলো আধো অন্ধকারে কমলাকে তার পাকিস্তানে ফেলে আসা বিবির কথা মনে করিয়ে দিলো।
- তুম মুঝে রিশওয়াত দেনা চাতেহ তুমাহারা ভাই কা লাড়াকা কে লিয়ে, কমলা কে দেখতে দেখতে জিজ্ঞাসা করলো আলী আজগর
- ছি ছি কি কন, ও ছ্যাড়া কো আমি চিনেংগা নাহি, জিভ কেটে বললো কদু চেয়ারম্যান, আমি তো আপনার জন্য আনছেংগা, বহুত আচ্ছা মাল বলে কমলা কে ঠেলে দিলো সামনের দিকে। কমলা হুমড়ি খেয়ে পরে গেলো মাটিতে। আলী আজগর ছুটে এসে কমলা কে তুলে নিলো, আরে কাডু তুম বাহুত বুরা আদমী, ফুল কো গালে লাগনা চাহিয়ে মিট্টমে বিছাড়নে কি লিয়ে নেহি।
- জ্বে জ্বে ঠিক কোয়েংগা , তঠস্থ হয়ে বললো কদু চেয়ারম্যান । হাতের মুরগী ঘরের এক কোনে রেখে ইশারায় কমালে আলী আজগরের কাছাকাছি থেকতে বলে বেড়িয়ে যেতে নিলেই পেছন থেকে লেঃ কর্নেল আলী আজগর গমগম করে ডাক দিলো ।
- কাডু কাহা যাতেহো
-জ্বে বাইরে যাতা হি , কাচুমাচু হয়ে বললো
- ইয়ে মাহতেরামা কো ছোড়কার কিউ যাতা হো ? ধমকের সাথে জিজ্ঞাসা করলো আলী আজগর
- আপনার সেবা কারেঙ্গা এই জন্য চোখ নামিয়ে বললো কদু চেয়ারম্যান
- আচ্ছা বাহুত খুব, তুম ক্যায়া চাতেহ, ভুরু কুচকে জিজ্ঞাসা করলো আলী আজগর
- জ্বে না কিছু চায়েঙ্গা নাহি, আপনের সেবা, পাকিস্থানের সেবা এই চায়েঙ্গা ।
- ব্যাস, ওর কচু নেহি, ঈষৎ হাসি দিয়ে কমলা কে বুকের মধ্যে চেপে ধরে জিজ্ঞাসা করলো । চাহো তো তুম তোমাহারা ভাই কা লাড়কা কো ছোড়াকে লে ছাকতা হো । ভয়ানক ক্রুড় হাসি দিলো লেঃ কর্নেল আলী আজগর ।
কদু চেয়ারম্যান আলী আজগরের হাসি দেখে চমকে গেলো, সে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলো, তিব্র ভয় তাকে গ্রাস করে রেখেছে, সে জানে পান থকে চুন খসলেই তার জীবন চলে যাবে সেই সাথে কমলা ও অন্যান্যদের ও যাবে । কিছুক্ষন উসখুস করে গলা খাকরি দিয়ে বললো, মেজর সাব আমার একটা কতা আছে ।
- ক্যায়া, কমলা কে দুই হাতের মধ্যে নিয়ে বাচ্চা ছেলের মতো খেলতে খেলতে জিজ্ঞাসা করলো আলী আজগর ।
- জ্বে স্যার আমি নিজে হাতে মুক্তি গো মারতে চাই, আমার খুব খায়েস মুক্তি দেখার , মাথা নিচু করে আড় চোখে চেয়ে বললো কদু চেয়ারম্যান ।
- আচ্ছা দেখা যায়েগা, আভি তুম নিকালো, হাম আভি ইয়ে গুলাব কা কালি কে সাথে খেলনা চাহতাহু , ভাগ ইহাসে ধমকের সাথে বেড়িয়ে যেতে বললো লেঃ কর্নেল আলী আজগর । পেছন ফিরে বেড়িয়ে যেতে যেতে আড় চোখে চেয়ে কমলার ভয়ে শুকিয়ে যাওয়া মুখটা দেখে বুকের ভেতর টা ছ্যাত করে উঠলো কদু চেয়ারম্যানের । এই প্রথম তার কমলার জন্য মায়া কষ্ট দুইটাই হচ্ছে । তার একবার মনে হচ্ছে সে কমলা কে নিয়ে বের হয়ে চলে যাক কিন্তু এখন আর পেছানোর রাস্তা নাই , ইশারায় কমলা কে আসস্ত্ব করলো যে আশে পাশেই আছে । কমলা নীরবে কদু চেয়ারম্যানের চলে যাওয়া দেখলো সে জানে এখন তার কি করতে হবে, সে প্রস্তুতী নিতে লাগলো ।
কদু চেয়ারম্যান কর্নেলের রুম থেকে বেরিয়ে এসে তার মনে হলো জাহান্নাম থেকে বেরিয়ে এলো । তার সারা শরীর ঘেমে নেয়ে একাকার, আশে পাশে বেশ কিছু মিলিটিরি ঝিমাচ্ছে । তাদের ধিরে ধিরে পাশ কাটিয়ে হেডমাস্টারের রুমের দিকে চলে গেলো, আশেপাশে কেউ আছে কিনা তা দেখে আসতে করে উকি দিলো, হেডমাস্টারের রুম একদম ফাকা, কেউ নাই , বুকের ভেতর টা ছ্যাত করে উঠলো, তবে কি মেরে ফেললো সবাই কে , কদু চেয়ারম্যান চোখে ঝাপসা দেখতে লাগলো, তার চোখ বেয়ে পানি ঝরতে লাগলো, বুকের ভেতরটা খাঁ খাঁ করে উঠলো । হেডমাস্টারের দরজার কাছেই ফক্কু মেম্বারের সাথে দেখা । পান খাওয়া লাল দাত দেখিয়ে মুখের ভেতর অদ্ভুত ভংগী করে খিক খিক করে হেসে দিলো ।
- চেয়ারম্যান সাব কি ভাইস্তারে খুজতে আইছে। থ্যাপ করে একদল কফ মিশ্রিত পানের পিক ফেলে জিজ্ঞাসা করলো ।
- না , না , দিশাহারা হয়ে গেলো কদু চেয়ারম্যান !!! কালকে এই খানে মনে কয় আমার ট্যাকার ব্যাগটা ফেলে গেছিলাম ওইটা খুজতে আইছি ।
- ও ট্যাকা হারাইছো, ক্যা মাইরের ঠ্যালায় ল্যংটা হইয়া গেছিলা নাকি হি হি হি , খিক খিক করে হেসে উঠলো ফক্কু মেম্বার । কদু চেয়ারম্যান কিছুক্ষন ফক্কু মেম্বারের দিকে তাকিয়ে থেকে ভাড়ি নিশ্বাস ফেলে বললো, নারে ভাই সত্য সত্যই টাকার ব্যাগটা কাল এইখানেই ফেলে গেছি মনে কয় ।
-বাদ দাও কদু ভাই , যা গেছে তা আর পাইবা না, লও তোমারে তোমার ভাইপোরে দেখাই আনি, জিব্বায় চুন লাগানো আঙ্গুল ঘসতে ঘসতে বললো ।
কদু চেয়ারম্যান বিনা প্রতিবাদে ফক্কু চেয়ারম্যানের পিছু নিলো, স্কুলের দ্বিতীয় তলার বাড়ানায় ফেলে রাখা হয়েছে চারটা ছেলেকে , দেখা বোঝার উপায় নাই বেঁচে আছে না মরে গেছে । থমাকানো পায়ে ধীরে ধীরে হেটে ছেলেগুলার কাছে গিয়ে রফিক কে খোজার চেষ্টা করলো । কারো পরনে কোন কাপড় নাই সেই সাথে কারো চেহাড়াই ঠিক নাই, মারের চোটে চেহাড়ায় কালসিটে দাগ পড়ে গেছে। ভালোকরে তাকিয়ে একজন কে রফিকের মতো মনে হলো ।
- নারে ভাই এর মধ্যে আমাগো রফিক্কা নাই, হে তো গেছে হের চাচার লগে দেখা করতে, ঘাড় ফিরিয়ে ফক্কু মেম্বার কে বললো কিন্তু চোখ থেকে অঝড়ে পানি ঝড়ছে ।
- হে হে নাই তো ভালো কতা কান্দো কার লইগা কদু মিয়া, খ্যা খ্যা করে উঠলো ফক্কু ।
-কান্দী না রে ভাই, চোখটে মনেকয় গ্যাছে সারাদিন পানি পড়ে, আন্দা টান্দা হয়ে যামু , চোখ মুছতে মুছতে বললো কদু চেয়ারম্যান।
নিচথেকে কে যেন কদু চেয়াত্ম্যানের নাম ধরে ডাকছে, চমকে উঠে কদু চেয়ারম্যান নিচে দিকে তাকিয়ে দেখে এক পাঞ্জাবী সৈনিক তাকে তার নাম ধরে ডাকছে। ফক্কু ভাই আমি গেলাম, ডাক পরছে, দোয়া কইরো বলে ছুট লাগালো, পেছন ফিরে তাকালে দেখতে পেতো ধুর্ত শেইয়ালের মতো জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে আছে ফক্কু মেম্বার।
কদু চেয়ারম্যান কে নিচে নামতে দেখে ধমক দিলো পাঞ্জাবী সৈনিক, কাহা থা তুম, তোমকো কর্নেল সাব বুলারাহা হে ।
জ্বে জ্বে যাইতাছি, বলে ছুট লাগালো, কর্নেল আলী আজগরের তাবুর দিকে । তাবুর ভেতরে নিকটিনের গন্ধ যেনো স্থায়ী বাসা বেধেছে। দম বন্ধ হবার জোগাড় কদু চেয়ারম্যানের । দূরে এক কোনায় ত্যানার মতো কিছু একটা পড়ে আছে কোন নড়ন চড়ন নাই আর তার পাশে কর্নেল আলী আজগর আরাম করে বসে চুরুট ফুকছেন । অর্ধ উলঙ্গ আলী আজগর কে দেখতে সার্কাসের জোকারের মতো লাগছে ।
কাডু তুম মুঝে বাহুত খুশ কার দিয়া, কদু চেয়ারম্যান কে দেখে বলল, মাঙ্গো যো মাংতা হায় !!
-জ্বে ইতস্তত করতে লাগলো কদু চেয়ারম্যান, উঠে এসে কদু চেয়ারম্যানের পাশে এসে দাড়ালো কর্নেল আলী আজগর, আরে মেরে ভাই বলো ক্যা চাতেহো ।
- জ্বে জনাব এক দো মুক্তি কতল করতে খুব ইচ্ছা হায় ।
-ক্যায়া তুম মুক্তি কাতাল করনা চাতেহ, অর কুচ নেহি ? চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলো আলী আজগর ।
- জ্বে না খালি কতল হ্যা মুক্তি হ্যায় ।
-ঠিক হায় আভি তুম যা ছাকতে হায়, শাম কা ওয়াক্ত চলে আও ।
কদু চেয়ারম্যান কমলা কে নেয়ার জন্য কমলার দিকে এগিয়ে যেতেই পেছন থেকে কর্নেল আলী আজগর বলে উঠলো উসকো ছোড় যাও, উছকি সাত বহুত কাম হায় মুঝে। কমলা করুন চোখে কেবল তাকিয়ে থাকলো কদু চেয়ারম্যানের দিকে, কদু চেয়ারম্যান জ্বে আচ্ছা, বলে পিছন ফিরে চলে এলো। ভয়ে তার হাত পা ঠক ঠকিয়ে কাঁপছে সেই সাথে কমলার জন্য কষ্ট হচ্ছে। কথা ছিলো কমলা কে সে সাথে নিয়ে ফিরবে, কমলা আমারে তুই মাফ করে দিস, মনে মনে কমলার কাছে সে মাফ চেয়ে নিলো। তাকে দ্রুত সরিষাবাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে যোগাযোগ করতে হবে, ফক্কু মেম্বার যে পেছনে কুত্তার মতো লেগে আছে এটা কদু চেয়ারম্যান ভালো করেই জানে ।যেভাবে হোক তাকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগাযোগ করে সন্ধ্যার আগে আর্মী ক্যাম্পে ফেরত আসতে হবে । সে বাড়ির দিকে হাটা দিলো, যাতে ফক্কু বোঝে যে সে বাড়ি যাচ্ছে, লম্বা রাস্তা দ্রুত পায়া হেটে যাচ্ছে, কিছুদুর গিয়ে একটা মোড় ঘুড়েই খালের পাড়ের ঝোপের মধ্যে ঢুকে বসে রইলো, বেশকিছুক্ষন পর বেশ জোড়ে জোড়ে কারো হেটে আসার শব্দ শোনা গেলো ঠিক তার ঝোপের সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেলো ফক্কু মেম্বার, আসতে ধীরে পেছন থেকে ঝোপ থেকে বেড়িয়ে এসে গামছা দিয়ে ফুক্কুর গলায় প্যাচ কসে হেঁচকা টানে মাটিতে ফেলে দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আবার ঝোপের মধ্যে টেনে নিয়ে গেলো , বেমাক্কা গলায় প্যাচ খেয়ে ফক্কু ছোটফট করে গলার ফাঁস খোলার অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু কদু চেয়ারম্যান গায়ের সব শক্তি দিয়ে চেপে ধরলো আর মনে মনে বললো এইটা কমলার জন্য । ফক্কু শান্ত হলে ছেড়ে দিলো। ফক্কুর লাশটা ঝোপের মধ্যে রেখে বেড়িয়ে এলো, মনটা অনেক হালকা লাগছে, অনেক দিনের কিচুহিসাব নিকাশ ছিলো সেটাও মিটে গেলো। কদু চেয়ারম্যান এইবার ঠিক উলটা পথে ধরে হেটে চলে এলো মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে। মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার কে নিজের পরিচয় দিয়ে সব ঘটনা বিস্তারিত বলে নিজের প্ল্যান জানিয়ে দিলো। ফিরতি পথে আল্লাহ আল্লাহ করতে লাগলো কোন ভাবেই যেনো ফক্কুর লাশ মিলিটারিরা খুজে না পায়, ক্যাম্পে ফেরার পথে সেই ঝোপের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একবার উঁকি দিয়ে দেখে নিলো যে ফক্কুর লাশ পড়ে আছে ঠিক মতোই ।
আর্মী ক্যাম্পের সবাই ব্যস্ত । সন্ধ্যার ছায়া নামতেই বিভিন্ন জায়গার বাতি জ্বলে উঠলো ।গুটি গুটি পায়ে কদু চেয়ারম্যান ক্যাম্পে ঢুকে একপাশে বসে রইলো । কিছুক্ষন পর দেখাগেলো লেঃ কর্নেল আলী আজগর তার তাবু থেকে বের হলেন, ইউনিফর্ম বিভিন্ন জায়গায় কুঁচকে আছে তা ঠিক করতে করতে আশে পাশে দেখে নিলেন পরিস্থিতি । দূরে এক কোনায় কদু চেয়ারম্যান কে বসে থাকতে দেখে খানিক অবাক হলেন , আশে পাশে তাকিয়ে কাউ কে না পেয়ে নিজেই এগিয়ে গেলেন ।
- তুম আভিতাক ইহাপার হ্যায়, কৌতুকছলে জিজ্ঞাসা করলো ।
- জ্বে আপনি আইতে কয়লেঙ্গা তাই আইলেঙ্গা , হাত কচলে বললো কদু চেয়ারম্যান ।
- তুম মুক্তি মারনা কিউ চাতেহো, প্রশ্ন করলো আলী আজগর
- ইসলামের দুশমন তাই, হাসি দিলো কদু চেয়ারম্যান ।
- তুমকো পাতা হ্যায় তোমারা ভাই কা লাড়কা ভি সামিল হ্যায়
- না না ও আমার ভাইয়ের পোলা না, আমি চিনি না তাড়াতাড়ি উত্তর দিলো ।
আচ্ছা ঠিক হ্যায় তুম দেখনা চাতেহো দেখো গে, আভি তুম ঘাড় যাও । লেঃ কর্নেল আলী আজগর গটগটিয়ে হেটে তাবুতে ফিরে গেলেন তার মনে ভেতর কু ডাক ডাকছে, এই লোককে তার মোটেও সাহজ সরল লাগছে না । আজ রাতেই এই সব গাদ্দার গুলা কে মেরে ফেলতে হবে নতুবা দেরি হয়ে যাবে। তাবুর ভেতরে কমলা কে উলঙ্গ অবস্থায় দেখে নাক কুচকালো, এই আবর্জনা ফেলে দিতে হবে । চিৎকার করে সিপাহি কে ডেকে বললো এই লারকি কো কুয়া মে ঢাকেল দো অর জালা দো । মুঝে আর নেহি চাহিয়ে । সিপাহি টেনে হিচড়ে কমলা কে তাবু থেকে বাহির করে নিয়ে গেলো । দূর থেকে কমলাকে টেনে হিঁচড়ে বাহির করার দৃশ্য দেখে কদু চেয়ারম্যান ভয়ে কেঁপে উঠলো। সে অপেক্ষায় আছে কখন ছেলে গুলাকে মারার জন্য নিয়ে আসে। চোখে হালকা ঘুমের মতো এলেই শুনতে পেলো অনেক গুলা পায়ের হুটাপুটির আওয়াজ। চোখ কচলে দেখলো দেখলো রফিক আর অন্যদের টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে খালের দিকে । সেও গুটি পায়ে তাদের পিছু নিলো । কিছুদুর যাবার পরে অন্ধকার মতো একটা জায়গায় থেমে সিপাহিরা নিজেদের ভেতর ফিসফিসিয়ে কথা বলতে লাগলো আর ফুক ফুক করে সিগারেট টানতে লাগলো এই ফাকে চুপিচুপি কদু চেয়ারম্যান রফিকের খুব কাছে বিড়ালের মতো পৌছে গেলো । রফিক মামা কে দেখে ভুত দেখার মতো চমকে গেলো, ইশারায় রফিক কে কিছু বলতে নিষেধ করে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প থেকে আসার সময় ধাড়ালো কাচিটা এনেছিলো তা রফিকের হাতে ধরিয়ে দিয়ে নিজের গামছায় প্যাচ কশে বসে রইলো, দুই জন মাত্র সিপাহি সিগারেট খেয়ে এসে আবার রফিকদের ঠেলে সামনে নিয়ে যাচ্ছে ওমনি পেছন থেকে কদু চেয়ারম্যান একজন সিপাহির গলায় পেছন থেকে গামছার প্যাচ দিয়ে মাটিতে টেনে ফেলে দিয়ে প্যাচ শক্ত করে ধরলো ওদিকে রফিক কাঁচি দিয়ে অন্য সিপাহির গলায় পোঁচ বসিয়ে দিলো এতো কিছুর মধ্যে একজনার বন্দুক থেকে গুলি বের হয়ে গেলো সাথে সাথে খালের ওপার থেকে মুক্তিবাহিনীর ঝাকে ঝাকে গুলি ক্যাম্পের দিকে ছুটে গেলো । কদু কোন মতে গামছায় প্যাচ শক্ত করে সিপাহির জিহবা বের না হওয়া পর্যন্ত চেপে ধরে থাকলো। যখন বুঝলো সিপাহি মরে গেছে সে হাচড়ে পাঁচরে উঠে রফিককে আর অন্যদের টানতে টানতে খালের পারের আড়ালে নিয়ে গেলো, তার বুকে সাহস ফিরে এসেছে। সারা রাত ঠুস ঠাস গুলি ফুটে ভোর বেলায় উঁকি দিয়ে দেখলো মুক্তিযোদ্ধারা আর্মী ক্যাম্পে আগুন দিচ্ছে । অন্যদের মুক্তিবাহিনীর হাতে বুঝিয়ে দিয়ে রফিকে কে কাধে তুলে নিয়ে বাড়ির পথে ছুট লাগালো , বোনের হাতে ভাগ্নেকে তুলে দিতে পারলেই তার শান্তি ।
২৬ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৬
রানার ব্লগ বলেছেন: আচ্ছা!!!
২| ২৬ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১০
সোনাগাজী বলেছেন:
অনেকটা ফ্যান্টাসী ধরণের।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার বয়স কত ছিলো?
২৬ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৬
রানার ব্লগ বলেছেন: আমার বয়স ?? হা হা হা , আশির শতকে আমার জন্ম !!! আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখি নাই । ৭১ এ আমার বাবার বয়স ছিলো ২১ বছর !!!
৩| ২৬ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৮:৫২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমি মুক্তি যুদ্ধ দেখেছি!
গল্পে বাস্তবতার মিল খুব
একটা খুঁজে পাইনি। শোনা
গল্পের সাথে বাস্তবতার মিল
খুব একটা থাকেনা। পাক
হানাদার বাহিনী ছিলো
আরো নির্মম, নৃশংস!
২৬ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৯:৪৮
রানার ব্লগ বলেছেন: এটা গল্প বাস্তবের মুক্তিযুদ্ধের থেকে অনেক দূরে।
৪| ২৬ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১০:১২
ঊণকৌটী বলেছেন: 1971 এর যুদ্ধ আমার ছোট বেলার স্মৃতি আমি বাংলাদেশের ভিতরের যুদ্ধ দেখেনি, দেখেছি ভারত বাংলাদেশের বর্ডার এর dumbur নামের ছোট্ট ভারতীয় একটি জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অংশের সেনা বাহিনীর তৎপরতা সে 1970 এর মাঝামাঝি থেকেই রাত্রির বেলা কামানের গুম গুম আওয়াজ ঘুম ভেঙে যেত সাইরেনের ভৌও বাজলে dumbur এর পুরো এলাকা জুড়ে trench এ নেমে যাওয়ার অর্ডার ছিল দিনের বেলা আর্মি ক্যাম্প এর সামনে গেলে ওরা চকলেট দিত আদর করে, ওইখানে পানীয় জলের খুবই সমস্যা ছিল আমরা ছেলেরা দেখতাম একদল লোকের কোমরে দরি বেদে কাঁধে গ্যালান দিয়ে নিচের জলপ্রপ্রাত থেকে উপরে তুলছে, শুনেছিলাম ওদের নাম রাজাকার কিন্তু মানেটা বুঝতাম না তখন, আপনার এই পোস্ট পড়ে মনে পরে গেলো ছোট বেলার স্মৃতির কিছু ঝলক
২৬ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১১:৩৬
রানার ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য!!
৫| ২৬ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১০:২৯
জুল ভার্ন বলেছেন: বেশি লিম্বা লেখা তাই সব পড়া হলোনা.... প্রথম, মাঝখানে এবং শেষটুকু পড়লাম।
২৬ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১১:৩৬
রানার ব্লগ বলেছেন: হ্যা লম্বা হয়েছে খন্ডে দেয়া উচিত ছিলো।
৬| ২৬ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১০:৪১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
কয়েকটা ভাগে দিলে ভালো হতো না!!
২৬ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১১:৩৬
রানার ব্লগ বলেছেন: কয়েকটা ভাগে দেয়া উচিৎ ছিলো।
৭| ২৬ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১১:৫৯
বিষাদ সময় বলেছেন: উদ্ধার অভিমানটা একটু থ্রিলার ছবির মত হয়ে গেছে। তবে আপনার বর্ণনা শৈলী চমৎকার।
২৭ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৭:১৫
রানার ব্লগ বলেছেন: হা হা হা!। হ্যা কিছুটা থ্রিলার ছবির মতো। গল্প তো গল্পের মতই হবে তাই না!? ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
৮| ২৭ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:১৪
কোনেরোসা বলেছেন: ভাল গল্প
২৭ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:১৬
রানার ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৫
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: পোস্টে ক্লিক করে দেখলাম বেশ লম্বা , পরে সময় নিয়ে পড়তে হবে।