নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আশা নিয়ে বসে আছি ।

রানার ব্লগ

দূরে থাকুন তারা যারা ধর্মকে পুঁজি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দূরে থাকুন তারা যারা ১৯৭১ থেকে অদ্যাবদি বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এবং সকল পাকিস্তানী প্রেমী , রাজাকার ও তাদের ছানাপোনা ।

রানার ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটির দফারফা

২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৫



*আমি জানি দেশের এই সময় এই গল্প পোস্ট করাটা বেকুবির কাজ । তারপরেও করলাম মাথা ঠান্ডা করার উদ্দেশ্যে । আসুন মন মেজাজ খানিক হালকা করি । যদিও পরিস্থিতি এমন না যে মাথা ঠান্ডা হবে । তারপরেও চেষ্টা করতে দোষ নেই । আমাকে যদি প্রান ভড়ে উপহাস বা গালী দিতে ইচ্ছে হয় দিয়ে যাবেন। আমি আপনারি ভাই । ভাই কে যা ইচ্ছা বলা যায়। "


একটার পর একটা কল দিয়েই যাচ্ছি । ভদ্রমহিলা ফোন ধরছেন না । আমার অবস্থা মাথার ঘায়ে কুত্তা পাগল এর মতো । বাড়ির নিচে এক ট্রাক এটেল মাটি আর মাথার উপরে দুই দুইজন আজব কিসিমের মানুষ ড্রাইভার আর তার হেল্পার বসে নাচ্ছে । খালার ফোনে অন্তত এক’শ ফোন দিলাম সেও ফোন ধরছে না । ড্রাইভার সাহেব আমার ভাঙ্গা কাঠের এক কোনা দখল করে ধ্যানে বসে গেছে। সে এক আজিব চিড়িয়া । মাথার সামনে বিশাল টাক পেছনে পিঠ পর্যন্ত লম্বা চুল । পরনে লালা রঙের সেলাই ছাড়া কাপড়। কছুক্ষন পর পর ফোঁস ফোঁস করে উঠছেন । ওদিকে হেলাপার কোথা থেকে তিন পিস ইট এনে ছাদের মাঝখানে চুলে বসিয়ে ফেলেছে । কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম চুলা বসবার কারন কি? আইজ মাঘী পুর্নীমা, উস্তাদ খেচুড়ি খান সাথে ডিম ভাজা আর খাটি গাওয়া ঘি ,তাই এই আয়োজন । আমার মেজাজ চরমে উঠলো । একে উটকো এই দুই জনার যন্ত্রনা তার উপর এই রান্না বান্নার আয়োজন । হেল্পার বেলায়েতের দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে থাকলাম । ওই ভাবে তাকায়ে লাভ নাই ভাইজান, উস্তাদ আমার কামেল মানুষ, মেজাজা তার বেজায় গরম , যদি তারে খেচুড়ি রাইধে না দেই সে আপনারে খাই ফেলতে পারে । পুর্নিমায় উস্তাদের রাক্ষুসে ক্ষিদা লাগে ।

পেছনে ষাড়ের মতো ফোঁস আওয়াজ শুনে ঘুড়ে দাড়ালাম । লাল রঙের এক খন্ড কাপড় পরা উদম গায়ে ড্রাইভার আবুল মিয়া দাঁড়িয়ে যেন সাক্ষাত শয়তানের নানাতো ভাই । মিঠে জল হবে, নাইবো । ভাড়ি কিন্তু নরম গলায় জিজ্ঞাসা করলো । ঢোক গিলে বললাম জল আবার মিঠে কি করে হয়? আর নিজেই দুই তিন দিন পর গোসল করি আপনাকে কি করে জল দেব । উস্তাদ নাফরমানের কথায় রাগ করবেন না, মিঠে জল হবে আপনি ইন্তেজার করেন , পেছন থেকে বেলায়েত খুন খুনে গলায় বললো । পেছন ফিরে দেখি বেলায়েত সেজদার মতো পরে গিয়ে দুই হাতে মুখ ঢেকে পরে আছে । এ আবার কোন যন্ত্রনায় পরলাম । পালিয়ে যাওয়াই শ্রেয় মনে করে বিশাল এক লম্ফ দিয়ে দুই জনার মাঝখান থেকে বেড়িয়ে প্রায় দৌড় দিচ্ছিলাম ওমনি পেছন থেকে একটা শক্ত হাত শার্টের কলার ধরে হ্যাচকা টানে আমাকে শুদ্ধ উচু করে ফেললো । যাবেন না বাবা, এই গরীবের সাথে দুইট ডাল ভাত খেয়ে যাবেন । জ্বল জ্বলে চোখে আমার দিকে চেয়ে বললো আবুল ড্রাইভার , অবশ্য এখন আর তাকে ড্রাইভার বলা যায় না । সাক্ষাৎ ইবলিশ যেন দাঁড়িয়ে সামনে । ভয়ে কুঁকড়ে গেলাম । খালা আমাকে এ কি বিপদে ফেললো । চাইলাম মাটি দিলো আস্ত ইবলিশের ঘাটি ।

বেলায়েত আমাকে অনেকটা পাঁজাকোল করে ইবলিশের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিলো, গোস্তাফি মাফ করবেন উস্তাদ, বালক অপরিনামদর্শী ও উল্লুক কিসিমের তাহার প্রতি নারাজ হবেন না । আমি হা করে বেলায়েতের দিকে তাকিয়ে থাকলাম । এই লোক কি আসলেই হেল্পার না কি ইবলিশের চ্যালা শয়তান । যাও বালক গৃহে প্রবেশ করো , উস্তাদের সাথে খাদ্য গ্রহন করে নিজেকে পূন্য লাভে ধন্য করো । ছোট ছোট পা ফেলে দ্রুত ঘরে গিয়ে খাটে বসে পরলাম । খালা গো আমি কি অন্যায় করেছিলাম , শ্রেফ খালুর হাতের বাধন কেটে দিছিলাম তার জন্য এই শাস্তি ?

ভোর বেলায় মুক্তি পেলাম দুই পাগলের কান্ড কারখানা থেকে । কোন রকমে পালিয়ে বাঁচলাম । বাড়ির গেটের সামনে আস্ত পাহাড়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে এটেল মাটি বোঝাই এক ট্রাক, এটাকে আর ট্রাক মনে হচ্ছে । মনে হচ্ছে আস্ত মৃত্যু দূত । যেকোন সময় আমার উপর এটা উঠে পিশে মেরে ফেলবে ।
হাতের মধ্যে ছোট্ট মোবাইল টা কুন কুনিয়ে বেজে উঠলো । ওপাশে থেকে বেশ বিরক্ত গলায় ভদ্র মহিলা তেড়ে উঠলেন , এতো কল দেয়ার কি আছে ? আমি মানা করেছি আপনাকে আমাকে কল না দিতে । তার পরেও দিন নাই রাত ইচ্ছা মতো কল দিচ্ছেন ।
আরে বাবা, এই দেখি উলটা চোর কোতোয়াল কে শাসায় । আমিও তেরে উঠলাম। আমি আপনাকে জ্বালাতন করতে কল দেই নাই ।
তো কি এমন মহান দায়ীত্বের কাজ করেছেন যে আমাকে কল না দিলে আপনার পেটের ভাত হজম হচ্ছিলো না ।
এটেল মাটি, যা দিয়ে আপনার যে মহৎ কাজ হবে উহা পেয়ে গেছি ,এটাই জানাবার জন্যই কল দিয়েছি । আপনি ভাববেন না আমি আপনার প্রেমে পরে কান্না কাটি করছি ।
বেশ কিছুক্ষন নিরব থাকলো ওপাশ থেকে । একবার মনে হলো লাইন টা কেটেই গেছে । হ্যালো শুনতে পাচ্ছেন ?
হু, হালকা করে শব্দ ভেশে এলো ।
তো দয়া করে এই যন্ত্রনার এটেল মাটি নিয়ে আমাকে উদ্ধার করেন । আমি ইহজীবনে আপনার ফোনে কল তো দুরের কথা আপনার কথা স্বপ্নেও ভাববো না ।
আজ বিকেলে রবীন্দ্র স্বরনীতে এসে দিয়ে যাবেন ।
আমি তো আপনাকে চিনি না, জানবো কি করে আপনি কে ?
আমি জেনে নেব । আপনি মাটি নিয়ে আসুন । আর অহেতুক কল দিয়ে বিরক্ত করবেন না ।
কট করে লাইন টা কেটে গেলো , দু কথা শোনাবার বড্ড ইচ্ছে হচ্ছিলো । কিন্তু কিছু বলার সুজুগ দিলো না। দেখা যাক আজ তো আসবে আজ এলেই মুখমুখি দশ কথা শুনিয়ে দেয়া যাবে । অবশ্য হালকা ভালো লাগাও কাজ করছে । যার কন্ঠ এমন মায়ায় জড়ানো না জানি সে দেখতে কেমন । বন্ধুদের অভিজ্ঞতা সুকন্ঠিদের বেলায় মোটেও ভালো কিসিমের না । দেখা যাবে দাত উচু নিচের ঠোট বেশি ঝোলানো মোটা , মুখ ভর্তি দাঁতে ভরা কোন গঞ্জদন্তি কেউ । নাহ, খারাপ টা ভাবা যাবেন না। নিজেকে সংযত করলাম । এমনো হতে পারে অসম্ভব মিষ্টি এক জন । যাকে দেখলেই মনে হয়ে ঝরনার শীতল জলে ডুব দিয়ে আছি কিন্তু শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারছি । মনে হয় দক্ষীনের গা জূড়ানো ঠান্ডা হাওয়ায় দোল খাচ্ছি । মনে হয় গৌতম বুদ্ধের মতো ধ্যানে বিবশ হয়ে আশ মিটিয়ে মেঘের জলে ভিজচ্ছি ।

ভাইজান কি ঠিকানা খুজে পাইলেন? কানের কাছে ভুতের মতো কেউ বলে উঠলো আচমকা । পেছন ফিরে দেখি ইবলিশের চ্যালা শয়তান । হুম, পেয়েছি বিকেলে রবীন্দ্র স্বরনীতে এসে নিয়ে নেবে । যাক, উস্তাদের ধ্যান কামে লাগছে । উস্তাদ তো এতক্ষণ তার ফু চালান দিচ্ছিলো যাতে আপনার মুশকিল আসান হয়ে যায় । উস্তাদের ফু ভাইজান শ্যাস রাইতের মাইর। বিরক্ত হয়ে লোকটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম এবং নতুন আর একটা যন্ত্রনার আভাস পাইলাম এই দুই শয়াতান কে বিকাল পর্যন্ত সহ্য করতে হবে । লোকটাকে এড়াবার জন্য সামনের দিকে হাটা দিলাম । আজ আর বিকেলের আগে ফিরবো না , পেছন ফিরে বেলায়েত কে ডাক দিয়ে জানিয়ে দিলাম যে বিকেলে যেন ওরা রবীন্দ্র স্বরনীর আশে পাশে থাকে।

বেলা তিন টা বাজে । স্বরনী থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার পাশে একটূ আড়ালে ট্রাক টা দাড় করানো। বেলায়েত কে দেখা যাচ্ছে ট্রাকের পাশে দাঁড়িয়ে আছে । আমাকে দেখে দুই বার হাত নাড়লো । দেখেও না দেখার ভান করলাম । সাড়ে তিন বাজে । এমন কাউ কে দেখছি না যাকে ভাবা যায় মাটি ওয়ালী । বাদাম ওয়ালার কাছ থেকে এক ঠোঙ্গা বাদাম কিনে বসে পরলাম । সময় কাটে না । জোড়ায় জোড়ায় সব ঘুরে বেড়াচ্ছে । এমন জায়গায় নিজেকে বড্ড বেমানান লাগে । অবশ্য আমার দিকে কারো আলাদা করে নজর ও নাই । তারা তাদের নিয়ে ব্যাস্ত । হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি কখন যে পাঁচটা বেজে গেছে । নাহ মহিলা আমাকে ফাঁকি দিয়েছে । আসবে টাসবে না, শুধু শুধু আমাকে খাটালো । উঠে সামনে দিকে পা বাড়ালাম। এমন জায়গায় একা বসে থাকা টা নিদারুণ কষ্টকর । ব্যাপার টা নিজেকে নিজে অসম্মান করার মতো ।
আপনি কি এটেল মাটি এনেছেন ?
রিনিরিনি একটা কন্ঠ ঠিক কানের পেছনে যেন বেজে উঠলো । যেন অনন্তকাল ধরে এমনি একটা কন্ঠ শোনার জন্য আকন্ঠ পিপাসা ছিলো । সাই করে উলটা ঘুড়ে দাড়ালাম । চোখ মন মাথা তিন জন একই সাথে যেন বিস্ফোরিত হোল। এ আমি কাকে দেখছি । মানুষ সুন্দর হয় কিন্তু যাকে দেখছি সে কেবল সুন্দুরি না জীবনান্দের কোন এক রুপসী যেন বইয়ের পাতা থেকে টুক করে বেরিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে । চোখে পলক ফেলার সাহস পর্যন্ত হচ্ছে না। যদি হারিয়ে যায় । মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি । চোখ বড় বড় করে কেবল দেখছি আর দেখছি । দেখা যেন ফুরায় না ।
মাটি কি আপনি এনেছেন ? স্মিত হাশি দিয়ে আবার জিজ্ঞাসা করলো । মুখের উপর এক গুচ্ছ কালচে সোনালী চুল যেন ইচ্ছে করে পরলো , বুকের ভেতর হাজার হাতির ডুরুমডারুম পায়ের আওয়াজ বাজচ্ছে। কন্ঠ যেন কানের ভেতর নুপুরের মতো বেজে উঠলো । দম টা এতোক্ষন বন্ধ ছিলো । অমন রিনি রিনি নূপুরের আওয়াজে দম ছাড়ার যেন ফুরসত পেলাম । ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেললাম। জ্বী , আমি এনেছি ।
আপনি যে সেই লোক তার প্রমান দিন । ভুরু কুঁচকে মুখের উপর থেকে চুলের গুচ্ছ সরাতে সরাতে জিজ্ঞাসা করলো । জ্বী আমি আপনাকে গতো দুই দিন ধরে কল দিচ্ছি ।
কই ?মাটি কই?হাত বাড়িয়ে দিলো ।
আমি হাত উঁচিয়ে দেখিয়ে দিলাম , ওই তো, ওই দিকে রাস্তার উপরে ।
রাস্তার উপরে মাটি রেখে এসেছেন ?
হ্যা , ওই খানেই আছে ।
পেছন ফিরে ভালো করে দেখে হেসে বললো ওখানে তো একটা ট্রাক দাঁড়িয়ে ।
জ্বী, ওই ট্রাকেই মাটি আছে ।
অবিশ্বাস্য দৃষ্টীতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো । আবার পেছন ফিরে ভালো করে দেখে নিলো , আপনি বলছেন যে আমি আপনাকে যে মাটি আনতে বলেছি তা ওই ট্রাকে ভর্তি মাটি ।
জ্বী, আনেক কষ্টে জোগাড় করেছি ।
তো আমি এই মাটির পাহাড় নিয়ে কি করবো ?
আপনার যা ইচ্ছে !
আমার তো ইচ্ছা করছে সব মাটি আপনার মাথায় ঢেলে দিতে , দেব ?!
আপনার ইচ্ছে । আমি সম্পুর্ন বিবশ হয়ে আছি ।
আপনি আসলেই একটা যন্ত্রনা , আগে যন্ত্রনা দিতেন ফোন করে করে এখন এই ট্রাক ভর্তি মাটি এনে আবার অন্য যন্ত্রনায় ফেলে দিচ্ছেন । এই মাটি আপনি খান । আপনি আস্ত গাধা ও বলদ কিসিমের একজন অপদার্থ ।

মেয়েটি যেন উড়ে চলে যাচ্ছে । তার পা এই মর্তের মাটিতে এক বারের জন্যেও পরছে না । আচমকা আমার হুশ ফিরে এলো । দেখলাম পাখি পালিয়ে যাচ্ছে । আরে ! কই যাচ্ছেন , আমি এই মাটি এখন কি করবো । আপনার মাথায় ঢালুন , পেছন না ফিরেই বললো । দয়া করে আমাকে জ্বালাতন করবেন না । বেকুব একটা ।

হরিণের মতো তিড়িং বিড়িং করেলাফাতে লাফাতেমেয়ে টা পালিয়ে গেলো । পিছু নিলাম, এ গলি ও গলি ঘুড়ে সুন্দর ব্যালকুনী ওয়ালা সন্ধ্যা মালতির ঝোপে ঢাকা একটা বাড়ির ভেতর ঢুলে গেলো । খানিক পেছন ফিরে চাইলো হয়তো । আমাকে দেখেছে কি না বলতে পারবো না । গুনে গুনে সাত তলা বিল্ডিঙের কোন তলায় যে থাকে এটাই বোঝা মুশকিল । হা করে চেয়ে রইলাম । গেটের দারোয়ান কে জিজ্ঞাস করবো কি না ভাবছি । নাহ, পরে এর ব্যবস্থা করা যাবে । মাটির কথা মনে হতেই পেটের মধ্যে গুড়গুড়ি শুরু হয়ে গেলো । এই এক ট্রাক বোঝাই মাটি এখন আমি কি করবো । যার দরকার সে তো নিলোই না উলটা হাজার টা গালি দিয়ে ভাসিয়ে দিয়ে গেলো । রোড নম্বর আর বাড়ি নম্বর মুখস্ত করে ফিরে গেলাম।

রবিন্দ্র স্বরনীর কাছে এসে দেখি বেলায়েত আর আবুল দুই জনই চিন্তিত মুখে দাঁড়িয়ে আছে । আমাকে দেখে বেলায়েত ছুটে এলো । ভাইজান, মক্কেল কি মাল ডেলিভারি নেবে না । কিছুই বললাম না , বেলায়েতের মুখের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলাম । হঠাত করে মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেলো । হু নেবে , তবে এখানে না , আমাকে ঠিকানা দিয়েছে চলেন ওখানে যাই । মাশাল্লাহ, আল্লাহ যা করে মঙ্গলের জন্য করে । চলেন ভাইজানঠিকানা বলেন সেইখানে পৌছে দিয়া আসি । ট্রাক চিটাগং রোডের দিকে চালাতে বলে চিন্তায় ডুবে গেলাম কি করে এই আপদ মুক্ত হওয়া যায় । কানের কাছে বেলায়েত আর আবুল বক বক করেই যাচ্ছে । বেশ কিছুক্ষন পর ট্রাক ঝাঁকি খেয়ে থেমে গেলো । বেলায়েত তড়িঘড়ি করে নেমে গেলো । ভাইজান চাক্কা ফাইসা গেছে । একটু সময় লাগবে । মুহুর্তে মাথায় বুদ্ধি খেলে গেলো । চা খাওয়ার নাম করে ট্রাক থেকে নেমে গেলাম । চারিদিকে আন্ধকার হয়ে আসছিলো এক ফাকে একটা সিএনজি ধরে দিলাম চম্পট ।

যাক বাবা, মাটির ঝামেলা গেছে মাথার উপর থেকে । সারা সন্ধ্যা এদিক ওদিক কাটিয়ে রাত করে ঘরে ফিরলাম । মন ফুরফুরা। মাথায় মাটির বোঝা নাই । চিলেকোঠায় ঢুকে বিছানায় শুয়ে সস্ত্বির নিঃশ্বাস ফেললাম ,সারা শরীর মন জুড়ে একটা অসম্ভব ভালো লাগা কাজ করছে। ইচ্ছে করছে উড়ে যাই হারিয়ে যাই কিংবা মরে যাই । ছাদের দিকে চেয়ে চেয়ে সুখী হবার চেষ্টা করতে গিয়ে খানিক টা চোখ লেগে এসেছে এমন সময় দুইটা কালো মুর্তির ছায়া এসে ঘড়ে ঢুকলো । একজন আবুল অন্যজন বেলায়েত । ধড়মড়িয়ে উঠে বসলাম । ভাইজান কি ঘুমাচ্ছেন । খুক খুক করে কাশি দিয়ে বললাম, না।
ভাইজান চিন্তা করবেন না , আমরা ট্রাকে কইরা মাডি আনি নাই । মাডি সব বেইচা দিছি । উস্তাদের এক ভাইগ্না আছে সে সব মাডি কিনা নিলো । ভালো দাম পাইছি । আপনার খালায় আমাগো ট্রাক ভাড়া আগেই দিয়া দিছিলো । মাডি তো আপনার। সেই দাম দিতে আইলাম । দাম নিয়া আমাগো মুক্তি দেন । লজ্জায় পরে গেলাম । মাটির দাম তোমরাই নাও । আমার লাগবে না। আবুল লোকটা কাছে এসে হাত ধরে বললো , যার সাথে আজ বিকালে দেখা হইছে সে অনেক ভাগ্যবতী তারে কষ্ট দেবেন না । সে আপনার জীবনডা সাজায় দিবো । আপনাগো শাদিতে আমি আইবার পারুম না তাই শাদীর উপহার হিসাবে এই ট্যাহা গুলান ন্যান । এইডা আমার আর বেলায়েতের পক্ষ থিকা উপহার । একটা কিছু কিনা নেবেন । আমার বৌয়ের জামদানী শাড়ির খুব সখ আছিলো কিনা দিতে পারি নাই, মাতারি সেই আফসোসেই জীবনডা পার কইরা মইরা গেলো , আপনি তারে জামদানী কিনা দেবেন হেতেই আমি খুশি হমু । অন্ধকারেই দুই মুর্তি জেনো মিলিয়ে গেলো ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:০০

শায়মা বলেছেন: যাক তবুও এই দূর্দিনে বসেও কিছু মিছু তো লিখলে.....

কিন্তু এই প্রেমকাব্য লেখার মাঝেও আমি সন্ত্রাসীদের আভাস পাচ্ছিলাম।


তুমিও বর্তমান পরিস্থিতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বুঝাই যাইতেছেক বৎস!!! B-))

২৫ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:১৩

রানার ব্লগ বলেছেন: আরে না, এটা আগেই লেখা। অসুস্থ্য ছিলাম। তাই পোস্ট করি নাই। এই সময়ে করতেও চাই নাই৷ কারন সময় টা বড্ড বেসময়। তারপরেও করলাম। মন চাইলো তাই আরো চার পর্ব লেখা আছে। পরে বাকি অংশ পোস্ট করবো। বালিকা৷

২| ১০ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:০০

শায়মা বলেছেন: তারপর?

১১ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩

রানার ব্লগ বলেছেন: হু , তারপর অথৈ প্রেম !!

৩| ১১ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৩

শায়মা বলেছেন: হা হা অথৈ প্রেমে পড়লে ডুবে যেতেই হয়। কারণ তাহার কূল নাই কিনার নাই .... :P

১১ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:১৯

রানার ব্লগ বলেছেন: আমায় ডুবাইলি রে ! আমায় ভাসায়লি রে ! অকূল দড়িয়ায় বুঝি কুল নাই রে !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.