নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আশা নিয়ে বসে আছি ।

রানার ব্লগ

দূরে থাকুন তারা যারা ধর্মকে পুঁজি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দূরে থাকুন তারা যারা ১৯৭১ থেকে অদ্যাবদি বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এবং সকল পাকিস্তানী প্রেমী , রাজাকার ও তাদের ছানাপোনা ।

রানার ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছাঁদ কুঠরির কাব্য

১২ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:১০



সারাদিন ধরে ঝরঝর করে বৃষ্টি হচ্ছে। মেঘের মনে কে যে এতো দুঃখ দিলে কে জানে? অবশ্য আমার মনের দুঃখের জন্যও মেঘের কষ্ট হতে পারে। সেই যে আমাকে সারা ঢাকা শহর দৌড় পারিয়ে পালালো তারপর আর তার দেখা নেই, ফোনে কথা হয় কিন্তু দেখা হওয়াটা যেন হিমালয় ডিঙানো হয়ে গেছে। বাড়ির সামনে গেলে যাও বা দেখা পাওয়া যায় কিন্তু পাড়ার সেই বুড়ো বাঁদর যখন তখন এসে হাঙ্গামা করা শুরু করে।

এই তো সেদিন, ওদের বাড়ির সামনে, ঠিক সামনে না—আড়াআড়ি একটা টঙের দোকান হয়েছে, ওখান থেকে ওর ঘরের জানালাটা পষ্ট দেখা যায়। প্লাস্টিকের কাপে চা নিয়ে তাতে চুমুক দিয়ে আড়চোখে কেবল একটু নজর দিয়েছি, ওমনি বলা নেই কওয়া নেই চোখের সামনে বুড়ো বাঁদর টপাস করে পড়লো। সেই একই ভাব, চোখে ভীম কালো চশমা, আঙুলে চাবি ঘুরছে। যেন উনি চাবি ঘোরানো বন্ধ করলে মহাবিশ্ব থেমে যাবে। আমিও দেখেও না দেখার ভান করে জানালার দিকে চেয়ে রইলাম। পর্দার সামান্য দুলুনি যখন বুকের মধ্যে মার্চপাস্টের ড্রাম পেটাচ্ছিল, বাঁদর মহারাজ তার ভ্যাজর ভ্যাজর চালিয়ে কানের দফারফা করে দিচ্ছিল। শেষে অন্য কোনো উপায় না পেয়ে উল্টো পথে বাড়ি চলে এলাম। এভাবে আসলে হয় না। এ যেন এক শহরে থেকেও লং ডিস্টেন্স রিলেশনে আছি। ফোনের টুংটাং-এ আজকাল বুকের ভেতর কলিজাখানা এত দোলে, কবে না খাঁচা ছেড়ে হুরুত করে বেরিয়ে না আসে।

এলাকার সবার জ্বর হচ্ছে, আমারও তাই হতে হবে, জ্বর না হলে মান-সম্মান আর থাকছিল না। আমার জ্বর মানে ওই খুশখাশ কাশি আর ঘুসঘুসে জ্বর না। জ্বর যখন পদার্পণ করেন আমার কুটিরে, বেশ লম্বা সময়ের জন্যই আসেন। তিনি অবশ্য একা আসেন না, সাথে করে তার আত্মীয়স্বজন যেমন গায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা, সর্দি, কাশি, বমি—তা সে যেই সেই বমি না, ভেদ বমি, ওয়াক ওয়াক করতে করতে পাটের নাড়িভুঁড়ি উলটে ফেলা বমি। ভাগ্যিস, লোকে জানে আমি পুরুষ জাতে বিলং করি, নতুবা আমাকে গর্ভবতী হিসেবে চালিয়ে দিতে কার্পণ্য করতো না। জ্বরদেবী সবাইকে সাথে এনে ষোলোকলায় পূর্ণ করেন। ওনার বড্ড মায়ার শরীর কিনা, কাউকে ফেলে আসতে পারেন না। সবাইকে সাথে এনে তবেই ক্ষান্ত হন। প্রতিবারের মতো এইবারও আমার ঘরে তার আত্মীয়স্বজনদের নিয়েই এসেছেন, সন্দেহ করি সাথে করে ডেঙ্গুকেও এনেছেন। মায়ার শরীর কিনা! তার মায়ার ধাক্কায় আমি বেচারা কুপোকাত।

চার দিন হয়ে পাঁচ দিনে পড়েছে। জ্বর আমাকে তার পূর্ণ সেবায় নিমগ্ন করে রেখেছে। চোখে সর্ষে ফুল দেখতে দেখতে গোলাপ, রজনীগন্ধা, চম্পা, ডালিয়া—সব দেখা শুরু করেছি। প্রথম দুই দিন মামা এসে দেখে গেছে, এখন আর আসে না। সম্ভবত দুইদিন কিছু খাওয়া পেটে ঢোকেনি। জ্বরের তাপে ও চাপে যখন ভাবছি এইবার বুঝি ভবলীলা ফুলস্টপ করে অন্য লীলায় ব্যস্ত হতে হবে, ঠিক তখনই কে যেন দরজায় দড়াম দড়াম করে কড়া নাড়ছে। দুই-তিন মিনিট ধরে শুনছি কড়া নাড়ার কাহারবা সম্মেলন, কিন্তু উঠে যে তবলা সম্মেলনের ইতি টানবো, তা পারছি না। পায়ের ব্যালান্স আর হাতের ব্যালান্স—দুইটাই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ভাগাভাগি করে নিয়েছে। আমার কথা তারা শুনবেই না।

তারপরেও কাহাতক এই কাহারবা তালের বেতাল জলসা ভালো লাগে? তাও যদি ঠিকঠাক তালে লাগতো—কখনো কাহারবা, আবার ধুম করে দারদা, আবার ফাঁকে ফাঁকে খ্যামটাও দিচ্ছিল। না, আর নেওয়া যাচ্ছে না। পায়ের সাথে লড়বড়ে হাতকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে, ঠেলে-গুতিয়ে দরজা পর্যন্ত গিয়ে খুলে দিলাম বন্ধ দুয়ার।
চোখের সামনে জলজ্যান্ত অপ্সরা দাঁড়িয়ে। শুনেছি মরার সময় আজরাইল দাঁত-নাক খিঁচিয়ে বদ্যি পাড়ার অশ্বিনী খুড়োর মতো একটা সেমি-ভূতের ভাইব নিয়ে আসে জান কবজ করতে, কিন্তু এ তো দেখি টেলি-সিরিয়ালের! সেজেগুজে, হাতে মেহেদি, ঠোঁটে রঙ লাগিয়ে এসে গেছে।

কিছু একটার আলো চোখে খুব জ্বালাচ্ছে। পিটপিট করে কিছুক্ষণ ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। কংক্রিটের ছাদ ফুঁট হয়ে আলো চোখে পড়ার সম্ভাবনা নাই। ঘরের জানালা কে বা কারা যেন খুলে দিয়েছে। হু হু করে বাতাস ঢুকছে। কপালে কে যেন ঠান্ডা ত্যানা টাইপের কিছু একটা দিয়ে রেখেছে। সমস্ত ঘরে মিষ্টি একটা সুবাস ঘুরে-ঘুরে বেড়াচ্ছে। চোখ বুজে ভাবার চেষ্টা করলাম, আজকাল নরকেও কি ভেজাল লেগে গেছে? নরকে এসে স্বর্গের ফ্লেভার পাচ্ছি! কপালে নরম হাতের একটা চাপ অনুভব করলাম। চোখ খুলে মুখের উপরে একটা জলজ্যান্ত সুন্দরীর আস্ত একটা মুখ দেখে বুঝলাম—নাহ, আমি পৃথিবীতেই আছি। স্বর্গে যাবার যেহেতু ভাগ্যে নাই, সেহেতু মরি নাই।
ওরে বাবা, ভদ্রলোকের ঘুম তবে ভাংলো! কানের কাছে যেন কেউ সেতার বাজিয়ে দিলো। উঠে বসতে গেলাম, বাজপাখির মতো উড়ে এসে আমাকে আবার বিছানায় কুপোকাত করে দিলো। “ওঠা যাবে না, শরীর দুর্বল।”

কে বললো শরীর দুর্বল? আবার ওঠার চেষ্টা করলাম, এইবার চোখ পাকিয়ে যেভাবে আঙুলের ইশারা করলো—যে সাহস হলো না ওঠার।
ঘরে কোনো একজন দশ-বারো বছর বয়সী এক আগন্তুককে দেখলাম—চোখ বড় করে ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে আছে। যেন চিড়িয়াখানায় আজগর সাপ দেখছে। ইশারায় ছেলেটাকে দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, “কে ও?”
“আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট, ওর নাম টিংকু মিয়া।”
বিছানার চাদর টানাটানি করে ঠিক করতে করতে বললো, “তুমি তো আমাকে দেখেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে, তারপর কষ্ট-টষ্ট করে কোনোরকমে তোমাকে উঠিয়ে বিছানায় রেখেছি। নিচে গিয়ে মেডিকেল স্টোর থেকে ওষুধ আর ডাক্তার এনে তোমার চিকিৎসার কিছু ব্যবস্থা করলাম। তুমি যা ভারী—বাবারে বাবা! দেখে তো মনে হয় পাটকাঠি।”
লজ্জা পেয়ে গেলাম। লাজুক গলায় বললাম, “ইয়ে, আমি কত দিন জ্বরের ঘোরে ছিলাম?”
“পাক্কা তিন দিন।”
নতুন একটা আলনায় আমার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কাপড়গুলো যত্ন করে গুছিয়ে রাখতে রাখতে বললো,
“তুমি কি আমার সাথেই ছিলে?”
ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে সরু চোখে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকলো।
“হুঁ, ছিলাম। আমি তোমার সাথেই ছিলাম। কোনো সমস্যা?”
“না না, কী সমস্যা!”
“কিন্তু নিচে মামা থাকে, উনি কিছু মনে করতে পারেন…”
“মামা জানে তো, সব জানে। সে তো প্রায়ই এসে তোমার খোঁজখবর নিয়ে যেত।”
বিছানার পাশে ঘেঁষে বসতে বসতে বললো।

শরীর দুর্বল, তার মধ্যেই ঠান্ডা ঘামের একটা স্রোত মেরুদণ্ড বেয়ে নিচে নেমে গেল। মনে মনে বললাম, গেল! থাকার জায়গাটাও গেল। নিশ্চিত জানি, একটু সুস্থ হলেই কান ধরে বাড়ি থেকে নামিয়ে দেবে। অবশ্য খালা থাকে বনানীতে, তার ওখানে যাওয়া যায়—কিন্তু সেটা হবে, স্বাদ করে নিজের গলায় নিজে রশি পরানো। কোথায় নতুন ঠাঁই নেওয়া যায় ভাবছি।
পাশেই বসে হাত নেড়ে-নেড়ে কী সব বলছিলো। হঠাৎ ওর মুখটা আমার মুখের উপর চলে এলো। ঘন কালো চুলগুলো যেন আমাদের দুজনকে ঢেকে দেওয়ার জন্য চারদিকে ছড়িয়ে গেল। অবাক চোখে অমন বড় বড় চোখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। দম ফেলতে কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু কষ্টটা ঠিক কষ্টের মত লাগছে না। নরম কিন্তু ঝকঝকে ঠোঁটজোড়া কেঁপে উঠলো। কি যেন বলতে চাচ্ছে, কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না।

দু'হাত দিয়ে ঝাঁকিয়ে আমাকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনলো।
— “কি জনাব, ভয় পেয়ে গেছ?
আরে বুদ্ধরাম, তোমার মামাই তো ওই টিংকু মিয়াকে জোগাড় করে দিলেন। ও থাকতো তোমার সাথে। আমি রোজ আসতাম। এই আজ যেমন এসেছি, তেমনি। এইবার উঠ। উঠে এই সুপটুকু খেয়ে নাও।”
আসলে আমি সুপ খাই না, তুমি তো জানো না।
— “কি? আমি কি জানি না?”
— “তুমি জানো যে আমি সুপ খাই না।”
— “তাই! তো এই তিন দিন রাক্ষসের মতো কে সুপগুলো গিলছিলো?” কোমরে ওড়না পেঁচিয়ে চোখ বড় বড় করে বললো।
— “আমি সুপ খেয়েছি?” অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।
— “হ্যাঁ, তুমি। এই টিংকু, বল না!” টিংকুর দিকে কড়া করে ধমক দিয়ে বললো।
— “জি ভাইজান, আপনি স্যুপ খাইছেন। আফা রোজ আফনার জন্য স্যুপ এনে আপনাকে খাওয়াই দিত। আমারেও খাইতে দিতো—অনেক মজা! আফা সকালে আসতো, সেই রাতে ফিরত যাইতো। আফা যতক্ষণ থাকতো, আফনে কোনো জ্বালাতন করতেন না। আফা গেলেই আফনে খালি মোচড়াইতেন আর গো গো করতেন।”
নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিলো। বেচারী অনেক কষ্ট করেছে। চোখের সামনে এমন আধা-যুদ্ধাংদেহী কোনো সুন্দরীকে দেখলে অবশ্য বেশিক্ষণ কষ্ট বা অপরাধবোধ ধরে রাখা যায় না।
— “কি, বিশ্বাস হলো? তো লক্ষ্মী ছেলের মতো এই স্যুপটা খেয়ে আমাকে উদ্ধার করে উঠে বস। কাপড় বদলাতে হবে। দেখ, তোমার জন্য একটা টি-শার্ট আর ট্রাউজার এনেছি। সাইজ হয় কি না জানি না। তোমার গা থেকে ভীষণ বদগন্ধ আসছে—ইস! ছেলে মানুষের গায়ে এত গন্ধ হয় জানা ছিল না।”

আমি ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলাম। আমি সম্ভবত এই শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ স্বপ্ন দেখছি। একটু পরেই স্বপ্ন ভেঙে যাবে, আর আমি দেখবো আমি সেই ভাঙা ঘরেই বসে আছি। চিন্তা করছি, স্বপ্নটা কতক্ষণ চালিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু নাকের কাছে স্যুপের ধোঁয়া ওঠা গন্ধ এসে লাগতেই বুঝলাম—এটা স্বপ্ন না।
— “শোন, দয়া করে একটু কষ্ট করে নিজে নিজে স্যুপটুকু খাও। আমাকে একটু একটা জায়গায় যেতে হবে। ঘরটা গুছিয়ে নিই এই ফাঁকে।”
আমি হাত নেড়ে বললাম,
— “না, তোমাকে ঘর গোছাতে হবে না। আমি গুছিয়ে নেব।”
— “টিংকু শোন শোন, কি বলে এই লোক! সে নাকি ঘর গোছাবে!”
হাসতে হাসতে বিছানায় ঢলে পড়লো, সেই সাথে একরাশ এলোমেলো ঘন কালো চুল আমার বিছানার উপর বিছিয়ে গেল—কিছু এসে আমার গায়েও পড়লো।
খুব ইচ্ছে হলো হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখি। সাহসে কুলালো না।
হাসতে হাসতে উঠে বসলো। আমার দিকে বেশ কিছুক্ষণ চেয়ে ভারী একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
— “স্যুপটুকু খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন।”
আমি ওর চোখের কোনো এক অদ্ভুত আলো দেখলাম—যে আলো একজন সুখী মানুষের চোখেই কেবল দেখা যায়।
— “আচ্ছা, তোমার তো অফিস আছে—ওখানে যাও কখন?”
স্যুপটুকু চেটে-পুটে, বাটি-সহ খাবার মতো করে খেতে খেতে জিজ্ঞাসা করলাম।
— “ছুটি নিয়েছি। কিন্তু আজ যাবো। আরও দুই দিনের ছুটি আমার লাগবে।”
ব্যস্ত হাতে জিনিসপত্র গোছাতে গোছাতে বললো।
ইস, সরি—আমার জন্য তোমার ছুটিগুলো নষ্ট হলো।
— “মারবো টেনে এক চড়!” দূর থেকে চড় দেখিয়ে বললো।
— “তুই যে ব্যাটা মরতে বসেছিলি, আমি না এলে কি হতো সেইটা আগে ভাব।”
চমকে গেলাম, কারণ আমি জানি—এই তুই তখনই বের হয় যখন সে আসলেই রেগে যায়। ঢোক গিলে বললাম,
— “আল্লার ওয়াস্তে, তুই-তোকারি কোরো না। শুনতে কেমন জানি লাগে।”
— “বেশি ন্যাকামো করলে তুইয়ের নিচে যা আছে, তাই বলবো! শুনবি? শুনতে চাস?”
— “না, শুনতে চাই না। কিন্তু তুমি আমার বাসার ঠিকানা কই পাইছো?”

রহস্যময় একটা হাসি খেলে গেলো ওর মুখে। চোখের তারা আবার সেই ঝিলিক, দেখা গেলো।
— “হুঁ! দিনের পর দিন পেছন পেছন লাইন মারছো, আর আমি খোঁজ নেব না? আমাকেও তো জানতে হবে তুমি চোর, না বাটপার, না কি গাঁজাখোর। বলা তো যায় না, দিনকাল যা খারাপ!”
— “কি সর্বনাশ! কি বদজাত মেয়েছেলে তুমি? আচ্ছা, তুমি বুঝলে কী করে আমি অসুস্থ?”
— “তুমি নিজেই ফোন করে বলেছো।”
— “যাহ্, না! আমি এমন বলি নাই!”
— “বলেছ। ফোন করে নাকি গলায় বলেছ—‘বকপাখি, আমার অনেক জ্বর। আমাকে তোমার পালক দিয়ে ঢেকে দাও।’”
— “এ্যা! বলো কী?” আতকে উঠলাম আমি।
— “হ্যাঁ! মানুষের জ্বরের মধ্যেও ন্যাকামির শখ জাগে—তোমাকে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না।”
— “আচ্ছা শোন, আমি সব গুছিয়ে দিলাম। টিংকু আছে, ও তোমাকে দেখে রাখবে। আমি আপাতত যাচ্ছি। ছুটি নিয়েই আবার ফিরবো। তারপর তুমি-আমি বিকেলে একটা জায়গায় যাবো।”
কপালে, গলায় হাত দিয়ে কিছুক্ষণ দেখে বললো,
— “নাহ, আজ আর জ্বর নাই। তুমি কাপড়টা বদলে নিও। ঠিক আছে?”
মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে, সকালের দমকা হাওয়ার মতো এসে—সব পালটে দিয়ে ময়ূরের মতো পালিয়ে গেলো যেন।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.