নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নকথকের কলাম --

স্বপনচক

.. স্বপ্ন দেখি বিশ্বশান্তির .জাতি ধর্ম নির্বিশেষে অপার ভালোবাসার বন্ধনের---.

স্বপনচক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী হবে এইসব আবর্জনা গুলো !!

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৪৫



মাসটা হবে ১৯৭১ এর ফেব্রুয়ারী মাস, তারিখটা এখন আর সঠিক মনে পড়ছে না । চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলে রম্যভূমি রামু থানা সদরের তৎকালীন সময়ের বেশ নাম করা হাইস্কুলটি, আমাদের প্রিয় – রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এর ক্লাশ রুমে রুমে হঠাৎ করেই একটা প্রাণচাঞ্চল্যের জোয়ার বয়ে গেলো একটা অভাবিত খবরে, একটা চাপা উত্তেজনায় প্রায় আমাদের দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা । এমন সময়েই বার্তা এলো -স্কুল ছুটি, আর নিমেষে সবাই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে গেলাম – শুরু হয়ে গেলো এক বিশাল মিছিল, ছোট ছোট অসংখ্য হাত ছুঁড়ে ছুঁড়ে শুরু হলো শ্লোগান দেয়া – ‘পশ্চিমা শোষক গুষ্টি নিপাত যাক – গুড়িয়ে দাও, বঙ্গবন্ধু স্বাগতম শুভেচ্ছা – আমরা আছি তোমার সাথে’ ।

মিছিল এসে দাঁড়াল বর্তমানে যেখানে উপজেলা সদর সেইখানে খোলা বিলের কাছে রামু-কক্সবাজার সড়কের ধারে, উপস্থিত সবার মাঝে এক তীব্র অস্থির উত্তেজনা, কখন আসবেন তিনি ! অবশেষে ঝড়ের মতো তিনি এসে পৌঁছালেন, বাংলার অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীনতাকামী মানুষের স্বপ্নপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, গাড়ী থেকে নেমে সুবিশাল ঋজু শরীরের দেবদূত যেন দাঁড়ালেন এসে রাস্তার পাশে রাখা একটি মাইকের কাছে । এক অবিশ্বাস্য জন জোয়ারে যেনো এলাকাটি উত্তাল হয়ে উঠলো এক নিমেষে । আমি ছোটখাট শরীর নিয়ে মানুষের ভিড়ের ভিতর দিয়ে পৌঁছে গেলাম একেবারে মাইকের কাছে, বঙ্গবন্ধুর এক হাত দূরত্বে দাঁড়িয়ে দেখছি অবাক হয়ে এই দেবদূতকে ! মাইকটা একটু গোলমাল করছিলো, মাইকটা হাতে সরিয়ে দিয়ে বললেন- আমার গলাও মাইকের চেয়ে কম নয় । এই বলে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে শুরু করলেন ভাষণ, সে কি কন্ঠস্বর ! সে কি ভাষণ !! যখন চলে গেলেন ভাষণ দিয়ে, জন জোয়ারে যেন আগুন লেগেছে ।

উত্তুঙ্গ উত্তাপে জনতা যেন টগবগ করছে, ইয়াহিয়া খানকে পেলে এই জনতা এক নিমেষে মিশিয়ে দেবে পথের ধূলিতে । সেই টগবগ আগুনের বন্যায় ভাসতে ভাসতে আমরা ছোট বড় সকলে এক নিমেষেই যেন হয়ে গেলাম ক্ষুদিরাম, সালাম, বরকত !! আর সেই জোয়ারের সৃষ্টি করেছিলো স্বাধীনতাকামী ছাত্রজনতা । ছাত্ররা তো শুধু ছাত্র নয় তখন, ওরা এক একটি স্বাধীনতার মহান সৈনিক, চোখে শুধু স্বাধীনতার স্বপ্ন, মুখে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে ছড়িয়ে দেয়া দীপ্ত শপথের অঙ্গীকার । সেই ভাষার আন্দোলনের সময় থেকে ঊনসত্তর হয়ে একাত্তরের গণ আন্দোলনের মূল শক্তি ছিলো ছাত্র যুব কর্মীবৃন্দ ।



সেই ছাত্রশক্তির অধুনাস্বরুপ দেখলাম বাংলানিউজ২৪ এর সাহসী সাংবাদিকদের কল্যাণে ! নাজমূল-শহিদুল গং এর চরম অধঃপাতের স্বরুপ ! এরা ছাত্র নেতা ! এরা হবে দেশের ভবিষ্যত নেতা বা মন্ত্রী ! ছি, এতো নীচে নেমে গেছে ছাত্ররা!! ওরা এলাকার ড্রাগের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে, পতিতার উপার্জনে ভাগ বসায়, ভাগ ঠিক মতো না পেলে আবার প্রকাশ্য বাজারে বিচারও বসায়, তদুপরি হাসি হাসি মুখ করে পত্রিকার সাংবাদিকের তোলা ছবিতে পোজ ও দেয় বেহায়ার মতো, এতো নীচে নেমে গেছো তোমরা, তোমরা ছাত্র! ছিঃ তোমাদের মুখে সারা বাংলার কোটি কোটি জনগণের মুখের থুতু ছুঁড়ে পড়ুক, তবু কি তোমাদের হবে আত্মগ্লানি বা অনুশোচনা ? এক বিন্দু আত্মসম্মান নেই, এক চিলতে আদর্শের ছোঁয়া নেই ! বিদ্যা নয়, আদর্শ নয়, চরিত্র নয়, শুধু কিভাবে টাকা উপার্জন করা যায় ছাত্রজীবনেই এই ধান্দা, প্রয়োজনে যত নীচে নামা দরকার নামতে কোন সঙ্কোচ ও নেই !

এ কোন দূরাচারের দূঃসময়ে এসে ঠেকেছে আমার প্রিয় বাংলাদেশ ! এই ছাত্র নামধারী আবর্জনাগুলো দেশের ভবিষ্যতকে ঠেলে দিচ্ছে এক অনপনেয় অন্ধকারের দিকে । আর কি অপেক্ষা করে আছে আমাদের ভবিষ্যত বংশধরদের জন্যে ! আবুল গং এর মতো গন্ডমূর্খ মন্ত্রীদল, শহীদুল, নাজমূল গং এর মতো দুশ্চরিত্র গুন্ডা ছাত্রনেতার দল, মুফতি মূজাহিদ গং এর মতো অসভ্য ধর্মবেশ্যার দল, হুদা-মওদুদ গং এর মতো চূড়ান্ত ধান্দাবাজ রাজনীতিকের দল মিলে দেশটাকে নিয়ে যাচ্ছে সে কোন এক অসম্ভব অনিশ্চিত বিভ্রান্তির মহাসমূদ্র পানে ??

সেখানে কোথায় ঠাঁই আগামী প্রজন্মের ? আবার কি কোন এক অভাবিত ঝড়ের মতো আর একজন দেবদূত এসে দাঁড়াবেন এই অভাগা নিরীহ জনতাকে সেই সুতীব্র অন্ধকারের কূপ থেকে উদ্ধারের চেষ্টায় ! মহান আদর্শের ও সততার চর্চায়, চরিত্রবত্তা অর্জনের কঠিন অঙ্গীকারে, দেশ ও দেশের মানুষের হিত সাধনের সুতীব্র আকাঙ্খায় আবার কোন এক গণজোয়ার কি বয়ে আসবে কোন এক স্বপ্নদ্রষ্টার কোন যাদুমন্ত্রবলে, এই অসম্ভব ভাবনা ভাবারও কোন উপায় দেখি না, তবু ভাবতে চায় মন, দেখতে চায় স্বপ্ন সেই অমোঘ দিনের ।

আবার কি একবার বঙ্গবন্ধু এসে দাঁড়াবেন এই অধঃপতিত উপরিল্লিখিত জনগোষ্টির সামনে ? এক হুঙ্কারে গুড়িয়ে দেবেন এইসব আবর্জনার দলকে ? বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী হবে এইসব আবর্জনার দল, সেই দুঃসময় দেখার আগে বাংলাদেশের আপামর নিরীহ ভূক্তভোগী জনতা যেন জেগে উঠে তীব্র হুঙ্কারে, নিঃশেষ করে দেয় এই সব জানোয়ারদের ও ধূলিতে মিশিয়ে দেয় ওদের চারণক্ষেত্র । কবে আসবে সেই জেগে ওঠার দিন - স্বপ্নবিহীন মন আকুল হয়ে সেই অসম্ভব স্বপ্ন চোখে জেগে থাকে অহর্নিশ ।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.