![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“ফিতনা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ।” (সূরা-আল-বাকারা, ১৯১)
“আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর যে পর্যন্ত না ফিতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর
দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়।” (সূরা-আল-বাকারা, ১৯৩)
“হে আমার কওম, তোমরা এ গো-বৎস (বাছুর) দ্বারা ফিতনায় নিপতিত হয়েছ।” (সূরা
তোয়া-হা, ৯০)
ফায়দাঃ উল্লেখিত আয়াত সমূহে ফিতনা শব্দটির দ্বারা কুফর, শিরক এবং
মুসলমানদের ইবাদতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাকেই বুঝানো হয়েছে। (জাস্সাস,
কুরতুবী প্রমুখ)
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমাইয়াছেন,
“প্রত্যেক উম্মতের একটি বাছুর থাকে, যাকে তারা পূজা করে। আমার উম্মতের
বাছুর হলো মাল।” (ফাযায়েলে সাদাকাত)
আল্লাহর নাফরমানী, পাপাচার, অবাধ্যতাই হলো ফিতনা। এসব বন্ধ করে হক্ব
দ্বীন প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা কখনই ফিতনা নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরব সমাজকে ভেঙ্গে দিয়েছেন, তাদের ঐক্য নষ্ট করেছেন,
তাদের দেব-দেবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন
করেছেন, যুদ্ধের পর যুদ্ধ করেছেন, সাহাবায়ে কেরাম (রাযিঃ) সহ দেশ ত্যাগ
করেছেন। তবে কি তিনি ফিতনা করেছেন? (নাঊযুবিল্লাহ্); আমরা অনেকে ফিতনা
বলতে তো এসবকেই বুঝে থাকি। অথচ এ ফিতনা (?) করেই তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠা
করেছেন। আমাদের জ্ঞান-বুদ্ধি কিভাবে উল্টোদিকে ধাবিত হচ্ছে!
দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও
সাহাবারা যে সব অবস্থা ও কর্মকান্ডের ভেতর দিয়ে গিয়েছেন, সেগুলোকেই আমরা
অনেকে ফিতনা ভাবছি। আইয়্যামে জাহেলীয়াতের প্রতিষ্ঠিত ঐক্য নষ্ট করার
কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তারা ‘আল-ক্বাতি’ (যে
সম্পর্কচ্ছেদ করে) নামে ডাকতো। সম্পর্কচ্ছেদ করা, ঐক্য নষ্ট করার নাম
ফিতনা নয়। বরং বিভ্রান্তির অন্ধকারের নাম ফিতনা, যেখানে সত্য-মিথ্যার
বিচার বোধ বিলুপ্ত হয়।
ইমাম হোসাইন (রাযিঃ) ঐক্য নষ্ট করে ফিতনা করেননি বরং ইয়াযীদ সালতানাতের
ঐক্যের মাধ্যমে যে ফিতনা সৃষ্টি করেছিল তারই মোকাবেলা করে হক্বকে
প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ইজতেমায়িয়াত অর্থাৎ ঐক্য সংহতির ধূম্রজাল সৃষ্টি করে
ইয়াযীদ সমগ্র মুসলিম সালতানাতে কি অপকর্মই না করেছে! তার প্রেরিত বাহিনী
পবিত্র মদিনা শহরকে ধ্বংস স্তুপে পরিণত করেছে। র্হারার ঘটনা হিসেবে তা
ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। ইমাম হুসাইন (রাযিঃ) কি তার বিরুদ্ধে দাড়িয়ে ফিতনা
করেছেন? বরং তিনি শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করে ইয়াযীদের ফিতনা দমন
করেছেন। কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর শাহাদাতের রক্ত এ উম্মতকে সঠিক পথ নির্দেশ
দিতে থাকবে। তিনি শহীদ হয়ে চির বিজয়ী বীর হয়ে আছেন, কিন্তু কারবালায়
ফাসেক, জালেম ইয়াযীদ তার সমুদয় কুকীর্তিসহ চিরদিনের জন্য পরাজিত হয়ে
গেছে। কারবালার প্রান্তর যেমন ইমাম হোসাইনের শাহাদাতগাহ্, তেমনি ইয়াযিদী
ফেতনারও দাফনগাহ্।
হাজ্জাজের বিরুদ্ধে সাঈদ বিন যোবায়ের (রাযিঃ) কি ফিতনা করেছেন? হাজ্জাজ
বলেছিল, “আমি জামাতের আমীরের সঙ্গে আছি আর তুমি বিদ্রোহীদের সাথে আছো।”
সাঈদ বিন যোবায়ের (রাযিঃ) উত্তরে বলেন, “আমি জামাত হতে পৃথক নই আর বিবাদও
আমি পছন্দ করি না। আল্লাহর ব্যাপারে তোমার দুঃসাহস এবং তোমার প্রতি
আল্লাহর এ ধৈর্য্য দেখে আমার হাসি পাচ্ছে।”
নূহ (আঃ), ইব্রাহীম (আঃ), মুসা (আঃ), সালেহ্ (আঃ), শোয়াইব (আঃ) তথা সমস্ত
নবী-রাসূলগণ তাঁদের কওমের শিরক কুফর, পাপাচার অনাচারের বিরুদ্ধে
দাঁড়িয়েছেন, যদ্বারা আল্লাহর কালেমা বুলন্দ হয়েছে। এই ফিতনা এবং তা দমনের
নবুয়্যাতী কর্মধারাই সমগ্র মানব ইতিহাসের সার সংক্ষেপ।
নিম্নের কথাগুলো ফিতনার অর্থ ব্যাখ্যা করেঃ
হযরত মাওলানা কাসেম নানুতুবী (রহ.) এর বরাতে ক্বারী তৈয়ব সাহেব (রহ.)
বলেন- “বুনিয়াদী ফিতনা তিন প্রকার। প্রথমতঃ ‘বু’অদ আনিল্লাহ’ অর্থাৎ-
আল্লাহ হতে দুরত্ব। দ্বীনের ব্যাপারে ইহা একটি গোপন ও বুনিয়াদী ব্যাধি।
মানুষের মধ্যে যখন এই ব্যাধি দানা বাঁধে তখন সে দ্বীন হারাতে আরম্ভ করে।
দ্বিতীয়ঃ ‘জুউফে হিম্মত’ বা দুর্বল চিত্ত ও সাহসহীনতা। ইহার ফলে দ্বীনের
মর্যাদা অক্ষুন্ন থাকে না। তৃতীয়ঃ ‘যায়গে কলব’ বা দিলের বক্রতা। ইহার
কারণে দ্বীন নিরাপত্তাহীন ও দৃঢ়তাশূন্য হয়ে পড়ে। দ্বীনের মধ্যে
এস্তেকামাত বা মজবুতী আসতে পারে না।
হযরত আলী (রাযি.) এর খেলাফত মুসলিম উম্মাহর ঐক্যমতের ভিত্তিতে ছিল না।
তাঁর খেলাফতের পুরো সময়টাই যুদ্ধ বিগ্রহের মধ্যে কেটেছে। জঙ্গে জামালে
আয়শা (রাযি.) এর সঙ্গে তিনি যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং জয়ী হন। তালহা (রাযি.)
এবং যোবায়ের (রাযি.) এ যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। সিফ্ফিনে হযরত মুয়াবিয়া
(রাযি.) এর সঙ্গে যুদ্ধে তিনি পরাজিত হন। হাজার হাজার মুসলমান উভয় পক্ষে
শাহাদাত বরণ করেন। খারিজীদের ফিতনা বড় ভয়াবহ ছিল। তাদের নামাজ, কুরআনে
পাকের তেলাওয়াত, তাহাজ্জুদ সাহাবাদেরকেও অভিভুত করত। আল্লাহর কালাম পড়তে
পড়তে তারা যুদ্ধ করত, তলোয়ার চালাতো শাহাদাতের আকাংখায় ও জান্নাতের আশায়।
অথচ তারা ছিল ফিতনাবাজ, বাতিল ও জাহান্নামী। হযরত আলী (রাযি.) এই ফিতনা
দমন করতে গিয়ে তাদের প্রায় চার লক্ষকে কতল করেন। ইমাম বুখারী (রহ.) স্বীয়
কিতাবে এ সম্পর্কে আলাদা বাব্ (অধ্যায়) “কিতাবুল মুয়ানিদীনা ওয়া
মুরতাদদীনা ওয়া কিতালুহুম” রচনা করেন। খোলাফায়ে রাশেদ আলী (রাযি.)
আশারায়ে মোবাশ্শারা যোবায়ের (রাযি.) এবং তালহা (রাযি.), উম্মুল মুমিনীন
আয়শা (রাযি.), কাতেবে ওহী মুয়াবিয়া (রাযি.), সবাই কি ফিতনা করেছেন? অথচ
সমগ্র আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সর্বাদি সম্মত আকিদা তাঁরা হেদায়েত
প্রাপ্ত এবং হেদায়েতের পথ প্রদর্শনকারী। নবী-রাসূল, সাহাবা-তাবেয়ী তথা
পূর্বসুরী সমস্ত আল্লাহ ওয়ালাদের অনুসৃত জীবনধারা প্রকাশ্য দিবালোকের মত
সামনে থাকার পরেও যদি আমরা না বুঝার ভান করি তবে ক্ষতি আমাদেরই। আমরা
নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুঠারাঘাত করছি। মহান আল্লাহ তাঁর কালেমাকে অবশ্যই
জয়ী করবেন। প্রচেষ্টাকারীরা বিনিময় পাবে, পশ্চাদাপসরণকারীরা ধ্বংস হবে।
“এবং তারা বলবে, আমরা যদি শুনতাম অথবা বুঝতাম তবে আজ জাহান্নামীদের মধ্যে
থাকতাম না।” (সূরাঃ আল-মূলক, আয়াত-১০) “ফিতনা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ।” (সূরা-আল-বাকারা, ১৯১)
“আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর যে পর্যন্ত না ফিতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর
দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়।” (সূরা-আল-বাকারা, ১৯৩)
“হে আমার কওম, তোমরা এ গো-বৎস (বাছুর) দ্বারা ফিতনায় নিপতিত হয়েছ।” (সূরা
তোয়া-হা, ৯০)
ফায়দাঃ উল্লেখিত আয়াত সমূহে ফিতনা শব্দটির দ্বারা কুফর, শিরক এবং
মুসলমানদের ইবাদতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাকেই বুঝানো হয়েছে। (জাস্সাস,
কুরতুবী প্রমুখ)
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমাইয়াছেন,
“প্রত্যেক উম্মতের একটি বাছুর থাকে, যাকে তারা পূজা করে। আমার উম্মতের
বাছুর হলো মাল।” (ফাযায়েলে সাদাকাত)
আল্লাহর নাফরমানী, পাপাচার, অবাধ্যতাই হলো ফিতনা। এসব বন্ধ করে হক্ব
দ্বীন প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা কখনই ফিতনা নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরব সমাজকে ভেঙ্গে দিয়েছেন, তাদের ঐক্য নষ্ট করেছেন,
তাদের দেব-দেবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন
করেছেন, যুদ্ধের পর যুদ্ধ করেছেন, সাহাবায়ে কেরাম (রাযিঃ) সহ দেশ ত্যাগ
করেছেন। তবে কি তিনি ফিতনা করেছেন? (নাঊযুবিল্লাহ্); আমরা অনেকে ফিতনা
বলতে তো এসবকেই বুঝে থাকি। অথচ এ ফিতনা (?) করেই তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠা
করেছেন। আমাদের জ্ঞান-বুদ্ধি কিভাবে উল্টোদিকে ধাবিত হচ্ছে!
দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও
সাহাবারা যে সব অবস্থা ও কর্মকান্ডের ভেতর দিয়ে গিয়েছেন, সেগুলোকেই আমরা
অনেকে ফিতনা ভাবছি। আইয়্যামে জাহেলীয়াতের প্রতিষ্ঠিত ঐক্য নষ্ট করার
কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তারা ‘আল-ক্বাতি’ (যে
সম্পর্কচ্ছেদ করে) নামে ডাকতো। সম্পর্কচ্ছেদ করা, ঐক্য নষ্ট করার নাম
ফিতনা নয়। বরং বিভ্রান্তির অন্ধকারের নাম ফিতনা, যেখানে সত্য-মিথ্যার
বিচার বোধ বিলুপ্ত হয়।
ইমাম হোসাইন (রাযিঃ) ঐক্য নষ্ট করে ফিতনা করেননি বরং ইয়াযীদ সালতানাতের
ঐক্যের মাধ্যমে যে ফিতনা সৃষ্টি করেছিল তারই মোকাবেলা করে হক্বকে
প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ইজতেমায়িয়াত অর্থাৎ ঐক্য সংহতির ধূম্রজাল সৃষ্টি করে
ইয়াযীদ সমগ্র মুসলিম সালতানাতে কি অপকর্মই না করেছে! তার প্রেরিত বাহিনী
পবিত্র মদিনা শহরকে ধ্বংস স্তুপে পরিণত করেছে। র্হারার ঘটনা হিসেবে তা
ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। ইমাম হুসাইন (রাযিঃ) কি তার বিরুদ্ধে দাড়িয়ে ফিতনা
করেছেন? বরং তিনি শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করে ইয়াযীদের ফিতনা দমন
করেছেন। কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর শাহাদাতের রক্ত এ উম্মতকে সঠিক পথ নির্দেশ
দিতে থাকবে। তিনি শহীদ হয়ে চির বিজয়ী বীর হয়ে আছেন, কিন্তু কারবালায়
ফাসেক, জালেম ইয়াযীদ তার সমুদয় কুকীর্তিসহ চিরদিনের জন্য পরাজিত হয়ে
গেছে। কারবালার প্রান্তর যেমন ইমাম হোসাইনের শাহাদাতগাহ্, তেমনি ইয়াযিদী
ফেতনারও দাফনগাহ্।
হাজ্জাজের বিরুদ্ধে সাঈদ বিন যোবায়ের (রাযিঃ) কি ফিতনা করেছেন? হাজ্জাজ
বলেছিল, “আমি জামাতের আমীরের সঙ্গে আছি আর তুমি বিদ্রোহীদের সাথে আছো।”
সাঈদ বিন যোবায়ের (রাযিঃ) উত্তরে বলেন, “আমি জামাত হতে পৃথক নই আর বিবাদও
আমি পছন্দ করি না। আল্লাহর ব্যাপারে তোমার দুঃসাহস এবং তোমার প্রতি
আল্লাহর এ ধৈর্য্য দেখে আমার হাসি পাচ্ছে।”
নূহ (আঃ), ইব্রাহীম (আঃ), মুসা (আঃ), সালেহ্ (আঃ), শোয়াইব (আঃ) তথা সমস্ত
নবী-রাসূলগণ তাঁদের কওমের শিরক কুফর, পাপাচার অনাচারের বিরুদ্ধে
দাঁড়িয়েছেন, যদ্বারা আল্লাহর কালেমা বুলন্দ হয়েছে। এই ফিতনা এবং তা দমনের
নবুয়্যাতী কর্মধারাই সমগ্র মানব ইতিহাসের সার সংক্ষেপ।
নিম্নের কথাগুলো ফিতনার অর্থ ব্যাখ্যা করেঃ
হযরত মাওলানা কাসেম নানুতুবী (রহ.) এর বরাতে ক্বারী তৈয়ব সাহেব (রহ.)
বলেন- “বুনিয়াদী ফিতনা তিন প্রকার। প্রথমতঃ ‘বু’অদ আনিল্লাহ’ অর্থাৎ-
আল্লাহ হতে দুরত্ব। দ্বীনের ব্যাপারে ইহা একটি গোপন ও বুনিয়াদী ব্যাধি।
মানুষের মধ্যে যখন এই ব্যাধি দানা বাঁধে তখন সে দ্বীন হারাতে আরম্ভ করে।
দ্বিতীয়ঃ ‘জুউফে হিম্মত’ বা দুর্বল চিত্ত ও সাহসহীনতা। ইহার ফলে দ্বীনের
মর্যাদা অক্ষুন্ন থাকে না। তৃতীয়ঃ ‘যায়গে কলব’ বা দিলের বক্রতা। ইহার
কারণে দ্বীন নিরাপত্তাহীন ও দৃঢ়তাশূন্য হয়ে পড়ে। দ্বীনের মধ্যে
এস্তেকামাত বা মজবুতী আসতে পারে না।
হযরত আলী (রাযি.) এর খেলাফত মুসলিম উম্মাহর ঐক্যমতের ভিত্তিতে ছিল না।
তাঁর খেলাফতের পুরো সময়টাই যুদ্ধ বিগ্রহের মধ্যে কেটেছে। জঙ্গে জামালে
আয়শা (রাযি.) এর সঙ্গে তিনি যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং জয়ী হন। তালহা (রাযি.)
এবং যোবায়ের (রাযি.) এ যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। সিফ্ফিনে হযরত মুয়াবিয়া
(রাযি.) এর সঙ্গে যুদ্ধে তিনি পরাজিত হন। হাজার হাজার মুসলমান উভয় পক্ষে
শাহাদাত বরণ করেন। খারিজীদের ফিতনা বড় ভয়াবহ ছিল। তাদের নামাজ, কুরআনে
পাকের তেলাওয়াত, তাহাজ্জুদ সাহাবাদেরকেও অভিভুত করত। আল্লাহর কালাম পড়তে
পড়তে তারা যুদ্ধ করত, তলোয়ার চালাতো শাহাদাতের আকাংখায় ও জান্নাতের আশায়।
অথচ তারা ছিল ফিতনাবাজ, বাতিল ও জাহান্নামী। হযরত আলী (রাযি.) এই ফিতনা
দমন করতে গিয়ে তাদের প্রায় চার লক্ষকে কতল করেন। ইমাম বুখারী (রহ.) স্বীয়
কিতাবে এ সম্পর্কে আলাদা বাব্ (অধ্যায়) “কিতাবুল মুয়ানিদীনা ওয়া
মুরতাদদীনা ওয়া কিতালুহুম” রচনা করেন। খোলাফায়ে রাশেদ আলী (রাযি.)
আশারায়ে মোবাশ্শারা যোবায়ের (রাযি.) এবং তালহা (রাযি.), উম্মুল মুমিনীন
আয়শা (রাযি.), কাতেবে ওহী মুয়াবিয়া (রাযি.), সবাই কি ফিতনা করেছেন? অথচ
সমগ্র আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সর্বাদি সম্মত আকিদা তাঁরা হেদায়েত
প্রাপ্ত এবং হেদায়েতের পথ প্রদর্শনকারী। নবী-রাসূল, সাহাবা-তাবেয়ী তথা
পূর্বসুরী সমস্ত আল্লাহ ওয়ালাদের অনুসৃত জীবনধারা প্রকাশ্য দিবালোকের মত
সামনে থাকার পরেও যদি আমরা না বুঝার ভান করি তবে ক্ষতি আমাদেরই। আমরা
নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুঠারাঘাত করছি। মহান আল্লাহ তাঁর কালেমাকে অবশ্যই
জয়ী করবেন। প্রচেষ্টাকারীরা বিনিময় পাবে, পশ্চাদাপসরণকারীরা ধ্বংস হবে।
“এবং তারা বলবে, আমরা যদি শুনতাম অথবা বুঝতাম তবে আজ জাহান্নামীদের মধ্যে
থাকতাম না।” (সূরাঃ আল-মূলক, আয়াত-১০)
©somewhere in net ltd.