নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানবধর্ম

অ‌প্রিয় সত্য

ধর্ষনের রাজ্যে পৃথিবী পশুময়, তনু, মনু, সাবিত্রী, পূর্ণিমারা যেন রক্তাক্ত মানচিত্র..ধর্ম ও পশু মুক্ত সমাজ চাই । নারী বান্ধব রাষ্ট্র্র চাই।

অ‌প্রিয় সত্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারীবাদ ও বাস্তবাতা

১০ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩

এই পোস্টটা নারীবাদীদের চেতনায় আঘাত হানবে, তথাপি লিখতে হচ্ছে।
নাদিয়া শারমিনের কথা মনে আছে? ঐ যে, ২০১৩ সালে হেফাজতের সমাবেশ কভার করতে গিয়ে মারধোর খাওয়া একুশের জার্নালিস্ট? . উনাকে ২০১৫ সালে আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তর হতে International Women of Courage Award দেয়া হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ২০০৭ সাল থেকে এই এওয়ার্ড চালু করে। জীবনের ঝুঁকির বিনিময়ে শান্তি, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, জেন্ডার ইকুয়ালিটি ও নারী ক্ষমতায়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরষ্কার দেয়া হয়। ভালো কথা।
চলুন, ফিরে যাই নাদিয়ার কাছে। ২০১৫ সালে উনার এওয়ার্ড মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাইটে বাঁধাই করা আছে। লেখা আছেঃ . “While assigned to cover a massive rally organized by a coalition of fundamentalist organizations whose platform included a call for revoking Bangladesh’s women’s development policy .... Ms. Sharmeen’s employer refused to cover her medical expenses, and eventually forced her to resign”
তাই?
একুশে টিভি নাদিয়ার চিকিৎসার খরচ চালাতে রাজি হয় নাই? একুশে টিভি জোরপূর্বক নাদিয়াকে চাকরি থেকে ইস্তেফা দিতে বাধ্য করেছিল? হেফাজতের ১৩ দফা কি শুধু নারীনীতির বিরুদ্ধে ছিল?
একুশের প্রশ্নগুলোর উত্তর সেখানের কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে হেফাজতের কথা বলবো। ১৩ দফা শুধু নারীনীতির বিরুদ্ধে ছিল না। ছিল আরো অনেক কিছুর বিপরীতেই।
নাদিয়া নিপীড়িত হয়েছিল যেমন সত্য, তেমনি সত্য তাঁকে মার্কিনিরা কিভাবে গ্লোবালি প্রদর্শন করছেন। ইস্যুটা শুধুই নারীনীতি ছিল না।
এইবার ২০১৬ সালে আসি। কিছুদিন আগে এই বছরের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর আবার IWCA এওয়ার্ড দিলো। ১৪ জন পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে র্যান্ডমলি ৪ জন নারীর অবস্থান দেখিঃ
১) গোয়াতে মালার এটর্নি জেনারেল থেলমা আন্টি। ভদ্রমহিলা সে দেশে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েই কাস্টমস দুর্নীতির অভিযোগে ঐ দেশের প্রেসিডেন্টকে উচ্ছেদ করেছেন। ভালো সংবাদ। এবার আরেকটু ভেতরে তাকাই। উচ্ছেদকৃত প্রেসিডেন্ট এর আগের বছর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে CICIG-কে শক্তিশালীকরণে বাঁধা দিয়েছিলেন।
CICIG কী? গোয়াতে মালা দেশটির ভেতরে বিচার বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট একটা স্বাধীন অর্গানাইজেশন। এটি ২০০৬ সালে জাতিসংঘের সাথে গোয়াতেমালার চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আপনারা সকলেই জানেন, জাতিসংঘের লিড মার্কিনিদের সাথে।
তো এই প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ করলে ক্রমশঃ হন্ডুরাসসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতেও অনুরূপ অর্গানাইজেশন তৈরি করা যেত। ফলে সাউথ আমেরিকায় মার্কিন প্রভাব আরো জোরদার হতো। আপনারা দেখেছেন, কিউবার সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে মার্কিনিদের চেষ্টা অন্ত নাই গত কয়েকবছর ধরে। গ্লোবালি ইমেজ খারাপ হওয়ায় তাঁরা দুই আমেরিকা মহাদেশের জিওপলিটিকাল রি-ইন্ট্রিগেশনে জোর দিয়েছে।
তো গেল বছর গোয়াতে মালার থেলমা আন্টি সুন্দরভাবে কাস্টমস দূর্নীতির মামলায় মার্কিনিদের বাঁধাদানকারী প্রেসিডেন্টকে ধ্বসিয়ে দিয়ে এই বছর IWCA পুরষ্কার নিয়ে গেলেন। গুড।
এবার আরো ৩ জন পুরষ্কারপ্রাপ্ত নারীর দিকে তাকানো যাকঃ
২) ইরাকের ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের নাজামন নাজাওয়াত আন্টি। . উনি ইসলামি স্টেটের হাতে নিগৃহীত নারীদের কাউন্সেলিং করতেন। এতদিনে দুনিয়ার সকলেই কমবেশি অবগত আছেন যে আইএস-এর উত্থানে আমেরিকার হাত কতদূর বিস্তৃত। আমেরিকা এখানে রিভার্স খেলেছে। বিশ্বব্যাপী আইএস দমনে তার অবস্থান দেখানোর জন্য ইয়াজিদিদের সহানুভূতি দেখিয়েছে। গরুমেরে জুতো দান।
৩) রাশিয়ার নারী জার্নালিস্ট ঝান্না নেমসোভা।
উনি রাশান হয়েও লাগাতার রাতভর উপর্যুপরি পুতিনের বিরুদ্ধে লিখে যাচ্ছেন। নেটে জাস্ট উনার নাম লিখে সার্চ করলেই দেখতে পারবেন। আমেরিকা কেন পুতিনের বিরুদ্ধে এক্টিভিজম প্রোমোট করে, তা না বুঝলে এই পোস্ট আর কষ্ট করে পড়ার দরকার নেই। সব কিছু সবার জন্য না।
৪) সারা হোসেন । কে এই সারা হোসেন? ডঃ কামাল হোসেনের মেয়ে। যুদ্ধাপরাধীদের শক্তিশালী লবিস্ট ডেভিড বার্গম্যানের বৌ ।
ডঃ কামালকে একাত্তরের ২৫ শে মার্চ রাতে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে যুদ্ধের পুরো ৯ মাসের উনার উপর কোন আঁচড় পরে নাই এবং ’৭২ সাল থেকে উনার সাথে সিআইএ-র সংযোগ সম্পর্কে লোকমুখে কম রব উঠে নাই। ইনফ্যাক্ট উনি এখনো দেশে সিআইয়ের গুরুত্বভাজন একজন বলেই বিবেচিত। আর উনার মেয়ে এই সারা হোসেন কে জানেন? উনি নারীবাদী সংগঠন ব্ল্যাস্টের নির্বাহী পরিচালক। ’৯৫ সালের নারী নির্যাতন আইনে ধর্ষণ+হত্যার সাজা ছিল মৃত্যুদণ্ড। আমাদের সারা আপুর রিটের বদৌলতে এখন ধর্ষণ+হত্যার সাজা মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। জ্বি, ইনি সেই সারা হোসেন, যিনি নারীবাদ বলে বলে গলা ফাটান।
বাংলার নারী এবং নারীবাদীরা, কী বুঝলেন?
ইট’স অল এবাউট গেইমিং। নারীরে কিভাবে প্রদর্শন করলে সুবিধা হয়, তা বিভিন্ন ব্লক বিভিন্নভাবে বেঁছে নেবে।
কেউ কবিতার দোহাই দিয়ে কাছে টেনে নেবে, কেউ বিপ্লবের। কেউ মাথার ভেতর দিয়ে মনের ভেতরে ঢুকার কথা বলে শরীরের ভেতর ঢুকে যাবে। কেউ পুঁজিবাদের যুগে অর্থনৈতিক মুক্তির দোহাই দিয়ে পণ্যের বিজ্ঞাপনে ছাপতে থাকবে নারীর প্রজ্ঞাপন, চলবে সেক্সুয়াল অবজেক্টিফিকেশন। কেউ দেবে যৌনস্বাধীনতার দোহাই। আর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মতো বড় বড় মাথাগুলো অঞ্চলে অঞ্চলে জিওপলিটিকাল অকুপেশনের জন্য, নিজেদের অবস্থান মৌলবাদী মুভমেন্টের বিপরীতে দেখানোর জন্য, নব্য থ্রেটেনিং পুতিন টাইপের পলিটিকাল শক্তির বিরোধিতার জন্য, দেশে দেশে সিআইএ-র লেগেসি কন্টিনিউ করার জন্য নারীদের ইউজ করবে। এগুলো লিখলে আমি নারীবাদীদের রোষানলে পড়ে যাবো। তবে কাউকে না কেউকে লিখতেই হবে। কারণ এখানে অসংখ্য হিডেন লিংক আছে। একদিন বুঝবেন।
আপনি নারী, গণতান্ত্রিক দেশে আপনি স্বেচ্ছায় ইউজড হবেন কিনা, সেটা আপনার ব্যাপার। তবে আপনি যে বিবিধ উছিলায় ইউজড হইতেছেন, সেই সম্পর্কেও আপনার স্পষ্ট ধারণা রাখা ভালো।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭

বিজন রয় বলেছেন: আপনি নারী, গণতান্ত্রিক দেশে আপনি স্বেচ্ছায় ইউজড হবেন কিনা, সেটা আপনার ব্যাপার। তবে আপনি যে বিবিধ উছিলায় ইউজড হইতেছেন, সেই সম্পর্কেও আপনার স্পষ্ট ধারণা রাখা ভালো।

কেউ ইউজড হয় স্বেচ্ছায়, কেউ বাধ্য হয়ে, তবে প্রথমেই কেউ ইউজড হতে চায় বলে মনে হয় না।

২| ১০ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:২৯

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: কেউ মাথার ভেতর দিয়ে মনের ভেতরে ঢুকার কথা বলে শরীরের ভেতর ঢুকে যাবে। কেউ পুঁজিবাদের যুগে অর্থনৈতিক মুক্তির দোহাই দিয়ে পণ্যের বিজ্ঞাপনে ছাপতে থাকবে নারীর প্রজ্ঞাপন, চলবে সেক্সুয়াল অবজেক্টিফিকেশন। কেউ দেবে যৌনস্বাধীনতার দোহাই। আর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মতো বড় বড় মাথাগুলো অঞ্চলে অঞ্চলে জিওপলিটিকাল অকুপেশনের জন্য, নিজেদের অবস্থান মৌলবাদী মুভমেন্টের বিপরীতে দেখানোর জন্য, নব্য থ্রেটেনিং পুতিন টাইপের পলিটিকাল শক্তির বিরোধিতার জন্য, দেশে দেশে সিআইএ-র লেগেসি কন্টিনিউ করার জন্য নারীদের ইউজ করবে।

ভালই বলেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.