নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাচ্চুর জীবনময় পাপাচার ও আমৃত্যু ঝুলন্ত সম্মাননা

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৫৫



জামায়াতের সাবেক সদস্য (রুকন) আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে আনা আটটি অভিযোগের মধ্যে সাতটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে ফাঁসির রায় দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। রায় ঘোষণার পর বিকালে মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয়-মহানগর কমিটির মুখপাত্র ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ টেলিফোনে বলেন, বাচ্চু এক সময় দলের সদস্য ছিলেন এবং তাকে বহু আগে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে কোন ধরনের মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য কোন ধরনের আলোচনা হয়নি। মাসুদ তার ব্যক্তিগত মতামত হিসাবে বলেন, ট্রাইব্যুনালের প্রতিটি রায় আমরা প্রত্যাখ্যান করবো। এখানে বাচ্চুর রায় কোন বিষয় নয়।

লে ঠেলা সামলা! বাপকে বাদ দিল হারাম খোর জামাত?



গণহত্যা, খুন, ধর্ষণ ও লুটপাটের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চুর নেতৃত্বেই ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খাড়দিয়া গ্রামে 'খাড়দিয়ার মিলিটারি' বাহিনী গঠিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর এই বাহিনী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে খাড়দিয়ার আশেপাশের প্রায় ৫০টি গ্রামে ব্যাপক তাণ্ডবলীলা চালায়। বহু মানুষকে নৃসংশ হত্যা করে 'বাচ্চু রাজাকার' ও তার বাহিনী। তাদের হাতে ধর্ষিত হন নগরকান্দা উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের নতিবদিয়া গ্রামের শোভা রানী বিশ্বাস ও নগেন বিশ্বাসের স্ত্রী দেবী বিশ্বাস।



মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুরের রাজেন্দ কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র আযাদ ছাত্রসংঘের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২৫ মার্চের কালরাতের পর তিনি সহযোগীদের নিয়ে ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান। এ কারণে ফরিদপুর এলাকায় তিনি পরিচিতি পান বাচ্চু রাজাকার নামে।



১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য স্থাপিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের যে আটটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনে, তার মধ্যে সাতটিতে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এসব অভিযোগের মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ ও সপ্তম অভিযোগে হত্যা, গণহত্যা ও ধর্ষণে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আযাদকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।



হত্যা : তৃতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ অভিযোগে আযাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৪ মে আযাদ ১০-১২ জন রাজাকার সদস্যসহ বোয়ালমারী থানার কলারন গ্রামের সুধাংশু মোহন রায়কে গুলি করে হত্যা করেন। এ সময় সুধাংশুর বড় ছেলে মনিময় রায় গুলিতে গুরুতর আহত হন।



চতুর্থ অভিযোগ অনুযায়ী, ওই বছরের ১৬ মে বেলা ৩টার দিকে আযাদ ১০-১২ জন রাজাকার সদস্যকে নিয়ে সালথা থানার (সাবেক নগরকান্দা) পুরুরা নমপাড়া গ্রামে যান এবং মাধব চন্দ্র বিশ্বাসকে গুলি করে হত্যা করেন।



আর ৩ জুন আযাদের নেতৃত্বে ১০-১২ জন রাজাকার সদস্য সালথার ফুলবাড়িয়া গ্রামে হিন্দুপাড়ায় লুটপাট চালায়। সেখানে তারা চিত্তরঞ্জন দাসকে গুলি করে হত্যা করে বলে ষষ্ঠ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।



গণহত্যা :সপ্তম অভিযোগে বলা হয়, ১৭ মে রাজাকার বাহিনীর ৩০-৩৫ জন সদস্যকে নিয়ে আযাদ বোয়ালমারী থানার হাসামদিয়া গ্রামের হিন্দুপাড়ায় লুটপাট চালন এবং ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন। পরে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শরত্ চন্দ্র পোদ্দার, সুরেশ পোদ্দার, শ্যামাপদ পোদ্দার, যতীন্দ্র মোহন সাহা, নীল রতন সমাদ্দার, সুবল কয়াল ও মল্লিক চক্রবর্তীকে হত্যা করেন তারা। হরিপদ সাহা ও প্রবীর কুমার সাহা ওরফে পুইট্যাকে অপহরণের পর ময়েনদিয়া বাজারের নদীর ঘাটে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।



অপহরণ ও নির্যাতন :প্রথম অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে সকাল ১০টার দিকে আযাদ ও তার সহযোগীরা ফরিদপুর শহরের খাবাশপুরের রণজিত্ নাথ ওরফে বাবু নাথকে ধরে নির্যাতন করে সার্কিট হাউসে নিয়ে যায়। সেখানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মেজর আকরাম কোরাইশির সঙ্গে মুজাহিদও উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে রণজিেক হত্যার জন্য ফরিদপুর জিলা স্কুলের সামনে এবং পরে বিহারি কলোনির পূর্বাংশে মোল্লাবাড়ি রোডে রশিদ মিয়ার বাড়িতে নিয়ে যান আযাদ। সেখানে আটকে রেখে রণজিতের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। তবে গভীর রাতে রণজিত্ জানালা ভেঙে পালিয়ে যান।



পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ৮ জুন দুপুর ১২টার দিকে আযাদ রাজাকার সদস্যদের নিয়ে বোয়ালমারী থানার নতিবদিয়া গ্রামের এক হিন্দু বাড়িতে হামলা চালান। আযাদ ও তার সহযোগীরা ওই বাড়ির দুই নারীকে ধর্ষণ করেন।



অষ্টম অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৮ মে সকাল ১০টার দিকে আযাদ সাত-আটজন রাজাকার সদস্যকে নিয়ে সালথা থানার উজিরপুর বাজারপাড়া গ্রাম থেকে হিন্দু এক তরুণীকে অপহরণ করে খাড়দিয়া গ্রামের চান কাজীর বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করেন। সাত-আট দিন পর মুক্তি পান ওই তরুণী। প্রসিকিউশনের উপস্থাপিত তথ্য- আলামতে আযাদের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়।



কেবল দ্বিতীয় অভিযোগটি প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি। এতে বলা হয়, ২৬ জুলাই বেলা ১১টার দিকে আলফাডাঙ্গা থেকে ধরে আনা আবু ইউসুফ নামের এক ব্যক্তিকে ফরিদপুর স্টেডিয়ামে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করেন আযাদ। ইউসুফ স্টেডিয়ামের বিভিন্ন ঘরে খলিলুর রহমান, মাসুদ, হামিদসহ ৪০০-৫০০ নারী ও পুরুষকে আটক অবস্থায় দেখেন। এক মাস ১৩ দিন সেখানে আটক থাকাকালে কিশোরীদের অপহরণ করে এনে তাদের ওপর আযাদ ও তার সহযোগীদের নির্যাতন চালাতে দেখেন ইউসুফ।



যেভাবে বেড়ে ওঠা :১৯৪৭ সালের ৫ মার্চ ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খাড়দিয়া গ্রামে জন্ম নেন আবুল কালাম আযাদ। এলাকার মানুষ তাকে ছেলেবেলায় চিনতো 'খাড়দিয়ার বাচ্চু' নামে। তার বাবার নাম সালাম মিয়া। দারিদ্র্যর মধ্যে বড় হওয়া বাচ্চু মাদ্রাসা শিক্ষা শেষে ভর্তি হন ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে। বাকপটু হওয়ায় কলেজে দ্রুত পরিচিতি পান। ওই সময় শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে গোলাবারুদ ও অস্ত্র নিয়ে খাড়দিয়ায় নিজস্ব সহযোগী বাহিনী গড়ে তোলেন আযাদ ওরফে বাচ্চু। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান আযাদ। আবু সাঈদ খান প্রণীত 'মুক্তিযুদ্ধে ফরিদপুর' গ্রন্থের ১৬৯-১৭০ পৃষ্ঠায় বলা হয়, 'বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানায় '৭২ সালে দালাল আইনে যে মামলা হয়েছিল তাতে তাকে গ্রেফতার করে হাজতে ঢোকানো হয়। কিন্তু ১৯৭৫ পরবর্তী রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে কারাগার থেকে ছাড়া পান বাচ্চু। 'মাওলানা আবুল কালাম আযাদ' নাম নিয়ে শুরু করেন নতুন জীবন। পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সরকারের সময়ে নেতাদের ব্যবহার করে কিছু টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে ধীরে ধীরে 'ইসলামী চিন্তাবিদ' হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী আযাদ। বেসরকারি টিভি ব্যক্তিত্ব ও ইসলামের সেবক হিসেবে নিজেকে জাহির করা এই সাবেক জামায়াত নেতা ২০০৮ সালে এক টিভি অনুষ্ঠানে দাবি করেন, তিনি রাজাকার ছিলেন না।



আবুল কালাম আযাদ দীর্ঘদিন জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সভাপতির পদ ব্যবহার করে কর্মকাণ্ড চালান। পরে নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের কারণে নতুন সংগঠন বাংলাদেশ মসজিদ কাউন্সিল গঠন করে তার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হন। ২০১২ সালের এপ্রিলে 'অনিবার্য কারণ' দেখিয়ে তিনি ওই সংগঠনের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি নেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আযাদের রাইফেলের গুলিতে দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় ২০০১ সালে দুটি মামলা হলেও পরে তা চাপা পড়ে যায়। বর্তমান সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরুর উদ্যোগ নেয়ার পর জামায়াতের অন্য শীর্ষ নেতাদের মতো আযাদের বিষয়েও তদন্ত শুরু হয়।গণহত্যা, খুন, ধর্ষণ ও লুটপাটের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চুর নেতৃত্বেই ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খাড়দিয়া গ্রামে 'খাড়দিয়ার মিলিটারি' বাহিনী গঠিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর এই বাহিনী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে খাড়দিয়ার আশেপাশের প্রায় ৫০টি গ্রামে ব্যাপক তাণ্ডবলীলা চালায়। বহু মানুষকে নৃসংশ হত্যা করে 'বাচ্চু রাজাকার' ও তার বাহিনী। তাদের হাতে ধর্ষিত হন নগরকান্দা উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের নতিবদিয়া গ্রামের শোভা রানী বিশ্বাস ও নগেন বিশ্বাসের স্ত্রী দেবী বিশ্বাস।



মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুরের রাজেন্দ কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র আযাদ ছাত্রসংঘের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২৫ মার্চের কালরাতের পর তিনি সহযোগীদের নিয়ে ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান। এ কারণে ফরিদপুর এলাকায় তিনি পরিচিতি পান বাচ্চু রাজাকার নামে।



১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য স্থাপিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের যে আটটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনে, তার মধ্যে সাতটিতে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এসব অভিযোগের মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ ও সপ্তম অভিযোগে হত্যা, গণহত্যা ও ধর্ষণে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আযাদকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।



হত্যা : তৃতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ অভিযোগে আযাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৪ মে আযাদ ১০-১২ জন রাজাকার সদস্যসহ বোয়ালমারী থানার কলারন গ্রামের সুধাংশু মোহন রায়কে গুলি করে হত্যা করেন। এ সময় সুধাংশুর বড় ছেলে মনিময় রায় গুলিতে গুরুতর আহত হন।



চতুর্থ অভিযোগ অনুযায়ী, ওই বছরের ১৬ মে বেলা ৩টার দিকে আযাদ ১০-১২ জন রাজাকার সদস্যকে নিয়ে সালথা থানার (সাবেক নগরকান্দা) পুরুরা নমপাড়া গ্রামে যান এবং মাধব চন্দ্র বিশ্বাসকে গুলি করে হত্যা করেন।



আর ৩ জুন আযাদের নেতৃত্বে ১০-১২ জন রাজাকার সদস্য সালথার ফুলবাড়িয়া গ্রামে হিন্দুপাড়ায় লুটপাট চালায়। সেখানে তারা চিত্তরঞ্জন দাসকে গুলি করে হত্যা করে বলে ষষ্ঠ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।



গণহত্যা :সপ্তম অভিযোগে বলা হয়, ১৭ মে রাজাকার বাহিনীর ৩০-৩৫ জন সদস্যকে নিয়ে আযাদ বোয়ালমারী থানার হাসামদিয়া গ্রামের হিন্দুপাড়ায় লুটপাট চালন এবং ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন। পরে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শরত্ চন্দ্র পোদ্দার, সুরেশ পোদ্দার, শ্যামাপদ পোদ্দার, যতীন্দ্র মোহন সাহা, নীল রতন সমাদ্দার, সুবল কয়াল ও মল্লিক চক্রবর্তীকে হত্যা করেন তারা। হরিপদ সাহা ও প্রবীর কুমার সাহা ওরফে পুইট্যাকে অপহরণের পর ময়েনদিয়া বাজারের নদীর ঘাটে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।



অপহরণ ও নির্যাতন :প্রথম অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে সকাল ১০টার দিকে আযাদ ও তার সহযোগীরা ফরিদপুর শহরের খাবাশপুরের রণজিত্ নাথ ওরফে বাবু নাথকে ধরে নির্যাতন করে সার্কিট হাউসে নিয়ে যায়। সেখানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মেজর আকরাম কোরাইশির সঙ্গে মুজাহিদও উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে রণজিেক হত্যার জন্য ফরিদপুর জিলা স্কুলের সামনে এবং পরে বিহারি কলোনির পূর্বাংশে মোল্লাবাড়ি রোডে রশিদ মিয়ার বাড়িতে নিয়ে যান আযাদ। সেখানে আটকে রেখে রণজিতের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। তবে গভীর রাতে রণজিত্ জানালা ভেঙে পালিয়ে যান।



পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ৮ জুন দুপুর ১২টার দিকে আযাদ রাজাকার সদস্যদের নিয়ে বোয়ালমারী থানার নতিবদিয়া গ্রামের এক হিন্দু বাড়িতে হামলা চালান। আযাদ ও তার সহযোগীরা ওই বাড়ির দুই নারীকে ধর্ষণ করেন।



অষ্টম অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৮ মে সকাল ১০টার দিকে আযাদ সাত-আটজন রাজাকার সদস্যকে নিয়ে সালথা থানার উজিরপুর বাজারপাড়া গ্রাম থেকে হিন্দু এক তরুণীকে অপহরণ করে খাড়দিয়া গ্রামের চান কাজীর বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করেন। সাত-আট দিন পর মুক্তি পান ওই তরুণী। প্রসিকিউশনের উপস্থাপিত তথ্য- আলামতে আযাদের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়।



কেবল দ্বিতীয় অভিযোগটি প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি। এতে বলা হয়, ২৬ জুলাই বেলা ১১টার দিকে আলফাডাঙ্গা থেকে ধরে আনা আবু ইউসুফ নামের এক ব্যক্তিকে ফরিদপুর স্টেডিয়ামে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করেন আযাদ। ইউসুফ স্টেডিয়ামের বিভিন্ন ঘরে খলিলুর রহমান, মাসুদ, হামিদসহ ৪০০-৫০০ নারী ও পুরুষকে আটক অবস্থায় দেখেন। এক মাস ১৩ দিন সেখানে আটক থাকাকালে কিশোরীদের অপহরণ করে এনে তাদের ওপর আযাদ ও তার সহযোগীদের নির্যাতন চালাতে দেখেন ইউসুফ।



যেভাবে বেড়ে ওঠা :১৯৪৭ সালের ৫ মার্চ ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খাড়দিয়া গ্রামে জন্ম নেন আবুল কালাম আযাদ। এলাকার মানুষ তাকে ছেলেবেলায় চিনতো 'খাড়দিয়ার বাচ্চু' নামে। তার বাবার নাম সালাম মিয়া। দারিদ্র্যর মধ্যে বড় হওয়া বাচ্চু মাদ্রাসা শিক্ষা শেষে ভর্তি হন ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে। বাকপটু হওয়ায় কলেজে দ্রুত পরিচিতি পান। ওই সময় শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে গোলাবারুদ ও অস্ত্র নিয়ে খাড়দিয়ায় নিজস্ব সহযোগী বাহিনী গড়ে তোলেন আযাদ ওরফে বাচ্চু। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান আযাদ। আবু সাঈদ খান প্রণীত 'মুক্তিযুদ্ধে ফরিদপুর' গ্রন্থের ১৬৯-১৭০ পৃষ্ঠায় বলা হয়, 'বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানায় '৭২ সালে দালাল আইনে যে মামলা হয়েছিল তাতে তাকে গ্রেফতার করে হাজতে ঢোকানো হয়। কিন্তু ১৯৭৫ পরবর্তী রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে কারাগার থেকে ছাড়া পান বাচ্চু। 'মাওলানা আবুল কালাম আযাদ' নাম নিয়ে শুরু করেন নতুন জীবন। পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সরকারের সময়ে নেতাদের ব্যবহার করে কিছু টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে ধীরে ধীরে 'ইসলামী চিন্তাবিদ' হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী আযাদ। বেসরকারি টিভি ব্যক্তিত্ব ও ইসলামের সেবক হিসেবে নিজেকে জাহির করা এই সাবেক জামায়াত নেতা ২০০৮ সালে এক টিভি অনুষ্ঠানে দাবি করেন, তিনি রাজাকার ছিলেন না।



আবুল কালাম আযাদ দীর্ঘদিন জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সভাপতির পদ ব্যবহার করে কর্মকাণ্ড চালান। পরে নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের কারণে নতুন সংগঠন বাংলাদেশ মসজিদ কাউন্সিল গঠন করে তার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হন। ২০১২ সালের এপ্রিলে 'অনিবার্য কারণ' দেখিয়ে তিনি ওই সংগঠনের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি নেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আযাদের রাইফেলের গুলিতে দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় ২০০১ সালে দুটি মামলা হলেও পরে তা চাপা পড়ে যায়। বর্তমান সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরুর উদ্যোগ নেয়ার পর জামায়াতের অন্য শীর্ষ নেতাদের মতো আযাদের বিষয়েও তদন্ত শুরু হয়।



Click Here to See Summary of ICT Verdict in Abul Kalam Azad Case

Click Here to See Full Text of the Judgment

Click Here to See Charges in Full

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৩০

শিনজন বলেছেন: লে ঠেলা সামলা! বাপকে বাদ দিল হারাম খোর জামাত? শত ধিক জামাত।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৪৪

তালপাতারসেপাই বলেছেন: হদিস নেই আযাদের

২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১২

শিনজন বলেছেন: ভাইজান, হদিস চাই আযাদের

৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

প্রগতিশীল ইকবাল বলেছেন: This is political tribunal so political verdict..nothing else.............

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.