নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
সম্প্রতি ব্লাসফেমি আইন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির মধ্যে কিছু দাবির কারণে এ আইন আলোচনায় আসে। কিছু মানুষ আইনটি সম্পর্কে জানলেও অনেকেরই বিষয়টি নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। কী পরিপ্রেক্ষিতে, কবে এবং কারা করেছিল এ আইন, এমন প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক। এ আইনের সাজা সম্পর্কেও আগ্রহ থাকা অস্বাভাবিক কিছুই নয়।
প্রথমে জেনে নেই হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর ১৩ দফা দাবিগুলো কি:
১. সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী সব আইন বাতিল করা।
২. আল্লাহ্, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস।
৩. কথিত শাহবাগি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিক-মুরতাদ এবং প্রিয় নবী (সা.)-এর শানে জঘন্য কুৎসা রটনাকারী ব্লগার ও ইসলামবিদ্বেষীদের সব অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করা।
৪. ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয়
সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।
৫. ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা।
৬. সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।
৭. মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করা।
৮. জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করা।
৯. রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামি কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয়
লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করা।
১০. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিষ্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।
১১. রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র ও তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করা।
১২. সারা দেশের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ ও মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি দানসহ তাঁদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করা।
১৩. অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত সব আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও তৌহিদি জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
এদিকে গতকাল সকালে বিবিসিতে প্রকাশিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘দেশে ব্লাসফেমি আইনের পরিকল্পনা নেই।’
তবে বিএনপি বাংলাদেশে ইসলাম অবমাননার জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ব্লাসফেমি ধরণের আইন তৈরির সম্ভাবনা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নাকচ করে দেয়ার বিষয়ে বিএনপির অস্বচ্ছ বক্তব্য বিষয়টিকে জটীল করেছে।
উইকিপিডিয়া, আল জাজিরা ও পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১ হাজার ৪৫০ বছর আগে রোমের সামন্ত রাজারা খ্রিস্টান ক্যাথলিক চার্চের যাজকদের সহায়তায় জনগণের ওপর ধর্মের নামে যে অত্যাচার করেছিল তার নামই দেওয়া হয় ব্লাসফেমি। তবে ইসলামের ইতিহাসে এ ধরনের আইনের কোনও ধারণা নেই। ব্লাসফেমি মানে, ‘ধর্ম নিন্দা’ বা ‘ঈশ্বর নিন্দা’। সামন্ত রাজাদের আমলে রাজা-বাদশাহদের বলা হতো ঈশ্বরের প্রতিনিধি। তাই তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা মানেই ‘ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বলা’ বলে দাবি করা হতো। সে সময় রাজা-বাদশাহদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে যাতে কোনও আন্দোলন গড়ে উঠতে না পারে, সেজন্য ব্লাসফেমি নামের ওই কালো আইন তৈরি করা হয়েছিল।
পাকিস্তানের স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়াউল হক ইসলাম ধর্মের নামে স্বৈরশাসন টিকিয়ে রাখতে মধ্যযুগের এই আইনটিকে ধার করে। পাকিস্তানের দণ্ডবিধিতে তা সংযুক্ত করা হয়। পাকিস্তান পেনাল কোড চ্যাপ্টার ১৫-এর বিভিন্ন ধারায় তা উল্লেখ করে এর শাস্তির পরিমাণ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত রাখা হয়। পেনাল কোডের ২৯৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ধর্মকে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় আক্রমণ করা বা হেয় করা, ২৯৫(ক) কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়কে বা তাদের বিশ্বাসকে আঘাত করা বা অপমান করার জন্য কোনো কিছু বলা বা করা, ২৯৫(খ) কোনো ধর্মগ্রন্থের অপমান, যেমন কোরআন, ২৯৫(গ) মহানবী (সা.) সম্পর্কে অপমানসূচক বা ঘৃণ্য বক্তব্য দেওয়া, (২৯৬) কোনো ধর্মীয় সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করা, (২৯৭) কোনো ধর্মীয় কবরস্থানে বেআইনি অনুপ্রবেশ করা, (২৯৮) ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোনো কথা বলা, ২৯৮(ক) কোনো ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে অপমানসূচক কোনো উপাধি দেওয়া, ২৯৮(খ) কোনো ধর্মীয় ব্যক্তি বা স্থান সম্পর্কে প্রচলিত সম্মানিত বিশ্বাসের অপব্যবহার করা বা হেয় করা, ২৯৮(গ) আহমদিয়া বা কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের কেউ যদি নিজেকে মুসলিম বলে পরিচয় দেয় অথবা তার ধর্ম প্রচার করে।’ এ আইনে অনেককেই যাবজ্জীবন এবং মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। পাকিস্তানে চালু করা ব্লাসফেমি থেকে নেওয়া আইনের দুটি ধারা কিছুটা পরিমার্জন করে বাংলাদেশের সংসদে বিল আকারে পেস করেছিলেন জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী। ধারা দুটি ছিল, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোরআন কিংবা এর কোনো অংশের কোনো অবমাননা, ক্ষতিসাধন ও পবিত্রতাহানি করবে, তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হবে এবং যে ব্যক্তি মৌখিক কিংবা লিখিতভাবে, ইঙ্গিতে বা বাহ্যিক ব্যবহারের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পবিত্র নামের অবমাননা করবে সে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে কিংবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করবে এবং তাকে জরিমানাও করা যেতে পারে।
হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির মধ্যে দুটি দাবি ব্লাসফেমির আইনের ন্যায়। এর মধ্যে একটি হলো
‘আল্লাহ, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে।’ অপরটি হলো ‘কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।’
০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৩
তালপাতারসেপাই বলেছেন: দাড়ুন!
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:১৩
াহো বলেছেন: সৌদি আরবের জেদ্দায় এই THE FIST নামের ভাস্কর্য বানানো হয়েছে প্রায় ২০ বছরেরও আগে, ছাগুরা যা মুর্তি বলেই জানে, তো ছাগু এবং হেফাজতের ছাগুরা পারলে এই মুর্তিটা ভাইঙ্গা আসো জোর থাকলে ।