নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গ ইসলাম: শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪২০

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬

এসো হে বৈশাখ এসো এসো… তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে, বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক। প্রথমেই সবাইকে জানই শুভ নববর্ষ।৷



বাংলা সন বাংলাদেশের মানুষের নিজস্ব সন, যে কারণে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে বাঙালীয়ানা হবার উৎসাহ-উদ্দীপনা ব্যাপক তৎপরতা দেখা যায়, বাঙালীয়ানার স্ফুরণ ঘটে। ছোটবেলায় এই দিনটিকে বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করতে দেখেছি। আমাদের ছিল বেশ বড় জমিদারী। পয়লা বোশেখে আমাদের বাড়িতে শুভ পুণ্যাহের আয়োজন করা হতো। মাটির অথবা পিতলের তৈরি অনেকগুলো কলস সাজিয়ে রাখা হতো। প্রজারা সাধ্যিমতো সেজেগুজে আসতো খাজনা দিতে। তাদের চেহারায় থাকত উৎসবের আমেজ। কাচারী ঘরে সারি দিয়ে নায়েব-গোমস্তারা তৌজি দাখিলা নিয়ে বসত। প্রজারা খাজরা দিয়ে দাখিলা নিত। তাদের দেয়া হতো শোলার মালা আর মিষ্টি। মিষ্টির মধ্যে থাকত দানাদার, চিনির বাতাসা জিলেপি ইত্যাদি। পুণ্যাহর সূচনা হতো মিলাদ মহফিল দ্বারা। মিলাদ মহফিলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, থানা ও মহকুমার কর্মকর্তাগণ, মসজিদের ইমামগণকে দাওয়াত দেয়া হতো। মিলাদ শেষে মুনাজাতে নতুন বছরের কল্যাণ কামনা করা হতো। জমিদারি উচ্ছেদ হওয়ায় এখন আর শুভ পুণ্যাহ হয় না। তবে ব্যবসায়ীগণ হালখাতা করেন।

কুরআন মজীদে বর্ষগণনার ওপর খুবই গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। আল্লাহ জাল্লা শানুহু ইরশাদ করেন : আমি রাত্রি ও দিবসকে করেছি দু’টো নিদর্শন। রাত্রির নিদর্শনকে করেছি অপসারিত এবং দিবসের নিদর্শনকে করেছি আলোকপ্রদ, যাতে তোমরা তোমাদের রব-এর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পারো এবং যাতে তোমরা বর্ষ সংখ্যা (সন) ও হিসাব স্থির করতে পারো। (সূরা বনী ইসরাইল : আয়াত-১২)।

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে : তিনিই (আল্লাহ) সূর্যকে করেছেন তেজস্কর এবং চন্দ্রকে করেছেন জ্যোতির্ময় যাতে তোমরা বর্ষগণনা (সন) করতে পারো এবং ওর মনযিল (তিথি) নির্দিষ্ট করেছেন এবং সময়ের হিসেব জানতে পারো। আল্লাহ এসব নিরর্থক সৃষ্টি করেননি। জ্ঞানী কওমের জন্য তিনি এ সমস্ত নিদর্শন বিশদভাবে বিবৃত করেন। (সূরা ইউনুস : আয়াত ৫)।

বাংলাদেশে প্রাচীনকালে হেমন্তকালে নতুন ফসল উঠার উৎসব হিসাবে উদ্যাপিত হতো নবান্ন উৎসব। এই উৎসবই ছিল তখনকার নববর্ষ উৎস। যে মাসে এই উৎসব হতো সে মাসের নাম অগ্রহায়ণ অর্থাৎ অগ্রবছর। বাংলা সন আসার পূর্বে এখানে শকাব্দের প্রচলন থাকলেও সেটা সাধারণ্যে তেমন একটা দাগ কাটতে পারেনি; তবে হিন্দু সমাজে নানা পুজো পার্বণ হতো যা কমবেশি এখনও প্রচলিত আছে। বসন্তকালের শেষ মাস চৈত্র ছিল শকাব্দের প্রথম মাস। মুঘল সম্রাট জালালুদ্দীন মুহম্মদ আকবরের আমলে রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে রাষ্ট্রীয় সন হিজরীকে যথাস্থানে চলমান রেখে ৯৬৩ হিজরীকে সৌরগণনায় এনে একটি সনের উদ্ভাব ঘটানো হয় যা ইলাহী সন, ফসলী সন নামে অভিহিত হলেও তখনকার সুবা বাঙ্গালায় এসে এটা সর্বমহলে পরিচিত হয় বাংলা সন নামে। এখানে প্রচলিত শকাব্দের দ্বিতীয় মাস বৈশাখকে প্রথম মাস হিসেবে ধরে বাংলা সন এগিয়ে যেতে থাকে। এই নতুন সনের মাসগুলো শকাব্দ থেকে নেয়া হয়। মাসগুলোর নামকরণ হয়েছিল বিভিন্ন নক্ষত্রের নামেÑ যে কারণে ওই মাসগুলো গ্রহণ করতে গিয়ে কোনরূপ প্রশ্নের অথবা বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়নি। বৈশাখ মাসের নামকরণ করা হয় বিশাখা নক্ষত্রের নামে, জ্যৈষ্ঠ মাসের নামকরণ করা হয় জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রের নামে, আষাঢ় মাসের নামকরণ করা হয় আষাঢ়া নক্ষত্রের নামে, শ্রাবণ মাসের নামকরণ করা হয় শ্রবণা নক্ষত্রের নামে, ভাদ্র মাসের নামকরণ করা হয় ভাদ্রপদা লক্ষত্রের নামে, আশ্বিন মাসের নামকরণ করা হয় অশ্বিনী নক্ষত্রের নামে, কার্তিক মাসের নামকরণ করা হয় কৃত্তিকা নক্ষত্রের নামে, পৌষ মাসের নামকরণ করা হয় পুষ্যা নক্ষত্রের নামে, মাঘ মাসের নামকরণ করা হয় মঘা নক্ষত্রের নামে, ফাল্গুন মাসের নামকারণ করা হয় ফাল্গুনী নক্ষত্রের নামে, চৈত্র মাসের নামকরণ করা হয় চিত্রা নক্ষত্রের নামে।

মূলত বাংলা সনের উৎপত্তি হয়েছে হিজারী সন থেকে। হিজরী সন ধারণ করে আছে প্রিয় নবী সরকারের দোআলম নূরে মুজাসসম হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লামের ৬২২ খৃস্টাব্দে মক্কা মুকাররম থেকে মদীনা মনওয়ারায় হিজরতের সেই ঐতিহাসিক স্মৃতি। বাংলাদেশে মসলিম শাসনের গোড়াপত্তন হয় ১২০১ খৃস্টাব্দে। এখানে স্বাধীন সালতানাতের। হিজরী সনকে সালতানাতের সন হিসেবে গ্রহণ করা হয়। হিজরী সন চান্দ্র সন হওয়ায় ঋতুর সঙ্গে এর মাসগুলো স্থির থাকে না; ফলে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কয়েক বছর অন্তর দারুণ জটিলতা হওয়া দেখে মুঘল সম্রাট জালালুদ্দীন মুহম্মদ আকবরের নির্দেশে বহু গবেষণা করে তখনকার একজন বিশেষ জ্যোতিবিজ্ঞানী আমীর ফতেহুল্লাহ সিরাজী আকবরের মসনদে আরোহণ কালের ৯৬৩ হিজরীকে সৌর গণনায় এনে বাংলা সনের উদ্ভব ঘটান। হিজরী সন ইসলামী সন।

ইসলাম সৌর ও চান্দ্র উভয় প্রকারের বর্ষ গণনার সমান গুরুত্ব আরোপ করেছে। সৌর সনে বছর হয় ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডে; আর চান্দ্র সনে বছর হয় ৩৫৪ দিন ৮ ঘণ্টা ৪৮ মিনিটে।

বাংলাদেশের মানুষ প্রতি বছর তিনটে নববর্ষের মুখোমুখি হয়। বাংলা নববর্ষ আসে বসন্তকালকে বিদায় জানিয়ে কাল বোশেখীর সম্ভাবনাকে ধারণ করে গ্রীষ্মকালের সূচনাতে। পয়লা বৈশাখ পালিত হয় বাংলা নববর্ষ। ইংরেজী নববর্ষ আসে প্রচ- শীতে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ১ জানুয়ারিতে গভীর রাতে, আর হিজরী নববর্ষ আসে ১ মুহররমে ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে। পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশে বর্তমান প্রচলিত সর্বপ্রাচীন সন হচ্ছে হিজরী সন আর এই হিজরী সন থেকেই বিকশিত হয়েছে বাংলা সন, বহু পরে ১৭৫৭ খৃস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এখানে এসেছে খৃষ্টাব্দ বা ইংরেজী সন। হালখাতা, ফসল তোলা, ফসলবোনা, বিয়ে শাদি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলা সনের তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে বহু ইসলামী জলসা, ইসালে সওয়াব ও ওয়াজ মহফিল, উরস মুবারক অনুষ্ঠিত হয় বাংলা সনের নির্ধারিত তারিখে, যেমন : ফুরফুরা শরীফের ইসালে সওয়াব ও ওয়াজ মহফিল অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের ২১, ২২ ও ২৩ তারিখে, খড়কী শরীফে প্রতিবছর ১৬ চৈত্র অনুষ্ঠিত হয় উরস মুবারক, প্রতিবছর ৪ মাঘ অনুষ্ঠিত হয় দ্বারিয়াপুর শরীফের ইসালে সওয়াব ও ওয়াজ মহফিল।

আমাদের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটেছিল ৮ ফাল্গুন। আমরা সেই ৮ ফাল্গুন যেন ভুলে বসেছি। সেদিনটা পালিত হয় একুশে ফেব্রুয়ারিতে। এটা অনেকের মনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করে। অবশ্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে একুশে ইদানীং গুরুত্ব লাভ করেছে।

১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে গঠিত বাংলা পঞ্জিকা সংস্কার উপসংঘ বাংলা সনের কিছু কিছু সংস্কার করা হয়। সেই সংস্কার করা বাংলা ক্যালেন্ডার বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত রয়েছে।

হিজরী সনের সঙ্গে যেমন বাংলা সনের সম্পর্ক সুনিবিড়, তেমনি এই দু’টি সনের সঙ্গে বাংলাদেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর সম্পর্কও সুনিবিড়।বাংলা সন বাংলাদেশের মানুষের নিজস্ব সন, যে কারণে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে বাঙালীয়ানা হবার উৎসাহ-উদ্দীপনা ব্যাপক তৎপরতা দেখা যায়, বাঙালীয়ানার স্ফুরণ ঘটে। ছোটবেলায় এই দিনটিকে বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করতে দেখেছি। আমাদের ছিল বেশ বড় জমিদারী। পয়লা বোশেখে আমাদের বাড়িতে শুভ পুণ্যাহের আয়োজন করা হতো। মাটির অথবা পিতলের তৈরি অনেকগুলো কলস সাজিয়ে রাখা হতো। প্রজারা সাধ্যিমতো সেজেগুজে আসতো খাজনা দিতে। তাদের চেহারায় থাকত উৎসবের আমেজ। কাচারী ঘরে সারি দিয়ে নায়েব-গোমস্তারা তৌজি দাখিলা নিয়ে বসত। প্রজারা খাজরা দিয়ে দাখিলা নিত। তাদের দেয়া হতো শোলার মালা আর মিষ্টি। মিষ্টির মধ্যে থাকত দানাদার, চিনির বাতাসা জিলেপি ইত্যাদি। পুণ্যাহর সূচনা হতো মিলাদ মহফিল দ্বারা। মিলাদ মহফিলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, থানা ও মহকুমার কর্মকর্তাগণ, মসজিদের ইমামগণকে দাওয়াত দেয়া হতো। মিলাদ শেষে মুনাজাতে নতুন বছরের কল্যাণ কামনা করা হতো। জমিদারি উচ্ছেদ হওয়ায় এখন আর শুভ পুণ্যাহ হয় না। তবে ব্যবসায়ীগণ হালখাতা করেন।

কুরআন মজীদে বর্ষগণনার ওপর খুবই গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। আল্লাহ জাল্লা শানুহু ইরশাদ করেন : আমি রাত্রি ও দিবসকে করেছি দু’টো নিদর্শন। রাত্রির নিদর্শনকে করেছি অপসারিত এবং দিবসের নিদর্শনকে করেছি আলোকপ্রদ, যাতে তোমরা তোমাদের রব-এর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পারো এবং যাতে তোমরা বর্ষ সংখ্যা (সন) ও হিসাব স্থির করতে পারো। (সূরা বনী ইসরাইল : আয়াত-১২)।

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে : তিনিই (আল্লাহ) সূর্যকে করেছেন তেজস্কর এবং চন্দ্রকে করেছেন জ্যোতির্ময় যাতে তোমরা বর্ষগণনা (সন) করতে পারো এবং ওর মনযিল (তিথি) নির্দিষ্ট করেছেন এবং সময়ের হিসেব জানতে পারো। আল্লাহ এসব নিরর্থক সৃষ্টি করেননি। জ্ঞানী কওমের জন্য তিনি এ সমস্ত নিদর্শন বিশদভাবে বিবৃত করেন। (সূরা ইউনুস : আয়াত ৫)।

বাংলাদেশে প্রাচীনকালে হেমন্তকালে নতুন ফসল উঠার উৎসব হিসাবে উদ্যাপিত হতো নবান্ন উৎসব। এই উৎসবই ছিল তখনকার নববর্ষ উৎস। যে মাসে এই উৎসব হতো সে মাসের নাম অগ্রহায়ণ অর্থাৎ অগ্রবছর। বাংলা সন আসার পূর্বে এখানে শকাব্দের প্রচলন থাকলেও সেটা সাধারণ্যে তেমন একটা দাগ কাটতে পারেনি; তবে হিন্দু সমাজে নানা পুজো পার্বণ হতো যা কমবেশি এখনও প্রচলিত আছে। বসন্তকালের শেষ মাস চৈত্র ছিল শকাব্দের প্রথম মাস। মুঘল সম্রাট জালালুদ্দীন মুহম্মদ আকবরের আমলে রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে রাষ্ট্রীয় সন হিজরীকে যথাস্থানে চলমান রেখে ৯৬৩ হিজরীকে সৌরগণনায় এনে একটি সনের উদ্ভাব ঘটানো হয় যা ইলাহী সন, ফসলী সন নামে অভিহিত হলেও তখনকার সুবা বাঙ্গালায় এসে এটা সর্বমহলে পরিচিত হয় বাংলা সন নামে। এখানে প্রচলিত শকাব্দের দ্বিতীয় মাস বৈশাখকে প্রথম মাস হিসেবে ধরে বাংলা সন এগিয়ে যেতে থাকে। এই নতুন সনের মাসগুলো শকাব্দ থেকে নেয়া হয়। মাসগুলোর নামকরণ হয়েছিল বিভিন্ন নক্ষত্রের নামেÑ যে কারণে ওই মাসগুলো গ্রহণ করতে গিয়ে কোনরূপ প্রশ্নের অথবা বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়নি। বৈশাখ মাসের নামকরণ করা হয় বিশাখা নক্ষত্রের নামে, জ্যৈষ্ঠ মাসের নামকরণ করা হয় জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রের নামে, আষাঢ় মাসের নামকরণ করা হয় আষাঢ়া নক্ষত্রের নামে, শ্রাবণ মাসের নামকরণ করা হয় শ্রবণা নক্ষত্রের নামে, ভাদ্র মাসের নামকরণ করা হয় ভাদ্রপদা লক্ষত্রের নামে, আশ্বিন মাসের নামকরণ করা হয় অশ্বিনী নক্ষত্রের নামে, কার্তিক মাসের নামকরণ করা হয় কৃত্তিকা নক্ষত্রের নামে, পৌষ মাসের নামকরণ করা হয় পুষ্যা নক্ষত্রের নামে, মাঘ মাসের নামকরণ করা হয় মঘা নক্ষত্রের নামে, ফাল্গুন মাসের নামকারণ করা হয় ফাল্গুনী নক্ষত্রের নামে, চৈত্র মাসের নামকরণ করা হয় চিত্রা নক্ষত্রের নামে।

মূলত বাংলা সনের উৎপত্তি হয়েছে হিজারী সন থেকে। হিজরী সন ধারণ করে আছে প্রিয় নবী সরকারের দোআলম নূরে মুজাসসম হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লামের ৬২২ খৃস্টাব্দে মক্কা মুকাররম থেকে মদীনা মনওয়ারায় হিজরতের সেই ঐতিহাসিক স্মৃতি। বাংলাদেশে মসলিম শাসনের গোড়াপত্তন হয় ১২০১ খৃস্টাব্দে। এখানে স্বাধীন সালতানাতের। হিজরী সনকে সালতানাতের সন হিসেবে গ্রহণ করা হয়। হিজরী সন চান্দ্র সন হওয়ায় ঋতুর সঙ্গে এর মাসগুলো স্থির থাকে না; ফলে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কয়েক বছর অন্তর দারুণ জটিলতা হওয়া দেখে মুঘল সম্রাট জালালুদ্দীন মুহম্মদ আকবরের নির্দেশে বহু গবেষণা করে তখনকার একজন বিশেষ জ্যোতিবিজ্ঞানী আমীর ফতেহুল্লাহ সিরাজী আকবরের মসনদে আরোহণ কালের ৯৬৩ হিজরীকে সৌর গণনায় এনে বাংলা সনের উদ্ভব ঘটান। হিজরী সন ইসলামী সন।

ইসলাম সৌর ও চান্দ্র উভয় প্রকারের বর্ষ গণনার সমান গুরুত্ব আরোপ করেছে। সৌর সনে বছর হয় ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডে; আর চান্দ্র সনে বছর হয় ৩৫৪ দিন ৮ ঘণ্টা ৪৮ মিনিটে।

বাংলাদেশের মানুষ প্রতি বছর তিনটে নববর্ষের মুখোমুখি হয়। বাংলা নববর্ষ আসে বসন্তকালকে বিদায় জানিয়ে কাল বোশেখীর সম্ভাবনাকে ধারণ করে গ্রীষ্মকালের সূচনাতে। পয়লা বৈশাখ পালিত হয় বাংলা নববর্ষ। ইংরেজী নববর্ষ আসে প্রচ- শীতে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ১ জানুয়ারিতে গভীর রাতে, আর হিজরী নববর্ষ আসে ১ মুহররমে ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে। পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশে বর্তমান প্রচলিত সর্বপ্রাচীন সন হচ্ছে হিজরী সন আর এই হিজরী সন থেকেই বিকশিত হয়েছে বাংলা সন, বহু পরে ১৭৫৭ খৃস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এখানে এসেছে খৃষ্টাব্দ বা ইংরেজী সন। হালখাতা, ফসল তোলা, ফসলবোনা, বিয়ে শাদি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলা সনের তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে বহু ইসলামী জলসা, ইসালে সওয়াব ও ওয়াজ মহফিল, উরস মুবারক অনুষ্ঠিত হয় বাংলা সনের নির্ধারিত তারিখে, যেমন : ফুরফুরা শরীফের ইসালে সওয়াব ও ওয়াজ মহফিল অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের ২১, ২২ ও ২৩ তারিখে, খড়কী শরীফে প্রতিবছর ১৬ চৈত্র অনুষ্ঠিত হয় উরস মুবারক, প্রতিবছর ৪ মাঘ অনুষ্ঠিত হয় দ্বারিয়াপুর শরীফের ইসালে সওয়াব ও ওয়াজ মহফিল।

আমাদের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটেছিল ৮ ফাল্গুন। আমরা সেই ৮ ফাল্গুন যেন ভুলে বসেছি। সেদিনটা পালিত হয় একুশে ফেব্রুয়ারিতে। এটা অনেকের মনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করে। অবশ্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে একুশে ইদানীং গুরুত্ব লাভ করেছে।

১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে গঠিত বাংলা পঞ্জিকা সংস্কার উপসংঘ বাংলা সনের কিছু কিছু সংস্কার করা হয়। সেই সংস্কার করা বাংলা ক্যালেন্ডার বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত রয়েছে।

হিজরী সনের সঙ্গে যেমন বাংলা সনের সম্পর্ক সুনিবিড়, তেমনি এই দু’টি সনের সঙ্গে বাংলাদেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর সম্পর্কও সুনিবিড়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:৫৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: শুভনববর্ষ।

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৪৬

মাহমুদুল হাসান (সুমন)। বলেছেন: শুভ নববর্ষ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.