নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
শিবিরকর্মীরা দেশব্যাপী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও তা-ব চালাচ্ছে। শিবিরের এ তা-ব নতুন কিছু নয়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী, জামাত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর থেকেই নৃশংস চেহারা নিয়ে হত্যাযজ্ঞ-ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে শিবির। প্রথমেই তাদের সা¤প্রদায়িক হামলার শিকার হন ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষ। এবার তাদের টার্গেট পুলিশ বাহিনী।
কেবল রাজশাহীতেই গত রোববার বোমা মেরে পুলিশ কর্মকর্তার দুই হাতের কব্জি উড়িয়ে দেয়ার পর সোমবার ইট দিয়ে আরেক পুলিশ কর্মকর্তার মাথা থেঁতলে দিয়ে তার অস্ত্র কেড়ে নিয়েছে সশস্ত্র শিবির বাহিনী। মঙ্গলবার দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একজন উপ-পরিদর্শকের মাথা থেঁতলে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের ওপর জামাত-শিবির কেবল যে এ তিনটি হামলা চালিয়েছে তা নয়। একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দুষ্কর্মে প্রত্যক্ষ সহযোগী শক্তি গত প্রায় এক বছর ধরে টার্গেট করেছে রাষ্ট্রের অস্তিত্বের অপরিহার্য প্রতিষ্ঠান পুলিশ বাহিনীকে। তাদের এ নৃশংস কর্মকা- অত্যন্ত ঠা-া মাথায় পরিকল্পিত। রাজপথে তারা পুলিশের সঙ্গে বোমা-গুলি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। অপরাধীদের আটক করতে গেলে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে সাধারণ মানুষকে পুলিশের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়া হচ্ছে। এসব কিসের আলামত? এ অপকমের্র সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত। বিভিন্ন চ্যানেলের ফুটেজ কিংবা পত্রিকার ছবি দেখে যারা সরাসরি পুলিশের ওপর অমানবিক আক্রমণ করেছে, অস্ত্র কেড়ে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী মামলা করা উচিত।
দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে টার্গেট করে এ ধরনের হিংসাত্মক কার্যকলাপ দেশের মানুষকে ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত করেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শুধু নয়, এখন পুলিশ হয়ে যাচ্ছে তাদের আক্রমণের টার্গেট। জামাত-শিবিরকর্মীরা পুলিশের ওপর যে ধরনের নৃশংসতা চালাচ্ছে, তা অকল্পনীয়। জাতীয় দৈনিকসমূহে প্রকাশিত শিবিরের এ ধরনের সহিংস ও মারমুখী হামলার খবর দেশবাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। হরতালে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছে দেশবাসী। পুলিশের প্রতি এ ধরনের সহিংস ও মারমুখী আচরণ অতীতে কখনো দেখা গেছে বলে আমার মনে হয় না। তাদের এ বেপরোয়া আক্রমণ মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানায়। আমার এখন বয়স চলছে ৬৫ বছর। এ ৬৫ বছর বয়সে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয়দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান. একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। অংশগ্রহণ করেছি ’৬৬-এর ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ নম্বর সেক্টর কুমিল্লায় যুদ্ধ করেছি। সে সময় দেখেছি কতো মুক্তিযোদ্ধা দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। আর সে সময় পাকিস্তান হানাদারদের এ জামাত শীর্ষস্থানীয় নেতারা সহযোগিতা করে দেশে লোমহর্ষক গণহত্যা করেছিল। এ জামাতে ইসলামী এখনো দেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করে না। আর তাদের রক্ষা করার জন্য আমাদের দেশের একটা মহল কাজ করছে। ইতোপূর্বে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী তৎপরতার সঙ্গে পাকিস্তানি জঙ্গিদের সম্পর্কের বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে নাশকতামূলক তৎপরতার সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর জড়িত হওয়ার খবরটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। তাদের উত্তরসূরি শিবিরের ক্যাডাররা রাজশাহীতে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক পুলিশ কর্মকর্তার মাথা ও মুখম-ল হেলমেট ও ইটের আঘাতে থেঁতলে দিয়েছে। মরণাপন্ন অবস্থায় তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে তার পিস্তল, হেলমেট ও টুপি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এটা কি কোনো সভ্য মানুষের কাজ? জামাত-শিবিরের উগ্র রাজনৈতিক অপতৎপরতা বরং জনগণের মনে ধিক্কার ও ঘৃণাকেই জাগ্রত করছে।
জামাত-শিবিরের এ রাজনীতির প্রতি জনগণের ঘৃণা এখন ক্ষোভে পরিণত হয়েছে। কারণ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে গোটা জাতি একমত। এ বিচার নিয়ে আর দ্বিধাবিভক্তির অবকাশ নেই। মহাজোট সরকার তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকার, কাদের মোল্লা ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর জামাত যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে বিচারের রায় বানচালের জন্য। এ বিচার বাধাগ্রস্ত করার জন্য জামাত-শিবির যা করছে তা কার্যত তাদের রাজনৈতিক আদর্শহীনতাকে আরো স্পষ্ট করে তুলেছে। ধর্ম রক্ষার কথা বলে তারা নিজেরাই ধর্মবিরোধী, মানবতাবিরোধী কার্যকলাপ করছে। দেশে আইনের শাসনকে অবজ্ঞা করছে। এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। স্বাধীন দেশে বসবাস করে, এ দেশের আলো-ছায়া উপভোগ করে তারা দেশের সঙ্গে বেইমানি করছে। তারা যেন মায়ের সঙ্গে বেইমানি করছে। বিশেষত ছাত্রশিবিরের কর্মীরা চোরাগোপ্তা হামলা, পুলিশকে আক্রমণ করা, গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়া, মানুষের প্রতিষ্ঠানে হামলা করা ইত্যাদিতে যেভাবে অংশ নিচ্ছে তা দেখে মানুষ বিস্মিত ও হতবাক! ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের মিছিল ও হামলা, হাঙ্গামার দৃশ্য দেখে মানুষ যে বিষয়টি বুঝতে পারছে তা হচ্ছে, এখন যদি ছাত্রশিবিরের কর্মীরা এমন, তাহলে একাত্তর সালে তাদের পূর্বসূরি ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীদের আচরণ কেমন ছিল?
হরতালকে বলা হয় গণতান্ত্রিক প্রতিবাদের ভাষা। দেশে গণতান্ত্রিক অধিকারের নাম করে হরতাল অতীতেও হয়েছে, বর্তমানেও হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হয়তোবা হবে। কিন্তু বর্তমানে হরতালের যে ভয়ঙ্কর, বীভৎস চিত্ররূপ জনগণ প্রত্যক্ষ করছে তা জাতির জন্য শুভ নয়। এখন হরতাল শুধু পিকেটিংয়ে সীমাবদ্ধ থাকে না। হরতালের দিন চলে বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগসহ নাশকতামূলক বিভিন্ন কাজ। হরতালের আগের দিন নয়, তারও আগের দিন অর্থাৎ হরতালের দুই-তিনদিন আগে থেকে শুরু হয় হরতাল সমর্থকদের জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি। হরতালে মিছিল-সমাবেশ, মানববন্ধন, পিকেটিং হতেই পারে। তবে বীভৎসতা কেন? যাত্রী পরিবহনে পেট্রল বোমা ছুড়ে মেরে জনগণকে পুঁজি করে রাজনীতির পরিণাম ভালো হবে না। কথায় কথায় জনগণ আর দেশের কল্যাণের নামে রাজনীতির কথা বলে অকাতরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ আর নাশকতাকে জনগণ সমর্থন করে না। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির এক তথ্য প্রতিবেদনে দেখা গেছে, হরতালে এক দিনে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। ১৫ দিনের হরতালে যে পরিমাণ ক্ষতি হয় তা দিয়ে একটি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব। সাধারণ মানুষের মতো আমারও প্রশ্ন হরতালের নামে কেন এই নৈরাজ্য? যাত্রীসহ বাসে যারা আগুন লাগিয়ে দেন তারা কি মানুষ? দেশের সম্পদ যারা নষ্ট করেন তারা কি দেশপ্রেমিক? ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা বলেছেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগ অন্যত্র চলে যেতে পারে। এসব ভালো খবর নয়। দেশের ও দেশের মানুষের জন্য এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি যেন অপেক্ষা করছে। এ রকম সময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের যে বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতা দরকার তার মারাত্মক অভাব আমরা লক্ষ করছি। সংঘাত-সহিংসতা বন্ধ করে আশঙ্কিত বিপদ থেকে মুক্ত হওয়ার বিকল্প নেই। কেন পুলিশের ওপর অযাচিত নৃশংস হামলা? একের পর এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা? ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম। অথচ জামাত ধর্মের নামে যে রাজনীতি করছে, সেই ধর্ম কি তা সমর্থন করে ? করে না। ইসলাম বরং সকল ধর্মের, সকল মানুষের জানমালের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়। বাংলাদেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে আসছে সেই শত শত বছর ধরে। ধর্মে ভিন্ন হলেও তারা সবাই এ দেশের নাগরিক। সবাই ভাই ভাই এবং স¤প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। রাজনীতি যদি দেশের জন্য, দেশপ্রেমের জন্য অথবা জনগণের জন্য হয় তাহলে দেশ ও জনগণের বিপক্ষে যায় এমন কর্মকা- বন্ধ করুন। দেশকে ভালোবাসুন। এটাই প্রত্যাশা করি।
রোববার শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোওয়ার হোসানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শিবিরকর্মীরা ওইদিন থেকেই দেশব্যাপী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও তা-ব চালাচ্ছে। শিবিরের এ তা-ব নতুন কিছু নয়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী, জামাত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর থেকেই নৃশংস চেহারা নিয়ে হত্যাযজ্ঞ-ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে শিবির। প্রথমেই তাদের সা¤প্রদায়িক হামলার শিকার হন ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষ। এবার তাদের টার্গেট পুলিশ বাহিনী। কেবল রাজশাহীতেই গত রোববার বোমা মেরে পুলিশ কর্মকর্তার দুই হাতের কব্জি উড়িয়ে দেয়ার পর সোমবার ইট দিয়ে আরেক পুলিশ কর্মকর্তার মাথা থেঁতলে দিয়ে তার অস্ত্র কেড়ে নিয়েছে সশস্ত্র শিবির বাহিনী। মঙ্গলবার দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একজন উপ-পরিদর্শকের মাথা থেঁতলে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের ওপর জামাত-শিবির কেবল যে এ তিনটি হামলা চালিয়েছে তা নয়। একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দুষ্কর্মে প্রত্যক্ষ সহযোগী শক্তি গত প্রায় এক বছর ধরে টার্গেট করেছে রাষ্ট্রের অস্তিত্বের অপরিহার্য প্রতিষ্ঠান পুলিশ বাহিনীকে। তাদের এ নৃশংস কর্মকা- অত্যন্ত ঠা-া মাথায় পরিকল্পিত। রাজপথে তারা পুলিশের সঙ্গে বোমা-গুলি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। অপরাধীদের আটক করতে গেলে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে সাধারণ মানুষকে পুলিশের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়া হচ্ছে। এসব কিসের আলামত? এ অপকমের্র সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত। বিভিন্ন চ্যানেলের ফুটেজ কিংবা পত্রিকার ছবি দেখে যারা সরাসরি পুলিশের ওপর অমানবিক আক্রমণ করেছে, অস্ত্র কেড়ে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী মামলা করা উচিত।
দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে টার্গেট করে এ ধরনের হিংসাত্মক কার্যকলাপ দেশের মানুষকে ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত করেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শুধু নয়, এখন পুলিশ হয়ে যাচ্ছে তাদের আক্রমণের টার্গেট। জামাত-শিবিরকর্মীরা পুলিশের ওপর যে ধরনের নৃশংসতা চালাচ্ছে, তা অকল্পনীয়। জাতীয় দৈনিকসমূহে প্রকাশিত শিবিরের এ ধরনের সহিংস ও মারমুখী হামলার খবর দেশবাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। হরতালে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছে দেশবাসী। পুলিশের প্রতি এ ধরনের সহিংস ও মারমুখী আচরণ অতীতে কখনো দেখা গেছে বলে আমার মনে হয় না। তাদের এ বেপরোয়া আক্রমণ মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানায়। আমার এখন বয়স চলছে ৬৫ বছর। এ ৬৫ বছর বয়সে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয়দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান. একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। অংশগ্রহণ করেছি ’৬৬-এর ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ নম্বর সেক্টর কুমিল্লায় যুদ্ধ করেছি। সে সময় দেখেছি কতো মুক্তিযোদ্ধা দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। আর সে সময় পাকিস্তান হানাদারদের এ জামাত শীর্ষস্থানীয় নেতারা সহযোগিতা করে দেশে লোমহর্ষক গণহত্যা করেছিল। এ জামাতে ইসলামী এখনো দেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করে না। আর তাদের রক্ষা করার জন্য আমাদের দেশের একটা মহল কাজ করছে। ইতোপূর্বে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী তৎপরতার সঙ্গে পাকিস্তানি জঙ্গিদের সম্পর্কের বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে নাশকতামূলক তৎপরতার সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর জড়িত হওয়ার খবরটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। তাদের উত্তরসূরি শিবিরের ক্যাডাররা রাজশাহীতে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক পুলিশ কর্মকর্তার মাথা ও মুখম-ল হেলমেট ও ইটের আঘাতে থেঁতলে দিয়েছে। মরণাপন্ন অবস্থায় তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে তার পিস্তল, হেলমেট ও টুপি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এটা কি কোনো সভ্য মানুষের কাজ? জামাত-শিবিরের উগ্র রাজনৈতিক অপতৎপরতা বরং জনগণের মনে ধিক্কার ও ঘৃণাকেই জাগ্রত করছে।
জামাত-শিবিরের এ রাজনীতির প্রতি জনগণের ঘৃণা এখন ক্ষোভে পরিণত হয়েছে। কারণ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে গোটা জাতি একমত। এ বিচার নিয়ে আর দ্বিধাবিভক্তির অবকাশ নেই। মহাজোট সরকার তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকার, কাদের মোল্লা ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর জামাত যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে বিচারের রায় বানচালের জন্য। এ বিচার বাধাগ্রস্ত করার জন্য জামাত-শিবির যা করছে তা কার্যত তাদের রাজনৈতিক আদর্শহীনতাকে আরো স্পষ্ট করে তুলেছে। ধর্ম রক্ষার কথা বলে তারা নিজেরাই ধর্মবিরোধী, মানবতাবিরোধী কার্যকলাপ করছে। দেশে আইনের শাসনকে অবজ্ঞা করছে। এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। স্বাধীন দেশে বসবাস করে, এ দেশের আলো-ছায়া উপভোগ করে তারা দেশের সঙ্গে বেইমানি করছে। তারা যেন মায়ের সঙ্গে বেইমানি করছে। বিশেষত ছাত্রশিবিরের কর্মীরা চোরাগোপ্তা হামলা, পুলিশকে আক্রমণ করা, গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়া, মানুষের প্রতিষ্ঠানে হামলা করা ইত্যাদিতে যেভাবে অংশ নিচ্ছে তা দেখে মানুষ বিস্মিত ও হতবাক! ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের মিছিল ও হামলা, হাঙ্গামার দৃশ্য দেখে মানুষ যে বিষয়টি বুঝতে পারছে তা হচ্ছে, এখন যদি ছাত্রশিবিরের কর্মীরা এমন, তাহলে একাত্তর সালে তাদের পূর্বসূরি ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীদের আচরণ কেমন ছিল?
হরতালকে বলা হয় গণতান্ত্রিক প্রতিবাদের ভাষা। দেশে গণতান্ত্রিক অধিকারের নাম করে হরতাল অতীতেও হয়েছে, বর্তমানেও হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হয়তোবা হবে। কিন্তু বর্তমানে হরতালের যে ভয়ঙ্কর, বীভৎস চিত্ররূপ জনগণ প্রত্যক্ষ করছে তা জাতির জন্য শুভ নয়। এখন হরতাল শুধু পিকেটিংয়ে সীমাবদ্ধ থাকে না। হরতালের দিন চলে বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগসহ নাশকতামূলক বিভিন্ন কাজ। হরতালের আগের দিন নয়, তারও আগের দিন অর্থাৎ হরতালের দুই-তিনদিন আগে থেকে শুরু হয় হরতাল সমর্থকদের জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি। হরতালে মিছিল-সমাবেশ, মানববন্ধন, পিকেটিং হতেই পারে। তবে বীভৎসতা কেন? যাত্রী পরিবহনে পেট্রল বোমা ছুড়ে মেরে জনগণকে পুঁজি করে রাজনীতির পরিণাম ভালো হবে না। কথায় কথায় জনগণ আর দেশের কল্যাণের নামে রাজনীতির কথা বলে অকাতরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ আর নাশকতাকে জনগণ সমর্থন করে না। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির এক তথ্য প্রতিবেদনে দেখা গেছে, হরতালে এক দিনে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। ১৫ দিনের হরতালে যে পরিমাণ ক্ষতি হয় তা দিয়ে একটি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব।
গোপালগঞ্জ শহরের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পদস্থ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার নামের তালিকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই বাড়ি থেকে ছাত্রশিবিরের প্রচারপত্র, জিহাদবিষয়ক বই, পোস্টারসহ বিভিন্ন সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, শিবির সন্দেহে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাঁরা ধারণা করছেন, শিবির এ কর্মকর্তাদের হয়তো টার্গেট করেছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পুলিশ মিয়াপাড়ার আবুল বশার লেনের খোরশেদ আলম সিকদারের বাড়িতে অভিযান চালায়। বাড়ির মালিক দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করেন। বাড়িটি ভাড়া নিয়ে শিবির আস্তানা গেড়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানে পুলিশ কর্মকর্তাদের নামের যে তালিকা উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে আইজি পদমর্যাদার (অব.) আবু হাজ্জাজ, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান ও মিরপুরের পরিদর্শক সালাউদ্দিন লুইয়ের নাম রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া তালিকায় তিন পুলিশ কর্মকর্তার নাম-ঠিকানা, ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য, পারিবারিক পরিচয়, বর্তমান অবস্থান ও গোপালগঞ্জ শহরে তাঁদের নিকটাত্মীয়দের অবস্থানের বিবরণ রয়েছে। এসব বিবরণ তিনটি পৃথক পৃষ্ঠায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমানের নাম প্রথমে। ওপরে লেখা এসপি হাবিব। এরপর তাঁর বাবার নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরিতে যোগদান ও পদোন্নতির বিবরণ। পদোন্নতির বিবরণে গোপালগঞ্জে বাড়ি বলে বিশেষ আনুকূল্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আইজি পদমর্যাদার (অব.) আবু হাজ্জাজের বিবরণের প্রথমে আছে নাম ও পদমর্যাদা। এরপর লেখা 'বুকের উপর পাড়া'। তারপর তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা, গ্রামের বাড়ির ঠিকানা, চাকরির বিবরণ, গোপালগঞ্জ শহরে তাঁর ভাইয়ের বাড়ির অবস্থান উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিদর্শক সালাউদ্দিন লুইয়ের চাকরিতে যোগদান, বরখাস্ত হওয়ার বিষয়, তাঁর এক ভাইয়ের নাম ও রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ রয়েছে। তাঁর শহরের বাড়ির নির্দিষ্ট অবস্থান রয়েছে ওই বিবরণীতে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. জাকির হোসেন মোল্লা জানিয়েছেন, তালিকায় আরো পুলিশ কর্মকর্তার নাম রয়েছে। তবে তাঁদের নাম তিনি জানাননি।
ওসি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ছাত্রশিবিরের ওই আস্তানায় পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে ডায়েরি, শিবিরের চাঁদা আদায়ের রসিদ, জিহাদবিষয়ক কম্পিউটার ডিস্ক (সিডি), কম্পিউটার, শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মুক্তি দাবি করে ছাপানো পোস্টার, নষ্ট মোবাইল ফোনসেট, চার্জার, সদস্য ফরমসহ আরো কিছু সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলোর জব্দ তালিকা হচ্ছে। তিনি জানান, জিহাদবিষয়ক বইয়ের মধ্যে রয়েছে ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি, সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদীর বই হেদায়েত, সত্যের সাক্ষ্য, ভাঙা ও গড়া, ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি, ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন, আব্বাস আলী খানের লেখা একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণ : তার থেকে বাঁচার উপায়সহ বিভিন্ন বই।
ওসি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিবিরের পাঁচ-ছয়জন নেতা এ বাড়িতে থাকতেন। তাঁরা রাতের বেলা প্রায়ই সেখানে মিটিং করতেন। সন্ধ্যার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে অপরিচিত লোকজন এ বাড়িতে আসা-যাওয়া করত।
পুলিশ কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাদের নামের তালিকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃত যুবককে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার করা আবুল হায়াত মোল্লা (২৫) গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল সালাম মোল্লার ছেলে। শহরের হেমাঙ্গন আবাসিক এলাকার একটি বাসায় তিনি ভাড়া থাকেন। তিনি বেসরকারি মডেল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তড়িৎ কৌশলের ছাত্র ছিলেন। গত বছর পাস করেছেন।
গোপালগঞ্জ সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর। গ্রেপ্তারকৃত যুবককে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত ও শিবিরের সহিংসতায় আট পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়।
সাধারণ মানুষের মতো আমারও প্রশ্ন হরতালের নামে কেন এই নৈরাজ্য? যাত্রীসহ বাসে যারা আগুন লাগিয়ে দেন তারা কি মানুষ? দেশের সম্পদ যারা নষ্ট করেন তারা কি দেশপ্রেমিক? ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা বলেছেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগ অন্যত্র চলে যেতে পারে। এসব ভালো খবর নয়। দেশের ও দেশের মানুষের জন্য এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি যেন অপেক্ষা করছে। এ রকম সময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের যে বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতা দরকার তার মারাত্মক অভাব আমরা লক্ষ করছি। সংঘাত-সহিংসতা বন্ধ করে আশঙ্কিত বিপদ থেকে মুক্ত হওয়ার বিকল্প নেই।
কেন পুলিশের ওপর অযাচিত নৃশংস হামলা?
একের পর এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা?
ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম। অথচ জামাত ধর্মের নামে যে রাজনীতি করছে, সেই ধর্ম কি তা সমর্থন করে ? করে না। ইসলাম বরং সকল ধর্মের, সকল মানুষের জানমালের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়। বাংলাদেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে আসছে সেই শত শত বছর ধরে। ধর্মে ভিন্ন হলেও তারা সবাই এ দেশের নাগরিক। সবাই ভাই ভাই এবং স¤প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। রাজনীতি যদি দেশের জন্য, দেশপ্রেমের জন্য অথবা জনগণের জন্য হয় তাহলে দেশ ও জনগণের বিপক্ষে যায় এমন কর্মকা- বন্ধ করুন। দেশকে ভালোবাসুন। এটাই প্রত্যাশা করি।
সুত্র-১ সুত্র-২
২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:০৩
তালপাতারসেপাই বলেছেন: সহমত!
২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৩১
তনুদ্ভব বলেছেন: আর কত পুলিশ আর মানুষকে পিটিয়ে মারলে আমরা জামাত শিবিরের মুখে লাথি মেরে বিদায় করব??????????
২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:০২
তালপাতারসেপাই বলেছেন: সহমত!
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৩৯
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: আমরা ইসলাম নামকরনে রাজনীতি চাইনা
ইসলামের আদর্শে সমাজ ও রাস্টের দিক নির্দেশে চালিকা শক্তি চাই ।
আর অন্ধতা , বৈরি তা পরিহার করে মানবতাকে বিবেক দিয়ে
আমরা যারা বাঙালী মানুষ নামে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে হারানো
ইতিহাস , ঐতিহ্য , গৌরব কে আবার জিন্দা দেখতে চাই ।