নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

Deal or Heal in Singapore?

১৮ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫৫



বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন সিঙ্গাপুরে। সেখানে আছেন মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। সে দেশের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন তারা দুজনেই। তবে বাংলাদেশের রাজনীতির এই দুই শীর্ষ ব্যক্তিত্ব সেখানে বৈঠক করবেনÑ এমন আলোচনা চলছে গত কয়েকদিন ধরেই। তাই দেশবাসীর দৃষ্টি এখন সিঙ্গাপুরে। সবার আগ্রহ খালেদা-এরশাদ বৈঠক নিয়ে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ ধরনের বৈঠকের খবর গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন সকল মহলই।

খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুর গেছেন গত রোববার রাতে। ব্যক্তিগত একান্ত সচিব ছাড়াও পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে রয়েছেন। আগামী ২৪ জুন তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। আর এরশাদ সিঙ্গাপুর গেছেন গত ১০ জুন। তার সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী রওশন এরশাদ, ছেলে রাহাগির আলমাহি এরশাদ (সাদ) ও একান্ত সচিব খালেদ আখতার। আজ মঙ্গলবারই এরশাদের দেশে ফেরার কথা।

বিশ্লেষকদের মতে, খালেদা-এরশাদ স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বললেও তাদের এবারের সিঙ্গাপুর মিশন রাজনৈতিক। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই দুই শীর্ষ নেতা-নেত্রীর মধ্যে সেখানে একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠানই মূল লক্ষ্য যদিও উভয় দলের পক্ষ থেকেই তা অস্বীকার করা হচ্ছে।

সদ্য অনুষ্ঠিত চার সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিপর্যয় আর বিরোধী দল বিএনপির বিশাল বিজয় রাজনীতির অনেক হিসেব-নিকেশই পাল্টে দিয়েছে। বিএনপি এখন চাঙা। ক্ষমতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন দলটির নেতারা। জনমতের হাওয়া বিএনপির দিকে ঘুরে গেছে বলেই করেন তারা। কিন্তু বিএনপি নীতিনির্ধারকরা এ-ও জানেন, চার সিটিতে জয় পেলেই সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করা নিশ্চিত হয়ে যায় না। ক্ষমতার মসনদে বসতে হলে সিঁড়ির আরো কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। আর বিএনপির বিবেচনায় এরশাদও সে রকম একটি ধাপ।

এরশাদের জাতীয় পার্টি ক্ষমতাসীন মহাজোটের অন্যতম শরিক। বিগত নির্বাচনে এই মহাজোট গঠন করেই বাজিমাত করেছিল আওয়ামী লীগ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাই অনেকটা কিং মেকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন এরশাদ। তার দল যাকে সমর্থন দেবে সেই যাবে ক্ষমতায়Ñ এমন একটি সমীকরণ তৈরি হয়েছে দেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে। চার সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন দেয়নি জাতীয় পার্টি। খুলনায় দলটির একজন প্রার্থীও ছিলেন। এই বিষয়টিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। জাতীয় পার্টির সক্রিয় সমর্থন থাকলে ফলাফল অন্যরকমও হতে পারতো বলে ধারণা অনেকেরই। স্বাভাবিক কারণেই বিএনপির লক্ষ্য জাতীয় পার্টিকে তাদের জোটে নেয়া। অন্তত মহাজোট ভাঙতে পারলেই ক্ষমতার পথ অনেক মসৃণ হয়ে যাবে বিএনপির জন্য।

এদিকে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত স্বাধীনতাবিরোধী জামাতের সঙ্গে গাঁটছড়া ছিন্ন করার জন্য ভেতরে-বাইরে চাপে আছে বিএনপি। কিন্তু দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, জামাতকে ত্যাগ করলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের ভোটের ভারসাম্য একেবারেই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই জামাতকে যদি ছাড়তেই হয় সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে পেলে ভোটের ভারসাম্য বিএনপির দিকেই হেলে পড়বে। আর এ লক্ষ্যেই এরশাদকে জোটে চায় বিএনপি।

আওয়ামী লীগ ছেড়ে বিএনপির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতাও অতি আগ্রহী বলে জানা গেছে। এরশাদের প্রথম স্ত্রী রওশন এই গ্রুপকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে বরাবরই তার সুসম্পর্ক। এবারের সিঙ্গাপুর যাত্রায় এরশাদের সঙ্গী হয়েছেন রওশনও। শোনা যায়, সিঙ্গাপুরে খালেদা-এরশাদ সম্ভাব্য বৈঠকের আগে রওশন-খালেদা একটি মহড়া-বৈঠকও হয়ে গেছে। এতে জাতীয় পার্টির সঙ্গে মহাঐক্য জোট করে আগামীতে বিএনপি সরকার গঠন করলে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। এর চূড়ান্ত আলোচনা হওয়ার কথা সিঙ্গাপুরে খালেদা-এরশাদ বৈঠকে।

প্রসঙ্গত, মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর এরশাদকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি বলে দলের কোনো কোনো নেতা প্রকাশ্যেই মন্তব্য করেছেন। এরশাদও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেবে তার দল। ইদানীং প্রায়ই সরকারের কঠোর সমালোচনা করতে দেখা যায় এরশাদকে। এ অবস্থায় সিঙ্গাপুরে খালেদা-এরশাদ বৈঠকের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এমনকি আগামী নির্বাচনে এরশাদকে বিএনপি-জোটে দেখা গেলেও অবাক হবেন না তারা।

অবশ্য এমন সম্ভবনার কথা স্বীকার করছেন না বিএনপি নেতারা। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন সিঙ্গাপুর গেছেন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। সেখানে এরশাদ বা কারো সঙ্গে তার কোনো রাজনৈতিক বৈঠকের কর্মসূচি নেই। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক সিনিয়র নেতা জানান, তারা দুজনেই একই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেছেন। কাজেই সেখানে তাদের মধ্যে দেখা বা কথাবার্তা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির একাধিক নেতার সঙ্গে যোগযোগ করা হলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তাদের কেউই। এ ব্যাপারে কথা বলতে এরশাদ নিষেধ করে দিয়েছেন বলে জানান তারা। অবশ্য দলটির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টি এখনো মহাজোটের শরিক। তবে আগামী নির্বাচনে তারা মহাজোটে থাকবেন নাকি এককভাবে নির্বাচন করবেন অথবা অন্য কোনো জোটে যোগ দেবেন সেটা এরশাদই ঠিক করবেন।

সুত্র

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.