নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দরকার পড়েছিল কেন? এর উত্তরে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা তাদের নিজ নিজ বক্তব্য দেবেন। এবং বলা বাহুল্য এরা সকলেই নিজ নিজ বক্তব্যের আড়ালে কার্যত সাফাই গাইবেন। সেটি কি? না, আমরা স্বৈরাচারী এরশাদের পতন ঘটানোর পর তিনটি জোট মিলে একটি রূপরেখা দাঁড় করিয়েছিলাম। যা ছিল এক বৈপ্লবিক আবিষ্কার। এতে করে আমাদের নিজেদের ভেতরকার সন্দেহ, ভুল বোঝাবুঝি, নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় দূর হলো। আসলে কি তাই? না, ব্যাপারটি মোটেও সেরকম নয়। এরশাদবিরোধী আন্দোলন মূলত পরিচালিত হয়েছিল ১৮ দল, ৭ দল এবং ৫ বাম দলের অংশগ্রহণে। তবে সে সময় এই তিনটি জোট নিজেদের ভেতর কোনো রকম সমন্বয় করতে পারেনি, পারেনি এক জোট আর এক জোটের ওপর সামান্য বিশ্বাসটুকু রাখতে। এবং এই অবিশ্বাসের ফলে বিকল্প খুঁজতে খুঁজতে তখনই আবিষ্কার হয় যে একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃতে ১০ সদস্যের একটি ক্ষমতাধর নির্বাহী কমিটি বা মিনি সরকার গঠন করতে হবে। এবং তাদের নেতৃত্বেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব বা কর্তব্য শেষ হয়ে যাবে এবং তারা যার যার ‘ঘরে ফিরে যাবেন।’
সে সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদেরকে নিজেদের প্রতিপক্ষ ভেবেছেন, তাই ক্ষমতাসীন দল বা গোষ্ঠীর অধীনে নিজেদেরকে নিরাপদ ভাবতে পারেনি। আর এখনো বিষয়টি তেমনই। তবে এখন দাবার বোর্ডে কালো ঘুটি সাদা দেখাচ্ছে, এবং সাদা ঘুটি কালো দেখাচ্ছে। ২০০৬ সালে যে টালমাটাল ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরিচালন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়েছিল, এবং সেই সরকার যে যে কারণে তিন মাসের বদলে টানা ২ বছর ক্ষমতা আঁকড়ে বসেছিল এখনো দেশে বা দলসমূহের ভেতরে ঠিক সেই সেই উপাদান বিরাজ করছে। এখন যদি আবারো কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়ে ৩ মাসের সময়সীমা বেঁধেও দেয়া হয় তারা সেটি মানবেন কিনা তা হলপ করে বলা যাচ্ছে না। একটি অনির্বাচিত সরকার এবং তা যদি হয় আর্মিব্যাক সরকার তাহলে তার ব্যাক ফায়ারে কি কি ডিজাস্টার ঘটতে পারে তা নিশ্চই সে সময়কার রাজনীতিবিদরা ভুলে যাননি। ভুলে যাননি বলেই মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে এমন সন্দেহ করছেন। এবং এই সন্দেহ যে অমূলক নয় তার নজিরও বিএনপি নেত্রীর সম্যক উপলব্ধিতে থাকার কথা। কিন্তু স্বার্থসংশ্লিষ্ট টানাপড়েন বলি আর নির্বাচনে জয়ের গ্যারান্টি বলি বিএনপি নিজেদের অস্তিত্বের গ্যারান্টিতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করে যাচ্ছে।
সেই সরকারের আমলে এই দুই নেত্রীর যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা মাথায় রেখেও যখন বিএনপি তার দাবি থেকে সরে আসছে না তখন প্রধানমন্ত্রী সেই সরকার বিষয়ে তার আশঙ্কার দিকটি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেনÑ ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলে দেশবাসীকে দীর্ঘমেয়াদি দুর্ভোগে পড়তে হবে। এর আগে তারা তিন মাসের জন্য ক্ষমতায় এসে দুই বছর পার করেছে। আরেকবার এলে কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বড় দুই দলের নেতাসহ বিভিন্ন পেশার লোকজনের ভোগান্তির কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসতে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রতি আবারো আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নয়, বিগত নির্বাচনগুলো প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। বর্তমান সরকারের চার বছরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোর দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এওগেুালো নির্বাচন নিয়ে কেউ একটা টুঁ শব্দও করতে পারেনি। জনগণ ক্ষমতার মালিক, তারা যাকে চেয়েছে তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। এই চারটা সিটি করপোরেশনে বিএনপি জিতেছে। তারপর আবার তারা বলে কি করে যে আওয়ামী লীগের অধীনে আবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় না, হবে না?’ শেখ হাসিনা আরো বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগেরই এই সাহস আছে। আওয়ামী লীগই পারবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে (কালের কণ্ঠ, ২২.০৬.২০১৩)।’
এখন প্রশ্ন হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যা করা আশঙ্কার পরও বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অটল কেন? কারণ বিএনপি আওয়ামী লীগের আমলে প্রায় সকল নির্বাচনে জয়ী হলেও জাতীয় নির্বাচনে ফলাফল উল্টে যেতে পারে আশঙ্কা থেকেই তাদের দাবী থেকে সরতে চাইছে না। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করতে মরিয়া তারা। এর জন্য যা যা করা দরকার, সব করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দলটি। দেশী-বিদেশী কূটনীতিক ছাড়াও সুধীসমাজসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে দিয়ে সরকারকে চাপ দেয়া হবে। সেই কৌশল নিয়ে আটঘাট বেঁধেই মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। এ জন্যই সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে পাত্তা দিচ্ছে না ১৮ দলীয় জোট। নির্দলীয় সরকারের দাবির বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক দল থাকবে না বলেই মনে করে প্রধান বিরোধী দল। বিএনপির বিশ্বাস, দাবি আদায়ে সরকারের বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হবেই। আওয়ামী লীগ একা হয়ে পড়বে। তখন সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবে বলে মনে করে বিএনপি ও তাদের শরিকরা। তারা বলেন, একদলীয়ভাবে সরকার আবার ক্ষমতায় যেতে চায় বলেই এ ধরনের বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। এ বক্তব্য গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত।
অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যতোই নিজেদের নিরপেক্ষ বলে জাহির করুক তাতে করে বিএনপির ‘চিঁড়া’ ভিজছে না। তারা যতোই উপনির্বাচন বা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী হোক তাদের আসল শঙ্কা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। তারা আশঙ্কা করছে চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় আসলে ‘ইচছাকৃত’ হেরে এটাই প্রমাণ করা যে তাদের আমলের সব নির্বাচনই নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু হবে।
এখন এই একটি ইস্যু নিয়ে রাজনীতির ময়দান যেভাবে তেতে উঠেছে তাতে করে বহুল আলোচিত সেই তৃতীয় পক্ষ যারা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী তারা কি বসে বসে আঙুল চুষবে? মনে হয় না। তারা ঠিকই ঠারে ঠোরে ভেতরে ভেতরে তৈরি হচ্ছে। ১৯৯০-এর পর এই শক্তি একটু একটু করে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে নিজেদের দখল কায়েম করার দৃঢ় সংকল্প বাস্তবায়নে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে। পোড় খাওয়ার রাজনীতিবিদদের চরিত্র এমনিতেই যতোটুকু কলুষিত তাকে আরো কলুষিত করার এজেন্ডাও তারা হাতে নিয়ে এগুচ্ছে।
নানা রংবেরঙের ‘দোকান’ খুলে সমাজের সুবিধাভোগী সুশীল অংশ আকসার সরকার, বিরোধী দল তথা সকল রাজনীতিবিদদের জ্ঞান বিতরণ করে যাচ্ছে। তারা নিজেরাই বলছেÑ রাজনীতিতে ব্যবসায়ী মহলের অংশগ্রহণ অশণিসংকেত। আবার তারাই বলছে ‘এই দুই দলকেই জনগণের মনের ভাব বুঝতে হবে। ইনিয়ে বিনিয়ে এরা অর্থাৎ সমাজের প্যারাসাইট সুশীল শ্রেণী রাজনীতিতে রাজনীতিবিদদের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুদূরপ্রসারী প্রপাগান্ডা জারি রেখে ঠিক সময়ে ময়দানে আর্বিভূত হবে এতে কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয়, কারণ ২০০৬ সালেও এরা তা-ই করেছিল। এখন পোড় খাওয়া হোক বা গায়ে বাতাস লাগানো রাজনীতিবিদ হোক তাদেরকেই এর বিকল্প খুঁজে বের করতে হবে। তারা কি দেশটাকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি, সেনা-আমলাদের ছেড়ে দেবেন, না নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের প্রশ্নেই নিজেরা বিদ্যমান সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করবেন?
আলু পোড়া
২৭ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪৫
তালপাতারসেপাই বলেছেন: তাই?
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩
আতা2010 বলেছেন: মেয়েরা নিজেরা টাইট ফিটিং বোরকা পড়লেও সে চায় না তার স্বামী দাড়ি , টুপী ওয়ালা হুজুর হোক।
Click This Link