নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

খয়রাতি টাকায় কওমি জমিদারি বন্ধ হচ্ছে

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪৫

শিশু অধিকার আইন লঙ্ঘন করে অর্থোপার্জন সহ আয়করের আওতায় আনতে বড়-বড় মাদ্রাসার তালিকা হচ্ছে



মূলধারার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এবং এর উদ্যোক্তারা আয়করের আওতাধীন হলেও স্পর্শকাতর ও ‘লাভজনক নয়’ বলে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোকে কর-আওতার বাইরে রেখেছে সরকার। সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তি-কর দেন না। জানা গেছে, দেশি-বিদেশি ব্যক্তি ও সংস্থার দান-খয়রাত, অনুদান ছাড়াও কোরবানির চামড়া, বার্ষিক মাহফিল, বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের পাঠানো টাকায় অসংখ্য কওমি মাদ্রাসার উদ্যোক্তা সেকালের জমিদারদের মতো বিপুল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিক হয়ে বিলাসী জীবন-যাপন করছেন। তাদের আয়করের আওতায় নিয়ে আসার কথা ভাবছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

কওমি মাদ্রাসায় এখন যত না দুস্থ-এতিমদের ইসলামশিক্ষা দেওয়া হয়, তার চেয়ে বেশি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হয় শিক্ষার্থীদের শ্রম। রাষ্ট্রীয়ভাবে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও এর অবাধ চর্চা চলে মাদ্রাসাগুলোয়। ধানের মৌসুমে শিশু-শিক্ষার্থীদের গ্রামে-গ্রামে গিয়ে ধানসংগ্রহে বাধ্য করে গ্রামাঞ্চলের মাদ্রাসাগুলো। কোনও শিশু এ কাজ করতে না চাইলে তাকে বেত দিয়ে পেটানো হয়, যা নারী ও শিশু-নির্যাতন দমন আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। কোরবানির সময়ও দেশের সর্বত্র কওমি শিক্ষার্থীদের পশু কোরবানি করার জন্য বাড়ি-বাড়ি পাঠানো হয়। বিনিময়ে তারা যে পারিশ্রমিক পায়, তা-ও জমা দিতে হয় মাদ্রাসায়। পশু কোরবানির আয় থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় ওই সময় শিক্ষার্থীদের ঈদের ছুটিও বাতিল করা হয়। তারপরও কেউ ছুটিতে যেতে চাইলে তাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিতে হয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে। আয়ের এমন অনেক খয়রাতি খাত থাকলেও মোট আয়ের সিকি পরিমাণ অর্থও এতিম ছাত্রদের পেছনে ব্যয় হয় না। অথচ মাদ্রাসার উদ্যোক্তারা চলেন জমিদারি চালে। উদ্যোক্তাদের অনেকে এতিম ছাত্র ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের নামে তোলা টাকাও ভোগ করেন। মাসিক আয় ব্যক্তি করসীমার ঊর্ধ্বে হলেও ধর্মের দোহাই দিয়ে করফাঁকি দেন সিংহভাগ কওমি মাওলানা।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কোনও-কোনও কওমি মাদ্রাসার উদ্যোক্তা ও কর্মকর্তার সন্তানরা দেশি-বিদেশি নামিদামি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। কোনও-কোনও কওমি মাদ্রাসার পদাসীন মাওলানার জোব্বা-রুমাল আসে সৌদি আরব থেকে, আতর আসে দুবাই থেকে। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, অধিকাংশ কওমি মাদ্রাসার উদ্যোক্তাই করমুক্ত আয়ে জমি কেনেন। শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে অর্জিত জমি ব্যক্তিগত কাজেও ব্যবহার করেন তারা। বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকও একই দোষে দুষ্ট। কওমি শিক্ষার মানোন্নয়নের চেয়ে জমির পর জমি কেনাতেই প্রতিষ্ঠানটির বেশি আগ্রহ।

কওমি মাদ্রাসা প্রসঙ্গে একাধিক আইনজীবী আমাদের সময়কে বলেছেন, শিশু নির্যাতন ও শিশুশ্রম দেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। শুধু মাদ্রাসা নয়, দেশের যে-কোনও স্থানে বা প্রতিষ্ঠানে শিশুরা নির্যাতিত হলে বা কেউ শিশুদের দিয়ে পরিশ্রম করালে তার বিরুদ্ধেই সুনির্দিষ্ট আইনে মামলা করা যায়। কওমি মাদ্রাসার উদ্যোক্তাদের করফাঁকি বিষয়ে এক আইনজীবী জানিয়েছেন, যদি দেখা যায়, মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল বা মাদ্রাসার শিক্ষকের করযোগ্য আয় রয়েছে, তাহলে অবশ্যই তা করের আওতায় আনা উচিত।

জানা গেছে, দেশের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আয়করসহ বাড়ি ভাড়ার ওপর ৯ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) দিয়ে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ব্যক্তিকরও দিতে হয়। অথচ কওমি মাদ্রাসা ও এর শিক্ষকদের ওপর সরকারের কোনও নজরদারি নেই। এনবিআরের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, তারা মানুষের কাছ থেকে অনুদান নিয়ে চলেন, এ বিবেচনায় তাদের করের আওতাবহির্ভূত রাখা হয়েছে। কিন্তু সামর্থ্য থাকলে সবারই কর দেওয়া উচিত। তিনি ইসলামের প্রথম খলিফার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হযরত আবু বকর (রা.) করফাঁকিদাতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। সেই বিবেচনায় সামর্থ্য থাকার পরও যারা কর দেন না, তারা ইসলামের দৃষ্টিতে নাফরমান। দেশের শীর্ষ স্থানীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদরাও মনে করেন— কওমি মাদ্রাসাগুলোকে আয়করের আওতায় আনা উচিত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর অঞ্চল-১১ (বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান)-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমাদের সময়কে জানান, যে সব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আয় করবে, ওইসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান করের আওতাধীন। কওমি মাদ্রাসাগুলো নিয়ে রাজস্ব বোর্ড এখনও কাজ শুরু করেনি। তবে বড়-বড় মাদ্রাসার তালিকা করা হচ্ছে।

Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.