নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই বাঙালি জাতীয়তাবাদের চূড়ান্ত বিকাশ ঘটে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন আলোচনা করতে হলে এদেশের ঐতিহাসিক পটভূমি বিশ্লেষণ প্রয়োজন। সংক্ষেপে সে আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করা হলো। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনই এ উপমহাদেশে জাতীয়তাবাদী ভাবধারার জন্ম দেয়।
সে সময় হিন্দু-মুসলিম উভয় শ্রেণীর সচেতনতা, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রতিক্রিয়া, রুশ বিপ্লবের অভিঘাত অর্থাৎ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ নানা ধরনের জাতীয়তাবাদের জন্ম দেয়। দেশবিভাগের পূর্বে বাংলার মুসলিম লীগের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং কংগ্রেসের শরৎবাবু প্রমুখের নেতৃত্ব ভারতের পূর্বাঞ্চলে একটি অখ- স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়াস দেখা যায়। বাঙালির জাতীয় ঘটনাপ্রবাহে যার মূল সুর অনুরণিত হয়েছিল
১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবে। ঐতিহাসিক প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন বাংলার প্রাণপ্রিয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। ‘লাহোর প্রস্তাবে একাধিক সার্বভৌম রাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করা হয়। ভারতের পূর্বাঞ্চলের বাংলা ও আসাম নিয়ে একটি এবং পশ্চিমাঞ্চলের বেলুচিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্তপ্রদেশসমূহ নিয়ে অপরটি (যে সব অঞ্চলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ)। বুদ্ধিজীবী মহলে বলতে শোনা যায়, লাহোর প্রস্তাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ নিহিত ছিল। কিন্তু ১৯৪৬-এর ৯ এপ্রিল অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের দিল্লি কনভেনশনে মুসলমানদের একটা স্বতন্ত্র গণপরিষদের দাবি তোলা হয়।
এর আগে ১৯৩৭ সালে ভারতবর্ষে যে নির্বাচন হয় তা ভারতবর্ষের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এ নির্বাচনের ফলাফলেই প্রতিষ্ঠা পায় মুসলমানদের দ্বিজাতি তত্ত্ব। এ নির্বাচনে কংগ্রেস বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে নির্বাচিত হয়। ৮০৮টি আসনের মধ্যে ৭১১টি আসনে বিজয়ী হয়। কিন্তু মুসলমানদের জন্য সংরক্ষিত ৪৮২টি আসনের মধ্যে মাত্র ২৬টি আসন লাভ করে। মুসলিম লীগ সর্বত্রই মন্ত্রিসভায় নিজ নিজ অন্তর্ভুক্তি দাবি করে।
তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি জওহরলাল নেহরু এ দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন। জিন্নাহ তাতে প্রচন্ড প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। আলোচ্য পরিস্থিতিতেই ১৯৪০ সালের ১৩ আগস্ট মুসলিম লীগ ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং মোঃ আলী জিন্নাহ দ্বিজাতি তত্ত্বের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন। ভারতের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও বৈরী ভাব নিরসনে ১৯৪৭ সালের ১৩ আগস্ট পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অধিষ্ঠিত থাকেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ১৪ আগস্ট ভারত বিভক্তির পরে কলকাতার মুসলিম বসতিপূর্ণ কিছু কিছু এলাকায় ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়।
তাই কলকাতায় মুসলিম বসতিপূর্ণ এলাকার লোকেরা সোহরাওয়ার্দীকে তাদের সঙ্গে কলকাতায় অবস্থানের অনুরোধ জানান। সোহরাওয়ার্দী তাদেরকে ফেলে কলকাতা ছেড়ে যেতে পারলেন না। এ সময় গান্ধী ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী অসীম সাহসিকতা ও বলিষ্ঠতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন। সোহরাওয়ার্দীর জীবনে এটি শ্রেষ্ঠ পর্ব।
এরপর বাংলায় শান্তি প্রতিষ্ঠা শেষে গান্ধীজী দিল্লিতে কয়েক সপ্তাহ অবস্থান করেন।
ঠিক ওই সময়ে পশ্চিম ভারতে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হলে তা অতীতের সব ঘটনাকে ছাড়িয়ে যায়। গ্রামকে গ্রাম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ট্রেনের মধ্যে গাদাগাদি করে থাকা মুসলমান উদ্বাস্তুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও ভারত বিভাগের ভয়াবহ চিত্র এটি।
এদিকে ১৯৪২ সালে গোপালগঞ্জ থেকে এন্ট্রান্স পাস করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেকার হোস্টেলে অবস্থান করেন। এ সময়ই তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ছাত্রজীবন থেকে তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে পথপ্রদর্শক হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।
তাই মুসলিম লীগের রাজনীতি দিয়ে তার রাজনৈতিক কর্মতৎপরতা শুরু হলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে ওঠেন অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারক বাহক।
ভারত ও পাকিস্তান দুটি রাষ্ট্রের সৃষ্টি হলে তিনি সোহরাওয়ার্দী সমর্থিত অনেকের মতো কলকাতায় অবস্থান করেন। পাকিস্তানের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিলেও মুসলিম লীগের সামন্ত মানসিকতা ও শ্রেণী চরিত্র প্রত্যক্ষ করে অনেকের মতো তিনিও অনুধাবন করেন যে নব্য প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান বাঙালি মুসলমানদের স্বপ্নপূরণে সমর্থ হবে না। আর যে মুসলিম লীগের পতাকাতলে তিনি নিজেও পাকিস্তান অর্জনে শামিল হয়েছিলেন, সেই মুসলিম লীগের সঙ্গে সম্পর্ক রাখাই হয়তো বেশিদিন সম্ভবপর হবে না বলে তিনি মনে করেন।
১৯৪৭ সালের ৩ জুন ব্রিটেন ভারত এবং পাকিস্তানকে স্বাধীনতা প্রদানের অঙ্গীকার ঘোষণার পরপরই তিনি এক বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলার জনগণ চায় নবাব-জমিদার-মহাজন প্রভৃতি শোষক শক্তির হাত থেকে মুক্তি।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ স্বাধীনতা প্রকৃত স্বাধীনতা নয়। বাংলার মাটিতে আমাদের নতুন করে সংগ্রাম শুরু করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে বাংলার মুসলিম বুদ্ধিজীবী সমাজের অনেকেই মুসলিম লীগের শ্রেণী চরিত্র ও নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের কার্যকলাপ নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন। তারা জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বকে অখ- পাকিস্তানের আদর্শিক ভিত্তি হিসেবে নয়, ভারতীয় মুসলমানদের ব্রিটিশবিরোধী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের একটি কৌশলগত কাঠামো বলে মনে করতেন। যা সুস্পষ্টভাবে ধরা পড়ে ’৪৮ থেকে ’৫২-র ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।
ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ হয়েছিল তা ছিল অবিমিশ্রভাবে আজকের বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ও উত্থান। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন সেই জাতীয়তাবাদের পথ পেরিয়ে ’৬৬-এর ৬ দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচনের পথ পেরিয়ে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয়। আমরা ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্নপূরণে সক্ষম হই। ১৯৭২-এর সংবিধানে স্থান পায় ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ। আমাদের সুদীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পথ পেরিয়ে এই অমূল্য অর্জনের মহানায়ক ছিলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রাণপুরুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আগস্টে শোকের অঙ্গীকার হোক সেই মহান অর্জনকে ধরে রাখার প্রত্যয়ে। সুত্র
১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৮:৫৬
তালপাতারসেপাই বলেছেন: আরেক দিন। আগে ফাসির রায় হয়ে নিক
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৬
কামাল উদ্দিন ফারুকী জুয়েল বলেছেন: তার জীবনের অন্তিম অবদান বাকশাল নিয়ে ত কিছু বললেন না!