নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
মহান মুক্তিযুদ্ধের পর চার যুগেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। বারংবারের সামরিক শাসন ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভিত এখনো টেকসই অবস্থান লাভ করেনি। আরো দুর্ভাগ্য যে, এ রাষ্ট্রের রক্তার্জিত স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আজো ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। এই ষড়যন্ত্রকারীরা দেশী-বিদেশী পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও সকল মৌলিক অর্জনকে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
যে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদকে সকল ধর্মবর্ণের মানুষ ১৯৭১ সালে পরাজিত করেছিল, সেই সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ দেশের মাটিতে পুনর্জন্ম পেতে শুরু করেছে। সাম্প্রতিক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেসব অশুভ শক্তির ভয়ঙ্কর চেহারা নতুন করে চোখে পড়েছে। তারা ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বাড়িঘরসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। তাদের বিপন্ন, নিরাপত্তাহীন করেছে। অন্যদিকে আতঙ্কিত করেছে বিবেকবান দেশবাসীকে।
জঙ্গিবাদের হুমকি : বলাই বাহুল্য, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো জঙ্গিবাদের হুমকির মুখে। এই তত্ত্বধারীরা দ্বিমত প্রকাশের সংস্কৃতি, ভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির অবস্থানকে সহিংস পন্থায় ধ্বংস করে। তারা মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি অস্বীকার করে, নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতাকে নস্যাৎ করে। অর্থাৎ জঙ্গিবাদ সার্বিকভাবে আদিম, জংলি সমাজের পথে মানুষকে অগ্রসর করে। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সার্বিক নিরাপত্তাহীনতার দিকে তাকালে জঙ্গিবাদের ভয়াবহ চেহারা পরিষ্কার হয়।
সম্প্রতি, বিশেষত ২০১৩ সালে, যুদ্ধাপরাধী বিচার প্রতিহত করার নামে স্বাধীনতাবিরোধী পুনর্গঠিত জঙ্গিরা দেশজুড়ে যে সহিংস তা-ব ও নৈরাজ্য চালিয়েছে, তাতে বুঝতে অসুবিধে হয় না যে এরা দেশী-বিদেশী পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রকেই আঘাত করতে উদ্যত হয়েছে। কাজেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবার সময় এসেছে। ধর্ম ব্যক্তির, সমাজ বা রাষ্ট্রের নয়। সহিংস পথ বা জঙ্গিবাদ কোনো ধর্মেরই পরিপূরক নয়। কিন্তু বাংলাদেশে ধর্ম ও জঙ্গিবাদকে পরিপূরক করা হয়েছে, সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করে পরিকল্পিতভাবে ধর্মচর্চার আবরণে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটানো হয়েছে। এর পেছনে আছে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিতদের প্রতিশোধ স্পৃহা, আছে তাদের সেদিনের রাজনৈতিক দর্শনকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা দেয়ার স্বপ্ন।
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ : বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল ১৯৭১ সালে, দখলদার পাকিস্তান বাহিনীর হাতে। তাদেরই প্রত্যক্ষ মদদে, এ দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর ভিত রোপণ করা হয় আল বদর, রাজাকার, আল শামস নামের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাকিস্তান বাহিনী পরাজিত এবং আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু তাদের অক্সিলারি বাহিনীগুলো আত্মগোপন করেছিল। পরবর্তী সামরিক ও আধা-সামরিক শাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় তারা নিজেদের বিকশিত করেছে, সংগঠিত করেছে। মোটকথা, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকেই পরাজিতরা বিজয়ীদের বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধ শুরু করেছে। দুর্ভাগ্য যে, আমরা অনেকেই সেই নতুন যুদ্ধের কৌশল বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি।
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের সংগঠিত চেহারা ভেসে ওঠে মূলত ১৯৮৫ সালে। ২০০৪-৫ সালে ভয়ঙ্কর আগ্রাসী চেহারা ধারণ করে এসব জঙ্গিরা। এদের সাহায্য-সহযোগিতায় বেশ কিছু বিদেশী অর্থাৎ পাকিস্তানি নাগরিকদের দেখা যায়। বিভিন্ন সংস্থার হিসেবে, ছোটবড় মিলিয়ে দেশে বর্তমানে দেশে ৪০টি জঙ্গি গোষ্ঠী কিংবা তারও কিছু বেশির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এরা নানা নামে নানা সময়ে অবির্ভূত হয়।
জঙ্গিবাদ বিশ্বজুড়েই একটি ক্রমবর্ধমান বিপদ। এরপরও নানা কারণে বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ, আমার বিশ্বাস, দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং এর অগ্রযাত্রা ঠেকানো না গেলে তা জাতীয় গৌরবের মুক্তিযুদ্ধ, তার মৌলিক অর্জন ও জাতির প্রত্যাশিত গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। বিশ্বের সকল প্রান্তের ধর্মীয় জঙ্গিরা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির কবর রচনা করে বোমা ও বন্দুকের জোরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে চায়। এদিক থেকে বাংলাদেশের জঙ্গিবাদীদের আলাদা করা না গেলেও তারা আরো বেশি ঘৃণা ও আতঙ্কের। কারণ এরা একই সঙ্গে জাতীয় স্বাধীনতার প্রতিপক্ষ এবং একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের পৃষ্ঠপোষকতায় লালিত পালিত।
জঙ্গিবাদ বিরোধী লড়াই : জঙ্গিবাদ ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক সমাজের মৌলিক ভিত্তি নষ্ট করে। সমাজকে কলুষিত করে, বিভাজিত করে, ঘৃণা ছড়ায়, অসহিষ্ণু করে। কাজেই এই অপশক্তির বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। তবে, আমার ধারণা, জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইকে কেবলই পুলিশি তৎপরতা বা নিছক আইনশৃঙ্খলার বিষয় হিসেবে দেখা উচিত হবে না। এ লড়াই হতে হবে বহুমাত্রিক, বহু অঙ্গনে, এবং এর ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হতে হবে চিরাচরিত সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের সীমানা ছাড়িয়ে।
আমার আরো বিশ্বাস, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ের সাফল্য নির্ভর করবে কতোটা সার্থকভাবে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী মহলের মূল আস্তানা জামাতে ইসলামীর বিরুদ্ধে এ লড়াই চালানো যেতে পারে। কারণ দেশী-বিদেশী সংস্থা ও নানান সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে কোনো নামেই আবির্ভূত হোক না কেন জঙ্গিবাদীদের সাথে এই দলটির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা আছে।
জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে ব্যর্থতা : উগ্র-সাম্প্রদায়িক শক্তি ও জঙ্গিবাদ পরিপূরক। রাজনীতি থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় সন্ত্রাস দূর করা না গেলে জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিতে বাধ্য। বলাই বাহুল্য, এদের উত্থান প্রতিরোধে বাংলাদেশের অতীত রাষ্ট্রশক্তিগুলোর বড় ব্যর্থতা আছে।
১৯৭৫ এর রক্তাক্ত পালাবদলের পর দুর্ভাগ্যজনক রাজনৈতিক পরিবেশে বেশ কিছু বড় দলের রাজনীতির জন্য জঙ্গিবাদ হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। মুখে যাই বলা হোক না কেন, উদার গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধপন্থী প্রগতিশীল সমাজ ও সাংস্কৃতিক শক্তির বিরুদ্ধে আঘাত হানতে তারা জঙ্গিদের ব্যবহার করছে। এর দৃষ্টান্ত অনেক।
বাংলাদেশের সামরিক ও আধা-সামরিক রাষ্ট্রশক্তিগুলো যেমন জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, একইভাবে বেশ কিছু বড় রাজনৈতিক দল জঙ্গিবাদকে লালন করেছে, কেউ আবার আপোস করেছে। গণতান্ত্রিক রাজনীতির আবরণে এই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতা দূর করা না গেলে সংকটের মাত্রা ক্রমান্বয়েই বাড়বে।
ব্যর্থতা আরো আছে। জঙ্গিবাদী ও উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে হত্যা-নির্যাতন-হামলার নিরন্তর ঘটনার পরও তাদের উত্থানের উদ্দেশ্য, তাদের মতবাদের অসারতা, মানবতা ও প্রগতিবিরোধী, এমনকি তাদের ধর্মবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে যথাযথ প্রচারণার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত রয়েছে।
এই উগ্র-তত্ত্বধারীরা মূলত গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় মূলত দুটি কারণে। এক. তারা ধর্মচর্চা ও ধর্মীয় লেবাসের আবরণে একচেটিয়া প্রচারের মাধ্যমে গ্রামগঞ্জের সাধারণ জনগোষ্ঠীকে প্রলুব্ধ করে। দুই. তারা গরিব জনগোষ্ঠীকে বৈষয়িক বা আর্থিক সুবিধে সরবরাহ করে ধর্মীয় শিক্ষার নামে জঙ্গিবাদের ঝা-া হাতে তুলে নিতে বাধ্য করে।
আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, এদের এই কৌশলের বিরুদ্ধে কার্যকর পাল্টা প্রচারণার বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে। জঙ্গিবাদীরা গ্রামগঞ্জের মানুষের কাছে প্রায় একচেটিয়াভাবে ইসলাম রক্ষা বা ধর্মরক্ষার সেøাগান তোলে, যেখানে তাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।
বাংলার মাটি, আলো, বাতাসে জঙ্গিবাদ ক্ষতিকর বিজাতীয় আগাছা বা বিষবৃক্ষ। বাংলার হাজার বছরের ইতিহাসে পরমত সহনশীলতার যে সংস্কৃতি তারই বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এই আগাছা বা বিষবৃক্ষ সম্প্রসারিত হচ্ছে। সে কারণে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জাতির দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন। এ লড়াই কোনো বিশেষ দলের বা মতের নয়, এ লাড়াই ‘হাফ হার্টেট’ নয় ; একে হতে হবে ‘ডিসাইসিভ’, অর্থাৎ চূড়ান্ত লড়াই।
যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী নীতি : লক্ষ করা গেছে যে, জঙ্গিবাদবিরোধী ঘোষিত নীতি-অবস্থানের পরও বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ধর্মভিত্তিক উগ্রবাদী দল-গোষ্ঠী সম্পর্কে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র দ্বৈতনীতি অবলম্বন করে চলেছে। তারা কখনো উগ্রবাদীদের ‘মডারেট ইসলামি’ বলছে, কখনো আবার তাদের সঙ্গে সখ্য স্থাপন করে রাজনৈতিকভাবে তাদের প্রতিষ্ঠিত করার নীতি অবলম্বন করছে। ওয়াশিংটনের এই দ্বিমুখী নীতি কেবলই দুর্ভাগজনক নয় জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ের বড় অন্তরায়। এই নীতির পরিবর্তন জরুরি।
উল্লেখ করা যেতে পারে, যুদ্ধাপরাধের প্রত্যক্ষ সাক্ষ্যপ্রমাণ এবং জীবন্ত ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে দ-প্রাপ্ত বা বিচারাধীন শীর্ষ জামাতি নেতাদের পক্ষে মার্কিনি সাফাই সে দেশটির জঙ্গিবিরোধী অবস্থানকে প্রবলভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ের সাফল্যের সঙ্গে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ের সাফল্য নির্ভর করছে।
‘গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’ : জঙ্গিদের ‘গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’ আছে। শুধু মধ্যপ্রাচ্য বা এশিয়া নয়, ইউরোপ-আমেরিকার মাটিতে তাদের ঘাঁটি শক্ত। বিভিন্ন মুসলিমপ্রধান দেশগুলোতে ইতোমধ্যেই সে ‘নেটওয়ার্ক’ জায়গা করে নিয়েছে। বলা যায়, তুরস্ক থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রকে এই জঙ্গিরা হুমকির মুখে ফেলেছে। বাংলাদেশে তাদের বিচরণ কম না হলেও একমাত্র বাংলাদেশই এই অপশক্তির অগ্রযাত্রা কমবেশি রুখতে পেরেছে। এর প্রধান কারণ, বাঙালির অসাম্প্রদায়িক জাতিসত্তার দৃঢ় ভিত্তি। আমার বিশ্বাস, যে বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়, সে বাঙালি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবশ্যই সফল হবে। প্রয়োজন শুধু উপযুক্ত নীতিনির্ধারণ এবং এ লড়াইয়ের সঙ্গে গণমানুষের সম্পৃক্ততা।
কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ : সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ে জিততে হলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনাকে, কেবল ইতিহাসের প্রয়োজনে নয়, সময়ের প্রয়োজনেও চর্চা করতে হবে। এ লড়াইকে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধানকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিপূর্ণভাবে ফিরিয়ে নিতে হবে। আগে উল্লেখ করেছি, জঙ্গিবাদের ‘গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’ আছে। এ নেটওয়ার্ক বেশ শক্ত এবং বিস্তৃত। কাজেই একে বিচ্ছিন্নভাবে দমন করা সম্ভব নয়। সে কারণে জঙ্গিবাদ দমনে ‘আঞ্চলিক ও গ্লোবাল টাস্কফোর্স’ গঠন করার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
লক্ষ করার বিষয় যে, জঙ্গিবাদ প্রচারে মাঠ পর্যায়ে যারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয় তারা অশিক্ষা ও কুশিক্ষায় আক্রান্ত। সত্যিকারের ধর্মীয় শিক্ষা জঙ্গিবাদের বিস্তার বাধাগ্রস্ত করে। কাজেই মসজিদের ইমাম, সমাজপতি ও ইসলামি চিন্তাশীলদের কাজে লাগাতে হবে।
এ অভিযোগ অস্বীকার করার উপায় নেই যে, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বহুলাংশেই বৃহত্তর সমাজ ও আধুনিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তাদের অনেকেই বাধ্য হয়ে জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কাজেই মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে হবে যাতে এসব শিক্ষার্থী বৃহত্তর আধুনিক জীবনের সন্ধান পায়। তবে শুধু মাদ্রাসাতেই নয়, ইংরেজি মাধ্যমের উচ্চবিত্ত শিশুদেরও একটি অংশ পরিবার ও সমাজে বিচ্ছিন্নতার শিকার হয়, যে কারণে তারা কেউ কেউ উগ্রতত্ত্বে দীক্ষিত হয়। এ ব্যাপারে নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই ভাবতে হবে।
মুখ্যত সমাজের দরিদ্র অংশই জঙ্গিবাদের শিকার। কাজেই যেসব এনজিও বা স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান জনহিতকর কাজের আড়ালে জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
গণতন্ত্রের মূল শত্রু জঙ্গিবাদ। কাজেই গণতন্ত্রকে দলীয় স্বার্থে নয় আদর্শিক স্বার্থে চর্চা করতে হবে। কোনো ধর্মই জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না। ধর্মচর্চা ব্যক্তির অধিকার। কিন্তু এই অধিকারের নামে জঙ্গিতত্ত্ব ছড়িয়ে যারা রাজনীতি করতে চায়, তাদের দমন করার অধিকার গণতান্ত্রিক মানুষের থাকে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ বিরোধী জামাতে ইসলামী দলটি বিগত চার যুগ ধরে জঙ্গিবাদের মূল পৃষ্ঠপোষক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কাজেই এ দলটিকে নিষিদ্ধ করা সময়ের দাবি। পাশাপাশি জঙ্গিবাদের পুঁজি, তার সরবরাহ চ্যানেল, প্রচার ও অর্থ উৎস বন্ধ করার বিষয়টি যতো দ্রুত সম্পন্ন হবেÑ ততো দ্রুত বাংলাদেশে জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াই সফল হবে বলে আমার বিশ্বাস। সুত্র
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:২২
াহো বলেছেন:
জিয়ার আমলে অভুত্থ্যান প্রচেষ্টার অজুহাতে সংক্ষিপ্ত সামরিক আদালত
20 Oct 1977 টাইমস সংবাদপত্র
লন্ডন যুক্তরাজ্য
02 Oct বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের চক্রান্ত
37 মৃত্যুদন্ড কার্যকর ,20 জনের life-term কারাগার
মার্শাল ল ট্রাইব্যুনাল এ পর্যন্ত 460 জনের বিচার এবং 63 নির্দোষ বলে রায়
তিনটি রাজনৈতিক দল নিষিদ্