নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘পঁচাত্তরের পরে দেশ স্বাধীন’ - ৩

১৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:৪৯

এরপর ‘নিরাপদ’ আশ্রয়ের সন্ধানে ইউনিটের জোয়ানরা শেষরাতে ষোলশহর রেললাইন দিয়ে পদব্রজে এবং মেজর জিয়া জিপে কালুরঘাট ব্রিজ পার হয়ে বোয়ালখালী থানার করইলডাংগা গ্রামে পাহাড়ের পাদদেশে আশ্রয় নেন ২৬ মার্চ ভোরে অর্থাৎ তারা শহর থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। শমশের মবিনের ভাষায় “আমরা বিশ্রাম নিলাম এবং রি-অরগানাইজ করলাম। ২৬ মার্চ এভাবে কেটে গেল।”

আরও তথ্য পাওয়া যায় যে, জিয়া কক্সবাজার দিয়ে পাক মিত্র বার্মা হয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন (ড. গাজী সালেহ উদ্দিন- জনকণ্ঠ ৩/৪/১৪)।

মেজর জিয়ার বেতার কেন্দ্রে গমন ও ভাষণ প্রদানের তথ্য রয়েছে জিয়াসহ উল্লিখিত সেনা কর্মকর্তাদের লেখায় এবং তারিখটি ২৭ মার্চ। কর্নেল ওয়ালী আহম্মদ জীবনের শেষ নেই গ্রন্থ (পৃঃ ৯৭) তারিখটি ২৭ মার্চ। কর্নেল অলী আহমদ ১৯৭৪ সালে মেজর মীর শওকাত স্বাক্ষরিত ও জিয়া অনুস্বাক্ষরিত একটি সনদপত্র গ্রহণ করে যে তিনিই প্রথম বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার খবর জিয়াকে দিয়েছিলেন। বলা নিষ্প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট স্থানটি ছিল পাকবাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কিভাবে বেতার কেন্দ্রে গেলেন তা এসব লেখায় অনুপস্থিত। ২৭ মার্চ সকালে বেতার কর্মী বেলাল মোহাম্মদ বেতার কেন্দ্রে পাহারার জন্য জিয়ার সন্ধানে যান এবং পটিয়া থানায় রোস্ট দিয়ে ব্রেকফাস্ট এবং স্বাধীন বাংলা বেতারের অনুষ্ঠান প্রভাবিত জিয়ার সাক্ষ্য পান। সেখান থেকে ৩টি লরিতে জওয়ান এবং ১টি জিপে জিয়াকে বেতার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন বিকেল ৫টা নাগাদ (স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পৃঃ ৫৮-৫৯)। বেলাল মোহাম্মদের এই তথ্যের প্রতিবাদ কেউ করেননি।

মেজর জিয়ার ভাষায়Ñ (মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর- শামসুল হুদা চৌধুরীর পৃষ্ঠা- ৪৩)।

‘২৭ মার্চ শহরের চারদিকে বিক্ষিপ্ত লড়াই চলছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় রেডিও স্টেশনে এসেছিলাম। এক টুকরা কাগজ খুঁজছিলাম। হাতের কাছে একটি এক্সারসাইজ খাতা পাওয়া গেল। তার একটি পৃষ্ঠায় দ্রুত প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম ঘোষণার কথা লিখলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে তার প্রচার করা হলো। ২৮ মার্চ সকাল থেকে পনেরো মিনিট পর পর ঘোষণাটি প্রচার করা হলো।’

স্বাধীনতার ঘোষক কে এই বিতর্কের জবাব জিয়ার তৎকালীন বিশ্বস্ত সহচর পরবর্তীতে বিএনপি নেতা লে. জে. মীর শওকত আলীর ১৯৮১ সালে প্রদত্ত একটি সাক্ষাতকারের সংশ্লিষ্ট অংশের উদ্ধৃতির মাধ্যমে (বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে দলিলপত্র: ৯ম খ- ১২০-২১ পৃ.)



“প্র. বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা বেতারে কখন প্রচারিত হয়েছে বলে আপনি বলতে চান?



উ. এটা একটি বিতর্কিত প্রশ্ন। বেতারে স্বাধীনতা ঘোষণা যেটা নিয়ে সব সময় বিতর্ক চলতে থাকে যে জেনারেল জিয়া করেছেন, না আওয়ামী লীগ থেকে করেছেন, আমার জানামতে সব চাইতে প্রথম বোধহয় চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে হান্নান ভাইর কণ্ঠই লোকে প্রথম শুনেছিলেন। এটা ২৬ মার্চ ’৭১ অপরাহ্ণ দুটোর দিকে হতে পারে।



কিন্তু যেহেতু চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের প্রেরক যন্ত্র খুব কম শক্তিসম্পন্ন ছিল, সেহেতু পুরা দেশবাসী সে কণ্ঠ শুনতে পাননি। কাজেই যদি বলা হয়, প্রথম বেতারে কার বিদ্রোহী কণ্ঠে স্বাধীনতার কথা উচ্চারিত হয়েছিল, তাহলে আমি বলব যে চট্টগ্রামের হান্নান ভাই সেই বিদ্রোহী কণ্ঠ। তবে এটা সত্য যে পরদিন অর্থাৎ ২৭ মার্চ ’৭১ মেজর জিয়ার ঘোষণা প্রচারের পরই স্বাধীনতা যুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেয়।”

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট বেতার ঘোষণাস্থলে জেনারেল জিয়া কোন স্মৃতিস্তম্ভ না করে মেজর জিয়ার অষ্টম বেঙ্গল ইউনিটটি যেখানে ছিল সেখানে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পরে একটি পার্ক তৈরি করেন। এর ফলকটি নিম্নরূপ।



॥ বিপ্লব উদ্যান ॥



এখানে বীর চট্টলার অধিবাসীবৃন্দ এবং ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালী অফিসার, জুনিয়র কমিশনড অফিসার ও সৈনিকেরা মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে নিরপরাধ বাঙালীদের ওপর পাকিস্তান সরকারের বর্বোরচিত হামলার বিরুদ্ধে ২৬ মার্চ ’৭১ তারিখে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে অবতীর্ণ হন।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য

রাষ্ট্রপতি লে. জে. জিয়াউর রহমান

বি.ইউ. পিএসসি-

১৯শে এপ্রিল, ১৯৭৯ইং।



জিয়া লিখে গেছেন তারিখটি ২৭, এখন তারা বলছেন ২৬ মার্চ। জিয়ার ভাষায় বঙ্গবন্ধু জাতির জনক, ওরা মানে না। মিথ্যাবাদী কে? কে আছে জিয়ার সেই ভাষণে যে তার বাজে না? তাহলে শোনা যাক জিয়ার কণ্ঠে:

The govt. of the Sovereign state of Bangladesh, on behalf of our Great Leader, the Supreme Commander of Bangladesh, Sk. Mujibur Rahman, we hereby proclaim the Independence of Bangladesh...





উল্লেখিত প্রামাণ্য দলিল সাক্ষ্য দেয় জিয়ার বেতার ভাষণের ৩০ ঘণ্টা পূর্বে এম, এ, হান্নান বেতার ভাষণ দেন। এর পূর্বেই কুমিল্লায় ২৩ মার্চ ’৭১ তারিখ খালেদ মোশারফ এবং জয়দেবপুরে ১৯ মার্চ ’৭১ মেজর শফিউল্লাহ/মঈনুল হোসেন চৌধুরী প্রতিরোধ যুদ্ধে বাঙালীর পক্ষে অবস্থান নেয়। ঢাকা/ চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের পাকবাহিনী রাত সাড়ে ১০ টায় বাঙালীর ওপর আক্রমণ শুরু করলেও ২৫ মার্চ রাত দুটো পর্যন্ত সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস এবং পাক সেনাদের বিরুদ্ধে সড়ক ও জনপথে বাঙালীর দেয়া বেরিকেড পরিষ্কার পাকবাহিনীর পক্ষে কর্তব্যরত ছিলেন। আগ্রাবাদে বেরিকেড না থাকলে জিয়া বন্দরে পৌঁছে যেতেন। রাত দুটো পর্যন্ত ষোলশহরে এসে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। অথচ এই শহরে বিডিআর এ কর্মরত ক্যাপ্টেন রফিক মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ২৫ মার্চ রাত ৯টা থেকে এবং শহরেই পাকবাহিনীর প্রতিরোধে ব্যস্ত ছিলেন। ২৭ তারিখ সন্ধ্যায় বেতার ভাষণের সময় তার ভাষায় শহরের চারিদিকে বিক্ষিপ্ত লড়াই প্রমাণ দেয় যে তার ঘোষণার পূর্বেই বাঙালীর প্রতিরোধ (যেখানে তিনি ছিলেন না)। উল্লেখ্য, প্রশ্নের আদৌ নিষ্পত্তি হয়নি জিয়ার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ স্বতঃফূর্ত ছিল না তার প্রেক্ষাপটে বলা যায় যে, বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দিন, তোফায়েল থেকে শুরু করে আওয়ামী, ছাত্রলীগ এবং সকল সংসদ সদস্যের সামরিক আদালতে একতরফা বিচার হয়েছিল কিন্তু জিয়ার কণ্ঠস্বর পাক বাহিনী শুনেছিল এবং একজন ডেজার্টার আর্মি হিসেবে তার কোর্ট মার্শাল হয়নি। অর্থাৎ পাক বাহিনী তাকে শত্রু মনে করেনি এবং সে যে শত্রু ছিল না বরং পাকিস্তানী এজেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিল তার প্রমাণ ’৭৫-এর পরবর্তীতে নয় বরং ১৯৭১ সালে জিয়া যখন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে তার স্ত্রীর দেখাশোনার জন্য পাক বাহিনীকে অনুরোধ করেন। তার জবাবে পাক বাহিনী থেকে বলা হয়েছিল যে, তারা শুধু তার স্ত্রীর হেফাজত করছেন না বরং জিয়াকে যে দায়িত্ব পাক বাহিনী দিয়েছেন তিনি সফলভাবে পালন করছেন বলে পাক বাহিনী সন্তুষ্ট (এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জিয়া কখনও করেননি)। এই তথ্যটি লিখেছেন এবং জাতীয় সংসদে বলেছেন বিএনপি নেতা মেজর হাফিজ উদ্দিন, বীরবিক্রম।

(চলবে)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ৮:৫৩

কলাবাগান১ বলেছেন: গতকাল লরেন্স লিফশুলজ কর্নেল তাহেরের সাথে কিভাবে পরিচয় তার বর্ননা করছিলেন। লরেন্স লিফশুলজ তখন ১৯৭৪ সনের বন্যা নিয়ে কাজ করছিলেন এবং বন্যার উপর একজন এক্সপার্ট খুজছিলেন এবং একজনের রেফারেন্সে কর্নেল তাহেরের কথা শুনেন যে তাহের এই সমস্যার সমাধানের জন্য কিভাবে কাজ করছেন। নারায়নগন্জে তারা মিট করেন এবং সেখানে কর্নেল তাহের লরেন্স লিফশুলজকে ম্যাপ চার্ট দ্বারা বুঝান যে কিভাবে এক্সটেনসিভ ভাবে খাল কেটে এই বন্যা সমস্যার সমাধান করা যায় এবং কর্নেল তাহের মনে করতেন এরজন্য দরকার পিপলস আর্মী যারা শুধু যুদ্ধই করবে না, তারা খাল ও কাটবে। পিপলস আর্মীর ভাবধারা থেকে ই ৭ই নভেম্বরের 'অভ্যুথান' .......

(পরবর্তীতে জিয়ার খাল খনন কার্যক্রম কি তাহলে তাহলে আসলে কর্নেল তাহের থেকেই আসে???)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.