নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইএমটিএস : দ্রুত ও নিরাপদে অর্থ প্রেরণের নতুন দিগন্ত

২৮ শে মে, ২০১৪ সকাল ৮:০০



মানি অর্ডার ‘রানার ছুটেছে, তাই ঝুমঝুম ঘণ্টা বাজছে রাতে, রানার ছুটেছে খবরের বোঝা হাতে’ সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই কবিতায় রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছুটে চলা একজন কর্তব্যপরায়ণ রানারের অক্লান্ত পরিশ্রমের অকৃত্রিম বর্ণনার পাশাপাশি সেই সময়ের ডাক বিভাগের বেহাল যোগাযোগ ব্যবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছে। মাস শেষে অভাবক্লিষ্ট বাবার অপেক্ষা কখন রানার আসবে তার ছেলের পাঠানো ‘মানি অর্ডার’ নিয়ে; মায়ের বাসনা মানি অর্ডারের শেষভাগে লেখা ছোট্ট চিরকুটে তার যক্ষেরধনের ছুটিতে বাড়ি আসার দিন-তারিখের বিবরণ আছে কি না; বিরহিনী বধূর অপেক্ষার আর শেষ হয় না- স্বামীর নিজ হাতের লেখা চিঠিখানা পড়ে কখন সে প্রিয় মানুষটির পরশ অনুভব করবে; ছোট ভাই আর বোনের উৎকণ্ঠা কখন রানার আসবে ভাইয়ের ‘মানি অর্ডার’ নিয়ে স্কুলে বেতন দেওয়ার তারিখ তো শেষ হয়ে আসছে। এটা ছিল একসময় রূঢ় বাস্তবতা। কিন্তু এখন কি সে অবস্থা বিদ্যমান আছে? তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে টাকা প্রেরণের সেই সেকেলে ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে ডাকঘরে। ডাকঘরে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষকে টাকা প্রেরণের সেই সেকেলে ব্যবস্থার ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিয়েছে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ গ্রামীণ জনপদে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য চালু করেছে ‘ইলেক্ট্রনিক মানি অর্ডার সার্ভিস (ইএমটিএস)’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ২৬ মার্চ ইএমটিএস কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং একই বছর মে মাসে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এই সার্ভিসটি নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কাজ শুরু করে।

ইএমটিএস সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের একটি উল্লেখযোগ্য আধুনিক যুগোপযোগী সংযোজন। এই সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে প্রয়োজন শুধুমাত্র একটি মোবাইল সংযোগ।

মাত্র এক বছর আগের কথা। নীলফামারীর জলঢাকা থেকে ঢাকায় এসে নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছেন ফরহাদ। ঢাকায় বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সে দ্রুতই জানতে পায় গ্রামে থাকা তার বাবার অসুস্থতার খবর। টাকার অভাবে তার বাবাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না জেলা সদর হাসপাতালে। সেদিনের বেহাল অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে ফরহাদ বলেন কি যে একটা রাত কাটিয়েছি। বাবা অসুস্থ, শুধুমাত্র টাকার অভাবে বাবাকে ডাক্তার দেখাতে জেলা সদরে নেওয়া যাচ্ছে না। আর আমি বেতনের টাকা পকেটে নিয়ে ঘরে বসে আছি। কি করে টাকা পাঠাবো। আমার নতুন চাকরি। অফিস ছুটি দেবে না। ঢাকা শহরে তেমন কোনো আত্মীয় নেই যাকে দেশে পাঠানো যায়। মানি অর্ডার করবো; সেই টাকা পৌঁছাতে লাগবে সাত দিন।

ঢাকার এক সরকারি অফিসে পিয়নের চাকরি করেন আব্দুর রহমান। বেতন পেয়েই বাড়িতে টাকা পাঠিয়ে দেন বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী আর দুই ছেলেমেয়ের জন্য। গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পঞ্জবরণ ইউনিয়নে। জেলা সদরে আসতেই সময় লেগে যায় এক দিন। একমাত্র পোস্ট অফিসের মানি অর্ডারই ভরসা ছিল এত দিন। কিন্তু এখন আর ডাক পিয়নের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয় না আব্দুর রহমানের বাবা-মাকে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ইএমটিএস-এর মাধ্যমে এখন কয়েক মিনিটের মধ্যেই মোবাইলের মাধ্যমে টাকা পাঠানো যাচ্ছে দেশের যেকোনো প্রান্তে।

কখনও ভাবতেও পারিনি যে সকালে বাড়িতে টাকা পাঠাবো আর টাকা সাথে সাথে ঢাকা থেকে বাগেরহাটে চলে যাবে। অথচ কদিন আগেও সময়মতো টাকা পাঠাতে না পারায় মহাজনের কাছ থেকে সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালাতে হয়েছে তার। ইএমটিএস-এর মাধ্যমে বাড়িতে টাকা পাঠাতে এসে জিপিওতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আব্দুর রহমান এভাবেই তার ভালোলাগার অনুভূতির কথা ব্যক্ত করলেন। তিনি বললেন অল্প কটা টাকা বেতন পাই। বেতন হাতে পেয়েই বাড়িতে টাকা পাঠাই। বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী আর সন্তানের জন্য একমাত্র ভরসা তো এই টাকা কটাই। কিন্তু মানি অর্ডারে টাকা পাঠালে পৌঁছাতে দেরি হয়। তার উপর আবার মানি অর্ডার নিয়ে গেলে ডাকপিয়নকে বকসিস দিতে হয়, কত ঝামেলাই না পোহাতে হয়েছে কদিন আগেও।

ইএমটিএস পদ্ধতি সম্পূর্ণ আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর। বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবারের কেউ না কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। যিনি টাকা পাঠাবেন, তিনি তার মোবাইল সাথে করে ডাকঘরে যাবেন এবং একটি ইস্যু ফরমে নিজের নাম ঠিকানা মোবাইল নম্বর এবং প্রাপকের নাম ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর আর টাকার পরিমাণ লিখে জমা দেবেন। পোস্টাল অপারেটর ফরমের তথ্যানুযায়ী ইলেকট্রনিক মানি অর্ডার (ইএমও) ইস্যু করবেন ঐ ডাকঘরের রেজিস্ট্রারকৃত ইএমটিএস মোবাইল ফোন অথবা সরাসরি কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইটে। এমও ইস্যু হয়ে যাবার পর ইমটিএস’র কেন্দ্রীয় সার্ভার দুটি এসএমএস পাঠাবে। একটি যাবে সংশ্লিষ্ট পোস্ট অফিসের নির্ধারিত মোবাইল ফোনে এবং অন্যটি নম্বরসহ চলে যাবে প্রেরকের মোবাইল ফোনে। এসএমএস পাবার পর প্রেরক তার টাকা কমিশনসহ পোস্টাল অপারেটরকে প্রদান করবেন।

টাকা পাঠানোর পর প্রেরক প্রাপকের কাছে গোপন ১৬ ডিজিটের পিন নম্বরটা পাঠিয়ে দেবেন। প্রাপক তার নিকটবর্তী ডাকঘরে গিয়ে প্রাপ্তি রসিদ পিন নম্বরসহ পূরণ করে উক্ত ডাকঘরের পোস্টাল অপারেটরকে দেবেন। অপারেটর তার ডাকঘরের মোবাইল অথবা ওয়েবের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সার্ভারে পিন নম্বরটি পাঠিয়ে দেবেন। সার্ভারের মাধ্যমে পিন নম্বরটি যাচাই করে প্রাপককে টাকা প্রদান করবেন। প্রাপক টাকা পাবার সাথে সাথে একটি কনফার্মেশন এসএমএস প্রেরকের মোবাইলে চলে আসবে। ডাক বিভাগ এই সার্ভিসটির জন্য প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতি হাজারে ১০ টাকা কমিশন নিচ্ছে।

ইএমটিএস প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত ডাক বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা স্বদেশ খবরকে বলেন, ইলেক্ট্রনিক মানি ট্রান্সফারের প্রক্রিয়াটা আসলে ডাকঘর অটোমেশনের সামগ্রিক একটি বাই প্রোডাক্ট বা উপরি পাওয়া। প্রথমে আমাদের নিজস্ব প্রকৌশলীরা একটি সফটওয়ার তৈরি করেন পুরোপুরি নিজেদের উদ্যোগে। মানি ট্রান্সফারের জন্য আমরা শুধুমাত্র ওয়েবের উপর নির্ভরশীল না থেকে মোবাইল ফোনকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নেই। কারণ দেশের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি, আর বিদ্যুৎ পৌঁছালেও সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকে না। মোবাইল অপারেটর হিসেবে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের সাথে কাজ করছে বাংলালিংক। বর্তমানে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সকল ডাকঘর, ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্ধারিত ২০০টি ডাকঘরসহ সর্বমোট ১৫৫০টি ডাকঘরে এ সার্ভিসটি চালু রয়েছে। প্রতি মাসে বেড়ে চলেছে গ্রাহক সংখ্যা। ২০১০ সালের মার্চ মাসের পরিসংখ্যানে দেখা যায় সর্বমোট ২,১০,৪১৯টি মানি অর্ডার ইলেক্ট্রনিক ট্রান্সফারের মাধ্যমে হয়েছে। একই বছর ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারি মাসে এ সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১,৬২,৭০৩টি এবং ১,৫৫,৮২৫টি। ডাক বিভাগ সূত্র জানায়, মাত্র ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে ২০১১ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ইএমটিএস থেকে ডাক বিভাগ আয় করেছে ৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ২০১১-১২ অর্থ বছরের জন্য ডাক বিভাগ ইএমটিএস থেকে ২৫ কোটি টাকা আয় করেছে।

বাংলাদেশ ডাক বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা স্বদেশ খবর প্রতিবেদককে বলেন, ‘শুরুতে আমাদের একটু শঙ্কা ছিল, কিন্তু আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। শুধুমাত্র এই সার্ভিসের জন্য আমাদের মানি অর্ডার সংখ্যা বিগত মাসে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এক দিকে যেমন আমাদের রাজস্ব আয় বাড়ছে, অন্য দিকে ডাক বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা আবার ফিরে আসছে’। পুরো প্রক্রিয়াটি নির্বিঘেœ সম্পন্ন করার জন্য ডাক বিভাগ ঢাকাতে নিজস্ব ভবনে একটি ‘কল সেন্টার’ এবং ‘হেল্প ডেস্ক’ স্থাপন করেছে। দক্ষ প্রকৌশলীদের নিয়ে গঠিত ‘হেল্প ডেস্ক’ যেকোনো ধরণের যান্ত্রিক ত্রুটি এবং ‘ট্রাবল শূটিং’ করার জন্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন এই সার্ভিসটিকে আমাদের সবগুলো উপডাকঘর অর্থাৎ ৯ হাজার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।’

বাংলাদেশ ডাক বিভাগের যে সুবিশাল নেটওয়ার্কের মধ্যে আট সহস্রাধিক ‘সাবপোস্ট অফিস’ রয়েছে যার মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে ডাক বিভাগের সেবা প্রদান করা হয়। ‘সাবপোস্ট অফিস’ এ কর্মরত প্রায় ২৫,৩৮০ জন জনবলের মধ্যে রয়েছে পোস্ট মাস্টার, ডাক পিয়ন এবং রানার যারা সরাসরি সরকারি কর্মচারী নয় এবং নির্দিষ্ট শর্তের আলোকে ডাক বিভাগের অধীনে কাজ করেন।

জীবন ও জীবিকার তাগিদে গ্রাম থেকে শহরে ছুটে আসা মানুষের পরিবার-পরিজনের সাথে আর্থিক লেনদেনকে সহজতর করতে ইএমটিএস একটি অভূতপূর্ব উদ্যোগ বলে মনে করেন এর সুবিধাভোগী জনগোষ্ঠী। জলঢাকার ফরহাদকে এখন আর অসুস্থ বাবার চিকিৎসার টাকা পকেটে নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় না। মাসের পর মাস মহাজনের সুদ গুনতে হয় না আব্দুর রহমানের বৃদ্ধ মা-বাবাকে। তারা এখন মোড়লগঞ্জ বসেই ছেলের পাঠানো টাকা পেয়ে যান মুহূর্তেই। প্রতি মাসে ইএমটিএস-এর মাধ্যমে ফেনীতে ছোট ভাইয়ের কাছে টাকা পাঠান সাইদুল। সাইদুল বলেন, ‘আমি তো সবসময় এস এ পরিবহনে টাকা পাঠাই, কিন্তু ওদের টাকা পাঠানোর সার্ভিস চার্জটা বেশি। তাই আমার সহপাঠীদের কথা শুনে আজকে প্রথম আসলাম। মনে হলো ব্যবস্থাটা অনেক ভালো আর সহজ। পোস্ট অফিস থেকে যে এত সহজে টাকা পাঠানো যায় এটা ভাবতেই পারিনি।’

ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষবর্ষের ছাত্র সাইদুল ইসলাম টিউশনি করে ছোট ভাইয়ের পড়ার খরচ চালান। তিনি বলেন, ‘শুনেছি এই সার্ভিসটা নাকি ভালো করেছে। আমার অনেক সহপাঠী এর মাধ্যমে এখন টাকা পাঠায়। ওদের কথা শুনেই আজকে টাকা পাঠাতে এসেছি।’ মাছ ব্যবসায়ী আলম ব্যাপারী আরিচা ঘাট থেকে মাছ কিনে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করেন। প্রতিদিনের কাজ শেষে ঢাকা থেকে রাতে মাছ কিনতে যেতেন আরিচা। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে দুর্ভাবনা। টাকাটা নিরাপদে নিয়ে যেতে পারবো তো। এখন তার দুশ্চিন্তার অবসান হয়েছে। ‘টাকা আগেই ডাকঘর থেকে পাঠিয়ে দিয়ে ঝাড়া হাত-পায়ে যেয়ে মাছ নিয়ে ঢাকাতে চলে আসি’। আলম ব্যাপারী বলেন, ‘এই ইলেক্ট্রনিক সার্ভিস চালু হবার পর থেকে আমার আর টাকা নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা করতে হয় না। এই মোবাইল ফোনে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা ব্যবসাটাকে সহজ করে দিচ্ছে।’

ডাক বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ইএমটিএস এর সাফল্য সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা যা দেখেছি, তাতে যে শুধুমাত্র পুরানো মানি অর্ডারের গ্রাহকরাই এই সার্ভিস গ্রহণ করছেন তা কিন্তু না। বরং এই সার্ভিসের ফলে অনেক নতুন গ্রাহক পাচ্ছি। যারা নিয়মিতভাবে অন্য ধরণের যেমন বাস সার্ভিস বা কুরিয়ার বা বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতেন, তাদের একটা বড় অংশ এখন আমাদের কাছে আসছেন। বিগত দু’মাসে আমরা দুই কোটি টাকার ওপর রাজস্ব আয় করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য মাসিক রাজস্ব পাঁচ কোটিতে উন্নীত করা। তিনি জানান, ‘ইএমটিএস-এর মাধ্যমে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কর্মরত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বেতনের টাকা তাদের পরিবারের নিকট প্রেরণ করছে। ইএমটিএস এক দিকে দেশের অর্থনীতিতে ডাক বিভাগের ভূমিকাকে যেমন সমুজ্জ্বল করবে অন্য দিকে তেমনি দেশের সুবিধাবঞ্চিত বিভিন্ন মানুষের জন্য অশেষ উপকার বয়ে আনবে। এটি প্রাথমিকভাবে দেশের সামাজিক নিরাপত্তার আওতাভুক্ত প্রায় ৩০ লাখ সুবিধাবঞ্চিত মানুষের নিকট সরকারের বিভিন্ন ভাতা পৌঁছে দিতে পারে। এছাড়াও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক বেতন, ভাতা, পেনশন ইত্যাদিও পরিশোধ করা যেতে পারে। ইএমটিএস-এর ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যের অবসান হবে, অর্থ আত্মসাতের ঘটনা হ্রাস পাবে, লেনদেনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন চেষ্টা করছি আমাদের অবিভাগীয় পোস্ট মাস্টারদেরকে উদ্যোক্তায় পরিণত করে তাদের মাধ্যমে ইএমটিএস চালু করা। যদি তারা টাকা বিনিয়োগ করেন তাহলে ডাক বিভাগ তাদের সাথে কমিশনের অংশীদারিত্বে চুক্তিবদ্ধ হবে। এর ফলে এক দিকে ইএমটিএস এর সার্ভিস যেমন প্রান্তজনের কাছে চলে যাবে ঠিক তেমনি অবিভাগীয় পোস্ট মাস্টারগণ যারা বর্তমানে মাত্র ৭০০ টাকার সামান্য বেশি সম্মানী পান, তারা স্ব-উদ্যোগে আয় বৃদ্ধি করতে পারবেন।’

এ সার্ভিসের সুবিধাভোগী অনেকেই বলছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে ইএমটিএস-এর সাফল্যের সুবাতাস সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:৫২

শেরশাহ০০৭ বলেছেন: মুবাইল ব্যাংকের যুগে ঈএমটিএস.।.।.।.।.।.।.।.।.। ভাত নাই

২| ২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:১৫

সুমন কর বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। গুড পোস্ট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.