নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা ও তার মরদেহ সমাধিস্থ করার খবরটি পত্রিকার পাতায় ছিলো একেবারেই গুরুত্বহীন। ১৯৭৫ সালের ১৭ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার দু’দিন পর মাত্র দুটি দৈনিক পত্রিকায় একেবারেই সাদামাটাভাবে কয়েকটি অক্ষরে ছাপা হয় এই খবর।
16 AUG 1975 DAINIK BANGLA Front
16 AUG 1975 ITTEFAQ Front
17 AUG 1975 DAINIK BANGLA Front
দৈনিক বাংলা ও ইত্তেফাক সরকারের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে প্রকাশ করে, ‘পরোলকগত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের লাশ শনিবার বিমানে করে ফরিদপুরের টুঙ্গীপাড়ায় তার গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পূর্ণ মর্যাদায় তাদের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়’। এর বেশি কোন শব্দ তারা আর ব্যয় করেনি। পক্ষান্তরে সকল পত্রিকাই সদ্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাকের সংক্ষিপ্ত পরিচয় ফলাও করে প্রকাশ করে।
এছাড়া এ সম্পর্কে দেশ-বিদেশের ১৬ আগস্টের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ১৭ আগস্টের ইত্তেফাক ও দৈনিক বাংলার উল্লেখযোগ্য শিরোনাম গুলো হলো, ‘পূর্ণ মর্যাদায় স্বগ্রামে পরোলকগত রাষ্ট্রপতির দাফন সম্পন্ন’, ‘রাষ্ট্রপতি মুশতাকের প্রতি বাদশাহ খালেদ ও প্রেসিডেন্ট নিমেরীর অভিনন্দন/ সৌদী আরব ও সুদানের স্বীকৃতি’, ‘বাংলাদেশের ঘটনা অভ্যন্তরীন ব্যাপার ঃ ভারতীয় মুখপাত্র’, ‘নয়া সরকারের প্রতি মওলানা ভাসানীর পূর্ণ সমর্থন’, ‘কয়েকটি স্থান বাদে সারাদেশে আজ কার্ফু নেই ঃ ট্রেন বাস বিমান চলবে’, ‘কারফিউ পাস প্রদানের ব্যবস্থা’, ‘প্রামাণ্য ছবি ও সংবাদচিত্র প্রত্যাহার’, ‘দূতাবাসগুলির সাথে যোগাযোগ’,‘মন্ত্রীপরিষদের বৈঠক : পরিস্থিতি সন্তোষজনক’, ‘মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের আগের দফতর বহাল থাকবে’, ‘ড. কামাল হোসেনের লন্ডন উপস্থিতি’, ‘নিউজিল্যান্ড সুসম্পর্ক অব্যাহত রাখবে’, ‘নতুন সরকারের সমর্থনে লন্ডনে শ্লোগান’, ‘নৌ-পরিবহন কর্মীদের কাজে যোগদানের নির্দেশ’ ইত্যাদি।
১৭ আগস্ট বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও মুখপাত্রের বরাতে প্রকাশিত এই দুটি পত্রিকায় আরো বলা হয়েছে, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো এক তাররার্তায় এ সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে পূর্ণ সমর্র্থন ঘোষণা করেন। তিনি তখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
দেশের ঢাকা নগরী, টঙ্গী, নারায়ণগঞ্জ, খালিশপুর, খুলনা ও চট্টগ্রাম ব্যতীত রোববার থেকে সকল স্থানের কারফিউ তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। উল্লিখিত শহরগুলোতে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। অত্যাবশ্যক সার্ভিস ও প্রতিষ্ঠানসমূহে কর্মরত ব্যক্তিদের কারফিউ পাস প্রদানের ব্যবস্থা হয়েছে।
প্রকাশিত সংবাদে আরো বলা হয়েছে, মোশতাক সরকার মন্ত্রী পরিষদের এক বৈঠক করে। রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাকের সভাপতিত্বে ৪০ মিনিট স্থায়ী মন্ত্রীসভার প্রথম এই বৈঠকে, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়।
ওই দিনের খবরে আরো উল্লেখ করা হয়, ১৪ আগস্ট বা তৎপূর্বে তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয় হতে মুক্তিপ্রাপ্ত সকল প্রামাণ্য ছায়াছবি ও সংবাদচিত্র প্রত্যাহার এবং প্রিন্টগুলি অবিলম্বে মন্ত্রণালয়ে জমাদানের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশ দেয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে শুরু করেছে।
১৭ আগস্ট বিদেশী খবরে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হয়, ‘দেশের বাইরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ ছিল সৌদি আরবের স্বীকৃতি প্রদান। সৌদি আরব ও সুদান বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়। বাদশাহ খালেদ ও সৌদী আরব সফররত সুদানের প্রেসিডেন্ট জাফর নিমেরী নয়া রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন জানায়। এক বার্তায় বাদশাহ খালেদ নতুন সরকারের সঙ্গে দৃঢ়তর ইসলামী সংহতি ঘোষণা এবং বাঙ্গালিদের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
আরেকটি খবরে বলা হয়, প্রতিবেশি বন্ধু রাষ্ট্র ভারত জানায় যে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা দেশটির অভ্যন্তরীন ব্যাপার। নয়াদিল্লি থেকে ভারতীয় মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে ভারত চেষ্টা চালিয়ে যাবে। উপমহাদেশের দেশগুলোর সহযোগিতা ও বন্ধুত্বই ভারতের জনগণের কাম্য।
বাসস পরিবেশিত এক সংবাদে লন্ডন থেকে জানানো হয় যে, ‘গতকাল এখানে নয়া সরকারের পক্ষে সমর্থন জ্ঞাপনকারী প্রায় ২শ’ বাঙ্গালি সাবেক রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ভেঙে চুরমার করে। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের কথা শোনার পর তারা কুইনস গেইট এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশ করে। কমিশনের ৫০ জন কর্মচারির মধ্যে কিছু সংখ্যক তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে নতুন সরকারের পক্ষে সমর্থনসূচক ধ্বনি প্রদান করে।’
প্রকাশিত খবরে আরো বলা হয়েছিলো, এদিকে শেখ মুজিব সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন লন্ডনে পৌঁছান বলে হাই কমিশন জানায়। ড. কামাল পশ্চিম জার্মানির ফ্রাঙ্কফুট থেকে নয়া দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তিনি শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ১৬আগস্ট লন্ডনে আসেন।
উল্লেখ্য, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যা করে অসাংবিধানিক উপায়ে সশস্ত্র সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করে খন্দকার মোশতাক। মোশতাক সরকারের নজরদারীতে দৈনিক বাংলা, ইত্তেফাক ও ইংরেজি পত্রিকা দি বাংলাদেশ অবজারভার ছাড়া সকল দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ বন্ধ রাখা হয়।
সুত্র
২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৬
নিজাম বলেছেন: শত ধিক্কার দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক বাংলা। তাদেরকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া দরকার।
৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৩৩
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: কমেন্টে কি লিখবো বুঝতেছিনা
৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:১৯
মোগল সম্রাট বলেছেন: জাতীয় বেইমান খন্দকার মোশতাক!
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:০৭
আয়রোন বাবা বলেছেন: এদেশের সংবাদ মাধ্যম গুলো কোনদিনই স্বাধীন ছিল না.. আর তখন তো কারফিউ ছিল