নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে পাঠানো একটি চিঠির বিষয়বস্তুকে ঘিরে টানাপড়েন শুরু হয়েছে বিএনপিতে। নতুন করে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে দলটিতে। দ্রুত বিষয়টির সুরাহা না করা গেলে যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নেতাকর্মীরা। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে তৃণমূলে। চিঠিতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব জেলা, উপজেলা, থানা ও পৌর কমিটি পুনর্গঠন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চিঠিতে তৃণমূলে বিএনপিসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অক্ষমতা, অযোগ্যতা, ব্যর্থতা লক্ষ করা গেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় থাকারও অভিযোগ আনা হয় এ চিঠিতে। এতে আরো অভিযোগ করা হয়- ভয়ভীতি, ব্যক্তিস্বার্থ ও আপসকামিতা বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামকে দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এ ধরনের নেতাকর্মীদের কারণেই বিপুল জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও আন্দোলন তীব্র করা যায়নি বলে কেন্দ্র মনে করে। এসব কর্মকাণ্ড ও তৎপরতাকে সাংগঠনিকভাবে গুরুতর অপরাধ বলে গণ্য করা উচিত বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এসব দোষে দোষীদের দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রের এ চিঠি পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূলে। ক্ষোভে ফেটে পড়ছে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলন ব্যর্থতার জন্য তুণমূলের নেতারা দায়ী- কেন্দ্রের এ অভিযোগ মেনে নিতে পারছেন না তারা। বরং নিজেদের আন্দোলন সফল বলে দাবি তৃণমূলের। বরং আন্দোলন ব্যর্থতার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদেরই দায়ী করছে তৃণমূল। বিশেষ করে তৃণমূলের অভিযোগের আঙুল ঢাকা মহানগর কমিটির দিকে। মহানগর কমিটির নেতারা আন্দোলনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মনে করে তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি, আগে কেন্দ্র ও মহানগর কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তারপর তৃণমূলের নেতাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কেন্দ্রকে, তার আগে নয়। পাশাপাশি আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাউন্সিল করে কমিটি গঠন সহজ নয় বলে মনে করেন তৃণমূল নেতারা।
এ ব্যাপারে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আফজাল শিকদার এ প্রতিবেদককে জানান, কেন্দ্রের চিঠি এখনো তিনি পাননি। যদি চিঠি এসেও যায় নির্ধারিত ডেটলাইনের মধ্যে কাউন্সিল করা সম্ভব নয়। তার মতে, আমিসহ এলাকার অনেক নেতা এখনো মামলা হামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। ঠিকমতো বাড়িঘরে থাকতে পারছি না। বহু নেতা এলাকা ছাড়া কিংবা কারাগারে রয়েছেন।
আন্দোলনে ব্যর্থ নেতাদের কমিটি থেকে বাদ দেয়া প্রসঙ্গে বলেন, তাহলে আগে কেন্দ্রে যারা রয়েছেন তাদের বাদ দিতে হবে। তারা শুধু ব্যর্থই নয়, তৃণমূলের খোঁজখবর পর্যন্ত রাখেন না বলে অভিযোগ করেন এ তৃণমূল নেতা। কথা প্রসঙ্গে বলেন, নবম সংসদে এ আসনে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান। গত আন্দোলন থেকে নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রাখা তো দূরের কথা তিনি কোনো যোগাযোগ পর্যন্ত রাখছেন না।
মাদারীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহানদার আলী জাহান গতকাল রোববার বিকেলে এ প্রতিবেদককে জানান, গত ১৪ আগস্ট তিনি কেন্দ্রের এ চিঠি হাতে পেয়েছেন। এ নিয়ে গত শনিবার জেলা কমিটির বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে উপজেলা ও পৌর কমিটিকে ৩০ সেপ্টেম্বরের পূর্বে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌর এবং উপজেলা কমিটি গঠন করার জন্য চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কমিটি করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নির্দেশনা প্রসঙ্গে এ জেলা নেতা বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কমিটি করতে পারব। বয়স্কদের উপদেষ্টা ও নিষ্ক্রিয়দের বাদ দিয়ে সক্রিয় ও তরুণদের কমিটিতে রাখা যাবে। কিন্তু সমস্যাতো কেন্দ্র। আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী কমিটি করলে দেখা যাবে কেন্দ্র থেকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হবে নিষ্ক্রিয়দের কমিটিতে রাখতে।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলনে জেলা সফল। ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র ও ঢাকা মহানগর। জেলা নেতাদের ব্যর্থতা তিনি মানতে নারাজ। বলেন, গত ২৯ ডিসেম্বর ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতে আমরা জেলা থেকে ঢাকায় গেলাম কিন্তু কেন্দ্র ও ঢাকা মহানগর কমিটি ঢাকা দখল করতে পারেনি। ঢাকার মাঠে তাদের পাইনি। তিনি সুপারিশ করেন আগে কেন্দ্র ও মহানগরের ব্যর্থ নেতাদের বাদ দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, গত নবম সংসদে মাদারীপুর থেকে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করেন হেলেন জেরীন খান। কেন্দ্রে মাদারীপুরের আরেক নেতা রয়েছেন কাজী হুমায়ুন কবির। এ দুজনের কেউই জেলা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না বলে অভিযোগ করেন জেলা কমিটির এ সাধারণ সম্পাদক। এমনকি জেলা সভাপতি আবু মুন্সি পর্যন্ত যোগাযোগ রাখেন না বলে জানান তিনি।
সুত্র
©somewhere in net ltd.