নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

গর্তের ভিত্রেই বেইজ্জত করল তিন পাকিস্তানি আর্মি

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৩৬

ডিসেম্বর, ১৯৭১: যশোরে সেনানিবাসের আঁখ ক্ষেতে পাকিস্তানি কর্তৃক ধর্ষিত বাঙালি মহিলাদের কঙ্কাল। পাশে সায়া/ব্লাউজ দেখা যাচ্ছে।
‘পাকিস্তানি আর্মি গো ভয়ে মাডির নিচে গর্ত কইরা, গর্তের মুখ বন্ধ কইরা হের ভেতর লুকাই থাকতাম আমরা। এইরম একদিন লুকাইছিলাম হেই গর্তে। কোনো একডা কাজে বাড়াইছিলাম গর্ত থিকা। দূর থেকা দেখি তিন চাইরডা পাকিস্তানি আর্মি আইতাছে। ভয়ে জানডা হাতে লইয়া গর্তের মুখ খুইল্যা হের ভেতর আবার লুকায়া যাই। কিন্তু আমরা বুঝবারও পারি নাই যে আর্মিরা আমগো গোপন গর্তে ঢোকতে দেইখ্যা ফেলাইছে। হেই সুময় আমার স্বামীও গর্তের মইধ্যে লুকাইছিল। আর্মিরা গর্তের মইধ্যে ঢুইকে এসে আমার স্বামীরে টাইন্যা গর্ত থেকা তুইলে ফেলে। আপদ আইব ভাইবা যে গর্তের মইধ্যে লুকাইছিলাম, হেই গর্তের ভিত্রেই আমারে বেইজ্জত করল তিনজন পাকিস্তানি আর্মি’। ভোরের কাগজের কাছে এভাবেই একাত্তরের দুঃসহ অপমানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সিরাজগঞ্জের চুনিয়াহাটি কাজীপাড়া উপজেলার হাজেরা খাতুন।
অক্টোবর, ১৯৭১ : যশোরে পাকিস্তানীদের ধর্ষণের শিকার এক বাঙালি নারী।
হাজেরা খাতুন জানান, ওই দৃশ্য দেখে তার স্বামী হাসেম আলী অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাজেরা খাতুন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পাকিস্তানি আর্মিরা হাজেরা খাতুনকে ফেলে তাদের ঘরবাড়ি সব পুড়িয়ে দিয়ে চলে যায়। হাসেম আলী হাজেরা খাতুনের মাথায় পানি ঢেলে তার জ্ঞান ফিরিয়ে আনেন। নির্যাতনের যন্ত্রণা, অপমান, স্বামীর অসুস্থতা আর পোড়া ঘরবাড়ি নিয়ে অসহায় দিনযাপন করতে থাকেন হাজেরা খাতুন।
হাজেরা খাতুনের জন্ম সিরাজগঞ্জের চুনিয়াহাটি কাজিপাড়া উপজেলায়। পিতা মগরব আলী, মায়ের নাম ইসাতন। লেখাপড়া জানেন না। কোনো রকমে নামটা সই করতে পারেন। তারা ছিলেন এক ভাই এক বোন। পিতার কৃষি কাজ আর কামলার পেশায় তিনবেলা নুন ভাত জুটে যেত। সে হিসেবে সংসারটা ভালোই চলছিল।
হাজেরা খাতুনের বিয়ে হয়েছিল যুদ্ধের কয়েক বছর আগে। স্বামী হাসেম আলীও কৃষি কাজ করতেন এবং অন্যের জমিতে কামলা দিয়ে সংসার চালাতেন। টানাপড়েন ছিল। হাসেম আলীর বাপের বাড়ি ছিল কান্দা পাড়া। কিন্তু বিয়ের পরেও তারা কিছুদিন পুটুরিয়ায় হাজেরা খাতুনের বাপের বাড়িতে ছিলেন। কাজের অভাব দেখা দিলে যুদ্ধের কিছুদিন আগে তারা পুটুরিয়া থেকে চুনিয়াহাটি গ্রামে যান এবং সেখানে বসবাস শুরু করেন। হাজেরা খাতুনের ছিল দুই ছেলে আর দুই মেয়ে। যুদ্ধের সময়েও তারা চুনিয়াহাটিতে ছিলেন।
তবে পাকিস্তানি আর্মিদের ভয়ে একবার ছাইতানতলি গ্রামে পালিয়ে গিয়ে তিনদিন ছিলেন। সবার কাছে যখন শোনেন যে আর্মিরা নেই, তখন আবার নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। ওই সময় সিরাজগঞ্জে আর্মি ক্যাম্প বসেছিল।
আনুমানিক জুন/জুলাই মাসে ছাইতানতলি থেকে নিজ গ্রামে ফেরার পর পাকিস্তানিদের ভয়ে মাটিতে গর্ত করে, গর্তের মুখ বন্ধ করে সেখানে লুকিয়ে থাকতেন হাজেরা খাতুনের পরিবার। এরকমই একদিন তারা লুকিয়ে ছিলেন সেই গর্তে। কোনো একটা কাজে কেবল বেরিয়ে এসেছেন গর্ত থেকে। আর তখন দূর থেকে দেখতে পান কয়েকজন পাকিস্তানি আর্মি আসছে। তাড়াতাড়ি গর্তের মুখ খুলে সেখানে আবার লুকিয়ে যান। কিন্তু তারা বুঝতেও পারেননি যে আর্মিরা তাদের গোপন আস্তানায় ঢোকার দৃশ্য দেখে ফেলেছে। সে সময় হাজেরা খাতুনের স্বামীও গর্তের ভেতর লুকিয়ে ছিলেন তার সঙ্গে। পাকিস্তানি আর্মিরা গর্তের মধ্যে ঢুকে হাসেম আলীকে টেনে গর্ত থেকে তুলে নেন। নিরাপদ ভেবে আশ্রয় নেয়া সেই গর্তের ভেতরেই হাজেরা খাতুনকে ধর্ষণ করে তিনজন পাকিস্তানি আর্মি।
হাজেরা জানান, চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে খাওয়া-দাওয়ার কষ্টে ছিলেন। গর্তের ভেতর অল্প কিছু ধান লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেগুলোই ভাঙিয়ে কিছুদিন খেয়েছেন স্বামী সন্তান নিয়ে। এরপর কিছুদিন এক আত্মীয়ের বাসায় ছিলেন, যারা হাজেরার পাশাপাশি তার স্বামীর চিকিৎসায়ও সহায়তা করেছিলেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সিরাজগঞ্জে নারী পুনর্বাসন কেন্দ্র চালু হলে হাজেরা খাতুন সেখানে যান। ওই সময় সেখানে আরো প্রায় দুই/তিনশো মেয়ে ছিল। তাদের কেউ হাজেরা খাতুনের মতই নির্যাতনের শিকার, কেউবা স্বামী হারিয়ে এখানে এসেছেন। হাজেরা সেখানে তাদের কাজ করতেন। যতদিন পুনর্বাসন কেন্দ্রে ছিলেন ততদিন ভালোই দিন কাটছিল বলে জানান তিনি। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর পরই পুনর্বাসন কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। সব মেয়েরা যার যার ঠিকানায় চলে যায়। হাজেরার দুঃখের সময় আবারো ফিরে আসে নিকষ কালো রাত হয়ে। যুদ্ধের পরপরই স্বামীকেও হারান হাজেরা। পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে ফিরে শ্বশুরবাড়িতে থাকতে শুরু করেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনো মতে দিন কাটাতেন। ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে গেলে এক ছেলেকে বিয়ে দেন রায়েরপুর গ্রামে। সেই ছেলের শ্বশুরবাড়িতেই থাকছেন এখন। ওই গ্রামেরই এক ছেলের সঙ্গে হাজেরা খাতুন তার এক মেয়ের বিয়ে দেন। বিয়ের সময় মেয়েজামাইকে কিছু দিতে পারেননি বলে অনেকের কাছেই অনেক কথা শুনতে হয়েছে হাজেরাকে। কিছু দেয়ার মতো সামর্থ্য না ছিল হাজেরার। ভাড়ায় অন্যের রিকশা চালানো তার দুই ছেলেরও সামর্থ্য ছিল না। সংসারটাও এখন ঠিকমতো চলে না। জীবনের টানাপড়েন নিয়ে ভারি হয়ে উঠেছে হাজেরার জীবন, বলেন তিনি।
বয়সের ভারে বিপন্ন হাজেরা খাতুন ২৪ বছর বয়সে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের ঘটনার স্মৃতি হাতড়ে বেড়ান এখন। সরকারের দেয়া বীরাঙ্গনার খেতাব পেটের ভাত জোগায় না। মুক্তিযোদ্ধাদের পাওয়া সুযোগ-সুবিধা আর সাহায্যের কথা উল্লেখ করে জানান, বীরাঙ্গনার খেতাব পেলেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আশ্রয় দেয়নি। কেবল কিছু ব্যক্তির সহযোগিতা পেয়েছেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে হাজেরা খাতুন বলেন, দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতির আশায় বেঁচে আছি। অনেক প্রতিশ্রæতি পেয়েছি। কিন্তু সাথী বোনদের নাম গেজেটে থাকলেও আমরা এখনো বঞ্চিত। এ দুঃখ যেন পাহাড়সম। অবিলম্বে তাদের নাম গেজেটে অন্তর্ভুিক্তর দাবি জানান।
১১ এপ্রিল, ১৯৭১: যশোরের খাজুরা লেবুতলা গ্রামে পাকবাহিনীর ধর্ষণের শিকার এক বাঙালি নারী।
হাজেরা খাতুন আরো জানান, সমাজের লোকজন খারাপ দৃষ্টিতে দেখে, নোংরা ভাষায় গালি দেয়। পাকিস্তানি আর্মির বউ নামে ডেকে ধিক্কার দেয়। ছোঁয়াছুঁয়ির অস্পৃশ্যতায় দূরে ঠেলে রাখে তাকে নির্যাতিত মহিলা নামে। অনাহারে অর্ধাহারে থাকতে থাকতে শরীরে নানা রোগ বাসা বেঁধেছে। শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছে। ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারেন না। কাজ করতে পারেন না। টাকার অভাবে ডাক্তারও দেখাতে পারেন না।
যশোরে রাজাকাররা ধর্ষণ পর হত্যা করে এক বাঙালি নারীকে
যশোরে পাকিস্তানীরা এক বাঙালি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে মৃতদেহ ফেলে রেখে যায়।
ক'দিন পর শৃগাল তাঁর গলিত মৃতদেহ ছিঁড়ে খায়।
থাকার জায়গা নেই, পেটে খাবার নেই, স্বাধীন বাংলাদেশের তথাকথিত সমাজের চোখে অস্পৃশ্য! এই অবস্থার দায় কার তা জানতে চান হাজেরা খাতুন সরকারের কাছে। হাজেরার চাওয়া তাদের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া এই স্বাধীন দেশে শুধু একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই চান। আর দুটো ডাল ভাত! আর একটু ভালো ব্যবহার কি আশা করা কি অন্যায় হবে?
সূত্র

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:২১

সুলতানা রহমান বলেছেন: ব্যাপারটা সত্যিই অনেক কষ্টের। এখনো এই ছোঁয়াছুঁয়ির অপরাধে এখনো এইরকম কষ্ট দেওয়া হয়।

২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৯

রিমিল হুদা বলেছেন: মানুষ মইরা কঙ্কাল হইয়া গেছে মাগার সায়া ব্লাউজ টিকিয়া আছে ! এইডা কী দেখাইলেন বস ??

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৯

তালপাতারসেপাই বলেছেন: সায়া ব্লাউজ টিকিয়া আছে! কেননা কুকুর, শিয়াল, শকুন সায়া ব্লাউজ ভক্ষণ করে না।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৭

তালপাতারসেপাই বলেছেন: অক্টোবর, ১৯৭১ : যশোরে পাকিস্তানীদের ধর্ষণের শিকার এক বাঙালি নারী।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৭

তালপাতারসেপাই বলেছেন: ১১ এপ্রিল, ১৯৭১: যশোরের খাজুরা লেবুতলা গ্রামে পাকবাহিনীর ধর্ষণের শিকার এক বাঙালি নারী।

যশোরে রাজাকাররা ধর্ষণ পর হত্যা করে এক বাঙালি নারীকে

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৯

তালপাতারসেপাই বলেছেন: ছবি গুলতে আপনারা কি খুঁজে পান?
ভোগ্য পণ্য?
আমি দেখি আমার মায়ের মুখ!

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫

তালপাতারসেপাই বলেছেন: যশোরে পাকিস্তানীরা এক বাঙালি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে মৃতদেহ ফেলে রেখে যায়। ক'দিন পর শৃগাল তাঁর গলিত মৃতদেহ ছিঁড়ে খায়।
আপনিও কি ঐ শৃগাল কুকুরের বংশধর?

৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৬

নক্‌শী কাঁথার মাঠ বলেছেন: রিমিল হুদা বলেছেন: মানুষ মইরা কঙ্কাল হইয়া গেছে মাগার সায়া ব্লাউজ টিকিয়া আছে ! এইডা কী দেখাইলেন বস ??

- সায়া-ব্লাউজ তোর আর তোর বাপ পাক-আর্মিদের পরার জন্য টিকিয়া আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.