নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপি, জাপা আর জাসদের নিঃশেষ হতে যাওয়া

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৩২

গত পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি বলতে গেলে একটা বড় ধরনের পরাজয়ের সাধ পেয়েছে। যদিও তারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, স্বচ্ছতা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে, দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ গণমাধ্যমে নির্বাচনী বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট ডাকাতির যে চিত্র আমরা দেখিনি তা নয়, যদিও সরকার কিংবা নির্বাচন কমিশন বলেছে, তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু এরপরও নির্বাচন হয়েছে। এমনকি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভাইও ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। সে জন্যই বলতে গেলে তা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যও হয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় তৃণমূলকে আরো সুসংগঠিত করছে বলেই মনে হচ্ছে। মার্চে যদি দলীয়ভাবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়, এতেও যে আওয়ামী লীগের ভিত আরো মজবুত হবে এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এরপরও বিএনপিকে নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। বক্তৃতায়-বিবৃতিতে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-নেত্রীদের একটাই কথা বিএনপি এবং খালেদা জিয়া। বিএনপি এবং খালেদা জিয়া নিয়ে এসব কথাবার্তায় বলতে দ্বিধা নেই যে, বাংলাদেশে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা বিএনপিই পালন করছে। যদিও সংসদে তাদের কোনো স্থান নেই। স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনে না গেলে সংসদে তো ফাঁকা মাঠে গোল হবেই। এবং হয়েছেও। সেখানে স্থান করে নিয়েছেন এরশাদ কিংবা তার স্ত্রীর দল জাতীয় পর্টি, কার্যত যাদের বিরোধীদলীয় কোনো ভূমিকাই নেই সংসদে। আওয়ামী লীগের সব কথায়ই ‘জি হজুর’ জাতীয় শব্দেই তাদের অবস্থান।
২. বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে বলতে গেলে জবাবদিহিতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। সংসদের অভ্যন্তরে কোনো জোরালো প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে না। রাজনৈতিকভাবে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়ানো যেহেতু কোনো দল নেই সংসদে, সেহেতু কোনোপ্রকার প্রতিক‚লতা ছাড়াই রাষ্ট্রপক্ষও তাদের নিজস্ব নীতিনির্ধারণীর মাধ্যমেই দেশ চালাচ্ছে। রাষ্ট্রের কার্যক্রমে বিভিন্ন অসঙ্গতি থাকা অযৌক্তিক নয়। আর এই অসঙ্গতি চিহ্নিত করারই দায়িত্ব নেয় মূলত বিরোধী দল। স্বাভাবিকভাবেই সে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না জাতীয় পার্টি এবং পারবেও না। যদিও সাবেক জেনারেল এরশাদ মাঝে মাঝে হুঙ্কার দেন, অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেন কিন্তু তা সংসদের ভেতরে তিনি পারেন না। গণমাধ্যমে আসেন, উল্টাপাল্টা কথা বলেন। সাংবাদিকদের নিউজ আইটেম হন, তারপর এক সময় হাসপাতালে গিয়ে আবার ফিরে এসে বাসায় বিশ্রাম নেন। প্রবহমান সময় বলে দিচ্ছে, জাতীয় পার্টি এক সময় এভাবেই বিশ্রাম নেবে রাজনীতি নামক ভাঁড়ামো থেকে। সেদিন হয়তো বেশি দূরে নয়। কারণ রাজনীতিতে জাতীয় পার্টিতো এখন ওয়ান টাইম বল পেনের মতো।
সে কারণেই সংসদের বাইরে জোরালো প্রতিবাদ প্রয়োজন। সংসদের বাইরে থেকেও দাপটের সঙ্গেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। কিন্তু প্রতিটি আন্দোলনেই তিনি ব্যর্থতার চিহ্ন রাখছেন। বিভিন্ন সময় জামায়াত কিংবা মৌলবাদী ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে জোট হয়ে জনগণের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছেন তিনি কিংবা তার দল। স্বাভাবিকভাবেই তাদের বিরুদ্ধে আছে আগুন সন্ত্রাসের অভিযোগ। মানুষ হত্যা করার অভিযোগ। সে কারণে মির্জা ফখরুল ইঙ্গিত করেছেন তারা আন্দোলনের ভিন্ন পথ দেখছেন। সত্যি কথাটা হলো এখন জামায়াত কোনো বড় শক্তি নয়। কারণ বিভিন্নভাবেই জামায়াত আজ বাংলাদেশে পরাভূত। চুয়াল্লিশ বছর পর স্বাধীনতাবিরোধী ওই অপশক্তি পরাজিত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আওয়ামী লীগের সামনে এখন একমাত্র দল বিএনপি। তাই বিএনপি নিয়ে কথাবার্তা চলতেই থাকবে। কিন্তু ইদানীং কিছু বাজে কথাবার্তা উচ্চারিত হচ্ছে কিছু সংখ্যক মন্ত্রী সংসদ এবং সিনিয়র নেতা-নেত্রীদের মুখ থেকে। বাংলায় বলতে বলতে এখন উর্দু কিংবা হিন্দিতেও খালেদাকে ব্যঙ্গ করা হচ্ছে। তবে যখন কোনো মন্ত্রী বলেন বিএনপিকে ধ্বংস করে দিতে হবে, তখন বিস্মিত হতে হয়। আসলে বিস্ময় লাগে যখন রাজনীতিতে রাজনৈতিক শব্দ ব্যবহার না করে সেই একাত্তর-পরবর্তী শব্দগুলোর ধ্বংসাত্মক শব্দগুলো উচ্চারণ করেন জনাব ইনু। বিএনপি নামক দলটিকে পরাজিত করার রাজনৈতিক দায়িত্ব নিতেই পারে অন্য দলের কর্মী কিংবা নেতারা। জনাব ইনুও যদি চান আওয়ামী লীগের হয়ে সে দায়িত্ব নিতে পারেন কিন্তু যখন মন্ত্রীর মুখ থেকে উচ্চারিত হয় ‘ধ্বংস’ নামক বিধ্বংসী শব্দ, তখন মনে হয় আসলে মাননীয় ইনু তার রাজনীতির শেষ চিহ্নটুকুও ক্রমেই হারিয়ে ফেলছেন।
৩. বাংলাদেশের প্রবীণ সংসদ সদস্য হিসেবে খ্যাত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন বিএনপির অবস্থা হবে মুসলিম লীগ কিংবা জাসদের মতো। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এ কথাটিতে অন্তত শালীনতা আছে, রাজনীতি আছে। কথাটাতে সত্যতা কতটুকু আছে, তা হয়তো আগামীর ইতিহাসই বলবে। কারণ ইতিহাসই বলে একটা বড় এবং প্রধান দল থাকা সত্ত্বেও জনগণের আবেগ-অনুভূতি না বোঝে শুধু ধর্মীয় ধোঁয়া তোলে জনগণের সঙ্গে বেশিদিন প্রতারণা করা যায় না। তাইতো মুসলিম লীগ টিকে থাকেনি। হয়তো সে কারণেই জামায়াতে ইসলামী তাদের চিন্তা-চেতনায় কিছুটা ভিন্নতা এনেও পার পাচ্ছে না। সে হিসেবে বিএনপি যদি সময়ের সঙ্গে এগুতে না পারে, তাহলে তাদের যে বর্তমান দুঃসময় তা তারা পাড়ি নাও দিতে পারে। অর্থাৎ মুসলিম লীগের নিয়তি বরণ করতে হতে পারে। তবে বিএনপি যে এখনো ঠিকে আছে খুব ভালো করেই, তা বলাই যায়। কারণ বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দলের কাছে এখনো প্রধান ইস্যুই হলো বিএনপি। মূলত বিএপিকে নিয়েই চলছে নেতাদের বক্তৃতা-বিবৃতির পালা। পাশাপাশি যদি সুরঞ্জিতের কথার রেশ ধরেই আমরা বলি, তাহলে দেখা যায় জাসদ নামক সংগঠনটির শেষ সলতেটুকুও যেন আস্তে আস্তে নিভে যাচ্ছে। কারণ এখন হাসানুল হক ইনুদের মুখ থেকে আর রাজনীতি তথা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বেরোয় না। কথায় কথায় এখন শুধুই বিএনপি এবং খালেদা জিয়া। স্বাধীনতা-উত্তর যেমন তাদের মুখ থেকে শুধুই বেরুতো শেখ মুজিব কিংবা আওয়ামী লীগ কিংবা ছাত্রলীগের নাম। কিন্তু রাজনীতির পথচলা যে কত নির্মম এবং ক্ষমতার চেয়ার কিভাবে যে অন্ধভাবে পথের দিশা দেয়, তা এখন জাসদীয় রাজনীতি থেকে খুবই স্পষ্ট। সে জন্যই বলতে হয় বর্তমান সরকারের প্রয়োজনে বিএনপি খালেদা জিয়া কিংবা জিয়া এই শব্দগুলোর পৌনঃপুনিক উচ্চারণ করে হয়তো মন্ত্রিত্ব ধরে রাখা যেতে পারে কিন্তু জাসদের রাজনীতি সামাল দেবেন কিভাবে হাসানুল হক ইনু কিংবা মইনউদ্দিন খান বাদলরা? অর্থাৎ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের কথারই প্রতিধ্বনি কি শুনছি আমরা, বিএনপির আগেই মুসলিম লীগের অবস্থায় চলে যাচ্ছে কি জাসদ নামক দলটি?
আমরা যেভাবেই দেখি না কেন, পৃথিবীর প্রায় সব গণতান্ত্রিক দেশের মতো বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা শক্তিশালী বিরোধী দল প্রয়োজন। স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্বের প্রতি দ্বিধাহীনভাবে সমর্পিত এবং কোনোভাবেই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির সঙ্গে জোটবদ্ধ নয়, এমন একটা শক্তি আমাদের বাংলাদেশে খুবই প্রয়োজন। শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যই নয়, জাতির প্রয়োজনে একটা সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রয়োজনে বিএনপি কি সেই অবস্থানে যেতে পারে না? অতীতের রাজনৈতিক ব্যর্থতা থেকে বিএনপির কি সেই বোধটুকু জাগ্রত হবে না? বিএনপি যেন নিঃশেষ না হয়, বরং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতি দ্বিধাহীন আস্থা রেখে স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছেড়ে একটা অসাম্প্রদায়িক দল হয়ে রাজনীতির মঞ্চে বিএনপি কি আসতে পারে না, সে প্রশ্নটা আমরা করতেই পারি তাদের বিচক্ষণ রাজনীতিবিদদের কাছে। সুত্র

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



আওয়ামীরা যেভাবে ব্যবসা করছে, উনারা 'মুসলীম লীগ' হয়ে যাবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.