নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত পাঠানো ২৭ বাংলাদেশির মধ্যে ১৪ জন নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এরই মধ্যে মামলা করে কয়েক দফায় পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এখন ওই ১৪ জন গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে রয়েছেন। আর যাচাই-বাছাই শেষে বাকি ১৩ জনকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলেও তারা নজরদারিতে রয়েছেন। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ১৪ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটির এখন তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গতকাল বুধবার মামলার তদারকি কর্মকর্তা ডিবির ডিসি (দক্ষিণ) মাশরুকুর রহমান খালেদ সমকালকে বলেন, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত পাঠানো ২৭ জনের মধ্যে ১৪ জন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের মতাদর্শে বিশ্বাসী। সিডি-ডিভিডির মাধ্যমে তারা এবিটি নেতা জসীমুদ্দীন রাহমানির বয়ান শুনতেন। তবে তাদের সঙ্গে এখনও আইএস বা আল কায়দার কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২৭ বাংলাদেশিকে গ্রেফতারের তথ্য প্রকাশ করলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। তবে এ ব্যাপারে গত ২৮ ডিসেম্বর সমকালের ১৯ পৃষ্ঠায় 'রিমান্ড শেষে ১৪ জঙ্গি জেলহাজতে' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। গত ডিসেম্বরে কয়েক দফায় জঙ্গি সন্দেহে ২৭ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হলে একাধিক সংস্থা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। সরকারও বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেয়। সর্বশেষ গত সপ্তাহে একজনকে ফেরত পাঠানো হয়। সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর পর বিষয়টি নিয়ে প্রথমে 'লুকোচুরি' করা হয়। এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে কেউ কথা বলতে চাননি।
সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত পাঠানো যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা হলেন_ টাঙ্গাইলের আমিনুর, আবদুল আলীম, শাহ আলম, কুমিল্লার গোলাম জিলানী, মাহমুদুল হাসান, নুরুল আমিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জাফর ইকবাল, ঝিনাইদহের আকরাম হোসেন, চুয়াডাঙ্গার আবদুল আলী, ঢাকার সাইফুল ইসলাম, পাবনার আশরাফ আলী, কুড়িগ্রামের আলম মাহবুব, মুন্সীগঞ্জের মোহাম্মদ জসীম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ডলার পারভেজ।
ডিবির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সিঙ্গাপুর থেকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তারা বিভিন্ন সময় শ্রমিক হিসেবে সিঙ্গাপুর যান। তাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন, যারা এক যুগ আগেও সিঙ্গাপুর গেছেন। তারা সিঙ্গাপুরের মোস্তফা মার্কেটের কাছে অ্যাঙ্গোলিয়া নামে একটি মসজিদে সপ্তাহে অন্তত একদিন জড়ো হতেন। অধিকাংশ সপ্তাহের রোববার তারা মিলিত হতেন। সেখানে জিহাদি ভিডিও প্রদর্শন করা হতো। তাদের মধ্যে উগ্রপন্থি কর্মকাণ্ড, জসীমুদ্দীন রাহমানির বয়ান নিয়ে আলোচনা হতো। উগ্রপন্থি বই প্রকাশের জন্য তারা বাংলাদেশে টাকা পাঠাতেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে সন্দেহভাজন ১৪ জনের কেউ কোনো উগ্রপন্থি অপারেশনে সরাসরি জড়িত_ এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সিঙ্গাপুর পুলিশ বাংলাদেশি নাগরিকদের এসব কর্মকাণ্ড অনেক দিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে আসছিল। পরে তাদের আটকের পর প্রথমে সেখানকার কারাগারে পাঠানো হয়। এর পর কয়েক দফায় ২৭ জনকে বাংলাদেশে পাঠায় সিঙ্গাপুর পুলিশ। সর্বশেষ জঙ্গি সন্দেহে ফেরত পাঠানো হয়েছে নাজমুল হাসান নামে এক ব্যক্তিকে। ডিবি পুলিশের দাবি, নাজমুলের সঙ্গে উগ্রপন্থি কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তবে সিঙ্গাপুরে 'মারামারি'তে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সিঙ্গাপুরে বসবাস করে কীভাবে ওই ১৪ জন এবিটির মতাদর্শে বিশ্বাসী হলেন_ এমন প্রশ্নে মামলার তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা জানান, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে এটা মোটেও অসম্ভব কোনো ব্যাপার নয়। ইন্টারনেটে খুঁজলেও রাহমানির অনেক বয়ানের লিঙ্ক পাওয়া যায়। এই চক্রটি অন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের উগ্রপন্থায় বিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তুলতে মসজিদে উদ্বুদ্ধ করত। এরই মধ্যে কেউ কেউ তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে ফেরত আসার পর তাদের মধ্যে অনেকে উগ্রপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারে_ এমন চিন্তাভাবনা কারও কারও মধ্যে ছিল। সিঙ্গাপুরফেরত কয়েকজন বাংলাদেশে থাকাকালে জসীমুদ্দীন রাহমানির কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। তবে কেউ কখনও পুলিশের হাতে উগ্রপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হননি। কয়েকজন 'আহলে হাদিসের' অনুসারীও আছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক এজাজ শফি জানান, এজাহারভুক্ত ১৪ জনকে আবার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি চলছে। বাংলাদেশে তাদের অতীত কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৬:৫৬
মাসূদ রানা বলেছেন: তাড়াতাড়ি ভাগেন মিয়া, বাংলাদেশ থৈকা।