নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চূড়ান্ত চুক্তি সই করেছে বংলাদেশ সরকার। যা বাংলাদেশের নিউক্লিয়ার যুগে পদার্পণের এক মাইলফলক। বস্তুত এর মধ্য দিয়ে পূরণ হচ্ছে বাঙালির পঞ্চাশ বছরের স্বপ্ন। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ রুশ ফেডারেশনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের মধ্যে এই কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি বা জেনারেল কন্ট্রাক্ট সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করবে রাশান ফেডারেশন। নির্মাণ শুরুর সাত বছরের মাথায়, ২০২৩ সালে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের প্রথম রি-এ্যাক্টরটি উৎপাদনে আসবে। আর এক বছর পর, ২০২৪ সালে উৎপাদনে আসবে দ্বিতীয় রি-এ্যাক্টরটি। দ্বিতীয়টির উৎপাদন ক্ষমতাও এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ ২০২৪ সাল নাগাদ আমাদের জাতীয় গ্রিডে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ যোগ হবে। এই নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ৫০ বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। এটি শুধু বিনিয়োগের দিক থেকে নয়, একই সঙ্গে উচ্চতর ও স্পর্শকাতর প্রযুক্তির মিশেলে দেশের একমাত্র প্রকল্প।
রুশ ফেডারেশনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পন্ন চুক্তিটির সারসংক্ষেপ হলো : বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নকশা প্রণয়ন, যন্ত্রাংশ সরবারাহ ও তা প্রকল্প এলাকায় পৌঁছানো, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, জ্বালানি সরবরাহ, উৎপাদন নিশ্চয়তা বা গ্যারান্টি প্রভৃতি। পরন্তু বাংলাদেশের জন্য যথাক্রমে ঝুঁকিপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জ হচ্ছে রি-এ্যাক্টরে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম বর্জ্য রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিউক্লিয়ার প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ জনবল তৈরি করা। এ ক্ষেত্রে আশার কথা হলো- এই দুটি দায়িত্ব রুশ ফেডারেশনের। এদিকে রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন তথা বাংলাদেশের নিউক্লিয়ার যুগে পদার্পণ নিয়ে দ্বিধা-সংশয় এমনকি বিরোধিতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। যা রূপপুর নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তি সইয়ের পর নতুন এক মাত্রা পেয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, উন্নত বিশ্বের দেশসমূহ যখন নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ পরিত্যাগ করছে, তখন বাংলাদেশ কেন এ পথে অগ্রসর হচ্ছে? এসব দাবির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণে উন্নত বিশ্বে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ ব্যবহারের কিছু তথ্য-উপাত্ত দেখা যাক।
ভারত, চীন, তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ ব্যবহারের চিত্র
আমাদের প্রতিবেশী ঘনবসতিপূর্ণ ভারত এবং বৃহৎ অর্থনীতি ও জনসংখ্যার দেশ চীন তাদের বিদ্যুৎ চাহিদা জোগান দিতে পারমাণবিক শক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নির্মাণ করেছে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট ২০১৩ সালের হিসাবে মতে, ভারতের ২১টি নিউক্লিয়ার রি-এ্যাক্টরের মধ্যে ৭টি থেকে পাঁচ হাজার সাতশ’ আশি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। ফ্রান্স ও রাশিয়ার সহায়তায় ভারতে আরো ৭টি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণধীন রয়েছে। ২০৩২ সালে দেশটি ৬৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদনের এক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। বিশাল অর্থনীতির দেশ চীনে ২৬টি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট উৎপাদনে রয়েছে। নির্মাণধীন রয়েছে ২৪টি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট। ২০২০-২১ সালের মধ্যে চীন আটান্ন হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৩০ সালে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পারমাণবিক শক্তি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে চীন। ২০৫০ সালে আরো বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে রেখেছে পৃথিবীর বৃহৎ অর্থনীতি ও জনসংখ্যার এই দেশ। এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ান পারমাণবিক শক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া দুটি রি-এ্যাক্টর থেকে দেশের মোট বিদ্যুৎ শতকরা ২২ ভাগ উৎপন্ন করছে। দেশটি ২০৩৫ সালে এই পরিমাণ শতকরা ৬০ ভাগ উন্নীত করার মহাপরিকল্পনা নিয়ে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের মহাযজ্ঞে অংশ নিচ্ছে। তাইওয়ান রাশিয়ান ফেডারেশনের সহায়তায় ২০০৬ ও ২০০৭ সালে দুটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করে, যা থেকে দেশটি উৎপাদন করছে দুহাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এক হাজার ষাট মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণধীন রয়েছে তাইওয়ানে।
নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ দেশে-দেশে
উন্নত বিশ্বের অনেক দেশের অগ্রগতিতে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ দীর্ঘকালব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। যা নিম্নোক্ত পরিসংখ্যানের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৯৮ হাজার ৬৩৯ মেগাওয়াট, ফ্রান্স ৬৩ হাজার ১৩০ মেগাওয়াট, জাপান ৪০ হাজার ২১০ মেগাওয়াট, রাশান ফেডারেশন ২৪ হাজার ৬৫৪ মেগাওয়াট, চীন ২৩ হাজার মেগাওয়াট, কোরিয়া রিপাবলিক (দক্ষিণ কোরিয়া) ২১ হাজার ৬৬৭ মেগাওয়াট, কানাডা ১৩ হাজার ৫শ মেগাওয়াট, ইউক্রেন ১৩ হাজার মেগাওয়াট, জামান ১২ হাজার ৭৪ মেগাওয়াট, সুইডেন ৯ হাজার ৬৫৯ মেগাওয়াট, যুক্তরাজ্য ৯ হাজার ৩৭৩ মেগাওয়াট, স্পেন ৭ হাজার ১২১ মেগাওয়াট, বেলজিয়াম ৫ হাজার ৯২১ মেগাওয়াট, তাইওয়ান ৫ হাজার ৩২ মেগাওয়াট, সুইজারল্যান্ড ৩ হাজার ৩৩৩ মেগাওয়াট এবং চেক রিপাবলিক ৩ হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ৯৯ টি রি-এ্যাক্টর থেকে পৃথিবীর মোট নিউক্লিয়ার বিদ্যুতের ৩৩ শতাংশ উৎপাদন করে, যা তাদের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ১৯.৪৭ শতাংশের জোগান দেয়। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীতে বাণিজ্যিকভাবে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ। ফ্রান্স তাদের বিদ্যুতের প্রায় ৮০ শতাংশ নিউক্লিয়ার উৎস থেকে পেয়ে থাকে। ইউক্রেনের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ৪৯.৪০ শতাংশ নিউক্লিয়ার উৎস থেকে আসে। উল্লেখ করা যেতে পারে, জাপান ২০১১ সালে ফুকুশিমা বিস্ফোরণের পর নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় রকমের ধাক্কা খায়। যার ঢেউ জার্মানিতেও লেগেছে। সুতরাং পৃথিবীর দেশে দেশে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ ব্যবহারের এই চিত্র কি প্রমাণ করে না যে মানবজাতির শক্তি উৎপাদনে নিউক্লিয়ার এনার্জি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে?
নতুন প্রজন্মের রি-এ্যাক্টর উদ্ভাবনের ফলে আগের প্রজন্মের রি-এ্যাক্টর বদলানোর বাস্তবতা দেখা দেয়। কোনো নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের রি-এ্যাক্টরের আয়ুষ্কাল পূর্ণ করার আগেই সেগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হতে পারে। সেটা কোনো নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের দুর্ঘটনার কারণে (যেমনটি চেরনোবিল ও ফুকুশিমা বিস্ফোরণের ফলে হয়েছিল) অথবা নতুন প্রজন্মের উন্নত ও নিরাপদ রি-এ্যাক্টর দ্বারা পূর্ব প্রজন্মের রি-এ্যাক্টরকে প্রতিস্থাপনের কারণে হতে পারে। কিন্তু রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের বিরোধিতায় কতিপয় বিশেষজ্ঞ উপর্যুক্ত ঘটনাকে উন্নত বিশ্বের নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিত্যাগ করা বলে প্রচার করছে, যা সম্পূর্ণভাবে অসত্য।
ইতালি, সুইজারল্যান্ড ও জার্মানি কি আসলেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ পরিত্যাগ করছে?
রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের বিরোধিতায় উন্নত বিশ্বের দৃষ্টান্তকে সামনে আনা হয় হরহামেশা। যেমন জার্মানি, ইতালি ও সুইজারল্যান্ডের মতো দেশও নিউক্লিয়ার পাওয়ার জেনারেশন অপশন থেকে সরে আসছে-এই তথ্যও ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি মন্তব্য নিবন্ধে পড়লাম। নিবন্ধকারও একজন নিউক্লিয়ার বিশেষজ্ঞ। আসলে কোন বাস্তবতায় ওইসব দেশ ক্রমান্বয়ে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তা সম্যক উপলব্ধি না করলে ব্যক্তি পর্যায়ে ভুল ধারণা সৃষ্টি করে। আবার ওই ধারণা পাবলিক মিডিয়ায় প্রকাশনাসমূহ ক্ষতির। যা হোক, এই তিনটি দেশে নিউক্লিয়ার শক্তির ব্যবহারের একাল-সেকাল নিয়ে কিছু তথ্য-উপাত্ত উল্লেখ করছি : চেরনোবিল নিউক্লিয়ার দুর্ঘটনার পর ১৯৮৭ সালে ইতালিতে নিউক্লিয়ার উৎস থেকে শক্তি উৎপাদন নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালের মধ্যে ইতালি সবগুলো নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালে এসে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বন্ধের ওই ঘটনাকে ইতালি সরকার ‘ভয়ঙ্কর ভুল’ বলে আখ্যায়িত করে। এরপর তারা দশটি নতুন নিউক্লিয়ার রি-এ্যাক্টর নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়, যেখান থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের মোট বিদ্যুতের প্রায় ২৫ শতাংশ আসবে। ২০১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী সুইজারল্যান্ডের মোট শক্তির ৩৬.৪ শতাংশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার থেকে আসে। উপরন্তু তাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রিসার্চ রি-এ্যাক্টর রয়েছে। ২০১১ সালে সুনামির আঘাতে জাপানের ফুকুশিমা-০১ বিস্ফোরণের পর সুইজারল্যান্ডে সতর্কতা হিসেবে ফুকুশিমার আদলে নির্মিত একটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট ২০১৯ সালের মধ্যে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৪ সালের ৮ ডিসেম্বর জাতীয় পরিষদে আরেকটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের অপারেশনাল লাইফটাইম ষাট বছর থেকে কমিয়ে আনার জন্য ভোটাভুটি হয়। এদিকে ২০১১ সালের হিসাবে দেখা যায়, জার্মানির জাতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহে ১৭.৭ শতাংশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার থেকে আসে। কিন্তু ফুকুশিমায় নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণের পর নিউক্লিয়ার বিরোধী বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় জার্মানিতে; যা অব্যাহত থাকে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মার্কেল সরকার ২০২২ সালের মধ্যে দেশের সবগুলো নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বন্ধ করার ঘোষণা দেয়। এমনকি দেশের ১৭টি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের মধ্যে ৮টি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়। কার্বন নির্গমনের জন্য দায়ী জীবাশ্ম জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য শক্তিকে নিউক্লিয়ার এনার্জির বিকল্পে ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়ে জার্মানি। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বন্ধের ওই সিদ্ধান্ত ভুল ও স্ববিরোধী বলে সমালোচিত হতে থাকে। কারণ কিয়েটো প্রটোকলে জার্মানি কম কার্বন নিঃসরণে অঙ্গীকারাবদ্ধ। শুধু তাই নয়, পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে জার্মানি নেতৃত্বে রয়েছে। তাই নিউক্লিয়ার অপশন বাদ দিয়ে জীবাশ্ম উৎসের দিকে ঝুঁকে যাওয়া সত্যিই জার্মানির জন্য ছিল এক বাস্তবতাবিমুখ ও তাৎক্ষণিক আবেগতাড়িত সিদ্ধান্ত। বস্তুত ইতালি, সুইজারল্যান্ড ও জার্মানির মতো উন্নত দেশের দৃষ্টান্ত আমাদের এখানে প্রযোজ্য কিনা, তাও ভাবনার বিষয়। কারণ এসব দেশ নিউক্লিয়ার এনার্জির সুবিধা নিয়ে উন্নয়নের টেকঅফ স্তরে উত্তীর্ণ হয়েছে। আমরা কি সেই স্তরে আছি- এ বিষয়টি কেন ভুলে যান বিশ্লেষকরা?
রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে ৫০ শতাংশ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ২৫ শতাংশ গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং অবশিষ্ট ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ নিউক্লিয়ার ও অন্যান্য উৎস থেকে আহরণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। বস্তুত ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে জ্বালানি নিরাপত্তা তথা জ্বালানি চাহিদা পূরণের কোনো বিকল্প নেই। কারণ বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বে পরিণত হতে শক্তি হচ্ছে অন্যতম নিয়ামক। তাই উন্নয়নের টেকঅফ স্তরে যেতে আমাদের সাশ্রয়ী, টেকসই ও পরিবেশ-বান্ধব দীর্ঘমেয়াদি আবহে পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনে অন্যতম বিকল্প হচ্ছে নিউক্লিয়ার উৎস। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা তাই ইঙ্গিত করে। এই ঘোষণা বাস্তবায়ন তথা বাংলাদেশের নিদেনপক্ষে মোট চাহিদার ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ নিউক্লিয়ার উৎস থেকে প্রাপ্তির লক্ষ্যে এগোতে হবে। এ ব্যাপারে কালবিলম্বের কোনো সুযোগ নেই। এ এক অনিবার্য বাস্তবতা- ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জ্বালানি নিরাপত্তা তথা উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ বিনির্মাণের বীজ বপন। আর রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন এ ক্ষেত্রে এক বাস্তব পদক্ষেপ- উন্নয়নের মহাসড়কে পথ চলার সূচনা।
সূত্র
২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২৩
নতুন বলেছেন: ভাইরে আমাদের নিউক্লিয়ার পাওয়ারের দরকার নাই।
জাপান সহ অনেক ইউরোপিয়ান দেশে এটা থেকে সরে এসেছে...
আমাদের সোলার পাওয়ারের জন্য কাজ করা দরকার। ১০ বছরে আমাদের দেশ বিদুতে স্বনিভর হতে পারবে।
নেতাদের টাকা খাওয়া এবং রাসিয়ার অনুরোধের ঢেকিগেলার কি দরকার।
৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০১
হারান সত্য বলেছেন: সারা দুনিয়া যখন কয়লার ব্যাবহার বন্ধ করছে - আমরা তখন কয়লা আমদানী করে বিদ্যুত কেন্দ্র বানাচ্ছি!
সারা দুনিয়া যখন নিউক্লিয়ারের বিরুদ্ধে সোচ্চার - আমরা তখন নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট চালু করতে যাচ্ছি!
আসলেই কি আমরা অতি ব্রিলিয়ান্ট নাকি অতি মুর্খ??
৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৫
কল্লোল পথিক বলেছেন: আমাদের কোন নিউক্লিয়ার পাওয়ার দরকার নেই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:৩৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
এক বিস্ফোরণে পুরো জাতি উড়েও যেতে পারে।