নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট কিছুই ছিল না। যুদ্ধে পাকিস্তানি বর্বরতায় সব ধ্বংস হয়েছিল। তখন রাষ্ট্র ও জনগণ সবার হাতই শূন্য ছিল। এতদ্ব্যতীত যুদ্ধের অব্যবহিত পর উপর্যুপরি বন্যা ও খরায় ব্যাপক ফসলহানি হওয়ায় দারুণ খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। এ খাদ্য নিয়েই ছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। খাদ্যের অভাবে মানুষের জীবনে নেমে এসেছিল দুর্ভিক্ষ। লঙ্গরখানা খুলে দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুর সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়েছিল। সরকার যখন মানুষের জীবনে নেমে আসা দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় সচেষ্ট, তখন বিরোধীরা সরকারকে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য দিয়ে বেকায়দায় ফেলতে চেষ্টা করেছিল। সন্ত্রাস দিয়েও যখন সম্ভব ছিল না, তখন বঙ্গবন্ধু সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে ভিন্ন পথে হেঁটেছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। এ ক্ষেত্রে তারা রংপুর-কুড়িগ্রামের দুর্ভিক্ষকে পুঁজি করে। তাদের অনুগামী সেই সাংবাদিক, যিনি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বাসন্তী-দুর্গতিদের জাল পরিয়ে দিয়ে একটি ছবি তুলেছিলেন। এতে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতাও ছিল। তার ধারণা ছিল, এ ধরনের ছবি পত্রিকায় গেলে বেশি রিলিফ পাবে। মিথ্যা প্রচারের ক্ষেত্র তৈরি করে সরকারকে বিশ্বব্যাপী ইমেজ সংকটে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। '৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকে ১৯৯৬ সাল_ ২১ বছর এ রকম একটা ডাঁহা মিথ্যা মাথায় নিয়েই আওয়ামী লীগকে চলতে হয়েছে। আজ সেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় বাংলাদেশ খাদ্যে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়, বরং একটি খাদ্য রফতানিকারক দেশও বটে।
আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই চিলমারীতে ৪২ বছর পর ইতিহাসের একটি বড় অর্জনের সূচনা করছেন। দেশে ৫০ লাখ গ্রামীণ নাগরিককে মাত্র ১০ টাকা দরে চাল দেওয়া হবে। মাসে তারা ৩০ কেজি চাল পাবেন। বছরে লাগবে সাড়ে সাত লাখ টন চাল। এতে সরকারের ভর্তুকি থাকবে প্রতি টনে ২৭ হাজার ৮৩৫ টাকা। সে হিসাবে বছরে মোট ভর্তুকি থাকবে ২ হাজার ৮৭ কোটি ৬২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। একদা যে দেশকে শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকার নেতা হেনরি কিসিঞ্জার তলাবিহীন ঝুড়ির অভিধা দিয়েছিলেন; কেউ কেউ এক ধাপ এগিয়ে বলেছিলেন, এটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র; সেই দেশ বিশ্বকে তাক লাগিয়ে নিজেই পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রজেক্ট করে ফেলছে। যারা একদা তলাবিহীন ঝুড়ির অভিধা দিয়েছিলেন, সেই তারাই বলছেন, বাংলাদেশ আজ এশিয়ার উঠতি ব্যাঘ্র।
বাংলাদেশ যে সামর্থ্য গড়ে তুলেছে, তাতে মেহনতি জনগণের যেমন অবদান আছে তেমনি রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্বের কুশলী ও প্রাজ্ঞ পরিচালনার বিষয়টিও অনস্বীকার্য। ক'দিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বের কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছেন। তিনি বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে যেমন ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, তেমনি বঙ্গবন্ধু হত্যা নিয়েও কথা বলেছেন। এগুলো কিন্তু প্রকৃতির প্রতিশোধ। তবে এ জন্য বাঙালিকে চার দশক অপেক্ষা করতে হয়েছে।
৫০ লাখ নাগরিককে ১০ টাকা দরে চাল দেওয়া একটি রাষ্ট্রের অনেক বড় সক্ষমতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, তিনি গরিব ও মেহনতি মানুষের কথা ভেবে ৫০ লাখ মানুষকে স্বল্প মূল্যে এ চাল দিচ্ছেন। ১০ টাকায় চাল খাওয়ানোর কোনো নির্বাচনী অঙ্গীকার আওয়ামী লীগের ছিল না। অথচ খালেদা জিয়া তাচ্ছিল্য করে বলেছিলেন, ১০ টাকায় চাল কই? খালেদা জিয়ার দুর্ভাগ্য, শেখ হাসিনা জনগণকে ১০ টাকাতেই চাল খাওয়াচ্ছেন। খালেদা জিয়া তার শেষ সরকারের সময় আটা ৫৬ টাকা, চাল ৪৫ টাকা, সয়াবিন ১২০ টাকা লিটার খাইয়েছিলেন। এ দেশে একদা ধারণা ছিল, একবার কোনো দ্রব্যের দাম বাড়লে তা আর কমে না। সে ধারণারও অবসান হয়েছে নেতৃত্বের দক্ষতায়।
ভাওয়াইয়া সম্রাট আব্বাসউদ্দীনের 'ওকি গাড়িয়াল ভাই, হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারী বন্দরে' কালজয়ী গানটি চিলমারী বলতে (রৌমারী, রাজীবপুরও একসময় বৃহত্তর চিলমারী থানার অন্তর্ভুক্ত ছিল) এ অঞ্চলের সামর্থ্য ও ঐতিহ্যের কথাকে মনে করিয়ে দিত। চিলমারী বলতেই গাড়িয়াল ভাইয়ের একটা চিত্র মানসপটে ভেসে উঠত। সে জায়গায় ১৯৭৪-এর পর থেকে বাসন্তীর জাল পরানো সেই ষড়যন্ত্রের ছবি স্থান করে নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিরোধীরা প্রায় প্রতি নির্বাচনে বাসন্তীর মিথ্যে ছবি ব্যবহার করেছেন। চিলমারীকে উদ্ধৃত করেছেন কলঙ্কতিলক হিসেবে। কিন্তু চিলমারীর দারিদ্র্যের মানচিত্র বদলের কোনো চেষ্টাই নেননি। নদীভাঙনে চিলমারীর মানচিত্র আজ বিপন্ন। এখনও বহু পর্যটক আসেন চিলমারী বন্দর দেখতে। কিন্তু বন্দর বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই। তারা হতাশ হয়ে ফিরে যান। এই কষ্টগাথার আজ মুক্তি হচ্ছে। মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের এই উদ্যোগকে শাপমোচনও বলতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্যের মানচিত্র বদলে সফল হয়েছেন। রাষ্ট্র তার নেতৃত্বে মধ্যম আয়ের দেশে উপনীত। আমাদের অনুরোধ, তিনি যেন ঐতিহ্যের এই চিলমারীর হৃতগৌরব ফিরিয়ে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা নেন। এ জন্য কতিপয় সুপারিশ : ক. চিলমারী বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ নৌবন্দর হিসেবে চালু। খ. একদা চিলমারী রৌমারী ও রাজীবপুরের নিকটবর্তী ছিল; পাকিস্তানিদের অবহেলা আর নদীশাসনের অভাবে ব্রহ্মপুত্র বিস্তৃত হয়ে আদি চিলমারীকে গ্রাস করেছে। আজ চিলমারী, উলিপুর, রৌমারী, রাজীবপুরকে রক্ষা করতে ব্যাপক নদীশাসন দরকার। গ. নদীতীরবর্তী বাঁধকে জাতীয় সড়ক হিসেবে উন্নত করলে তা যেমন নদীশাসনে স্থায়ী কাজ হবে, তেমনি রাজধানীর সঙ্গে এ অঞ্চলের দূরত্ব কমিয়ে দেবে। ঘ. নদীভিত্তিক যোগাযোগ উন্নত করা। চিলমারী ও কুড়িগ্রামের সঙ্গে রৌমারী-রাজীবপুরের মানুষের সহজ যাতায়াতে ওয়াটার বাস ও ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স চালু করা। ঙ. ভাওয়াইয়া এক্সপ্রেস নামে চিলমারী থেকে ঢাকা একটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা। এতে গরিব মানুষ স্বল্প ব্যয় ও নিরাপদে বিভিন্ন জেলায় যেতে পারবেন। চ. রৌমারীতে দেওয়ানি আদালতের চৌকির একটি গেজেট সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ ও বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে আপনার বিগত সরকারের সময়ে হয়েছে। সেখানে ফৌজদারি আদালতের আর একটি গেজেট করে পূর্ণাঙ্গ চৌকি স্থাপন করা। এ জন্য রাষ্ট্রকে বাড়তি ব্যয় করতে হবে না। অফিসারদের বসবাস, হাজতখানাসহ আদালত প্রতিস্থাপন করার মতো সব অবকাঠামো সেখানেই আছে। ছ. চিলমারী-ফকিরেরহাট দিয়ে ব্রহ্মপুত্র তিন কিলোমিটারেরও কম। সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে সেটি ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট ও জয়মনিরহাট স্থলবন্দর, লালমনিরহাটের মোগলহাট থেকে আমদানিকৃত পণ্য রাজধানীতে পরিবহন সহজ ও সাশ্রয়ী হবে। বৃহত্তর ময়মনসিংহে যেসব কারখানা আছে তার আমদানিকৃত সব পণ্যই এই রুট দিয়ে আসে। জ. চিলমারীর প্রায় তিনটি ইউনিয়ন, উলিপুরের প্রায় অর্ধেক ভূমি নিয়ে সাহেবের আলগা ও বেগমগঞ্জ ব্রহ্মপুত্রের মাঝে এ অঞ্চলের নাগরিকদের জন্য রৌমারীতে ইপিজেড গড়ে তোলা। কারণ সেখান থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে বকশীগঞ্জে গ্যাস আছে, যা ইপিজেড করার জন্য সহজ ও সাশ্রয়ী হবে। এতে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসৃজন হবে। এসব কাজ উন্নয়ন পরিকল্পনায় নিয়ে বাস্তবায়ন করলে চিলমারী-রৌমারী-রাজীবপুরবাসীর দুঃখ-কষ্টের চির অবসান হবে।
আমরা জানি, শেখ হাসিনা স্বপ্ন শুধু দেখাতে নয়, স্বপ্ন বাস্তবায়নেও পারঙ্গম। তিনি গত বছর ১৫ অক্টোবর কুড়িগ্রামের জনসভায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। আস্থা আছে, সে বিশ্ববিদ্যালয়টি হবে আন্তর্জাতিক মানের। নিকটবর্তী ভারত, ভুটান, নেপালসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্র-শিক্ষক এখানে আসবেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু থেকেই যেন দারিদ্র্যমুক্তির কৌশল শিক্ষার একটি বিভাগ চালু থাকে, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্ররা দারিদ্র্যমুক্তির শিক্ষা নিতে আসবে। এমন স্বপ্ন কাল্পনিক নয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সেটি করতেই পারেন_ সে আস্থা ও বিশ্বাস আমাদের আছে। শেখ হাসিনা আস্থা ও উন্নয়নের প্রতীক।
সূত্র
২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:২১
বিলুনী বলেছেন: খুবই মুল্যবান তথ্যসমৃদ্ধ ও দেশের অবহেলিত একটি এলাকার উন্নয়নের জন্য দিক নির্দেশনামুলক প্রবন্ধ । দেশের উন্নয়নের একটি সার্বিক চিত্র উঠে এসেছে এতে । শত প্রতিকুলতা ও মানবরূপী হিংস্রপ্রানীদের অত্যাচার ও জিঘাংসার প্রাচীর পেরিয়ে দেশ অাজ এগিয়ে যাচ্ছে দৃপ্ত পদক্ষেপে । দেশের উন্নয়ন বিরোধী হিংস্র ম্বাপদ কুলের আনাগুনা বন্ধ নেই , তাদেরকে দেখা যায় এখনো দেশের উন্নয়ন বিনাশে , বিভিন্ন পরিচয়ে যথা তথায় রয়েছে তাদের বিচরণ, করছে তারা কথায় কাজে উল্টাপাল্টা আচরণ । দুর্ভাগ্য , যাদের এটা দেখার কথা তারা সেটা দেখেও করছে না দেখার ভান ।
তার পরেও দেশের উন্নয়নটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এটাই হোক সকলের পন । হিংস্র পশুবেশধারীদেরকে করতে হবে বনে নির্বাসন, সেটাই হবে তাদের যোগ্য আসন । ; দেশটি পিছিয়ে যাবে যদি না করা হয় এদের যথাযোগ্য শাসন ।
ধন্যবাদ গঠন মুলক লিখাটির জন্য ।
৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৮
মো: হাসানূর রহমান রিজভী বলেছেন: দেশের উন্নয়ন মূলক যে কোন লেখা ভাল লাগে।ধন্যবাদ আপনাকে
৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৩
ভ্রমরের ডানা বলেছেন: অপচক্রের পরাজয় হয় যুগে যুগে এটা প্রমানিত! দশটাকা কেজিতে চাল নিয়ে কম কথা হয়নি! এবার কথার সাথে কাজের মিল দেখে বলতেই হয় - বাংলাদেশ উঠতি বাজারের দশটি দেশে পরিনত হবেই ইনশাআল্লাহ! এখন শুধু দরকার সৎ যোগ্য ও মেধাবী মানুষদের একনিষ্ঠ দেশপ্রেম! তবেই দরিদ্রতা চিরতরে ঘুচবে!
৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
কিছু বয়স্ক দরিদ্র ও চেয়ারম্যানরা উপকৃত হবে।
৬| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
১৯৭২ সালে দেশ ঠিক মতো চালালে, ১০ টাকায় চাল দিতে হতো না আজ।
৭| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৫২
ওসেল মাহমুদ বলেছেন: চালের দাম কিনতু (১০+২৭) ৩৭ টাকা কেজি ই পরবে , কিছু গরিব লোকের উপকার হবে ! কিছু চেয়ারম্যনদের ও !
তবু ও ভাল ! সাধুবাদ জানাই !
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৪১
শেয়াল বলেছেন: ২১৫৯ পইড়া গেল কিসু কইল না কেনে ?