![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশ্ব যখন এগিয়ে চলে আকাশ জয়ের পথে , আমরা তখন নিকাতলায় ফতোয়া খুঁজি পুখি পুস্তুক চুষে ।
ছেলেটা
শক্তি চট্টোপাধ্যায়
ছেলেটা খুব ভুল করেছে শক্ত পাথর ভেঙে
মানুষ ছিল নরম, কেটে, ছড়িয়ে দিলে পারতো |
অন্ধ ছেলে, বন্ধ ছেলে, জীবন আছে জানলায় !
পাথর কেটে পথ বানানো, তাই হয়েছে ব্যর্থ |
পথের হদিস পথই জানে, মতের কোথা মত্ত...
মানুষ বড় শস্তা, কেটে, ছড়িয়ে দিলে পারতো !
কেউ কথা রাখেনি
(সুনীল)
বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে বরুণা বলেছিল,
যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালবাসবে
সেদিন আমার বুকেও এরকম আতরের গন্ধ হবে !
ভালবাসার জন্য আমি হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়েছি
দুরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেঁধেছি লাল কাপড়
বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮ নীলপদ্ম
তবু কথা রাখেনি বরুণা, এখন তার বুকে শুধুই মাংসের গন্ধ
এখনো সে যে কোন নারী !
কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনা !
বনলতা সেন
জীবনানন্দ দাশ
হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধুসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন।
চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের’পর
হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন.।
বাতাসে লাশের গন্ধ
রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ
আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই
আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে...
এ দেশ কি ভুলে গেছে সোই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময় ?
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে
মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ ।
এই রক্তমাখা মাটির ললাট ছুঁয়ে একদিন যারা বুক বেঁধে ছিলো ।
জীর্ণ জীবনের পুঁজে তারা খুঁজে নেয় নিষিদ্ধ আঁধার ,
আজ তারা আলোহিন খাঁচা ভালোবেসে জেগে থাকে রাত্রির গুহায় ।
এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জার আড়ষ্ট কুমারী জননী,
স্বাধীনতা-- একি হবে নষ্ট জন্ম ?
একি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল ?
ছিন্নমুকুল
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
সবচেয়ে যে ছোট পিড়ি খানি
সেখানি আর কেউ রাখেনা পেতে,
ছোটথালায় হয় নাকো ভাতবাড়া
জল ভরে না ছোট্ট গেলাসেতে ।
বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে যে ছোট
খাবার বেলা কেউ ডাকে না তাকে ।
সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল,
তারই খাওয়া ঘুচেছে সব আগে ।
কৃষ্ণকলি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।
মেঘলাদিনে দেখেছিলেম মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
ঘোমটা মাথায় ছিলনা তার মোটে,
মুক্তবেণী পিঠের ‘পরে লোটে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে
হুমায়ুন আজাদ
আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।
নষ্টদের দানবমুঠোতে ধরা পড়বে মানবিক
সব সংঘ-পরিষদ;— চ’লে যাবে, অত্যন্ত উল্লাসে
চ’লে যাবে এই সমাজ সভ্যতা— সমস্ত দলিল—
নষ্টদের অধিকারে ধুয়েমুছে, যে-রকম রাষ্ট্র
আর রাষ্ট্রযন্ত্র দিকে দিকে চ’লে গেছে নষ্টদের
অধিকারে। চ’লে যাবে শহর বন্দর ধানক্ষেত
কালো মেঘ লাল শাড়ি শাদা চাঁদ পাখির পালক
মন্দির মসজিদ গির্জা সিনেগগ নির্জন প্যাগোডা।
অস্ত্র আর গণতন্ত্র চ’লে গেছে, জনতাও যাবে;
চাষার সমস্ত স্বপ্ন আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে একদিন
সাধের সমাজতন্ত্রও নষ্টদের অধিকারে যাবে।
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৫৬
মোঃ তামিম হাসান বলেছেন: যে কবিতাগুলো আমার বোধের জগৎ নাড়া দেয় । ভালো লাগে । ভীষণ ভালো ।যে কবিতাগুলো আমার কাছে পুরনো হয়না কখনই । ধন্যবাদ আপনাকে ।
২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৫৬
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।
নষ্টদের দানবমুঠোতে ধরা পড়বে মানবিক
সব সংঘ-পরিষদ;— চ’লে যাবে, অত্যন্ত উল্লাসে
চ’লে যাবে এই সমাজ সভ্যতা— সমস্ত দলিল—
সত্যি দারুন বলেছেন হুমায়ূন আজাদ ।
তবে নাটরের বনলতা সেন আমার দারুন প্রিয় ।
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:০০
মোঃ তামিম হাসান বলেছেন: আপনার আর আমার পছন্দের একটা মিল আছে । ভাল থাকবেন ভাইয়া ।
৩| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:০২
সালমান মাহফুজ বলেছেন: সবগুলোই ফেভারিট । তবে--
কেউ কথা রাখেনি
(সুনীল)
বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে বরুণা বলেছিল,
যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালবাসবে
সেদিন আমার বুকেও এরকম আতরের গন্ধ হবে !
ভালবাসার জন্য আমি হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়েছি
দুরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেঁধেছি লাল কাপড়
বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮ নীলপদ্ম
তবু কথা রাখেনি বরুণা, এখন তার বুকে শুধুই মাংসের গন্ধ
এখনো সে যে কোন নারী !
কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনা !-- এটিই বেশি দাগ কাটে মনে ।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।
৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩০
মোঃ তামিম হাসান বলেছেন: আপনাকে ও ধন্যবাদ । কবিতাগুলো যতবার পড়ি মনে হয় নতুন একটা অনুভূতি কাজ করে ।
৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন ।
পাগোল দেখিছি, এমন পাগলা কবির কবুতা আর কোথয়ও দেখি নাই ।
৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪
মোঃ তামিম হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ । আমরা সবাই কোন না কোন বিষয়ে পাগল । পাগলামি না থাকলে নতুন কিছু সৃষ্টির সম্ভাবনা কম । পাগল ,খেপা কবির কবিাগুলোই আমার প্রিয় । ভাল থাকবেন ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৪৫
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের’পর
হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-
দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে
সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা
সেন.। (আমারও ফেভারিট)