নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমাদের বিবেককে বলছি

তানভীর আহমেদ শরিফ

নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার সবু-পাহাড়ি অঞ্চল জয়নগরের অপূর্ব নয়ানাভিরাম কামরাবো গ্রামের আলো-বাতাসের মধ্য দিয়ে আমি বড় হয়েছি ।পেশায় একজন মেরিন অফিসার ।

তানভীর আহমেদ শরিফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা কি সত্যিই মানুষ?

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫২

বাসে ভিতরটা লোকজনে গিজগিজ করছে।যেখানে পা রাখতেই জায়গা পাচ্ছিনা সেখানে বসার জন্য একটা সিট পাবো সেটা আমি ভুল করেও ভাবিনি।কিন্তু আমার ভুল কে সত্য করে একজন লোক সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন।সামনের স্টেশনেই ভদ্র লোক নামবেন।আমি আর ডানে-বায়ে,সামনে-পিছনে না দেখে তাড়াতাড়ি বসে পরলাম।কারন এত লোক দাঁড়িয়ে ছিল যে,আমি ডানে-বায়ে দেখতে দেখতে যেকোন ভদ্রলোক সিটখানা দখল করে নিতে পারেন।বসে একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম।হঠাৎ দেখি একজন মধ্য বয়স্ক লোক ছোট একটা শিশু নিয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।এত লোকের ভিড়ে বাচ্চাটা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে লোকটির খুব কষ্ট হচ্ছে বুঝতে পারলাম।পাশের সিটের মহিলা লোকটার কষ্ট বুঝতে পেরে বাচ্ছাটা কোলে নিতে চাইলেন।কিন্তু বাচ্ছাটা মহিলার কোলে যেতেনা যেতেই কান্না শুরু করে দিল।এত জোরে কাঁদছিল যে বাসের সকল যাত্রীর মনোযোগ বাচ্ছাটার দিকে চলে আসলো।মেয়েরা মায়ের জাত,তথাপি ঐ মহিলা বাচ্ছাটাকে রাখতে পারছেন না।শেষ অবধি লোকটা এই ভিড়ের ভিতরেই বাচ্ছাটাকে আবার নিজের কোলে নিলেন।সাথে সাথেই বাচ্ছাটার কান্না থেমে গেলো।বাচ্ছাটা তার বাবার কাঁধে শুয়ে ভয়হীন চোখে সবার দিকে তাকিয়ে আছে।বুঝলাম বাচ্ছাটা তার নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে।আমি অবাক হয়ে গেলাম,যে শিশুটি এখনো কথা বলতে শিখেনি,এতটাই অবোধ যে,আগুনের কয়লায় হাত দিতে ভয় করেনা সে শিশুটিই তার বাবার কোল ছেড়ে একজন মহিলার কাছে থাকতে চাইলোনা।আর শিশুটির বাবাও এত ভিড় আর ঠেলাঠেলির ভিতর বাচ্ছাটাকে কোলে নিয়ে অনেক কষ্ট করে দাঁড়িয়ে আছে।বাবা-সন্তানের এই ভালবাসা দেখে আমার চোখে জল চলে আসলো।চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো;বাবা,তোমাকে অনেক ভালবাসি।আমি উঠে দাঁড়িয়ে লোকটাকে বসতে দিলাম।আমি শিশুটির দিকে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি, আজ যে শিশুটি তার বাবার কোলে শোয়ে নিজেকে নিরাপদ ভাবছে,আগামীকাল শিশুটি যখন বড় হবে তখনতো তার বাবাও বৃদ্ধ বয়সে এই সন্তানের কাছে নিরাপদ আশ্রয় চাইবে।কিন্তু আজ এই বাবা নিজে কষ্ট করে যেভাবে বাচ্ছাটা কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন,তার সন্তান কি আগামীকাল তার বাবার জন্য এরকমটা করতে চাইবে?যদি তাই হতো তাহলে কেন বৃদ্ধাশ্রম?কেন যে বাবা মা নিজে না খেয়ে সন্তান কে মানুষ করেছে,সন্তানের অসুখ হলে সারা রাত তার মাথার কাছে বসে থাকে,প্রশ্রাব করে শিশু যখন কাথা ভিজিয়ে ফেলে তখা যে বাবা মা সন্তান কে বুকে নিয়ে সারা রাত কাটিয়ে দেয়,সেই বাবা মা জীবনের শেষ সময়টুকু কেন এই আদরের সন্তানকে ছেড়ে কাটাবেন?তারা কি তাদের শেষ সময়টুকুতে আমাদের কাছ থেকে একটু ভালবাসা আশা করতে পারেন না?আমার ইচ্ছে হচ্ছিল পৃথিবীর সব বৃদ্ধাশ্রমগুলো ভেঙ্গে গুড়ু করে দেই।যারা নিজের বাবা মা কে বৃদ্ধাশ্রমে রাখে তারা কি কারো সন্তান হয়ার যোগ্যতা রাখে?আমাদের বাবা-মা তো সারা জীবন আমাদের জন্য করে গেছেন।তবে আমরা কেন ওনাদের জীবনের শেষ সময়ে ওনাদের মুখে হাসি ফুটানোর চেষ্টা করবোনা।আমরা কি সত্যিই সৃষ্টির সেরা জীব?আমরা কি সত্যি মানুষ হয়ে জন্ম নেই,না জন্মের পর কিছু মানুষ হই আর কিছু পশু?

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০০

ভিটামিন সি বলেছেন: কালো পিচ ঢালা রাজপথে
কখনো যাই নি যোগ দিতে
কোন দাবীতে তুলিনি কন্ঠে স্লোগান
আমার এই তো প্রথম,
আমার এই তো প্রথম,
এদেশ থেকে উঠে যাক, উঠে যাক..
বৃদ্ধাশ্রম, উঠে যাক বৃদ্ধাশ্রম।

২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৬

ঢাকাবাসী বলেছেন: অতোটা মহামারী আকারে বৃদ্ধাশ্রমটা এখনো আসেনি মনে হয়। কিন্তু সে আসছে, রাজধানীতে কয়েকটাই আছে, পরিধি বাড়ছে। ভয়ানক! নাতনীর সাথে খেলতে পারব কদিন?

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৩৬

 বলেছেন: B:-) B:-) B:-)

৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৯

নতুন বলেছেন: মানুষের বিবেক বিলুপ্তি রোধ করা না গেলে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে... :(

৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৬

তানভীর আহমেদ শরিফ বলেছেন: আজকের সন্তানই আগামী দিনের বাবা।সুতরাং,আজ বাবার জন্য যে বৃদ্ধাশ্রম আগামীকাল সেটা যে আজকের সন্তানের ঠিকানা হবেনা তার নিশ্চয়তাই বা দিবে কে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.