নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমাদের বিবেককে বলছি

তানভীর আহমেদ শরিফ

নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার সবু-পাহাড়ি অঞ্চল জয়নগরের অপূর্ব নয়ানাভিরাম কামরাবো গ্রামের আলো-বাতাসের মধ্য দিয়ে আমি বড় হয়েছি ।পেশায় একজন মেরিন অফিসার ।

তানভীর আহমেদ শরিফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জেগে ওঠো বাঙালী, ভারতীয় অপসংস্কৃতির হাত থেকে বাঁচাও আমাদের সংস্কৃতি । ভারতীয় অপসংস্কৃতির হাত থেকে বাঁচাও আমাদের সংস্কৃতি ।

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:০০

জেগে ওঠো বাঙালী,
ভারতীয় অপসংস্কৃতির হাত থেকে বাঁচাও আমাদের সংস্কৃতি ।
(তানভীর আহমেদ)

আবার এসেছে পহেলা বৈশাখ ।আবহমানকাল থেকে চলে আসা বাঙালী জাতির সংস্কৃতির অন্যতম নিদর্শন এই পহেলা বৈশাখ ।পোশাক-আশাক,কথাবার্তা,চাল-চলন,আচার-আচরণ এ সবই একটা জাতির পরিচয় বহন করে ।এনে দেয় তাকে নিজস্ব স্বকীয়তা ।কিন্তু বাঙালী জাতি কালক্রমেই যেন নিজেদের অস্তিত্বকে হারিয়ে ফেলছে ।ভেসে যাচ্ছে বিদেশি অপসংস্কৃতির ছোঁয়ায় ।এক সময় বাঙালী নারী মানেই শাড়ীর আঁচলে লম্বা ঘোমটা পরা কিংবা সালোয়ার-কামিজ আর ওড়না পরা সহজ-সরল রমণীদের কথাই মনে হত ।কিন্তু আজকাল বাংলাদেশের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট কিংবা নাইট ক্লাবে আধুনিক বাঙালী তরুণতরুণী দেখে আবাক হয়ে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করি, “ওরা কি বাঙালী,নাকি সংকর জাত !?”মিনি স্কার্ট,আর প্যান্টে -শার্ট পরা ললনাদের দেখে বাঙলা সংস্কৃতি অপমৃত্যুর পথ বেছে নিচ্ছে ।কেউ কেউ আবার ফ্যাশান করতে গিয়ে বুকের ওড়না গলায় নিয়ে যাচ্ছেন ।তার চেয়ে অবাক হই আধুনিক তরুণ-তরুণিদের মুখে বাংলা,হিন্দি,ইংরেজি ভাষা মিলিয়ে নতুন এক ভাষার আবির্ভাব হওয়ায় ।অথচ এই ভাষার জন্যই আমরা বুকের রক্ত দিয়েছি । লজ্জায় পড়ি যখন এরাই আবার পহেলা বৈশাখ এলে বছরের একটি দিনের জন্য নিজেদের বাঙালী সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । এর জন্য আজকের তরুণ-তরুণিরা দায়ী নয় ।দায়ী আমাদের শাসক শ্রেণী, যারা নিজেদের স্বার্থে বিদেশী অপসংস্কৃতিকে আবাধে আমাদের দেশে প্রবেশ করতে দিচ্ছে ।বিশেষ করে ভারতীয় অপসংস্কৃতি রাহুর মতো গ্রাস করছে আমাদের সংস্কৃতিকে,আমাদের তরুণ সমাজকে ।বাংলাদেশী কোন নাটকে এখনো আমি মেয়েদের মিনি স্কার্ট পরতে দেখিনি ।কিন্তু স্টার জলসা কিংবা জি বাংলায় মেয়েগুলোর ছোট ছোট কাপড় দেখলে ঐ দেশের সরকারের প্রতি আমার ক্ষোভ বেড়ে যায় ।সরকার যদি কাপড়ের উপর ট্যাক্স কমিয়ে দেন তবেইত কাপড়ের দাম কমে যায় ।তখন আর ঐ সমস্ত আপুদের ছোট ছোট কাপড় পরতে হবেনা ।ঐ সমস্ত নাটক দেখে আমাদের আজকের সমাজ পরকীয়া,বউ-শ্বাশুড়ির যুদ্ধ,সংসারে অশান্তি সৃষ্টি আর নোংরামী ছাড়া কিছুই শিখতে পারছেনা ।তাদের দেখে ওপেন কিস আর লিভ টুগেদারে বাঙালী তরুণ-তরুণীরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে ।যেখানে বাংলাদেশী কোন টিভি চ্যানেলের সম্প্রচারের অনুমতি ভারত আমাদের দিচ্ছেনা সেখানে আমাদের কর্তৃপক্ষ কোন স্বার্থে তাদের টিভি চ্যানেলগুলোকে অনুমতি দিয়ে নোংরা সংস্কৃতির বিষবাষ্পে আমাদের তরুণ সমাজকে বিপদ্গামী করছে তা আমার বোধগম্য হচ্ছেনা ।যেখানে হুমায়ূন আহমেদের মতো অকজন স্বনামধন্য সাহিত্যিকের মৃত্যুর খবর ভারতের কোন পত্রিকায় স্থান পায় না সেখানে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কিংবা ঋতুপর্না ঘোষের মৃত্যুতে আমরা কেঁদে চোখের জল আর নাকের জল এক করে দেই ।এর একটা যৌক্তিক কারণও আছে ।বাঙালী জাতি অন্য দেশের সভ্য সংস্কৃতিকে সম্মান দিতে জানে ।এই বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন যদি বন্ধ না করা যায় তবে সেদিন আসতে খুব দেরি নেই যেদিন বাঙালীর নিজস্বতা বলতে কিছু থাকবেনা ।একটা গল্প বলে শেষ করছি ।একবার কাকের ইচ্ছে হলো সে আর নিজের মতো করে হাঁটবেনা ।অন্যান্য পাখির হাঁটা অনুসরণ করবে ।তাই সে কিছুদিন বক পাখির মত হাঁটতে থাকলো ।কিন্তু কিছুদিন পর এই হাঁটাও তার আর ভালো লাগছেনা ।তাই সে ভাবলো শালিক পাখির মতো হাঁটবে ।কিন্তু কিছুদিন হাঁটার পর সে বুঝলে তার নিজের হাঁটার স্টাইলটাই সবচেয়ে সুন্দর ।তাই সে আবার নিজের মতো করে হাঁটতে চাইলো ।কিন্তু কাক অবাক হয়ে দেখলো সে আর নিজের মতো করে হাঁটতে পারছেনা ।অন্য পাখির হাঁটা অনুসরণ করতে গিয়ে সে তার নিজের হাঁটাটাই ভুলে গেছে ।তারপর থেকে কাক আর হাঁটতে পারেনা,শুধু লাফায় ।বাঙালী যদি নিজের সংস্কৃতিকে অবহেলা করে অন্যদের সংস্কৃতি অনুসরণ করতে চায় তবে একটা পর্যায় দেখা যাবে বাঙালী না পারছে নিজের সংস্কৃতিকে ধারণ করতে,না পারছে বিদেশি সংস্কৃতির সাথে মিশতে ।তখন বাঙালীকে শুধু কাকের মতো লাফাতে হবে ।আমরা সংস্কৃতি সমৃদ্ধ এক জাতি ।তাই আসুন বিদেশি অপসংস্কৃতিকে পরিহার করে নিজেদের সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরি ।খান আতার সেই বিখ্যাত গানটি আবার মনে পড়ে গেলো-

“ মানুষ হ,মানুষ হ,আবার তোরা মানুষ হ,
বিশ্ব মানব হবি যদি কায়মনে বাঙালী হ ।”

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.