নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমাদের বিবেককে বলছি

তানভীর আহমেদ শরিফ

নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার সবু-পাহাড়ি অঞ্চল জয়নগরের অপূর্ব নয়ানাভিরাম কামরাবো গ্রামের আলো-বাতাসের মধ্য দিয়ে আমি বড় হয়েছি ।পেশায় একজন মেরিন অফিসার ।

তানভীর আহমেদ শরিফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুর মানসিক বিকাশে সচেতন হউন

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১১

আজকের অবুঝ শিশুটিই আগামীর সমাজকে নেতৃত্ব দিবে ।তার হাত ধরেই দেশ ও জাতি এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধি আর উন্নয়নের নতুন দ্বারপ্রান্তে ।তাই প্রতিটি শিশুর সুস্থ শারীরিক ও মানসিক বিকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।অনেক সময় অভিভাবকদের অসচেতনতা কিংবা অতিরিক্ত সচেতনতা শিশুর মানসিক বিকাশকে মারাত্বকভাবে বাধাগ্রস্থ করে ।মাতৃগর্ভে থাকাকালীন শিশুর মস্তিষ্কে নিউরন নামক কোষের বৃদ্ধি ঘটে ।গর্ভবতী মায়ের পর্যাপ্ত সুষম খাবার,শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার উপর নিউরনের এ বৃদ্ধি অনেকটা নির্ভর করে ।তাই একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশুর জন্মের জন্য গর্ভবতী মায়ের যত্ন নেয়া অত্যন্ত জরুরি ।জন্মের পর এ কোষের আর বৃদ্ধি ঘটেনা ।জন্মের পর পারস্পরিক ক্রিয়ামূলক উদ্দীপনা দ্বারা নিউরনগুলোর মধ্যে সংযোগ ঘটে এবং সেগুলো সক্রিয় হয়ে উঠে ।গর্ভাবস্থা থেকে প্রথম পাঁচ বছর শিশুর মানসিক বিকাশের প্রারম্ভিক অবস্থা ।এ সময় শিশু যা দেখবে,শুনবে এবং শিখবে তা শিশুর সারাজীবনের ভিত্তি গড়ে দিবে ।শৈশব,কৈশর পাড়ি দিয়ে এই অবুঝ শিশু একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষে পরিণত হবে ।এই প্রতিটি ধাপে শিশুটি যা শিখবে তা তার মেধা,বুদ্ধি,ব্যক্তিত্ব,আচরণ,দক্ষতা সর্বোপরি তার মানসিকতার বিকাশ ঘটাবে ।সাধারণত দুই ধরনের পরিবেশের ভিতর দিয়ে শিশু বড় হয়ে ঊঠে ।সামাজিক ও বস্ত্তগত পরিবেশ ।শিশুর বাবা-মা ভাই-বোন,দাদা-দাদী ও অন্যান্য নিকট আত্বীয় নিয়ে তার সামাজিক পরিবেশ ।শিশুর সামনে দাম্পত্য কিংবা পারিবারিক কোলাহে জড়াবেন না ।কেননা এতে করে জীবন সমন্ধে শিশুটির মনে নেতিবাচক ধারণার জন্ম হতে পারে ।শিশুকে কখনো নিরুৎসাহিত করবেন না ।শিশুকে নিরুৎসাহিত করলে তার আত্ববিশ্বাস কমে যায় ।শিশুকে কখনো ভয় দেখাবেন না কিংবা ধমক দিবেন না ।ভয় শিশুর মানসিকতাকে সংকীর্ণ করে তুলে ।শিশুকে প্রশ্ন করুন,তার জানার আগ্রহকে বাড়িয়ে দেন ।শিশুর মন নতুন কিছু দেখলেই সে সমন্ধে জানতে চায় ।শিশুর প্রশ্নে বিরক্ত প্রকাশ করবেন না ।এতে তার জানার আগ্রহ নষ্ট হয়ে যায় ।শিশুকে তিরষ্কার বাঁ ব্যঙ্গ করবেন না ।তিরষ্কার শিশুর মনকে ছোত করে দেয় ।দাঁত মাজা,নিজে নিজে কাপড় পরা,স্কুলের ব্যাগ গোছানো এরকম ছোট ছোট কাজ শিশুকে করতে দেন ।এতে করে সে নিজের উপর নির্ভর করতে শিখবে ।তার বন্ধুবান্ধবের সাথে মিশতে দেন ।এতে তার নেতৃত্ব দেয়ার গুন বিকশিত হবে ।বড়,ছোট কিংবা বন্ধুদের সাথে কি রকম আচরণ করতে হবে তা শিখিয়ে দেন ।শিশুকে ধর্মীয় নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দেন ।ধর্মীয় শিক্ষা শিশুকে খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে ।শিশুর বাসস্থান,বিদ্যালয় ও আশপাশ নিয়ে তার বস্ত্তগত পরিবেশ ।একটি শিশু যেরকম পরিবেশের ভিতর দিয়ে বেড়ে উঠবে তার আচার-আচরণ,কথা-বার্তায় তার ছোঁয়া থাকবে ।শিশুকে নতুন পরিবেশের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন ।মাঝে মাঝে পার্কে বা অন্যান্য বিনোদনমূলক জায়গায় শিশুকে নিয়ে ঘুরতে যান ।শিশুকে পর্যাপ্ত খেলাধূলা আর বিনোদনের সুযোগ দেন ।এতে তার মন প্রফুল্ল থাকবে ।লেখাড়ার জন্য কখনোই অতিরিক্ত চাপ দিবেন না ।অনেক অভিভাবক লেখাপড়ার জন্য শিশুকে প্রচুর মারধর করেন ।এরকম মারধর শিশুর শরীরের চেয়ে তার কোমল মনকে বেশি আঘাত করে ।পড়াশুনার কথা শুনলেই তার ছোট্ট মনে একটা ভয় কালো ছায়ার মতো ঘুরে বেড়ায় ।লেখাপড়া কিংবা বিদ্যালয়ের প্রতি একবার ভীতির সৃষ্টি হলে লেখাপড়ার প্রতি তার আগ্রহ কমে যাবে ।শিশুকে আনন্দের সাথে পড়তে দেন ।শিশুরা সাধারণত খেলতে খুব পছন্দ করে ।তাই ওদেরকে খেলার ছলে পড়াশুনা করান ।দেখবেন লেখাপড়ার প্রতি দিন দিন তার আগ্রহ বেড়েই যাবে ।ব্যর্থ হলে শিশুকে নিরুৎসাহিত করবেন না ।তাকে আবার লড়াই করার জন্য উৎসাহ দেন ।তাকে এতটুকু বুঝতে দেন তার মধ্যেই সম্ভাবনা আছে ভাল কিছু করার ।দেখবেন শিশুটি নিজেই নিজেকে প্রমাণ করার জন্য পরিশ্রম করে যাবে ।একটি সুসন্তান শুধু বাবা-মার নয়,পুরো জাতির সম্পদ ।প্রতিটি শিশুকে একটি সুন্দর পরিবেশের মধ্যদিয়ে তার মানসিকতার পূর্ণাঙ্গ বিকাশ ঘটিয়ে একজন আদর্শ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.